![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আদার ব্যাপারীর জাহাজের খবর। আদিকালের এই প্রবাদ এর অর্থ মুল্যহীন হলেও, আজকাল শুধু আদার ব্যাপারি ই নয়, সকল ব্যাপারীকেই জাহাজের খবর রাখতে হয়। উন্মুক্ত বাজার অর্থনীতির কল্যানে আমাদের ব্যাপারীরা এখন আর শুধু আদা নিয়েই সীমাবদ্ধ নেই, মোটামুটি দেশে উৎপাদিত সবচেয়ে ভালো পন্যটিই কিন্তু বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। আর পন্য পরিবহনে প্রধান এবং সস্তার বাহন কিন্তু জাহাজ। আমরা যারা এই ব্যাপারীদের সাথে যুক্ত বা জাহাজ নিয়ে যাদের আগ্রহ তাদের জন্য আমার এই উপস্থাপনা।
১। ডেড ওয়েট (Dead Weight বা DWT) : এটি জাহাজের ব্যাপারীদের কাছে খুবই দরকারি একটা শব্দ। এর সাহায্যে জাহাজের একটা আনুমানিক সাইজ বা মাপ বুঝা যায়। এমনকি জাহাজের মালপত্র ধারন ক্ষমতার একটা ধারনা পাওয়া যায়। এটি শুনতে মরা ওজন বা মরা মানুষের ওজন মনে হলেও আসলে ঠিক উল্টা, মানে এটি একটি জীবন্ত ওজনের মত।
একটু তলিয়ে দেখি - জাহাজের ওজন গুলিকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। একটি লাইট ওয়েট (Light Weight বা LWT ) এবং অন্যটি ডেড ওয়েট। লাইট ওয়েট শব্দটাই দেখুন আবার খুব বিদঘুটে (দুটি বিপরীত শব্দ পাশাপাশি, অনেকটা আমাদের অল্প দুরে এর মত, অল্প ই যদি হয় তাহলে আবার দুরে বলছি কেন? )। এই লাইট ওয়েট মানে যে সকল ওজন জাহাজের সাথে নির্দিস্ট বা ফিক্সট। যেমন জাহাজের হালের (বডি) স্টিলের ওজন, ইন্জিন সহ সকল যন্ত্রপাতির ওজন, ক্রেন থাকলে তার ওজন ইত্যাদি। এই লাইট ওয়েট মোটামুটি একটি জাহাজের জন্য নির্দিস্ট (কাঠামোতে কোন পরিবর্তন না হলে) আর ডেড ওয়েট হলো যে সকল ওজন বাড়ে কমে বা স্থির নয় যেমন কার্গো বা মালপত্রের ওজন, তেল, পানি এমনকি জাহাজের ক্রুদের ওজন। এই ডেড ওয়েট জাহাজ চলাচলের প্রতি মুহুর্তেই পরিবর্তনশীল।
তবে কোন জাহাজে এই ডেড ওয়েট এর সর্বোচ্চ মানকে ই কাগজ পত্রে ঐ জাহাজের ডেড ওয়েট হিসাবে দেখানো হয়। এবার ! একটু চিন্তা করুন তো এই দুটি ওজনের যোগফল কি হতে পারে ? এই লাইট ওয়েট আর ডেড ওয়েট এর মিলিত যোগফল আসলে পানিতে ভাসমান জাহাজের মোট ওজন বা ডিসপ্লেসমেন্ট ওয়েট (Displacement Weight) । মানে আর্কিমিডিসের সেই সুত্র। ইউরেকা, ইউরেকা ............
২। একটু বেশি সংখ্যা নির্ভর আলোচনা থেকে একটু প্রাকটিক্যাল আলোচনায় আসি। এবারের শব্দটি বোও বা বউ (Bow)। আমরা নেভাল আর্কিটেক্টরা যখন জাহাজের ডিজাইন করি, তখন অনেকটা সময়ই কাটাই এই বউ এর পিছনে কারন এই বউটা সুন্দর মানে ই কিন্তু জাহাজটি দেখতে সুন্দর, ঠিক আপনার সংসারের মত। এ জন্য অবশ্য নেভাল আর্কিটেক্টদের ঘরে সমস্যা শুরু হয়, কারন তাদের জামাইরা তখন অটোক্যাড এ অন্য বউ নিয়ে ব্যাস্ত। যাই হোক এটা আসলে জাহাজের সন্মুখ ভাগের অগ্রবর্তি অংশের (খাড়া ভাবে) নাম। ঠিক টাইটানিকের নায়ক নায়িকা যে স্থানে হাতে হাত রেখে দাড়িয়ে ছিল, ঐ জায়গাটার নাম ই বউ। আপনার সংসার ভালোভাবে চালাতে, সকল বাধা বিপত্তি থেকে আগলিয়ে রাখতে যেমন শক্ত সামর্থ্য বউ দরকার, তেমনি আপনার জাহাজি বউ ই কিন্তু আপনার জাহাজ কে সকল বাধা বিপত্তি ডিঙ্গিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
৩। বউ নিয়ে আলোচনার পর আরেকটু গভিরে যাই। এবারের শব্দ ব্রেস্ট হুক (Breast Hook), ভাই ঠিকই শুনেছেন । কি ভাই
!! মন কোন দিকে নাচানাচি করছে ? শব্দটি আমরা ও যখন প্রথম শুনেছি তখন মনে হয়েছিল দুস্টামি হচ্ছে বুঝি !! জিনিস টি আসলে কয়েক টুকরা স্টীল বা কাঠ। জাহজে এর অবস্থান জনিত প্রয়াজনীয়তার কথা বিবেচনায় এর এমন নামকরন। নেভাল আর্কিটেক্টরা যখন বউ ডিজাইন করেন, তখন বউ কে কতটা শক্তিশালি করা দরকার তার হিসাব কষেন। কারন, বউ এর পানির নিচের অংশ যেমন সকল স্রোত, ঢেউ কে প্রথম অতিক্রম করবে আবার, বউ এর পানির উপরের অংশ যে কোন দুর্ঘটনায় প্রথম আঘাত প্রাপ্ত হবে। আর তাই এই বউকে শক্তিশালি করতে একেবারে সামনের দিকে আড়াআড়ি কিছু প্লেট (ব্রাকেট) ব্যবহার করেন। এই প্লেট বা ব্রাকেট গুলি ই ব্রেস্ট হুক নামে পরিচিত। নিচের ছবিতে ২৭ নম্বরে যে ব্রাকেট টি দেখানো, এটি সহ এর উপরে একই আকারে যে ব্রাকেট গুলি আছে, এ গুলিই ব্রেস্ট হুক। কাঠের তৈরি বোটে ও ব্রেস্ট হুক থাকে। ছবিটে দেখুন।
ভালো লাগলে জানাবেন
জাহাজের আরো শব্দ বা ঘটনা আগামি পর্বে
ধন্যবাদ।
০৯ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১২:০৫
জাহাজ মিস্ত্রী বলেছেন: ধন্যবাদ
২| ০৯ ই মার্চ, ২০১৪ সকাল ১১:০৩
শরৎ চৌধুরী বলেছেন: আলবৎ ভালো লেগেছে। +।
০৯ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১২:১৬
জাহাজ মিস্ত্রী বলেছেন: আপনি আমার লেখার নিয়মিত পাঠক ও শুভাকাংখি। ধন্যবাদ
৩| ০৯ ই মার্চ, ২০১৪ সকাল ১১:০৬
এন ইউ এমিল বলেছেন: কিছু জানলাম মজাও পাইলাম
০৯ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১২:১৫
জাহাজ মিস্ত্রী বলেছেন: ধন্যবাদ
৪| ০৯ ই মার্চ, ২০১৪ সকাল ১১:২৫
মোঃ মোশাররফ হোসাইন বলেছেন: দুর্দান্ত। অপেক্ষায় "নাজির"
০৯ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১২:২১
জাহাজ মিস্ত্রী বলেছেন: আমি ৯৫-৯৬ সালের দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় খুব দেখতাম "কষ্টে আছে আইজউদ্দিন " বা "অপেক্ষায় নাজির"। আপনার কমেন্ট পড়ে তা মনে পড়ে গেল। ধন্যবাদ
৫| ০৯ ই মার্চ, ২০১৪ সকাল ১১:২৭
রক্তভীতু ভ্যাম্পায়ার বলেছেন: ব্লগে নিজের ডিপার্টমেন্টের ভাই দেখার মত আনন্দ আর নাই!
০৯ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১২:১৪
জাহাজ মিস্ত্রী বলেছেন: আমি ও আনন্দিত হলাম।
৬| ০৯ ই মার্চ, ২০১৪ সকাল ১১:৪৭
নক্শী কাঁথার মাঠ বলেছেন: ব্রেস্ট হুক খোলাতেই পৃথিবীর সকল আনন্দ। এই হুক খুলতে না পেরে আপনাদের খারাপ লাগেনা?
০৯ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১২:১১
জাহাজ মিস্ত্রী বলেছেন: ব্রেস্ট হুক ডিজাইন অনেক সময় সাপেক্ষ আর এই ব্রেস্ট হুক ডিজাইন এর পর সঠিক ভাবে লাগানোতেই আমাদের আনন্দ। বরং এই ব্রেস্ট হুক খুলে গেলেই আমাদের ব্যার্থতা। হা হা
৭| ০৯ ই মার্চ, ২০১৪ সকাল ১১:৪৯
উদাস কিশোর বলেছেন: নতুন কিছু জানার সাথে মজা ফ্রি
খারাপ কি !
অপেক্ষা বাকি পর্বের
০৯ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১২:২৮
জাহাজ মিস্ত্রী বলেছেন: জানার সাথে মজা ফ্রি !!
খারাপ কি ! খারাপ কি !! হা হা হ
৮| ০৯ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১২:১৭
বেলা শেষে বলেছেন: beautiful writing, good explaination, good picturing, good editing.....
০৯ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১২:২৭
জাহাজ মিস্ত্রী বলেছেন: ভাই ওয়েট বেশি হয়ে গেছে, নিতে পারছিনা। ধন্যবাদ
৯| ০৯ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১:২৩
দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: চমৎকার!! সত্যিই চমৎকার!!!
০৯ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ৯:৪৮
জাহাজ মিস্ত্রী বলেছেন: খুশি হলাম। অনুপ্রানিত হলাম।
১০| ০৯ ই মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৪:৫৩
অলওয়েজ এ্যান্টি গর্ভণমেন্ট বলেছেন: ধন্যবাদ
০৯ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ৯:৪৭
জাহাজ মিস্ত্রী বলেছেন: ধন্যবাদ
১১| ০৯ ই মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৫:৩৭
সাইবার অভিযত্রী বলেছেন: অন্যমনস্ক শরৎ বলেছেন: আলবৎ ভালো লেগেছে। +।
০৯ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ৯:৪৭
জাহাজ মিস্ত্রী বলেছেন: অন্যমনস্ক শরৎ বলেছেন: আলবৎ ভালো লেগেছে। আপনি কি বলেন ?
১২| ০৯ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ৯:১৯
সুমন কর বলেছেন: তথ্যবহুল পোস্ট। শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
০৯ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ৯:৪৯
জাহাজ মিস্ত্রী বলেছেন: ধন্যবাদ
১৩| ১০ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১২:১৪
চিত্রা নদীর পাড়ে বলেছেন: Superlike!
১৪| ১১ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:০৯
স্বপ্নসমুদ্র বলেছেন: আপনি নেভাল আর্কিটেক্ট?? পোস্ট গুলো অনেক ভালো লাগলো। ১,২,৩! সুন্দর। +++ এখন কোথায় আছেন?
©somewhere in net ltd.
১|
০৯ ই মার্চ, ২০১৪ সকাল ১০:৫৫
হেডস্যার বলেছেন:
বউ আর (এর) ব্রেষ্ট হুকের ব্যাপারটা ভালো লাগছে....