নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পুরোপুরি একজন অতি সাধারন মানুষ । আমি যা আমি তাই ই । শয়তানও নই কিম্বা ফেরেশতা । একজন মানুষ আপনারই মতো দু'টো হাত, চোখ আর নিটোল একটা হৃদয় নিয়ে আপনারই মতো একজন মানুষ । প্রচন্ড রকমের রোমান্টিক আবার একই সাথে জঘন্য রকমের বাস্তববাদী...
প্রথমে খালি গলায় বলতে শুরু করেছিলো লোকটা । তার কথা শিককাবাব বানানোর কয়লার চুলোর আগুনের মতো আস্তে আস্তে গরম হতে শুরু করলে তাতে হাওয়া দিতে পাশের জরিনা ইলেক্ট্রনিক্স থেকে কে একজন যেন তার হাতে একটা হ্যান্ড মাইক ধরিয়ে দিয়ে গেছে । এখন তার গলা বেশ ষ্পষ্ট । আশেপাশে জমে উঠছিলো উৎসুক জনতার ভীড় । প্রথমে দু’চার জন করে, পরে তা দশ-বারো - কুড়ি জন হতে হতে এখন তা ষ্টেডিয়ামে ক্রিকেট খেলার অগ্রিম টিকিট কিনতে জড়ো হওয়ার মতো মানুষের দঙ্গলে পরিনত হয়েছে । লোকটা দাঁড়িয়ে ছিলো একটু উঁচুতে, সম্ভবত কোন পান-বিড়ি বিক্রেতার টুলখানার উপরে । পান বিড়িওয়ালাও এই ভীড়ে মুফতে একটা মোক্ষম সুযোগ পেয়েছে বেশি বেশি বিক্রির। তাই টুলটা ছেড়ে দিয়েছে সে । বলা যেতে পারে, এই আত্মত্যাগ তার একটা ইনভেষ্টমেন্ট । লোক যতো জমবে তার পান বিড়ি ততো বেশি চলবে । এটা একটা বিজনেস পলিটিক্স।
হলদে চেক চেক সার্ট গায়ে, আটোসাটো জিন্স পরা, পায়ে সস্তা রাবারের স্যান্ডেল আর ছোট করে ছাঁটা চুলওয়ালা একজন, সম্ভবত বেকার; চেচিয়ে বলে উঠলো -
- ভাইজান এট্টু জোরে জোরে কইবার পারেন না ? পেরথম থন কন ।
লোকটা তার হাতের মাইকে বারদুয়েক হ্যালো ...হ্যালো বলতেই ভীড়টা নড়েচড়ে উঠলো । ঠেলাঠেলি গুঁতোগুঁতি বাড়লো খানিকটা । সেই দোলায়িত ভীড়ের মাথার উপর দিয়ে ভেসে এলো লোকটার কিছুটা ফ্যাঁসফেঁসে গলা -
“ আমি আইজউদ্দিন । মনে লয় আম্নহেরা আমারে চিনতে পারছেন । ঢাহা ভার্সিটি এলাকায় আর পুরাইন্না ঢাহায় আমি অনেক আগে দেওয়ালে চিকা মারছিলাম এইডা কইয়া -“ কষ্টে আছি - আইজউদ্দিন ” । মনে আছে আম্নহেগো ? ভার্সিটির পোলাপানে আমারে লইয়া কতো কেচ্ছা বানাইছে কিন্তুক দুঃখ, কেউ আমার খোঁজ লয় নাই । আমি আছি না মইররা গেছি, হেডা দ্যাকতে আয় নাই কেউ । ভাবছেন দেওয়ালের লেহা দেওয়ালেই পইররা থাহে । দেওয়ালের লেহা দেওয়ালেই থাহেনা , থাহে আমাগো জীবনেও । আম্নহেরা এক একজন হেই দেওয়ালেরই আইজউদ্দিন । আইজ এক দেওয়ালের আইজউদ্দিন আমনহেগো হোমকে খাড়াইন্না ....... “
ভীড়ের ভেতরে ফিসফিসানী শুরু হয়ে গেলো জোড় কদমে যেন গোপন কোনও ষড়যন্ত্রের শলা-পরামর্শ চলছে তাদের ভেতর । হরেক কিসিমের মানুষের জটলার এখান ওখান থেকে বুদবুদের মতো ফুস করে উঠে বাতাসে মিলিয়ে গেলো কিছু হাততালি । পান বিড়িওয়ালার দোকানে সিগ্রেট কেনার হিড়িক পরে গেলো । পিচিক করে কেউ একজন পানের রস ফেলতেই তা পাশের লোকটার পায়ে গিয়ে পড়ায় শুরু হয়ে গেলো খিস্তি খেউর । কোনে দাঁড়ানো দু’জন হাবলা টাইপের যুবক অবাক দৃষ্টিতে হাত নেড়ে নেড়ে একজন আরেকজনকে কি যেন বোঝাতে লাগলো । সম্ভবত তারা ভার্সিটির ছাত্র । আইজউদ্দিন নামটি শুনে হয়তো তারা বেশ মজা পেয়েছে বা অবাক হয়েছে অথবা হতে পারে তাদের স্মৃতিতে কোনও ঘা লেগেছে ।
“----তো ভাইসাবেরা , আম্নহেরা আমারে পাগল ভাইব্বেন না । আমি আম্নহেগো সমাজের বানাইন্না বিভেদের শিকার হইয়া চিপার ভিত্রে আছি । এই বিভেদ দিয়া আম্নহেগোও রেহাই নাই । আম্নহেরাও ভাগে ভাগে ভাগ । যাইবেনই বা কই ? দ্যাশটাই তো দুইভাগ তিনভাগ কইররা হালাইছেন আম্নহেরা । এ্যাহোন আম্নহে কইবেন , এগুলা তো আমরা করি নাই , করছে রাজনীতিবিদরা আর সরকার । তা আমি জিগাই, আম্নহেরা আছেলেন কই ? এই আইজদ্দিন আম্নহেগো জিগাইতেছে --আম্নহেরা আছেলেন কই ? জবাব দেন ভাইসাবেরা , কই ছিলেন তহোন, দ্যাশটা যহোন দুইভাগ তিনভাগ হয় ? ”
ভীড়ের ভেতরে একটা গুঞ্জরণ ওঠে । মৌমাছির গুনগুন শব্দের মতো শুরু হয়ে তা যেন মাথার উপর থেকে উড়ে যাওয়া এ্যারোপ্লেনের গুমগুম শব্দের মতো হতে থাকে ভারী । কিছুটা ঠেলাঠেলি শুরু হয়ে গেলে পূবদিকের গেটের ওখানে, জনতার ভেতর একটা চাপা আতঙ্ক ভর করে । লোকের জমায়েত দেখলেই কিছু না বুঝেই সেই স্রোতে গা ভাসিয়ে দেয়ার যে স্বভাব আছে বাঙালীর , তা পরিষ্কার হলো জনতার ঠেলাঠেলিতে । পথশোয়া মানুষেরা যারা শিতলতম ও ছায়াফেলা বারান্দা ও পেভমেন্ট, যেখানে তারা রাতে শুয়ে থাকে ছালার চট, কার্ডবোর্ড বাক্স বিছিয়ে, নবাগত জনতার চাপ সেই সব পথশোয়া মানুষদের স্থানচ্যুত করে দিলে তারা সরে গিয়ে গণশৌচাগারের দরজার কাছে বসে ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে রইলো এই অদ্ভুত গণজমায়েতের দিকে ।
“ ----বড় সরকারের মতো ছোড ছোড সরকারও তো হাটতেছে একই রাস্তায় । উত্তর -দক্ষিন । এই যে পাশেই রইছে যে টয়লেট হেহানেও তারা বানাইয়া রাকছে বিভেদ । পুরুষ - মহিলা আলাদা আলাদা । পেসাব করতে ২ টাহা, পায়খানা - ৩ টাহা, গোছল-৫ টাহা । বাসেও পুরুষ আর মহিলা সীট আলাদা আলাদা। এই রহম ছোডখাডো -মাঝারী-বড় বিভেদ আম্নহেগো ভিত্রে সব খানেই আছে । আছেনা ? শিক্ষকগো মইদ্যে ভাগ । লাল, নীল , সাদা , সবুজ । প্রাইমারী-হাইস্কুল আর কলেজের শিক্ষকগো মইদ্যেও বিস্তর ফারাক । প্রাইমারীয়ালাগো কোনঠাসা কইররা রাখছেন আম্নহেরা । ভাগ কইররা রাকছেন টুফিওয়ালা মাদ্রসা-মক্তবের পোলাপান আর স্কুলের পোলাপানেগো ভিত্রে । ভাগ করছেন আস্তিকে , নাস্তিকে । সুশীল আর বেসুশীলে । ভাগ করছেন শাহবাগে আর হেফাজতে ।
আমার ছাত্রভাইগো মইদ্যেও ভাগ আর ভাগ । এক ভাগ, পাবলিক ভালো কিছু নিয়া রাস্তায় নামলেই পিডাইতে আহে ; আর এক ভাগ রাস্তার পাবলিকের পক্ষে নামে । পথে-ঘাডে যে সোজা হইয়া হাডবেন হের উপায়ও নাই । ফুটপাতগুলারেও ভাগ ভাগ কইররা আম্নহেরা ইজারা লইছেন । রাস্তা-ঘাড-মাঠ-ময়দান সব ভাগ কইররা হালাইছেন । কোনায় -চিপায় খুপড়ি ঘর বানাইয়া সাইনবোর্ড লাগাইছেন অমুক দল , তমুক দল , অমুক শ্রমিক দল, তমুক শ্রমিক দল। আম পাবলিকের খেদমত করার মহান ইচ্ছা লইয়া হেহানে আম্নহেরা দিনরাইত ক্যারম-লুডু খেলেন আর গাঁইটের পয়সা দিয়া দ্যাশ ও জনগণের সেবা করবেন বইল্লা সুযোগ বুইজ্জা গলা ফাডান। কিন্তুক খিচুরী-বিরানী খান এই খয়রাতী জনগনের পয়সায়।
এইযে সব ভাগ কইররা লইয়া গেছেন হেই সব ভাগের পয়সা গেছে কই, কার পকেটে ঢোকছে ? হেই পয়সা কি সরকারের ট্রেজারীতে জমা হয় ? হয়না । হেহানেও আছে ভাগ, কারে কতো ভাগ দেতে হইবে, সব হিসাব করা । অর্থমন্ত্রীরে জিগান, হে কইবে এই টাহা কোনও টাহা না । ”
হাসির ফোয়ারা ছুটলো এই মিশ্র সমাগমের মাঝে । লোকটা, যে তার পরিচয় দিচ্ছিল আইজদ্দিন বলে, সেটা ঠিক হলেও হতে পারে কিম্বা না, হতে পারে সে এক সম্ভাবনা সঞ্জাত কিছু, অলীক কিছু ভ্রম । আমাদের ভ্রম , যারা জীবনের বস্তুগত সব বিষয়আশয়ে পুষ্ট ছিলাম , কিন্তু কখনই যাদের অভিজ্ঞতায় ছিলোনা বৃক্করসের ধাবন, ব্যাপক প্রতিবাদে অংশগ্রহণ থেকে আসা ন্যায্য ক্রোধের স্বাদ । তার কথা ছাপিয়ে দঙ্গলের কথাগুলো এমন জট পেঁকে গেলো যে , কে কি বলছে শোনা ও বোঝা গেলোনা তার সব ।
সমাবেশে মানুষ বাড়ছে ধীরে ধীরে । দীর্ঘ গরম ক’টা দিনের ভিক্ষা থেকে তমসাচ্ছন্ন ও ক্লান্ত ভিখিরিরা, যারা ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিলো কিছু ভিক্ষের আশায়, তারাও বাড়াচ্ছিলো ভীড়ের আয়তন । তাদের চোখেমুখের ভাব ছিলো এমন যে, তারা যেন এসেছে সেইখান থেকে , আরেক বিশ্ব থেকে । সে জমায়েতে বর্ণ-ধর্ম, জাত-পাত,গরীব -মধ্যবিত্ত, ঠেলাওয়ালা-বাদামওয়ালা, খুচরা-পাইকারী ক্রেতা, কোর্টের মহুরী-দালাল, গুলিস্থানের চাঁদাবাজ-মাগীবাজ ইত্যাদিতে সবাই একাকার হয়ে গেলেও পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছিল বেশ কিছু উপস্থিতি, যাদের গায়ে চড়ানো ছিলো খাঁকি উর্দি । তারা ছড়িয়ে ছিটিয়ে জটলা দেখছিলো একটু দূর থেকে , হাতে ছিলো শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার মারনঘাতী যন্ত্র । তাদেরকে আগেও যেমন জনতার বন্ধু মনে হয়নি এখনও তাদের হাবেভাবে তেমন মনে হচ্ছিলো না । তারা পায়চারী করছিলো নিজেদের বৃত্তের ভেতর থেকে । যে বৃত্ত ভাঙার সাহস নেই কারও । এসব বৃত্ত, লক্ষন রেখার মতো তাদেরই আগলে রাখে যারা এদেরও আগলে রাখে সযত্নে, নিজেদের ক্ষমতা ও বলবীর্য্য রক্ষার তাগিদ থেকে ।
----“ খেলতে খেলতেও আম্নহেরা ভাগ হইয়া গেছেন আরজেনটিনা-বেরাজিল-জারমানীতে । হেগো দ্যাশের পতাকায় আকাশ ঢাইক্কা হালাইছেন । ঢাইক্কা হালাইছেন নিজেগো বিচারবুদ্ধি আর বিবেকটারেও । এক দ্যাশের ফ্লাগ যে আরেক দ্যাশে উড়ান যায়না এই জ্ঞায়ানডাও আম্নহেগো হয় নাই । দ্যাশপ্রেম যে আম্নহেগো মইদ্যে মোডেও নাই এইডাই হের পেরমান । কইবেন , খেলার মইদ্যে কোনও রাজনীতি নাই । রাজনীতি কোনহানে নাই ? এই যে আম্নহেরা আমার কতা হোনতেছেন হেহানেও মনে মনে আম্নহেরা রাজনীতি করতেছেন । কতা যাগো পছন্দ হইতেছে হেরা তালি দিতেছেন। আর যাগো পছন্দ না, হেরা মনে মনে কইতেছেন - “হারামজাদা কয় কি !”
কি ভুল কিছু কইছি ? আম্নহেরাও আমারে আম্নহেগো নিজের নিজের দলের লোক ভাবতেছেন । আসলে আমি কোনও দলের না , আমি আমজনতার । আমার কোনও কোডা নাই । ”
সমাগমের মাঝে জোরেসোরে একটা দোল উঠতেই বোঝা গেলো জনতা বেশ মজা পেয়েছে লোকটার কথায় কিম্বা দোলাটা হতে পারে তাদের কথাই আরেকজনার মুখনিঃসৃত হচ্ছে বলে ভেতরে ভেতরে উচ্ছসিত শঙ্কা থেকে উদ্ভুত । এ দোলা প্রথমে নদীর জলে হাওয়া লাগার মতো, যা পরে হাওয়ার তোড়ে তোড়ে দু’কূল ভাঙার মতো প্রবল হয়ে ওঠে ধীরে ধীরে । নিজেদের অনুক্ত উচ্চারণ এই ভরা মাহফিলে কেউ একজন সবটা এভাবে উগড়ে দিচ্ছে বলে ভয় আর কৌতুহল নিয়ে একটা অনিশ্চয়তার বাতাস যেন একটা চক্কর খেয়ে গেলো সমাগমের চারধারে । আবারও কিছু বলতে শুরু করলে হ্যান্ডমাইকের আওয়াজটা উদ্ভট কিচকিচ আর খরখর করে উঠতেই জরিনা ইলেক্ট্রনিক্সের এক কর্মচারী তার হাত থেকে মাইকটা টেনে নিয়ে তাতে গোটা দুই চড়থাপ্পড় দিতেই আবার চালু হলো মাইকটা ।
-----“ তো ভাইসাব ; এই যে জরিনা ইলেক্ট্রনিক্স আমারে হেল্প করতেছে এর জন্য আগেই জরিনা ইলেক্ট্রনিক্সরে আমার ধন্যবাদ জানান উচিত ছিলো , ভুল হইয়া গেছে ; এবারে হেগো ধন্যবাদ জানাই । এডাও কিন্তু একটা রাজনীতি ; প্রচারের রাজনীতি । আপনেরা জরিনা ইলেক্ট্রনিক্সের নামডা হোনলেন । নামডা প্রচার হইয়া গেলো । প্রচারেই তো প্রসার ? এইভাবেই তো নিজের নিজের নামে অমুক শুভেচ্ছা , তমুক শুভেচ্ছার পোষ্টার ছাপাইয়া দ্যাশটারে ভইররা হালাইছেন । এডাও তো একরহমের নিজের প্রচার । ”
যতো দরকার তার চেয়ে বেশী হাসি ছিলো তার মুখে এবং সে সৃষ্টি করেছিলো এক আনত, কিছুটা আনাড়িসুলভ বশংবদের আবহ । জরিনা ইলেক্ট্রনিক্স এর অবস্থানগত দ্রাঘিমাংশ -অক্ষাংশ নির্ধারণে সমবেত জনতার মাথা উপরে -নীচে, ডাইনে-বায়ে, কোনাকুনি, আশেপাশে ঘুরে গেলে তাদের দৃষ্টিতে আবার ধরা দিয়ে গেলো প্রতিদিনের দৃশ্যমান অথচ অবহেলা , অদেখায় পড়ে থাকা হোর্ডিংগুলো ।
“ স্বপ্ন নীড়” মতিঝিল থেকে মাত্র ১০ মিনিটের পথ । আপনার স্বপ্নের আবাসিক এলাকা ......।
মাত্র ১ মিনিটেই সব জীবানু সাফ - লাইফবয় হ্যান্ডওয়াস ........ ।
হয়তো ইতিহাস ও মানবসভ্যতার সংঘাতের একজন ছাত্রের তুলনামূলক পরিভাষায় এর বিবরণ বা গোপন ব্যাখ্যা হতে পারে এমন - আমজনতার স্বপ্নের কোনও নীড় হয়না যেখানে ১০ মিনিট কেন , ১০ সহস্রাব্দেও যাওয়া সম্ভব নয় কারো । সমাজের যতো নোংরা জীবানু থেকে বাঁচাতে তেমন একটা হ্যান্ডওয়াস নিয়ে কে আসবে, কবে !
-----“ এই যে স্বপ্ননীড়ের সাইনবোর্ড দ্যাকতেছেন , এইরহমের স্বপ্ননীড় তো আম্নহেরা এদ্যাশে বানান নাই । ব্যাংকের টাহা , শেয়ার বাজারের টাহা নিয়া অন্য দ্যাশে স্বপ্ননীড়ের ভিত গাড়ছেন । আম্নহেগো মাইয়া পোলা হেই দ্যাশে থাহে । আম্নহে থাহেন এহানে পইড়রা। ক্যান ? হেই স্বপ্ননীড়ডারে সোনা দিয়া বান্দাইতে টাহার যোগান দেওয়ার মতো টাকশাল , এই দ্যাশটা ছাড়া আম্নহে আর কোতায় পাইবেন ? এই দ্যাশটা তো আম্নহেগো টাহার খনি । কয়লা খনির কয়লা দিয়া দাত মাইজজা হালাইছেন বুড়িগঙ্গায় , হের লইগ্যাই নদীডার পানি এতো কালা কালা । মাঠ-ঘাট তো আগেই খাইছেন এহোন পাত্থরও খাইতেছেন । আম্নহেগো এই খাই খাই যায়না । কিভাবে কি খাইতে হয় সব কায়দা-কানুন আর ইঞ্জিনিয়ারিং আম্নহেগো মুখস্ত। রাস্তা, দালান, কালভার্টে দেশি প্রযুক্তি ব্যবহার কইররা রডের বদলে বাশ দিয়া বানাইন্না শিইক্কা হালাইছেন আম্নহেরা । এর চাইতে বড় সাশ্রয়ী আবিস্কার আর কি আছে ? এই উদ্ভাবনের জইন্যো আম্নহেগো একটা নোবেল প্রাইজ পাওনা হইছে .......................”
লোকটার কথা চাপা পড়ে গেলো সমবেত জনতার বাঁধভাঙা আবেগের ব্যক্ত সব মূহর্মূহ ধ্বনিতে । তাতে ভয় পেয়ে আশেপাশে থাকা গুটি কয়েক কাক উড়ে যেতে যেতে ভয়ার্ত চীৎকার জুড়ে দিলে তা মিশে গেলো জনতার ধ্বনির সাথে। হুড়োহুড়ি লেগে গেলে সেখানে নতুন করে জড় হতে থাকলো বাস্তুচ্যুতরা, যারা গা-গেরাম থেকে এসে আশ্রয় নিয়েছিলো নগরীর কোনাকাঞ্চি, ফুটপাথ, পার্ক, রেলষ্টেশন আর বাসস্ট্যান্ডের ঘুপচিতে । যারা আবির্ভুত হতো দলে দলে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত মসৃন গাড়ীগুলোর চারপাশে । বিক্রি করতো কাপড়ের ঝাড়ন, পাটের তৈরী হাতব্যাগ, ফুলের দোকান থেকে কুড়িয়ে আনা ফুল, মোবাইল ফোনের চার্জার, ইয়ার ফোন , বাঘ-হাতি আঁকা শিশুদের বই, বেহেশতি জেওর- সহিহ হাদিস আর নামাজ শিক্ষা- সাধারন জ্ঞানের বই, ঝিলমিল করে জ্বলে নেভে এমন সব খেলনা, পিস্তল, বানিজ্য বিষয়ক সাময়িকী, বিল ক্লিনটন -নেলসন ম্যান্ডেলার আত্মজীবনী, ৬৪জেলার ম্যাপ, সেফটিপিন, চুলের ফিতা-রাবার ব্যান্ড, সস্তার নেইল পলিশ-কানের দুল । বানের জলের মতো তাদের আগমনে জনতার পরিধি ছড়িয়ে গেলো খোলা জায়গাটা ছাড়িয়ে রাস্তায় । রাস্তায় জ্যাম লেগে গেলে একটা রগূড়ে খেলা জমে ওঠার আশায় খাকি উর্দিপরাদের মাঝেও জমতে থাকলো অস্থিরতা আর ঘৃনা । তাদের কাজের এই উটকো , নির্দয় দিকগুলোর প্রতি বিদ্বেষ ।
এইসব খাকি পোষাকধারীদের দলনেতার ছিলো একজন আঁতেলের অভ্রান্ত, সিগ্রেট খাওয়া ঠোটের গভীর ছিনালিপূর্ণ মুখচাপা হাসি, যা ছিলো কূটনৈতিক মহল্লায় থাকা মানুষজনের মতো ধোয়াশায় ভরা । যার অর্থ হতে পারে দুই, তিন বা বেশী রকমের । প্রশ্রয়ের বা নিগ্রহের কিম্বা জিঘাংসার বা স্রেফ উপরিওয়ালাদের ( পুতুল নাচের দড়ি টানাওয়ালাদের ) খুশি রেখে নিজেদের উচ্চপদ লাভের প্রতিযোগিতার ।
এইমাত্র তাদের সাথে এসে জমা হলো এক ভ্যান কালোউর্দির লোক । এরা বসে রইলো তাদের বহন করে আনা একটা লক্করমার্কা পিকআপের লোহার রড ধরে । ৫ মিনিটের পথ ২৫ মিনিটে পাড়ি দিয়ে পিকআপটিকে আসতে হয়েছে সৃষ্টিছাড়া আর বিশৃঙ্খল ভাবে চলা বাস-টেম্পুর ঘসা থেকে নিজেদের গা বাঁচিয়ে , রিক্সা-ভ্যান ধাক্কা লেগে উল্টে না যায় সেদিকে সতর্ক চোখ রেখে রেখে আর যত্রতত্র রাস্তা পার হওয়া পথচারীরা যাতে চাপা না পড়ে তার জন্যে সন্ত্রস্ত থেকে । এখন অনেকটা নির্লিপ্ত পিকাআপের আরোহীরা । খাকিউর্দিরা জমে ওঠা বক্তৃতার ক্রমশঃ গরম হয়ে ওঠা আবহাওয়াটাকে সামাল দিতে না পারলে দৃশ্যপটে তাদের নেমে পড়ার কথা । কালোউর্দিরা তাই অপেক্ষায় । ধোপ-দুরস্ত কালো পোষাকের ভেতরে এঁটে থাকা মুখগুলোয় যদিও ক্লান্তির ছাপ । সুরক্ষিত প্রাচীরের ভেতর বসবাসকারী সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তি বিশেষের অঙ্গুলি হেলেনে , সব অপবাদ গায়ে মেখে জীবনটাকে যারা গলার কাছে আটকে রেখেছে তা থেকে উঠে আসা বিবমিষার বিষাদ মাখা এক একটা মুখ ।
....“ তো আমরা হইলাম বিশ্ব-বেহায়া আর আহাম্মক -বেকুব ! আমার-আম্নহের দ্যাশটা লুডেপাডে , খাই খাইতে যে ফোপড়া হইয়া গেছে , হেদিগে আমাগো নজর নাই, হুশ নাই । নিজের ঘরের, বাসাবাড়ীরও খবর নাই । লাখ টাহা খরচ কইরা পরের পোলার জন্মদিনে শুভেচ্ছার পোস্টার ছাপাইয়া রং করা দেয়ালগুলার চেহারার বারোটা বাজাইছেন । নিজের কয়ডা পোলা , হেগো জন্মদিন কার কবে , হেডা জিগাইলে আম্নহে কইতে পারবেন না । খবর নাই নিজের পোলাপানের লেহাপড়ারও । অন্য মাইনষে লেহাপড়া না কইররা কি ডিগ্রী পাইছে , হের লইগ্যা পাবলিকের পাছায় বাঁশ দিয়া রাস্তা আটকাইয়া রাকছেন আনন্দ মিছিলে মিছিলে । আমার-আম্নহের মতো এরহম বেকুব আর কেডা আছে ? আম্নহেরা হইছেন, বেগানা শাদী মে আবদুল্লাহ দিওয়ানার মতো ।
তয় আম্নহেগো বেকুবও বা কই ক্যাম্নে ? আম্নহেরাই আসলে সবাই ধান্ধাবাজ আর শিয়ালের মতো চালাইক্কা । এতে আম্নহেরা লাভে লাভ খোজেন । নেতাগো চোহে পড়লে যদি ভাগ্য খুইল্লা যায় , হেলে ছাপড়া ঘরডারে ভাইঙ্গা দালান উডাইতে , বিড়ি টানা বাদ দিয়া বেনসন ধরতে আর কয়দিন ? আম্নহেগো এই খচ্চইররা স্বভাব বুইজ্জাই তো আসল মানুষেরা আম্নহেগো মাতায় কাডাল ভাইঙ্গা খায় । আম্নহেরাও মাতাডা আউগাইয়া দ্যান যদি কাডালের একটা দুইডা কোয়াও আম্নহেগো কফালে জোডে । এই রহম লোভের চেতনা-ই আম্নহেগো খাইছে ...................“
কথা বলতে বলতে ঠোটের প্রতিসাম্য বদলে লোকটার চেহারাটা হয়ে উঠেছিলো উদ্ধত । এটা ছিলো তার তীর্যক দৃষ্টি , তার মুখের গড়ন , অনাহারী গালের মাংশপেশীতে টান ধরা প্রায় অদৃশ্য ক্ষতচিহ্ণ । একজন জ্ঞানীর মতো তার বিড়ি-সিগ্রেট-পান চর্চিত ঠোট থেকে উপচে আসা প্রতিটা শব্দ লুফে নিতে চেষ্টা করে যাচ্ছিলো সমবেত জনতা । তারা হয়তো বুঝতে চেষ্টা করছিলো -নিজের নিজের অবস্থান ।
লোকটার প্রলাপ , যদি তা প্রলাপ হয় ; কিম্বা আলোর বৃত্তের ঠিক বাইরে এযাবৎ ঝুলে থাকা অন্ধকারে , রিক্সায় পিঠ ঠেকিয়ে বিশ্রাম নেয়া সত্যালোকের স্পটলাইটটি ঠিক কোনখানে গিয়ে আঘাত করছে তা মেপেঝেপে নিচ্ছিল জনতার কেউ কেউ । আঁকিবুঁকি কেটে যাচ্ছিলো তাদের মগজ বা মনের নোটবুকে । তারা সংশয়ে ছিলো , অনুকম্পা যদি হয় ন্যায়শাস্ত্রের মর্মবস্তু , দুঃখ-দুর্দশা তাহলে হবে সংক্রামক এবং সুখ হবে সকল সন্দেহের বস্তু । যেসব কলকাঠি নেড়ে তারা পার করে এসেছে এ যাবৎ যতো দৈনন্দিকতা, তার অনেক কিছুই যুক্তির অতীত, অনিশ্চিত, অবৈধ, অন্ধকার আর রহস্যময় । সব গোপন, পাপোন্মুখ আর অকথ্য জীবনযাপনের সামগ্রী, কে কতোটুকু ভোগ করছে তার ছবি বায়োস্কোপের মতো ভেসে যাচ্ছিলো তাদের চোখে ।
বাকীরা ছিলো তাদের নিজ নিজ চিন্তা ও কর্মের পরিধির মধ্যে । উদাস মুখ করে , কিছু জানেনা এমন ভাব ধরে কেউ কেউ অন্যের পকেট সাফাইয়ের কাজটি করার সুযোগ খুঁজছিলো । তারা এক একটা দল , সুযোগ সন্ধানী, নিজেদের মতো । যেমন দল আছে বাটপারদের , নগর বনিতাদের, হকারদের । জনতার ভীড়ে মিশে গিয়ে তারা সবাই মিলে একটা মচ্ছবের অপেক্ষায় শান দিচ্ছিলো নিজেদের নিজেদের এলেম এর অস্ত্রে ।
খাকি উর্দিওয়ালারাও সতর্ক রেখেছিলো তাদের শ্রবন । ঢিল দেয়া মাংশপেশীতে খানিকটা সচলতার আভাস দেখাতে সচেষ্ট ছিলো কালোউর্দির লোকেরাও ।
“............আম্নহেরা সুবোধরে পলাইয়া যাইতে কইছেন । সুবোধরে ক্যান পলাইতে কইছেন ? সুবোধ সূর্য্যডারে খাচার বুহে লইয়া যে পলাইন্না দৌড় দৌড়াইতেছে হেমন দৌড়ানী তো আম্নহেরা জম্মের পর হইতেই দিতেছেন । আম্নহের পোলামাইয়ারাও দেবে । সুবোধরে কইছেন হের নাহি কোনও ভবিষ্যৎ নাই । ভবিষ্যৎ তো আম্নহের পোলামাইয়াগোও নাই । আম্নহেগো খাই খাই আর ভাগাভাগিতে পইররাই তো দ্যাশটার ভবিষ্যৎ অন্ধকার । সুবোধরে কইছেন, এহোন সোমায় ঠিক না । সোমায় কবে ঠিক আছিলো ? একাইত্তোইরে ঠিক আছিলো ? আম্নহেরা যুদ্ধ কইররা মুক্তির সূর্য্যডারে উডাইছেন না ? হেই আম্নহেরাই এহোন সোমায় ঠিক না কইয়া হেই সূর্য্যডারে লইয়া সুবোধরে পলাইয়া যাইতে কইতেছেন । কই যাইতে কইতেছেন ? আম্নহেগো সোমায় কবে হইবে , কইতে পারেন ? কার ডরে , কিসের ডরে আম্নহেগো সোমায় ফুরাইয়া গ্যাছে ? এই তো কোন দ্যাশে জানি রোড এক্সিডেন্টে মাত্র ১৪ জন পাবলিক মরছে বইল্লা সড়ক মন্ত্রী আর খোদ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীরে সহ ৩ মন্ত্রীরে সরাসরি বরখাস্ত করা হইছে ! আমাগো দ্যাশে পেত্যেকদিন তো এর চাইয়া বেশী মরে । বাসের চাপায় মরে ,লঞ্চ ডুইব্বা মরে, ধর্ষনের চোডে মরে । হেলে রোজ কয়জন মন্ত্রীরে বরখাস্ত করা লাগে ? অংক কইরা কন, অংক বোজেন তো ? অংক পারলে হিসাব কইররা দ্যাহেন দ্যাশে এতোদিনে কোনও মন্ত্রী থাহার কতা না ............. “
জনতার সমাবেশের ভাব ও ভাষার দিকে, তাদের অস্থিরতা আর নৈর্ব্যক্তিক চলাফেরার দিকে দৃষ্টি দিলে মনে হতে পারে এটা ছিলো লোকটার একটা সহযোগিতামূলক ঝুঁকিপূর্ণ উদ্যোগ । তাদের শত্রুদের চিনতে শেখানো যাতে তাদের ও তাদের পরবর্তী প্রজন্মের লড়াই করার পালা যখন আসবে তখন তারা ব্যাপারটা “ছাত্র আন্দোলন” এর মতো কিছু একটা সংগ্রামে যেন নেমে পড়তে পারে ।
অফিসফেরৎ কেরানী , ঘরে ফিরে যেতে উদ্দ্যত অসংখ্য বেকার মজলুম মানুষ , পরিশ্রান্ত দিন-মজুর, নির্মান শ্রমিক, বাস-টেম্পুর হেল্পার, সিএনজির ড্রাইভার , টেম্পুর যাত্রী, পকেটমার, হকার, ধান্ধাবাজ, কালো গাউনের উকিল আর তাদের মহুরী , জিন্স পড়া ছাত্র , কর্মজীবি মহিলা, সরকারী আমলা, জুতো-প্যান্ট বিক্রয়কারী, চাটুকার, রাস্তার মাস্তান- নেতা- পাতিনেতা , পান-বিড়িওয়ালা, দেহ পসারিনী, টোকাইরা যেন এই মূহুর্তে আবদ্ধ হয়ে গেছে একটা ঘোরের পৃথিবীতে । আইজদ্দিন কিম্বা আইজদ্দিন নয় এমন লোকটা যেন চিনিয়ে দিচ্চে সেই পৃথিবীটাকে যে পৃথিবীটা সম্পূর্ণ আলাদা একটা পৃথিবী- গাঁথুনিহীন, পথহীন, আলোহীন, নিয়মহীন, বন্য, বিপদজনক এক পৃথিবী, যেখানে বাস, ট্রাক, রিকসা, সাইকেল , ভ্যান , ঠেলাগাড়ী আর পথচারীরা টিকে থাকার জন্যে গুতোগুতি করছে দিনরাত ।
জনসম্মুখে এমন কাজ তাকে যে সময়ের নিয়ন্ত্রকদের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেবে, এটা হয়তো লোকটা ভেবেছিলো কিনা , না কি ভাবেনি ; জানা গেলোনা। তার উগড়ে দেয়া কথাগুলোতে চাবুক পড়লো যেন কিছু লোকের গায়ে । “ ধর .... ধর” করে তাদের গলার স্বরগ্রাম উঁচু হলে লোকটার কথা চাপা পড়ে গেলো তাতে । হুড়োহুড়ি , ঠেলাঠেলিতে তার হাতের হ্যান্ডমাইকটা ছিটকে গেলো যেন কোথায় । “ শালারে পিডা....” বলেই কে একজন হাতের হকি ষ্টিক নিয়ে ছুটে এলে তার প্রথম আঘাতটা এসে লাগলো লোকটার কোমড়ের কাছটাতে । মানুষটা টুলের উপর থেকে মাটিতে পড়ে গেলে সেখানটা ফাঁকা হয়ে গেলো নিমিষে । সে ফাঁকা জায়গাতে দেখা গেলো রাম-দা হাতে কিছু তরুনকে ।
খাকি উর্দিপড়াদের হুংকারে আর লাঠিচার্জে, আগত তরুনদের হাতে রাম-দা দেখে জনতা ছত্রখান হয়ে গেলে সমাবেশের জায়গাটিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে দেখা গেলো জুতো-স্যান্ডেল, রুমাল, সিগারেটের প্যাকেট, ছেড়া কাগজ, পানের পিক । এতোক্ষন যারা যারা নিজেদের এলেমে ধার দিচ্ছিলো তারা সুযোগ বুঝে নেমে পড়লো কাজে । ঘন্টাখানেকের ভেতরেই সমাগমের প্রাঙ্গনটি সাজলো আবার আগের মতোই জন কোলাহলে । মাঝখান থেকে লোকটা হাপিস হয়ে গেলো খাকিউর্দিদের সাথে আনা কালচে নীল রঙ ভ্যানের গহ্বরে । ধুয়েমুছে গেলো বাতাসে ভেসে থাকা আইজদ্দিন নামের লোকটার কথা । উড়ে গিয়ে লাইটপোষ্টে এতোক্ষন বসে থাকা কাকগুলো ডানা ঝাঁপটে তারস্বরে ডেকে উঠলো শুধু । এটা তাদের একধরনের প্রতিবাদ কিনা , আইজদ্দিন নামের লোকটা ঠিক বুঝে উঠতে পারলোনা । । এছাড়া কোথাও কোন ছন্দপতন হলোনা , না পথচলতি বাস-ট্রাক-টেম্পুর প্রতিযোগিতায় , না নগরের চিরায়ত দৃশ্যপটে ।
শুধু দিনটা গড়িয়ে গেলো সন্ধ্যা থেকে রাতে আর একটি দিনের অপেক্ষায় ....
[ পরিভাষা ---- মনে লয় > মনে হয় । আম্নহেরা > আপনারা । আম্নহেগো > আপনাদের । দেওয়ালের লেহা > দেয়ালের লেখা । পইররা থাহে > পড়ে থাকে । খাড়াইন্না > দাঁড়ানো । হেহানেও > সেখানেও । হালাইছেন > ফেলেছেন । হাডবেন > হাটবেন । জ্ঞায়ানডাও > জ্ঞানটিও । মোডেও > মোটেও । পেরমান > প্রমান । হেরা > তারা । কোডা > কোটা । হের লইগ্যাই > সে জন্যেই । শিইক্কা > শিখে ফেলা । লুডেপাডে > লুটেপাটে । হেদিগে > সেদিকে । জিগাইলে > জিজ্ঞেস করলে । ক্যাম্নে > কি করে ।
হেলে > তাহলে । মাতাডা > মাথাটি । আউগাইয়া > এগিয়ে দেয়া । কফালে জোডে > কপালে জোটে । খাচার বুহে > খাঁচার বুকে । সোমায় > সময় । একাইত্তোইরে > একাত্তুরে । পেত্যেকদিন > প্রতিদিন । চোডে > চোটে । ]
০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:৩৯
আহমেদ জী এস বলেছেন: মোস্তফা সোহেল ,
হা..হা...হা... কমেন্টো হয় নাই , হাজিরা হইছে ।
যা্উক, ১০০ মিটার স্প্রীন্টে প্রথম হওয়ায় আপনারে ভিক্টরী ষ্ট্যান্ডে আসার অনুরোধ জানানো যাইতেছে .....
২| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:৩৮
শিখা রহমান বলেছেন: খুব ভালো লেগেছে। দুর্দান্ত লেখা, প্রতিবাদী আর যুগোপযোগী। খুব কম লেখকই সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় অব্যবস্থাকে এমন সুন্দর করে বিদ্রুপাত্মক কথার মোড়কে উপস্থাপন করার ক্ষমতা রাখেন। আপনি পেরেছেন এবং খুব ভালোভাবেই পেরেছেন।
লেখাটার জন্য কৃতজ্ঞতা। ভালো থাকবেন। শুভকামনা।
০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:০৩
আহমেদ জী এস বলেছেন: শিখা রহমান ,
অজস্র ধন্যবাদ এতোবড় একটা লেখা পড়ার ধৈর্য্য ধরেছেন দেখে । আর এমন মন্তব্য এই লেখাটিকে তার যোগ্য সমাদর দিয়েছে সন্দেহ নেই । আপ্লুত ।
ব্লগান্তরে জেনেছি সম্প্রতি আপনি দেশে এসেছিলেন , হয়তো কিছু উত্তাল মূহুর্ত দেখে থাকবেন । লেখাটি সেসব মূহুর্তগুলির পেছনের গল্প হবেও বা !
শুভকামনা আপনার জন্যেও ।
৩| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:৩৯
রাজীব নুর বলেছেন: কুইজ --
প্রশ্নঃ ইলিশের রাজধানী বলা হয় কোন শহরকে ?
০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:২১
আহমেদ জী এস বলেছেন: রাজীব নুর ,
প্রসঙ্গ বাদ দিয়ে মন্তব্য করার অভ্যেস, আপনার উপস্থিতি জানান দেয়ার একটা কূটকৌশল ! এতে পোস্ট না পড়েও প্রথম মন্তব্যকারীর পুরষ্কারটি মেলে । আপনার যা প্রতিভা তাতে এই ধরনটা দৃষ্টিকটু লাগে ।
প্রশ্নের উত্তরঃ কাওরান বাজারের শহরটাকে
৪| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:৩০
মোস্তফা সোহেল বলেছেন: যে স্বপ্ন আর আশা নিয়ে মুক্তি যোদ্ধারা এদেশে স্বাধীন করেছিলেন সেই স্বপ্ন-আশা কি তাদের পূরন হয়েছে?
এই এক দেশে কত বিভক্তি!জনগনই নাকি সব ক্ষমতার উৎস অথচ সেই জনগনই এ দেশে কত অবহেলিত।
গল্পের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত টান-টান উত্তেজনা ছিল।এক কথায় খুব ভাল হয়েছে।
ভাল থাকুন সব সময় ভাইয়া।
০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:০৪
আহমেদ জী এস বলেছেন: মোস্তফা সোহেল ,
তাহলে ১০০ মিটার স্প্রীন্টের মেডেলটি গলায় ঝোলাতে এলেন ! অনেক অনেক ধন্যবাদ ।
" জনগনই সকল ক্ষমতার উৎস" এটাই ইতিহাসের সত্য । আমরা জনগন যে আসলেই "জনগণ" পদবাচ্য নই এবং আমাদের প্রতিক্রিয়া যে শুধু নিজেকে বাঁচিয়ে চলা, তাকেই ইঙ্গিত করে লেখাটি । আমরা মরুর ঝড়ে বালিতে মুখ লুকিয়ে রাখা এক দঙ্গল উটপাখি । ঝড়ের মোকাবিলা না করতে পারলে তো অবহেলিত হবোই ।
ভালো থাকুন আপনিও । শরৎ শুভেচ্ছা ।
৫| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:৪১
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: অসাধারন!
একজন আইজদ্দিন অথবা সুবোধ যেন প্রত্যেক আমজনতার নিজেরই প্রতিচ্ছবি, অধরা স্বপ্ন, ব্যাথা, প্রতিবাদ
আর কিছু করতে না পারার গোপন বেদনা!
এই সত্য গুলো সকলেই জানছি, বুঝছি, কিন্তু কাল গহ্বরে ঢোকার ভয়ে সব জেনে বুঝেও নিরবে আপোষে
সয়ে যাচ্ছি! বেঁচে থাকার চরম লোভে মৃতের মতো বেঁচে থাকাতেই কৃতার্থ বোধ করছি।
প্রবোধের দুয়ারে নানা যক্তি, কুযুক্তি আর অজুহাতে - নাহ! ঠিকইতো আমি একা কি করতে পারবো?
নিজেই প্রবোধ দিয়ে নিজের ভ্যার্থতা, দায়হীনতা, আর নংপুংশকতা যা চোখে দৃশ্যমান হয়ে ওঠে তাকে আড়াল করি!
তারপর! নিত্য কিছু সংবাদে ভাবলেষহীন চোখ বুলিয়ে অপেক্ষায় থাকি- অন্য কারো শিরোনাম পাঠের অপেক্ষায়!
পোষ্টে +++++++++++
০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৩৭
আহমেদ জী এস বলেছেন: বিদ্রোহী ভৃগু ,
অনুধাবনের পাল্লায় তুলে মেপে গেলেন , ব্যাপক প্রতিবাদে অংশগ্রহন না করতে পারা থেকে আসা ন্যায্য ক্রোধের স্বাদ ।
আমরা যারা শিতলতম গৃহকোন ও ছায়াফেলা বারান্দা, যেখানে আমরা শুয়ে থাকি ঘূর্ণায়মান পাখার নীচে আর স্বপ্নের জাল বুনি নিজেদের বৃত্তের ভেতরে , কোনও এক আইজদ্দিন পরবর্তী প্রজন্মের লড়াই করার পালার কথা বলে আমাদের সেখান থেকে স্থানচ্যুত করে দিলে আমাদেরও সরে গিয়ে বোধের পেভমেন্টে বসে ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে থাকা ছাড়া উপায় থাকেনা ।
আইজদ্দিন আমাদেরই বিবেক , চিনিয়ে দেয় সেই পৃথিবীটাকে যে পৃথিবীটা সম্পূর্ণ আলাদা একটা পৃথিবী- গাঁথুনিহীন, পথহীন, আলোহীন, নিয়মহীন, বন্য, বিপদজনক এক পৃথিবী, যেখানে বাস, ট্রাক, রিকসা, সাইকেল , ভ্যান , ঠেলাগাড়ী আর আমরা মিলে টিকে থাকার জন্যে গুতোগুতি করছি দিনরাত ।
এ আমাদেরই বোধিগল্পের শিরোনাম । অন্য কারো শিরোনাম পাঠের অপেক্ষায় থাকার প্রয়োজন বোধহয় নেই ।
মন্তব্যের জন্যে অশেষ ধন্যবাদ ।
৬| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:৫৩
ঢাবিয়ান বলেছেন: পোষ্টে +++++++++
০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৪৩
আহমেদ জী এস বলেছেন: ঢাবিয়ান ,
ধন্যবাদ ।
৭| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:০৬
মনিরা সুলতানা বলেছেন: অনেক সময় নিয়ে , বেশ বড় করে প্রায় সমসাময়িক সব অসংগতি গুলো তুলে আনলেন লেখায় এক আইজুদ্দির মাধ্যামে।
অনেক ভালো হয়েছে লেখা!!
লেখায় +++++
০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০৬
আহমেদ জী এস বলেছেন: মনিরা সুলতানা ,
এতোবড় লেখাটি পড়ে মন্তব্য করাতে ধন্যবাদ ।
তবে অসংগতি নয় তুলে এনেছি আপামর মানুষের অপ্রাপ্তি আর হাহাকারের নেপথ্য অনুঘটকগুলোকে । আমাদের নির্বিকার সত্ত্বাকে ঘা মেরে বাঁচাতে চেয়েছি শুধু । অন্যের দিকে অঙুলি নির্দেশের আগে নিজের নিজের এলেমের , চিন্তা ও কর্মের পরিধির দিকে আমরা
যেন তাকিয়ে দেখি আগে ।
প্লাস দেয়াতে কৃতজ্ঞ । শুভেচ্ছান্তে ।
৮| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:০৮
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: সামুতে অ্যাকাউন্ট খুললে ব্লগার হওয়া যায় । আজকেই একটি পোস্টে দেখছিলাম সামু অনেকটা ফেবু হয়ে গেছে বলে জনৈকব্লগার আক্ষেপ করেছেন। আমিও সহমত দিয়েছি । কিন্তু কী আর করা যাবে। ব্লগে ব্লগার তুলে ধরে নিজের সৃজনশীলতা। নিজের চিন্তা শক্তির গভীরতা । আমরা ব্লগে একে অপরকে চিনিনা। কিন্তু চিনি তাঁদের বিচক্ষণতায়, তাদের ক্ষুরধার কমেন্টে কিমবা পারস্পারিক মিথোস্ক্রীয়ায়। আর তখনই তাঁরা নিজেদেরকে তুলে ধরেন অন্যদের তুললায় অনেকটা উপরে। ফলে তাঁদের প্রতি চলে আসে একটা শ্রদ্ধাবোধ। মন সায় দেয় কুর্নিস জানাতে। আপনার আজকের পোস্টকে রইল স্যার আমার অন্তরের কুর্নিস ।
এবার আসি পোস্ট প্রসঙ্গে, আপনি বিষয়টি অবগত আছেন জেনেও বলছি । উনবিংশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে বিভিন্ন রাজনৈতিক সভা- সমিতির সঙ্গে বিভিন্ন নাটক কবিতার মাধ্যমে মধ্যবিত্ত শিক্ষিত সম্প্রদায় এদেশে ব্রিটিশের বিরুদ্ধে জনমত গড়ার চেষ্টা করেছিল। সেখানেই আমরা প্রথম পরিচয় পেয়েছিলাম, বিভিন্ন ব্যাঙ্গাত্মক বা প্রহসন মূলক নাটকের । যেগুলি পরে আবার বিভিন্ন নাটকের মাধ্যমে মঞ্চস্থ হত। সরকার নবউত্থিত জাতীয়তাবাদকে নষ্ট করতে সেসময় বিভিন্ন দমন মূলক আইন প্রয়োগ করেছিল ।
আজ আপনার পোস্টটিকে আমি স্থানটি একটি বদলে কলকাতার স্টার থিয়েটারে দিয়ে দিলাম। বাকিটা আর বললাম না। তবে বর্তমানে নন্দনে দিলে অগ্রিম বুকিং না করলে যে টিকিট পাওয়া যাবেনা, তা আমি নিশ্চিত ।
অন্তরের বিনম্র শ্রদ্ধা আপনাকে।
০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:৩২
আহমেদ জী এস বলেছেন: পদাতিক চৌধুরি ,
এমন ধারার মন্তব্য করে প্রতিমন্তব্য করাটাকে আমার জন্যে কঠিন করে দিয়ে গেলেন । আপনার এই অন্তরের কুর্নিস মাথায় তুলে রাখলুম ।
বর্তমান সমাজে কোনও সম্প্রদায়ই মনে হয় কোনও প্রতিরোধ্য কিন্তু অবিশ্রান্ত ভাবে ঘটানো অন্যায়গুলোর বিরূদ্ধে বৃহত্তর জনমত গড়ে তোলায় নাটক, কবিতা , প্রহসন ইত্যাদির কোনও বড়সড় আয়োজনই সফলতার সাথে করেনি যেমনটা বৃটিশদের বিরূদ্ধে করা গেছে । ক্ষুদ্র পরিধিতে যা কিছুইবা হয়েছে তা ক্ষমতার ঝড়ে উড়ে গেছে ।
তৃতীয় প্যারাতে যেটুকু বললেন এবং শেষে বাকীটুকু বলতে গিয়েও বললেন না , তা বোধগম্য হয়নি । কলকাতার নাটক পাড়া সম্পর্কে আমার জ্ঞান বইয়ের পৃষ্ঠায় সীমিত । ষ্টার থিয়েটার বনেদী-খানদানী আর নন্দন নতুন প্রজন্মের ক্রেজ, এটুকু জানি । ঝেড়ে কাশলে বোঝা যেতো ।
অনেক অনেক ভালো থাকুন । অন্তরের শুভেচ্ছা রইলো ।
৯| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:২৮
শাহরিয়ার কবীর বলেছেন:
"এক ঘোড়া,এক চাবুকের কাছে সমস্ত আইজুউদ্দিনরা নির্বাক। যুদ্ধক্ষেত্রে ঘোড়ার, চাবুক কিংবা তরবারি না থাকলে কখনোই যুদ্ধে জয় লাভ করা যায় না" দুঃখের বিষয় সত্য কথা মাইক দিয়ে বলা যায় না, এখন এই শিক্ষায় শিক্ষিত সবাই। কান আছে শুনো আর চোখ আছে দেখো।
প্রতিবাদী লেখায় +++
তারপর! নিত্য কিছু সংবাদে ভাবলেষহীন চোখ বুলিয়ে অপেক্ষায় থাকি- অন্য কারো শিরোনাম পাঠের অপেক্ষায়!
বিদ্রোহী ভৃগু ভাইয়ের মত আমিও একজন নিজের দেশের নীরব দর্শক।
০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:১৭
আহমেদ জী এস বলেছেন: শাহরিয়ার কবীর ,
আইজুউদ্দিনরা সবাই নির্বাক নয় কেউ কেউ সবাক । তেমনই এক আইজুউদ্দিন ভৃগু আর কবীরের মতো লোকদের ঘা মেরে জাগিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন গল্পে ।
এই তথাকথিত শিক্ষিত হওয়াটাই বড় ভয়ের । এরা গুটিয়ে থাকে শামুকের খোলে , নিজের নিরাপদ বর্ম গায়ে চড়িয়ে অথচ দেশটা অন্ধকার হলে এরাই চেল্লায় বেশী ।
লেখাটিতে প্লাস দেয়াতে কৃতজ্ঞ । এবং এতো বড় লেখাটি পড়ার জন্যে ধন্যবাদ ।
১০| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:২৪
ভুয়া মফিজ বলেছেন: পোষ্টের প্রথম দু'টা বাক্যই পাঠকের পূর্ণ মনোযোগ আকর্ষনের জন্য যথেষ্ট!
একটা জমায়েতের মধ্যে পুরো দেশটার প্রকৃত চিত্র তুলে ধরেছেন, দেশের সকল চরিত্রকেই চিত্রায়ন করেছেন দারুন দক্ষতায়! এদেশে সত্যকে তুলে ধরলে, প্রতিবাদী হলে পরিনতি কতোটা ভয়াবহ হতে পারে, সেটাও বোঝা গেল আপনার চরিত্রের মাধ্যমে।
সবমিলিয়ে দারুন!!!
০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:৫০
আহমেদ জী এস বলেছেন: ভুয়া মফিজ ,
চমৎকার অনুধাবন ।
একটা কালবেলার ছবি আঁকতে চেয়েছি যে কালটাতে আমাদের পৃথিবী যেন অন্য এক পৃথিবী । যে পৃথিবীটা সম্পূর্ণ আলাদা - গাঁথুনিহীন, পথহীন, আলোহীন, নিয়মহীন, বন্য, বিপদজনক এক পৃথিবী, যেখানে বাস, ট্রাক, রিকসা, সাইকেল , ভ্যান , ঠেলাগাড়ী আর পথচারীরা টিকে থাকার জন্যে গুতোগুতি করছে দিনরাত ।
১১| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:৩৬
অপ্সরা বলেছেন: আমি কিন্তু পুরাটাই পড়েছি।
যদিও দেশ, দশ সমাজ নিয়ে কঠিন কথাগুলি আমি বুঝিনা বা তেমন মাথায় ঢুকাই না। তাই হয়ত আইজদ্দিনের মত কষ্ট আমার নেই । তার মত চোখও নেই, মুখও নেই মানে চোখ থাকিতে অন্ধ হয়তো বা।
তবুও আইজদ্দিন হয়েই বা লাভ কি শেষে তো পড়তে হয় ধরা খাকি উর্দির হাতে, যেতে হয় নীল ভ্যানের গহ্বরে......
০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:১৩
আহমেদ জী এস বলেছেন: অপ্সরা ,
হা...হা...হা... এতোদিন কি শুধু আধেকটা বা কিছুটা পড়েছেন আমার লেখা ? নট গুড !
এবারেই পুরোটা ? তবে তো আপনার আইসড ক্রীম ( নট আইসক্রীম ), হট চকোলেট ব্লা ..ব্লা...ব্লা.. পাওনা হয়েই গেছে !
আইজদ্দিনের মত কষ্ট হয়তো আপনার নেই কিন্তু অনুভব তো আছে খানিকটা হলেও ? অনুভব এর জন্যে মুখ, চোখ না হলেও চলে ; লাগে বোধ ।
আর সব মানুষের মধ্যেই একটা আইজদ্দিন বাস করে । খুঁজে নিতে হয় । আইজদ্দিন আমাদেরই বিবেক , চিনিয়ে দেয় সেই পৃথিবীটাকে যে পৃথিবীটা সম্পূর্ণ আলাদা একটা পৃথিবী- গাঁথুনিহীন, পথহীন, আলোহীন, নিয়মহীন, বন্য, বিপদজনক এক পৃথিবী, যেখানে বাস, ট্রাক, রিকসা, সাইকেল , ভ্যান , ঠেলাগাড়ী আর আমরা মিলে টিকে থাকার জন্যে গুতোগুতি করছি দিনরাত ।
যেমন করছে আপনার "মঞ্জুরা, দিলজান আর সফুরা " ।
লেখাটি পড়া এবং তাতে প্লাস দেয়াতে ধন্যবাদ । শুভেচ্ছা জানবেন ।
১২| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:৫৫
বিলুনী বলেছেন:
ধন্যবাদ, খুব সুন্দরভাবে দেশের মানুষের কষ্টের কথা , বিভিধ ধরনের বিবেদের কথা তুলে ধরেছেন ।
শুধু আইজউদ্ধীন কেন ইয়াজউদ্ধীন ফকরুদ্দীনরাও কষ্টের মধ্যে আছেন । আজকের ইকিলাবের
অনলাইন ভারসনে দেখলাম সামনে মাইক লাগিয়ে দলবেধে জনগনেরই একাংশের টাকায় তৈরী উচ্চাসনে চেয়ারে বসে ফকরুলের সাথে আরো অনেকেই বলেছেন দেশে এখন অন্ধকার শ্বাসরোধী পরিবেশ চলছে । কথাগুলি অনেকটাই সত্য । তবে কালকের মধ্যেই যদি তিনারা কোন মতে গদিতে বসতে পারেন তবে একদিনেই কথাগুলি উল্টে যাবে বলা হবে দেশ সুখ শান্তি উন্নয়নে ভেসে যাচ্ছে । তাই মনে হচ্ছে আইজইদ্দীনদের কষ্ট কেবলমাত্র তখনই লাঘব হবে যখন তারা গদীতে বসতে পারবেন । গদীতে না বসা পর্যন্ত কোন অবস্থাতেই তাদের কষ্ট লাঘব হবেনা যত কিছুই করা হোকনা কেন , তারা সারা দেশ জুরে মাইক লাগিয়ে উচ্চাসনে বসে কোট টাই পড়ে বলে চলবেন শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায় বড় কষ্টে আছি । যাহোক দেশে সকলের কষ্ট লাঘব হোক , সকল বিবেধ দুর হোক , সকলে মিলে সুখে শান্তিতে বসবাস করতে পারুক এ কামনা থাকল । পোষ্টের লেখা পাঠে সকলের মাঝে সুচেতনা ফিরে আসুক ।
০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:৪৬
আহমেদ জী এস বলেছেন: বিলুনী ,
আমাদের বাস্তবে যা ঘটছে তারই কথা বলেছি গল্পে ।
বলেছেন - "......মাইক লাগিয়ে দলবেধে জনগনেরই একাংশের টাকায় তৈরী উচ্চাসনে চেয়ারে বসে.... " । এটাই সত্যি । এই একাংশ কারা ? আমাদেরই কেউ । কেন করছে ? কাঠালের ভাগ যেন পায় সেকারনেই এই ইনভেষ্টমেন্ট । দোষটা ফকরুল , ইয়াজউদ্দিন , জয়নালে গংদের নয় । দোষটা আমাদেরই । এটাই আমরা স্বীকার করতে চাইনে , গন্ডগোলটা এখানেই । সব দোষটা ক্ষমতাধারীদের ঘাড়ে উঠিয়ে দিয়ে নিজে সাধু সাজি । অথচ আমাদের এই ইনভেষ্টমেন্ট থেকেই ক্ষমতাধারীরা কর্পোরেট বানিজ্য গড়ে তোলে ।
তাই গল্পের আইজউদ্দিন আমাদেরই এই চেতনায় ঘা দিতে চেয়েছে । তার দেয়া এই "ঘা" আমাদের চেতনাকে জাগ্রত করুক এমন কামনা আপনার মতো আমারও ।
মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ ।
১৩| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:২৮
করুণাধারা বলেছেন: আইজদ্দিনের বক্তৃতা শুনে অবাক হচ্ছিলাম, সে এমন জ্বালাময়ী সত্য ভাষণ দিচ্ছে, সমাজের সব স্তরের মানুষ এসে তার ভাষণ শুনছে, শুধু উনারা অনুপস্থিত কেন বুঝতে পারছিলাম না। অবশেষে দেখা গেল না ওনারা আছেন- ঠিক যে ভূমিকায় থাকার কথা সেই ভূমিকাই পালন করলেন এসে।
আইজদ্দিনের মুখ বন্ধ হল, সবকিছু আবার আগের মতই হয়ে গেল.......
চমৎকার চিত্রকল্প। খুব ভালো লাগলো। +++++
০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:৪৩
আহমেদ জী এস বলেছেন: করুণাধারা ,
মন্তব্যে ধন্যবাদ ।
আপনার ঠিক উপরে বিলুনী বলেছেন - "......মাইক লাগিয়ে দলবেধে জনগনেরই একাংশের টাকায় তৈরী উচ্চাসনে চেয়ারে বসে.... " ।
তার উত্তরে আমি বলেছি - "এটাই সত্যি । এই একাংশ কারা ? আমাদেরই কেউ । কেন করছে ? কাঠালের ভাগ যেন পায় সেকারনেই এই ইনভেষ্টমেন্ট । দোষটা ফকরুল , ইয়াজউদ্দিন , জয়নালে গংদের নয় । দোষটা আমাদেরই । এটাই আমরা স্বীকার করতে চাইনে , গন্ডগোলটা এখানেই । সব দোষটা ক্ষমতাধারীদের ঘাড়ে উঠিয়ে দিয়ে নিজে সাধু সাজি । অথচ আমাদের এই ইনভেষ্টমেন্ট থেকেই ক্ষমতাধারীরা কর্পোরেট বানিজ্য গড়ে তোলে ।"
এখন আপনাকে বলছি , ব্যাপারটাকে আমরা অন্যভাবে দেখি । যাদের কথা বললেন , তারাও ঐ কর্পোরেট বানিজ্য টিকিয়ে রাখার বেতনভূক প্রহরী । নিজেদের ক্ষমতা ও বলবীর্য্য রক্ষার তাগিদ থেকে কর্পোরেট ব্যবসায়ীরা এদেরকে দিয়ে দূর্গ প্রাচীর রচনা করে রাখে । এরা কিন্ত আমাদেরই মজলুম জনতারই অংশ । তাদের অনুভূতিটা এমন হতে পারেনা যেমন গল্পে উঠে এসেছে -- ".... খাকি উর্দিপরাদের মাঝেও জমতে থাকলো অস্থিরতা আর ঘৃনা । তাদের কাজের এই উটকো , নির্দয় দিকগুলোর প্রতি বিদ্বেষ ।.......পোষাকের ভেতরে এঁটে থাকা মুখগুলোয় যদিও ক্লান্তির ছাপ । সুরক্ষিত প্রাচীরের ভেতর বসবাসকারী সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তি বিশেষের অঙ্গুলি হেলেনে , সব অপবাদ গায়ে মেখে জীবনটাকে যারা গলার কাছে আটকে রেখেছে তা থেকে উঠে আসা বিবমিষার বিষাদ মাখা এক একটা মুখ । " ? ( নীচে "চঞ্চল হরিণী'র মন্তব্যটি অনুগ্রহ করে দেখে নেবেন )
এ কারনেই তাদের খুব একটা দোষ দেয়া মনে হয় ঠিক নয় । সুরক্ষিত প্রাচীরের ভেতর বসবাসকারী সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তি বিশেষের অঙ্গুলি হেলেনে , সব অপবাদ গায়ে মেখে জীবনটাকে এরা গলার কাছে আটকে রেখেছে । অথচ এই সুরক্ষিত প্রাচীরের ভেতর বসবাসকারীদের আমরাই তৈরী করেছি এক একটা ফ্রাংকেনষ্টাইন হিসেবে । এ দায় আমাদের ।
লেখায় প্লাস দেয়াতে ধন্যবাদ । শুভেচ্ছান্তে ।
১৪| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২৭
ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন: আহমেদ জি এস ভাই, পরিভাষা বা শব্দার্থ কি দেওয়া দরকার ছিলো ? বাংলাদেশে থেকে যারা বাংলা বোঝে না তাদের বাংলা গল্প, কাহিনী পড়ার প্রয়োজন নাই । তারা হচ্ছে “সারারাত রাময়ণ গীতের পর বলবে সীতা কার - - - -
০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:২৬
আহমেদ জী এস বলেছেন: ঠাকুরমাহমুদ ,
যথার্থই বলেছেন কিন্তু আমার অভিজ্ঞতা একটু অন্যরকম । আঞ্চলিক ভাষায় আমার কিছু লেখা বিশেষ করে কবিতার শব্দগুলো অনেক পাঠকের কাছেই দূর্বোধ্য মনে হয়েছে । তারা তা প্রকাশ করেছেনও মন্তব্যে।
ব্লগের পাঠক সবজান্তা নন । পাঠকের বেশীর ভাগই বাঙলা ভাষার সব আঞ্চলিকতাকে বুঝে উঠতে পারেন না ।
যেমন আমি নিজেই নোয়াখালী আর চট্টগ্রামের খাস ভাষা বা আঞ্চলিক ভাষা মোটেও বুঝে উঠতে পারিনে । অথচ ঐ এলাকার ভাষা আমাকে টানে খুব ।
তাই আমার সম্মানিত পাঠকদের সুবিধার্থে পরিভাষা দিতে হয়েছে । কারন ব্লগটা শুধু পড়ার লাইব্রেরী নয় , বরং পরষ্পরকে চিনে নেবার , একে অপরের লেখা থেকে শেখার , জানার , বোঝার জায়গাও বটে ।
আশা করি ভুল বুঝবেন না ।
শুভেচ্ছান্তে ।
১৫| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪২
ওমেরা বলেছেন: বর্তমান সমাজের প্রতিচ্ছবি খুব ভাল লাগল।
০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:৩৬
আহমেদ জী এস বলেছেন: ওমেরা ,
হ্যাঁ ... সমাজের মানুষদের ছবি ! যার যা ভূমিকা ।
লেখাটিতে প্লাস দেয়াতে ধন্যবাদ ।
১৬| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:০৮
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: মাঝে মাঝে নির্জাতিতের কণ্ঠস্বর হয়ে আইজুদ্দিন দের আবির্ভাব ঘটে। জনতার মাঝে প্রোথিত করে প্রতিবাদের বীজ।
আবার জালিমের হাতে আইজুদ্দিন রা নিগৃহীত হয়, বিশৃঙ্খল জনতা এগিয়ে আসেনা ।
০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:৪৮
আহমেদ জী এস বলেছেন: গিয়াস উদ্দিন লিটন ,
লিখেছেন, " ........ আইজুদ্দিন রা নিগৃহীত হয়, বিশৃঙ্খল জনতা এগিয়ে আসেনা ।" সুশৃঙ্খল জনতাও কি এগিয়ে আসে ?
কেউ আসেনা ।
গল্পটি ভেতরে ভেতরে এই আসা , না আসা নিয়েই ।
১৭| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:২৬
চাঙ্কু বলেছেন: ----তো ভাইসাবেরা , আম্নহেরা আমারে পাগল ভাইব্বেন না । আমি আম্নহেগো সমাজের বানাইন্না বিভেদের শিকার হইয়া চিপার ভিত্রে আছি । এই বিভেদ দিয়া আম্নহেগোও রেহাই নাই । আম্নহেরাও ভাগে ভাগে ভাগ । যাইবেনই বা কই ? দ্যাশটাই তো দুইভাগ তিনভাগ কইররা হালাইছেন আম্নহেরা । এ্যাহোন আম্নহে কইবেন , এগুলা তো আমরা করি নাই , করছে রাজনীতিবিদরা আর সরকার । তা আমি জিগাই, আম্নহেরা আছেলেন কই ? এই আইজদ্দিন আম্নহেগো জিগাইতেছে --আম্নহেরা আছেলেন কই ? জবাব দেন ভাইসাবেরা , কই ছিলেন তহোন, দ্যাশটা যহোন দুইভাগ তিনভাগ হয় ? ”
পুরা দেশের কথা বলে দিলেন।
আচ্ছা, কষ্টে আছি - আইজউদ্দিন চিকাগুলর কি হইছে জানেন কিছু? ভার্সিটিতে থাকতে পুরা ক্যাম্পাস এলাকায় দেখতাম কিন্তু এখন তেমন দেখা যায় না।
০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:৫০
আহমেদ জী এস বলেছেন: চাঙ্কু ,
পুরা দেশের কথা নয় বলেছি পুরা দেশের বেকুব জনগনের কথা ।
যে বেকুবদের কথা উঠে এসেছে এভাবে--- লাখ টাহা খরচ কইরা পরের পোলার জন্মদিনে শুভেচ্ছার পোস্টার ছাপাইয়া রং করা দেয়ালগুলার চেহারার বারোটা বাজাইছেন । নিজের কয়ডা পোলা , হেগো জন্মদিন কার কবে , হেডা জিগাইলে আম্নহে কইতে পারবেন না ।
না, আইজদ্দিনের গ্রাফিটিতে কোনও শ্যাওলা গজিয়েছে কিনা তা জানা নেই । তবে সুবোধের গ্রাফিটি এদিক সেদিক হঠাৎ হঠাৎ দেখা যায় ।
১৮| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:৩৪
সনেট কবি বলেছেন: অসাধারন!
০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:০৩
আহমেদ জী এস বলেছেন: সনেট কবি ,
ধন্যবাদ । শুভেচ্ছান্তে ।
১৯| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:৪৪
আল মাহফুজ মাহিন বলেছেন: দুর্দান্ত! ☺
০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:২১
আহমেদ জী এস বলেছেন: আল মাহফুজ মাহিন ,
দুর্দান্ত ভাবেই হয়তো আপনার বিবেকে নাড়া দিয়ে গেছে গল্পটি ।
ধন্যবাদান্তে ।
২০| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:০২
নতুন নকিব বলেছেন:
অসাধারন উপস্থাপনা! দারুন মুন্সিয়ানায় সমাজের অরাজকতা অার নৈরাজ্যগুলোকে তুলে এনেছেন বাস্তবতার নিরিখে। +++
০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:০১
আহমেদ জী এস বলেছেন: নতুন নকিব ,
বাস্তবতার নিরিখে সমাজের অরাজকতা অার নৈরাজ্যগুলোকেই শুধু তুলে আনিনি : ক্রমাগত চলা এই অরাজকতার , এই নৈরাজ্যগুলোর জন্যে যে আমজনতার কাঠালের ভোগ পাওয়াটাই আসলে দায়ী সেটাও বড় করে তুলেছি ।
প্লাস ও মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ ।
শুভেচ্ছান্তে্ ।
২১| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:০২
নীলপরি বলেছেন: অসাধারণ শব্দচিত্র ।++
০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৫৬
আহমেদ জী এস বলেছেন: নীলপরি ,
আসল জায়গাটিতেই আপনার চোখ গেছে । দেখার চোখ আছে বটে আপনার !
ভালো লাগলো প্লাস দেয়াতে ।
শুভেচ্ছান্তে ।
২২| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:২২
সামিয়া বলেছেন: প্রথম কয়েকটি লাইন পড়েছি, অতটুকুই মুগ্ধ, আপনার এই পোস্ট থেকে অনেক কিছু জানতে পারব শিখতে পারব মনে হচ্ছে, সময় করে অবশ্যই পড়ে নেব।
০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:১০
আহমেদ জী এস বলেছেন: সামিয়া ,
ভালো লাগলো প্রথম কয়েকটি লাইন আপনাকে মুগ্ধ করেছে জেনে ।
সময় করে ফিরে আসবেন বলে বিশ্বাস ।
শুভেচ্ছান্তে ।
২৩| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:০৪
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: শিরোনামটাতে একটা নস্টালজিক আকর্ষণ ছিল।
যেখানে পড়লাম কিছু উর্দিপরা লোক এসে জড়ো হয়েছে, তখনই ঘটনা আঁচ করতে পারলাম।
একজন আইজুদ্দিনকে এক অনন্য দক্ষতা ও মুন্সীয়ানার ভেতর দিয়ে এমন এক স্বপ্নদ্রষ্টা হিসাবে দাঁড় করালেন, যে কিনা সাম্প্রতিক বাংলাদেশের আদ্যোপান্ত গড়গড় করে উগড়ে দিচ্ছে, আর মানুষকে ঘা মেরে বুঝিয়ে দিচ্ছে কতসব অসঙ্গতি বা অরাজকতার ভেতর দিয়ে তারা যাচ্ছে। তাদের কি এখনি রুখে দাঁড়াবার সময় নয়?
সমগ্র বাংলাদেশের সামাজিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট অত্যন্ত সুনিপুণ ভাবে আইজুদ্দিন কথ্য ভাষার ভেতর দিয়ে তুলে ধরেছেন। সে তথাকথিত আইজুদ্দিন হয়ত নয়, এবং এটা হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি, সে একজন চিন্তাশীল, সুশিক্ষিত ও সমাজসচেতন ব্যক্তি, যে আইজুদ্দিনের বেশ ধরেছে হয়ত সবার দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য। শুরুতে তার কথা কৌতুককর মনে হলেও ধীরে ধীরে কিছু মানুষ তাতে নড়ে চড়ে বসে। তার বক্তব্য ধীরে ধীরে ভাষণে পরিণত হতে থাকে। শুরুতে তার ভাষা যতখানি কথ্য ছিল, শেষের দিকে এসে একটু পরিমার্জিত হতে দেখা যায়। এ থেকেও প্রমাণিত হয়, সে শিক্ষিত লোক, আইজুদ্দিন বেশধারী।
পরিণতি যা হবার তাই হলো। উর্দিপরাদের সাথে রাম-দা হাতে কিছু সুপরিচিত তরুণও পড়লো।
আইজুদ্দিনরা এভাবেই চাবুক মেরে সমাজকে সচেতন করতে চায়। কিন্তু সমগ্র স্বার্থ কুক্ষীগত করে যারা সমাজের ধারক ও বাহক, তারা তা হতে দেবে বা কখনো।
লেখকের মনের ভেতর জমে থাকা ক্ষোভ উঠে এসেছে গল্পে। গল্পের আইজুদ্দিনের মতোই আমরা অসহায়। আমরা একটা ফাঁদের ভেতর বন্দি।
চমৎকার গল্পের জন্য সেলুট জানিয়ে গেলাম।
০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:৪৬
আহমেদ জী এস বলেছেন: সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই ,
@ সে তথাকথিত আইজুদ্দিন হয়ত নয়, এবং এটা হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি, সে একজন চিন্তাশীল, সুশিক্ষিত ও সমাজসচেতন ব্যক্তি,
সে যে কোন দলে পড়ে তা ভেবে দেখার জন্যে এটুকু বলা আছে -- "লোকটা, যে তার পরিচয় দিচ্ছিল আইজদ্দিন বলে, সেটা ঠিক হলেও হতে পারে কিম্বা না, হতে পারে সে এক সম্ভাবনা সঞ্জাত কিছু, অলীক কিছু ভ্রম । আমাদের ভ্রম .......... আইজুদ্দিন হয়তো আপনি নিজে , কিম্বা সে কিম্বা আপনার পাশের লোকটি । হয়তো আইজুদ্দিন বলে কেউ নেই , তমসাচ্ছন্ন ও ক্লান্ত আমাদের জীবনের এক মরীচিকা হয়তো সে । আমাদের বোধের গহনে ছুঁড়ে দেয়া একটি ইটের খন্ড !!!!!!
@ আইজুদ্দিনরা এভাবেই চাবুক মেরে সমাজকে সচেতন করতে চায়।
তবুও সমাজ সচেতন হয়না । সমাজ যে নিজের লাভ লোকসানের প্রতিই শুধুমাত্র সচেতন তা আছে এখানে ".........লোকটা দাঁড়িয়ে ছিলো একটু উঁচুতে, সম্ভবত কোন পান-বিড়ি বিক্রেতার টুলখানার উপরে । পান বিড়িওয়ালাও এই ভীড়ে মুফতে একটা মোক্ষম সুযোগ পেয়েছে বেশি বেশি বিক্রির। তাই টুলটা ছেড়ে দিয়েছে সে । বলা যেতে পারে, এই আত্মত্যাগ তার একটা ইনভেষ্টমেন্ট । লোক যতো জমবে তার পান বিড়ি ততো বেশি চলবে ।..........."
@ উর্দিপরাদের সাথে রাম-দা হাতে কিছু সুপরিচিত তরুণও পড়লো। এটা সর্বগ্রাসী বাস্তবতা ।
চমৎকার করে করা বিশ্লেষণী মন্তব্যে প্লাস । ফিরতি স্যালিউট আপনাকেও ।
২৪| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:২২
অচেনা হৃদি বলেছেন: এক গল্পের আড়ালে ফুটে উঠলো সমকালিন কঠিন বাস্তবতা।
লেখাটা ভালো লেগেছে ভাইয়া!
০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:৫৮
আহমেদ জী এস বলেছেন: অচেনা হৃদি ,
সমকালিন কঠিন বাস্তবতার এই গল্প যে আপনার বোধের ভেতরটাও নাড়িয়ে দিয়ে গেছে তা বুঝলুম "প্লাস" দেয়াতে ।
অশেষ ধন্যবাদ, এতো বড় লেখা পড়ে মন্তব্য করলেন বলে ।
ভালো থাকুন ।
২৫| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৩:১৮
কাওসার চৌধুরী বলেছেন:
অনেকদিন পর আপনার দারুণ চৈতন্য হরণকারী একটি লেখা পেলাম৷নব্বইয়ের দশকে, বিশেষ করে ঢাকা বিশ্বিবদ্যালয় এলাকায় ‘কষ্টে আছি—আইজুদ্দিন’—দেয়াল লিখনটি বেশ নজর কেড়েছিল। পরের দশকে দেখা গেল আরেকটি দেয়াল লিখন—‘অপেক্ষায়...নাজির’। তখনকার রাজনৈতিক পরিস্থিতির সঙ্গে মিলিয়ে অনেকে এগুলোকে ব্যাখ্যা করতেন। ‘সুবোধ তুই পালিয়ে যা, তোর ভাগ্যে কিছু নেই, সুবোধ তুই পালিয়ে যা- এখন সময় পক্ষে না, সুবোধ তুই পালিয়ে যা, ভুলেও ফিরে আসিস না! সুবোধ, কবে হবে ভোর?...’। এ রকম রহস্যজনক কিছু বক্তব্য তুলে ধরে রাজধানীর আগারগাঁও, মহাখালী ও পুরাতন বিমানবন্দরের দেয়ালে দেয়ালে ‘সুবোধ’ সিরিজের বেশ কিছু গ্রাফিতি আঁকা হয়েছে। এখনও এগুলো স্মৃতির পাতায় ভাসে অনেকের চোখে৷
আপনি এই আইজুদ্দিন কে প্রতীক হিসেব দেখিয়ে দেশের সামগ্রিক এক বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছেন৷এ চিত্র বড় অমানবিক সমাজের, অনাচারের, বৈষম্যের আর বিবেকহীনতার৷দেশকে রাজনৈতিক-অর্থনৈতিকভাবে স্থিতিশীল রাখতে এবং সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে যে ধরনের রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, মননশীলতা, সংযমী ও ত্যাগী মনোভাব থাকা প্রয়োজন বাংলাদেশে এখন তা পুরোপুরি অনুপস্থিত। সামাজিক-রাজনৈতিক নিরাপত্তাহীনতা, অর্থনৈতিক বৈষম্য, বিনিয়োগের সুষ্ঠু পরিবেশ ও স্থিতিশীলতা না থাকায় দেশ থেকে অর্থ পাচার অব্যাহত রয়েছে।
দেশের ব্যাংকিং খাতে ধস ও দেউলিয়াত্ব দেখা দিয়েছে। অযৌক্তিকভাবে পণ্যমূল্য বাড়িয়ে দরিদ্র মানুষের জীবন যাপন কঠিন করে তোলা হয়েছে। এর ফলে গত বছর দারিদ্র্য বেড়েছে বলে একাধিক জরিপ রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। নানাভাবে কৃষি উৎপাদনে ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় ফসলের বাম্পার উৎপাদন হওয়ার পরও কৃষকের খরচ উঠেনা। আবার বাজার ব্যবস্থাপনায় নিয়ন্ত্রণহীনতার কারণে কৃষকের উৎপাদিত পণ্য তিন থেকে পাঁচগুন বেশী মূল্যে কিনতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। প্রতিদিনের এই অসম, নাভিশ্বাস রোজনামচা দেশে সম্পদের বন্টন ও অর্থনৈতিক বৈষম্য বেড়ে চলেছে। সর্বগ্রাসি দুর্নীতি, অবক্ষয়, বেপরোয়া দলবাজি, বিচারহীনতার সংস্কৃতি সমাজপ্রগতি ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের টুটি চেপে ধরেছে।
০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:৪৭
আহমেদ জী এস বলেছেন: কাওসার চৌধুরী ,
এ চিত্র বড় অমানবিক সমাজের, অনাচারের, বৈষম্যের আর বিবেকহীনতার ৷ লেখা পড়ে এমন মন্তব্য তুলে ধরার তুলনা হয়না । এমন করে বলা শুধু আপনাকেই মানায় ।
দেশকে রাজনৈতিক-অর্থনৈতিকভাবে স্থিতিশীল রাখতে এবং সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে যে ধরনের রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, মননশীলতা, সংযমী ও ত্যাগী মনোভাব থাকা প্রয়োজন বাংলাদেশে এখন তা পুরোপুরি অনুপস্থিত।
এও কম অনুভবের কথা নয় । এই অনুধাবন যাদের প্রয়োজন তাদের হলেই হয় !!!
আসলে এ অনুধাবন আমাদেরই হওয়া উচিত সামগ্রিক ভাবে । কারন আমাদের ভ্রষ্টচারিতা, আমাদের সুযোগসন্ধানী মনোবৃত্তি, আমাদের অনৈতিক সর্বভূক আকাঙ্খাই রাজনীতিকে অসৎ পথে ঠেলে দেয় । তাই এখানে প্রজ্ঞার প্রয়োজন হয়না , হয় চাটুকারীতার ।
শুভেচ্ছান্তে ।
২৬| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৩:২৮
সোহানী বলেছেন: "আমরা মরুর ঝড়ে বালিতে মুখ লুকিয়ে রাখা এক দঙ্গল উটপাখি।"............ তাই এক বুক কষ্ট নিয়েও কিছু আইজুদ্দিন বেচেঁ থাকে আর বাকিরা কোন এক নীল ভ্যানের গহ্বরে হারিয়ে যায়। কেউ জানেই না সেই নীল ভ্যানের গহ্বরের তলদেশ কোন সমুদ্রে যেয়ে মিশেছে .... । মনটা ভারাক্রান্ত, খুব প্রিয় একজন ব্লগার আইজুদ্দিন ও সেই নীল ভ্যানের গহ্বরে..... । ভালো থাকো স্বদেশ......
০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:৪৪
আহমেদ জী এস বলেছেন: সোহানী ,
আমাদের ভ্রম থেকে গল্পের আইজদ্দিনকে আমরা অনেকেই ঠিক চিনে উঠতে পারিনি। এই আইজুদ্দিন হয়তো আপনি নিজে , কিম্বা সে কিম্বা আপনার পাশের লোকটি । আসলে আইজুদ্দিন আমরা সবাই , আমি-তুমি-সে । আবার হয়তো আইজুদ্দিন বলে কেউ নেই , তমসাচ্ছন্ন ও ক্লান্ত আমাদের জীবনের এক মরীচিকা হয়তো সে । আমাদের বোধের গহনে ছুঁড়ে দেয়া একটি ইটের খন্ড !
বোধের গহনে ছুঁড়ে দেয়া ইটের খন্ডের তোলা যে ঢেউ তা আমাদের সকলেরই বুকে কম বেশী তুফান তুলে মরে নিভৃতে । সে নিভৃত তুফানকেই সশব্দে বইয়ে দিয়েছে আইজদ্দিন আমাদের হয়ে । তার নীল ভ্যানের গহ্বরে হারিয়ে যাওয়াটা একটা প্রতীক । রুখে না দাঁড়ানোর যে গড্ডালিকায় আমরা বাস করি , ও প্রতীক তারই । তাই তো লিখতে হয়েছে ---- ধুয়েমুছে গেলো বাতাসে ভেসে থাকা আইজদ্দিন নামের লোকটার কথা । উড়ে গিয়ে লাইটপোষ্টে এতোক্ষন বসে থাকা কাকগুলো ডানা ঝাঁপটে তারস্বরে ডেকে উঠলো শুধু । এটা তাদের একধরনের প্রতিবাদ কিনা , আইজদ্দিন নামের লোকটা ঠিক বুঝে উঠতে পারলোনা । । এছাড়া কোথাও কোন ছন্দপতন হলোনা , না পথচলতি বাস-ট্রাক-টেম্পুর প্রতিযোগিতায় , না নগরের চিরায়ত দৃশ্যপটে । শুধু দিনটা গড়িয়ে গেলো সন্ধ্যা থেকে রাতে আর একটি দিনের অপেক্ষায় ....
এ আমাদের কষ্টের বোধ নয় , ও কষ্ট পরাজয়ের ।
হ্যাঁ .... ভালো থাকুক স্বদেশ , চেতনায় ফিরুক "আমি আইজদ্দিন ................"
২৭| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৩:৫১
প্রামানিক বলেছেন: ----তো ভাইসাবেরা , আম্নহেরা আমারে পাগল ভাইব্বেন না । আমি আম্নহেগো সমাজের বানাইন্না বিভেদের শিকার হইয়া চিপার ভিত্রে আছি । এই বিভেদ দিয়া আম্নহেগোও রেহাই নাই । আম্নহেরাও ভাগে ভাগে ভাগ । যাইবেনই বা কই ? দ্যাশটাই তো দুইভাগ তিনভাগ কইররা হালাইছেন আম্নহেরা । এ্যাহোন আম্নহে কইবেন , এগুলা তো আমরা করি নাই , করছে রাজনীতিবিদরা আর সরকার । তা আমি জিগাই, আম্নহেরা আছেলেন কই ? এই আইজদ্দিন আম্নহেগো জিগাইতেছে --আম্নহেরা আছেলেন কই ? জবাব দেন ভাইসাবেরা , কই ছিলেন তহোন, দ্যাশটা যহোন দুইভাগ তিনভাগ হয় ? ”
কষ্টে আছে আইজুদ্দি, আইজুদ্দির কথা নতুন করে মনে করে দিলেন। আইজুদ্দির মুখ দিয়ে দেশের পুরো পরিস্থিতি বর্ননা করলেন।
০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:৫৫
আহমেদ জী এস বলেছেন: প্রামানিক ,
প্রমান হলো তো যে , আইজদ্দিনের কথা কেউ ভোলেনা । এই আইজুদ্দিন যে আমরা সবাই , আমি-তুমি-সে ।
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্যে ।
২৮| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৭:০৩
চঞ্চল হরিণী বলেছেন: “তারা সংশয়ে ছিল অনুকম্পা যদি হয় ন্যায়শাস্ত্রের মর্মবস্তু, দুঃখ দুর্দশা তাহলে হবে সংক্রামক এবং সুখ হবে সকল সন্দেহের বস্তু”।
আমি সঠিক ভাষা পাচ্ছিনা এই বাক্যটাকে তাঁর যোগ্য সম্মান দেবার। লেখা ছাপিয়ে সময় ছাড়িয়ে কালোত্তীর্ণ একটি বাণী চিরন্তনী হয়েছে এটি।
আপনার এই গল্পটা পড়ে স্তব্ধ হয়ে বসে ছিলাম কতক্ষণ! ধীরে ধীরে সবার মন্তব্যগুলো পড়লাম। শিখা আপাকে বললেন, সাম্প্রতিক উত্তাল মুহূর্তগুলির পেছনের গল্প হয়তো বা। মনে হল সত্যি সেই আইজুদ্দিনের চিকা ও সুবোধের গ্রাফিতিগুলো আমাদের বিবেককে জাগিয়ে গিয়েছিলো বলেই আমাদের পরের প্রজন্ম ‘ছাত্র আন্দোলন’র মত একটি ন্যায়ের পক্ষে লড়াইয়ে তীব্র প্রতিবাদী হয়ে মাঠে নেমেছিল। হতেই পারে এই প্রজন্মের পিতামাতাদের মনে বিবেক দংশানো ওই কথাগুলোর প্রভাব অবচেতনেই ছিল যা সন্তানদের মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে।
কিন্তু সবসময়ই দুই একটা কাঁঠালের কোষের লোভে মাথায় কাঁঠাল ভাঙতে দেয়া লোকজন থাকবে। আর এমন মানুষরা থাকবে যারা বলবে বিবেক জাগিয়ে লাভ কি, আইজুদ্দিনরা কষ্টেই থাকে। ইচ্ছে করেই অন্ধ হয়ে থাকবে। এরা আসলে সেই মানুষ যাদেরকে উর্দিওয়ালারা সহস্র বছর ধরে বংশ পরম্পরায় আগলে রেখে আসছে। তাদের অনুভবের মাপঝোঁক “তারা সংশয়ে ছিল অনুকম্পা যদি হয় ন্যায়শাস্ত্রের মর্মবস্তু, দুঃখ দুর্দশা তাহলে হবে সংক্রামক এবং সুখ হবে সকল সন্দেহের বস্তু” অকাট্যভাবে আপনার এই কালজয়ী উক্তি মেনে চলে।
আবার কিছু মানুষ যাদের সমাজ মধ্যবিত্ত বলে তারা হলেন, “আমাদের ভ্রম, যারা জীবনের বস্তুগত সব বিষয় আশয়ে পুষ্ট ছিলাম, কিন্তু কখনোই যাদের অভিজ্ঞতায় ছিল না বৃক্করসের ধাবন, ব্যাপক প্রতিবাদে অংশগ্রহণ থেকে আসা ন্যায্য ক্রোধের স্বাদ”। আসলে শুধু আমজনতা নয়, মানুষ মাত্রই ‘শিয়ালের মত চালাইক্কা’। ব্যাতিক্রম ব্যাতিক্রমই।
এই গল্পের আরেকটি এপিক বাক্য হল, “রাজনীতি কোনহানে নাই, এই যে আম্নেহেরা আমার কতা হোনতাছেন হেইহানেও মনে মনে আম্নেহেরা রাজনীতি করতাছেন”। রাজনীতি যে প্রতিটা সমাজে সকল মানুষের জীবনে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে থাকে এদেশের উর্বর লোকজনের এটা বোধগম্য হয় না।
মর্মে আঘাত করার মত আরেকটি বাণী, “আমজনতার স্বপ্নের কোন নীড় হয়না যেখানে ১০ মিনিট কেন, দশ সহস্রাব্দেও যাওয়া সম্ভব নয় কারো”। কিন্তু লোভের চোখে এই দশমিনিট সামনে রেখেই জীবন চলে যায় আমজনতার। দশ মিনিট কখনোই ফুরায় না। মনে পড়ে সত্যজিতের ‘পথের পাঁচালি’, বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত’র ‘নিম অন্নপূর্ণা’র মত ভাগ্যান্বেষণে ছোটা এমন হাজারো কাহিনী।
সবচেয়ে চমৎকার যেটা লেগেছে সেটা হল, উর্দিপরাদের বেলায় আপনার একটি মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ। কালো উর্দিপরাদের ব্যাপারে লিখলেন, “সব অপবাদ গায়ে মেখে জীবনটাকে যারা গলার কাছে আটকে রেখেছে তা থেকে উঠে আসা বিবমিষার বিষাদ মাখা এক একটা মুখ”। কি দারুণ নিদারুণ! কখনোই বোধহয় কেউ তাদের নিয়ে এভাবে ভাবেনি। ভাবলেও লেখেনি। আমি বহুবার এই মুখগুলোর দিকে তাকিয়ে ভেবেছি তাদেরকে এমন কেন দেখায়! আপনি একটি অসাধারণ বাক্য ও বোধ উপহার দিলেন।
খাকি উর্দিপরাদের বেলায়ও একটি জনসমাবেশ ভাঙ্গতে এই লাইনটি “তাদের কাজের এই উটকো, নির্দয় দিকগুলোর প্রতি বিদ্বেষ” খুব ভাবনা যোগায়। তারা কি আসলেই কাজের সময় এই নির্দয় অনুভবটি অনুভব করতে পারে!
পড়ার সময় আমার বারবার মনে হচ্ছিলো আমি যেন আখতারুজ্জামান ইলিয়াস স্যারের কোন লেখা কিংবা সেই সমপর্যায়ের কোন লেখা পড়ছি। আপনার এই লেখাটি দেশের প্রথম সারির সবগুলো দৈনিকের সাহিত্যপাতায় যাওয়া দরকার। এবং দরকার অবশ্যই বইতে সংকলিত হওয়া। আইজুদ্দিনের আঞ্চলিক ভাষায় একাধিক আঞ্চলিকতা মিশে গেছে। একটা অলীক চরিত্রে তা যাক। কিন্তু লেখক নিজের বয়ানে যে ধরণের বাক্য বুনন করেছেন তা বাংলা সাহিত্যের যে কোন মানদণ্ডেই উৎকৃষ্টতার উচ্চমার্গে পৌঁছে গেছে।
আলোর বৃত্তের ঠিক বাইরে এযাবৎ যেখানে অন্ধকার ঝুলে আছে সেখানে সত্যালোকের স্পটলাইটটা কোথায় আঘাত করছে তা মেপে দেখার পর যেন কেউ ইচ্ছে করে চোখ বুজে না থাকে, মানুষ হয়ে আপনাকে চেনে সেই প্রত্যাশাই করি।
অনেক অনেক শ্রদ্ধা, ধন্যবাদ এবং ভালোবাসা নেবেন, আহমেদ জী এস ভাই।
০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:১২
আহমেদ জী এস বলেছেন: চঞ্চল হরিণী ,
আপনার এই মন্তব্যটি পড়েছি দেয়ার সাথে সাথেই এবং আপনার মতোই স্তব্ধ আর রূদ্ধবাক হতে হয়েছে । কী দ্ক্ষ এক সার্জনের মতো সুক্ষ কাঁটাচেরা করলেন লেখাটির ! জুড়ে দিলেন সযত্নে । পরিপূর্ণ হয়ে উঠলো লেখাটি আপনার হাতের ছোঁয়ায় ।
এই মন্তব্যটি পড়ে মাথায় ঘুরে গেলো অনেক কিছু । মনে মনে খতিয়ে দেখলুম , আমার লেখাতে কিম্বা অন্যকারো লেখাতে করা আপনার মন্তব্যগুলোর চরিত্র । তা থেকে বুঝলুম যে কোনও লেখাতে আপনার কী গভীর পাঠ ! অন্তর্ভেদী চোখে শব্দ, বাক্য অথবা লেখার ভাব ধরে ধরে করা মন্তব্যগুলি কী যতনে সাজানো । এই গল্পে যা প্রায় সবারই চোখ এড়িয়ে গেছে , আপনি চোখ দিয়েছেন সেখানে , লেখকের নিজস্ব বয়ানে । বিদূষী যে প্রচন্ড রকমের তাতে সন্দেহ রইলোনা মেটেও । আগেও মনে হয়েছিলো , এখন সুযোগ পেয়ে তাকে অবারিত করলুম নত মস্তকে । এটুকু আপনার প্রাপ্য । ব্লগিংয়ের এমন মাধুর্য্য আপনার হাতে আরো শ্রীময়ী হয়ে উঠবে বলেই বিশ্বাস করি ।
আঞ্চলিক ভাষায় একাধিক আঞ্চলিকতা মিশে গেছে।
স্বীকার করছি , এ আমার অনভ্যস্ততা । আমি বরিশালের লোক , তাই বরিশালের ভাষা ব্যবহার করেছি । ধারনা ছিলো, জন্ম থেকে এ আমার মুখের ভাষা , আমার কাছে অনায়াস হবে । কিন্তু লিখতে গিয়ে দেখি, আমি কীর্তনখোলা থেকে কতোদূরে ফেলে এসেছি আমার জন্মের ভাষাকে । গেলো দু'যুগ সে মধুর ভাষার সাথে, সে শহরের সাথে সখ্যতা ছিলোনা । তাই কোনটি যে আমার প্রিয় " বরিশাইল্লা" ভাষা কোনটি যে অন্যের তা বুঝে উঠতে পারিনি । মনে হয়েছে , এরকমটাই তো বরিশাইল্লা ভাষা ! এখন দেখছি , তা নয় । এ অক্ষমতা আমারই ।
উর্দিপরাদের বেলায় আপনার একটি মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ।
আমরা কি কখনও এমনটা ভেবে দেখেছি ? তাদের কে শত্রুপক্ষ ধরে নিয়েই তাদের বিচার করেছি । কিন্তু উর্দিপরারাও তো মানুষ, আমাদের মতোই মানুষ ! তারাও তো কারো কারো কাছে আমাদের মতোই এক একজন আইজদ্দিন । এ নিয়ে অনেক কথা বলা যায় , আপাততঃ করছিনে ।
আখতারুজ্জামান ইলিয়াস এর পাশে আমার মতো নগন্যকে দাঁড় করিয়ে বলা - লেখক নিজের বয়ানে যে ধরণের বাক্য বুনন করেছেন তা বাংলা সাহিত্যের যে কোন মানদণ্ডেই উৎকৃষ্টতার উচ্চমার্গে পৌঁছে গেছে। তা আপনারই মহানুভবতা ।
অনেক অনেক শুভেচ্ছা আর ভালোবাসা আপনাকেও ।
২৯| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:২৭
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: আপনি খুব সুন্দর লিখেন। শুভ কামনা।
০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:০৫
আহমেদ জী এস বলেছেন: মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন ,
ধন্যবাদ আপনাকেও সাথে শুভকামনা ।
৩০| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:১৫
ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন: আহমেদ জি এস ভাই, আমি আপনাকে ভুল বোঝার কোনো অবকাশ নেই, আমি আপনার দিক থেকেই বলছি, আপনার লেখা আমাকে অনেক টানে বলেই এই প্রশ্ন । শুভ কামনা রইলো - ভালো থাকুন ।
০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১৫
আহমেদ জী এস বলেছেন: ঠাকুরমাহমুদ ,
আমিও আপনাকে আমার পাঠক তালিকায় রেখেছি । ব্লগ হলো আমাদের নিজেদের ঘর-বাড়ী-দালান-কোঠা । এখানকার সবার প্রতি টান তো থাকবেই ! ভালো লাগলো, আবার সেই টানেই এসেছেন বলে ।
শুভ কামনা আপনার জন্যেও ।
৩১| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:২৮
সুমন কর বলেছেন: গ্রেট !! রূঢ় বাস্তবতার প্রায় প্রতিটি রূপ লেখায় তুলে ধরেছেন। আইজদ্দিন-এর কষ্ট কোন দিন দূর হবে না !! কেননা এ কষ্ট সবার.....আর এ কষ্ট উপলব্ধি করার মতো কেউ নেই !!
+।
০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৫৪
আহমেদ জী এস বলেছেন: সুমন কর ,
কেননা এ কষ্ট সবার.....আর এ কষ্ট উপলব্ধি করার মতো কেউ নেই !!
কষ্ট উপলব্ধি তো দূর , এ কষ্ট যে তার মতো একজন আইজদ্দিনের তাও বোঝেনা ।
প্লাস দেয়া আর মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ ।
৩২| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:৫৮
পাঠকের প্রতিক্রিয়া ! বলেছেন: আইজদ্দিন... কষ্টে থাকুক, না হয় আহমেদ জী এস ব্লগিং করুক আমার কি???
পোস্টে দাঁড়ির আগে স্পেস থাকলে পাঠক পোস্ট পড়ে না। পড়বে না।
এবার থেকে রাজিব নুরের মত না পড়েই মন্তব্য করবো। জ্বালাতে...
দেখুন, ঠিকমত স্পেস না দিলে কেমন লাগেঃ
এই পদ্মা, এই মেঘনা, এই যমুনা সুরমা নদী তটেআমার রাখাল মন গান গেয়ে যায়এ আমার দেশ, এ আমার প্রেমআনন্দ বেদনায় মিলন বিরহ সংকটেকত আনন্দ বেদনায় মিলন বিরহ সংকটেএই মধুমতী ধানসিঁড়ি নদীর তীরেনিজেকে হারিয়ে যেন পাই ফিরে ফিরেএক নীল ঢেউ কবিতার প্রচ্ছদপটেএই পদ্মা এই মেঘনা এই হাজার নদীর অববাহিকায়এখানে রমণীগুলো নদীর মতো, নদীও নারীর মতো কথা কয়এই অবারিত সবুজের প্রান্ত ছুয়ে নির্ভয় নীলাকাশ রয়েছে নুয়েযেন হৃদয়ের ভালোবাসা হৃদয়ে ফোটে♫♪
পুনশ্চঃ
বড় হলে আমি একটা ব্লগ বানাবো, আপনাকে অগ্রীম দাওয়াত।
০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:৩১
আহমেদ জী এস বলেছেন: পাঠকের প্রতিক্রিয়া !
আম্নহের বানাইন্না ব্লগে মুই যামুনা, হেলে মোর ল্যাহা কেউ পড়বেনা ।
" দেখুন, ঠিকমত স্পেস না দিলে কেমন লাগেঃ ..... " মোডেও ঠিক হয় নাই ।
ঠিকমত স্পেস না দিলে হইবে এইরহমের -----
এ ইপ দ্মাএই মেঘ নাএইয মুনাসু রমান দীতটেআ মাররাখা লমনগানগে য়েযায়এআ মারদে শএআ মারপ্রে মআনন্দবে দনায়মি লনবি রহসং কটেকতআ নন্দবেদ নায়মি লনবি রহসং কটেএইম ধুমতীধা নসিঁড়ি নদীরতী রেনিজে কেহারি য়েযেনপা ইফি রেফি রেএকনী লঢেউক বিতারপ্রচ্ছ দপটে .............. "
এহোন পড়েন পারলে !
৩৩| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:৫৮
রাকু হাসান বলেছেন: বাহ বাহ বাহ কি চমৎকার লেখনি । এত ছোট করে আইজদ্দিন চরিত্রের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন সমাজ ,রাষ্ট্রের প্রায় প্রতিটি সংস্কার হওয়ার মত কাজ কে । আঙ্গুল তুলে কথা বলেছে পুঁজিবাদীদের । খারাপ লাগছে লেখা টা আরও আগে পড়তে পারলাম না । আপনার অসাধারণ ক্ষমতা দেখছি লেখার । আমার বলার অনেক কথায় বলে দিয়েছে বেশ কয়েকজন গুণি ব্লগার । তাঁদের মন্তব্যে লাইক দিলাম । লেখাটি প্রিয়তে রাখার যথেষ্ট যোগ্যতা রাখে । রাখলাম ও ।
ভাল থাকুন আর আমাদের সুন্দর সুন্দর লেখা উপহার দিন সেই কামনা ।
০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:১১
আহমেদ জী এস বলেছেন: রাকু হাসান ,
এই আইজুদ্দিন হয়তো আপনি নিজে , কিম্বা সে কিম্বা আপনার পাশের লোকটি । আসলে আইজুদ্দিন আমরা সবাই , আমি-তুমি-সে ।
আমাদেরই উচিৎ ছিলো আইজুদ্দিনের মতো আঙ্গুল তুলে সমাজ-রাষ্ট্রের ত্রুটিগুলো , অনিয়মগুলো দেখিয়ে দেয়া । আমরা তা দিইনি হয়তো আগামীতেও দেবোনা কারন সে বোধটুকুই আমাদের নেই । এই ত্রুটিগুলো , অনিয়মগুলো যে আমিই তৈরী করেছি দীর্ঘদিন ধরে ।
প্রিয়তে নিয়ে কৃতজ্ঞ করে রাখলেন ।
শুভেচ্ছান্তে ।
৩৪| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:১৫
জাহিদ অনিক বলেছেন: জরিনা ইলেকট্রনিকসের হ্যান্ড মাইক থেকেই শুরু------------------ তারপর এক নাগাড়ে আইজদ্দিন কেবল বলে গেছে কষ্টের কথা----------------- নিজের কষ্ট, জাতীয় কষ্ট, আন্তর্জাতিক কষ্ট--- দেশের কষ্ট--- পতাকার কষ্ট-- এটা যেন আরেক কষ্ট ফেরিওয়ালার কষ্ট।
সময়ের উপযোগী লেখা। কিছু কিছু লাইন কোট করে দেয়ার ইচ্ছে ছিল- কিন্তু রাইট ক্লিক বন্ধ থাকায় পারা গেল না। তাই পুরো লেখাটিতেই ভালোলাগা।
আইজদ্দিন তার কষ্ট বয়ে বেড়াবেন ততদিন-- যতদিন অন্য কোণ আইজদ্দিন তার কষ্টের গল্প আমাদের না শোনাবে।
০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:০৮
আহমেদ জী এস বলেছেন: জাহিদ অনিক ,
"ভালোবাসার ফেরিওয়ালা" পরে "কষ্টের ফেরিওয়ালা" না হয়ে উপায় ছিলোনা ।
কারন আইজদ্দিন তার কষ্ট বয়ে বেড়াবেন ততদিন-- যতদিন অন্য কোণ আইজদ্দিন তার কষ্টের গল্প আমাদের না শোনাবে। তাই এক আইজদ্দিন হয়ে কষ্টের গল্প শুনিয়ে গেলুম ।
কিন্তু এই আইজুদ্দিন হয়তো আপনি নিজেও , কিম্বা সে কিম্বা আপনার পাশের লোকটি । এইসব আইজদ্দিন নিজেদের গল্প বলবে করে ??????????????
[ হুমমমমম রাইট ক্লিক না থাকায় কারো লেখা কোট করতে বিষম বেকায়দায় পড়তে হয় । ]
৩৫| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:৩৬
ডঃ এম এ আলী বলেছেন: সমাজের বিবিধ স্তরের হরেক পদের কষ্ট ভোগ ও অনুভবের বিষয়াবলী অতি কষ্ট করে বিষদভাবে তুলে ধরার কষ্ট টুকু ভোগ করেছেন দেখে যদিউ কষ্ট পাওয়ারই কথা তবে কষ্ট না পেয়ে কষ্টমাখা অনুভবের আবেশেই বেশ আগ্রহ ভরেই লেখাটির শেষ পর্যন্ত মনোনিবেশ সহকারে পাঠ করলাম ।
সমস্যার ধরন, প্রকৃতি ও কার্যকারণের সাথে ভালভাবে পরিচিতি না থাকলে এত চমৎকারভাবে অন্য কোন চরিত্রের জবানীতে তা ফুটিয়ে তোলা বেশ কষ্টকর ব্যপার , অভিনন্দন রইল চলিত , রম্য ও আঞ্চলিক শব্দসমৃদ্ধ কথামালায় রচিত কষ্টকর ও পরিশ্রমী লেখাটির জন্য । পোষ্টের কথামালার ধারাটা রম্য হলেও বর্ণিত ঘটনা বা বিষয়াবলী বাস্তবতার নীরিখে বর্তমানের অার্থ -সামাজিক -রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সমসাময়িক কিংবা নিকট অতীতের এতদসংক্রান্ত সকল প্রকার কষ্টের সাথে এতটাই সামঞ্জস্যপুর্ণ যে, একে রম্য না বলে বাস্তবসম্পন্ন বলাটাই যথাযথ বলে মনে করি ।
তবে কথা হলো শুধু আইজউদ্ধিনই নয় , কষ্টে আছে সকলেই , কেও কষ্টে আছে পেয়ে, আর কেও কষ্টে আছে না পেয়ে , যারা পেয়েছে তারা তা ধরে রাখার জন্য হরেক পদের বিষয় আঞ্জামের কষ্টের যাতনায় আছে, আর যারা না পাওয়ার যাতনায় আছে তাদেরতো কষ্টের কোন সীমা পরিসীমাই নেই , আর আমজনতার কষ্ট; সে যে কি তাতো আইজউদ্দীনের বয়ানেই দারুনভাবে পরিস্ফুট ।
এখন প্রশ্ন হলো এ সকল কষ্ট হতে পরিত্রানের উপায় টা কি? কারো কারো প্রিয়জনের হাত ধরে অতীতের রাস্তায় বিচরণ!! না কি নতুন কোন তরীকা অন্বেষন সেটাই মনে হয় ভেবে দেখার বিষয় ।
লেখাটি প্রিয়তে গেল ।
শুভেচ্ছা রইল
০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:৪৪
আহমেদ জী এস বলেছেন: ডঃ এম এ আলী,
শারীরিক অসুবিধা নিয়েও কষ্টকর ও পরিশ্রমী একটি মন্তব্য ।
লিখেছেন বাস্তবসম্পন্ন বলাটাই যথাযথ বলে মনে করি । মনে করা নয়, এর চে' বাস্তব আর নেই । এই চরম বাস্তবতার সাথেই আমাদের বসবাস । বর্তমানের অার্থ -সামাজিক -রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সমসাময়িক কিংবা নিকট অতীতের সমুদয় কষ্টের ছবি এটা । আমরাই এর স্রষ্ঠা , একক বা ছোট ছোট কিম্বা বৃহৎ দলবদ্ধ ভাবে ।
এ থেকে পরিত্রানের কোনও পথ নেই । যখন রক্তে পঁচন ধরে তখন তা ছড়িয়ে যায় সবখানে । এই পঁচা রক্ত ফেলে দিয়ে নতুন করে রক্ত সঞ্চালন করলে পরেই জীবনটা বাঁচানো যায় ।
ভালো থাকুন , সুস্থ্য থাকুন ।
শুভেচ্ছান্তে ।
৩৬| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:০৭
মিথী_মারজান বলেছেন: দুর্দান্ত স্যাটায়ার!
নিপুণ হাতে কি সুন্দর করে অসঙ্গতিগুলো তুলে ধরেছেন।
আইজুদ্দীনদের জন্য মায়া হয় আমার।
খুব কষ্ট হয় যখন ওদের ঘিরে মোট কথা ওদেরকে ছাপিয়ে অপসক্তিরা উল্লাসে মাতে, তান্ডব করে।
সত্যি বলতে লেখাটি পড়ে যতটা গভীরতা অনুভব করেছি তেমন করে অনুভূতিটা প্রকাশ করতে ভাষা পাচ্ছিনা আমি।
পাঠকদের স্পেলবাউন্ড করতে পারেন আপনি।
০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:২০
আহমেদ জী এস বলেছেন: মিথী_মারজান ,
আইজুদ্দীনদের জন্য মায়া হয় আমার
এই আইজদ্দিন কোনও একক সত্ত্বা নয় । হতে পারে সে সম্ভাবনা সঞ্জাত কিছু, অলীক কিছু ভ্রম । নতুবা এই আইজদ্দিনই আমি-তুমি-আমরা । যে অপসক্তিরা উল্লাসে মাতে, তান্ডব করে সেও তো আমরাই !
ভালো করে ভেবে দেখুন, এইসব অনাচার, অন্যায়, অনিয়মের পেছনে কারা ? এরা তো আমরাই । এই যে সড়ক নিয়ে এতো আন্দোলন হলো তারপরেও কি আমরা সড়কে ঐ ক'দিনের মতো নিয়ম মেনে চলছি এখন ? বাসচালকরাও কি চলছে ঐ ক'দিনের মতো ? ভিআইপি মানুষেরা কি উল্টো পথে এসে আবার ঘুর পথে সোজা রাস্তায় চলছে ? আবারও তো সেই অরাজকতা সবখানে, সবখানেই সেই অসঙ্গতি ! কে দায়ী ?
মনে দাগ কেটে যাওয়া এই মন্তব্যে লাইক দিয়ে রেখেছি আগেই ।
শুভেচ্ছান্তে ।
৩৭| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:৪৭
মলাসইলমুইনা বলেছেন: আহমেদ জিএস ভাই,
চোখ বন্ধ করে পড়লেওবলতে পারতাম এটা আমাদের ব্লগের জেম জিএস ভাইয়ের লেখা I প্রাসঙ্গিক কথাগুলোও ঠিকঠাক মত না বলতে পারলে অপ্রাসঙ্গিক মনে হয় অনেক সময় I দেশের নিশ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়া গুমোট পরিবেশের কিছু কথাটা দারুন প্রাসঙ্গিক হয়ে বলা হয়েছে 'কষ্টে আছে আইজদ্দিন'-এ I পড়তে পড়তে মনে হলো এই পতৰুমুতে না বললে মনে হয় এই কথাগুলো বলাই কষ্টকর হয়ে যেত I যে অসহিষ্ণু রাজনৈতিক আর সামাজিক কাঠামোতে আমরা চলছি এখন I দেশের বাস্তব কিছু ছবি, কিছু প্রয়োজনীয় কথা সাহিত্যের রং তুলি ছাড়াই অনবদ্য ভাষা ভঙ্গিতে ফুটিয়ে তুলেছেন গল্পে I কঠিন বাস্তবের গদ্যময় জীবনের গল্পে অনেক ভালোলাগা I
০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:২৫
আহমেদ জী এস বলেছেন: মলাসইলমুইনা,
অনেকদিন পরে এসে মন্তব্য করলেন দেখে ভালো লাগলো ।
যে অসহিষ্ণু রাজনৈতিক আর সামাজিক কাঠামোতে ভর করে বৈরী সময় পার করছি আমরা তারই একটা দলিল চিত্র রাখতে চেষ্টা করেছি । হয়তো আজ থেকে শতবর্ষ পরে কোনও এক ব্লগার জানবেন, সোনার মতো দেশটা একসময় এমনই ছিলো -- আগুনে পুড়ে কয়লার মতো । যে দেশে সবাই নিজের বিষয়-আসয়ে ফুলে ফেঁপে উঠতে ছিলো ব্যস্ত এবং তা করতে গিয়ে গা ভাসিয়ে দিয়েছিলো সীমাহীন অন্যায়ের স্রোতে, ধ্যানস্থ ছিলো পরের মাথায় কাঠাল ভেঙে খেতে , মগ্ন ছিলো সোনা-চান্দির সৌধ গড়ার স্বপ্নে ।
তখন হয়তো সব আইজদ্দিনের জন্য তার কষ্ট হবে ... কষ্ট হবে পূর্বপুরুষের কঠিন সময়ের ময়লা স্রোতে উজান বেয়ে চলার গল্পে ।
ভালো থাকুন আর থাকুন নিয়মিত । মাঝেমাঝে তব দেখা যেন পাই .........................
৩৮| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৬
খায়রুল আহসান বলেছেন: একজন ভাল লেখক, ভাল কবি হওয়া ছাড়াও আপনি একজন ভাল চিত্রশিল্পী বলে ব্লগ পড়ে পড়েই জেনে এসেছি। এখানে কথা দিয়ে যে ছবিটি আপনি এঁকে গেলেন, সেটাও হয়েছে এক বিমূর্ত শিল্প। সময়কে কেউ কথা দিয়ে এত সুন্দর করে আঁকতে পারে, তা দেখে আমি সত্যই বিস্মিত ও অভিভূত হ'লাম।
স্বাভাবিক পথে ঊর্ধ্বগামী ঢেকুরকে উদ্গত হতে না দিলে পায়ু পথে বায়ু বের হয়ে যায় চারিদিকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে; উদগীরণ্মুখ বায়ুকে ধরে রাখা যায়না।
০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:১১
আহমেদ জী এস বলেছেন: খায়রুল আহসান ,
আপনার এমন মন্তব্যে আমিও অভিভূত ।
এ শুধু ছবি নয় , কালের ক্যানভাসে লটকে থাকা এক নিদারূন বাস্তবের চিত্রও । তেল রং নয় , জল রংও নয় , অন্তরের ক্ষরণ থেকে উঠে আসা হুতাশনের কালি হাতে মেখে ব্লগের পাতায় ছাপ দিয়ে যাওয়া শুধু ।
ঠিকই বলেছেন - " উদগীরণ্মুখ বায়ুকে ধরে রাখা যায়না। " বায়ুর ধর্মই যে তাই , ছড়িয়ে পড়া - ভরে দেয়া শূন্যস্থান ।
আমি একজন "একজন ভাল চিত্রশিল্পী" নই । তবে আঁকার চেষ্টা করি । আঁকতে বসার জন্যে যে অলস সময়ের প্রয়োজন তা আমার জোটেনা খুব একটা । ব্লগে লেখা দিলে তার সাথে ছবি দিলে নাকি পোস্টটি আকর্ষনীয় হয় , ব্লগে লেখা দেখেছি । তাই ব্লগিংয়ের ফাঁকে ফাঁকে সময় খুঁজে পেইন্টশপে মাউস টেনে টেনে আঁকতে বসি । রেডিমেড ছবি দিতে আমার কেমন যেন বাঁধো বাঁধো ঠেকে ।
তাই আমার পোস্টে দেয়া ছবিগুলোর সিংহভাগই আমার নাদান হাতে আঁকা ।
শুভেচ্ছান্তে ।
৩৯| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৮
সামিয়া বলেছেন: বিদ্রোহের অদৃশ্য শক্তিশালী ছন্দে এক দেশপ্রেমিকের উপলব্ধি।। অনেক গুলো অসাধারণ, ভালোলাগা রইলো।।
০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:০৬
আহমেদ জী এস বলেছেন: সামিয়া ,
অনেক গুলো অসাধারণ ভালোলাগা দেখে আপ্লুত ।
সুন্দর মন্তব্যে লাইক ।
৪০| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:০৩
খায়রুল আহসান বলেছেন: ক্রোধ ন্যায্য হলে তার উদগীরণ ঘটবেই। যত বেশী টাইট করে তাকে আটকে রাখার চেষ্টা করা হবে, তত ভয়ঙ্কর এবং সর্বগ্রাসী হবে তার বিস্ফোরণ।
এ যাবত পড়া সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ মন্তব্যটা পেলাম ২৮ নম্বরে এসে। চঞ্চল হরিণী কে তার এই সুবিবেচিত ও সুবিন্যস্ত মন্তব্যের জন্য অভিনন্দন জানাচ্ছি। সেই সাথে আপনাকেও, আপনার প্রতিমন্তব্যটার জন্য।
০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:৪৪
আহমেদ জী এস বলেছেন: খায়রুল আহসান ,
লেখাটি পড়ে আপনার ক্রোধও ন্যায্যতার দাবীতে উদগীরিত হয়েছে মন্তব্যের বেশে ।
হ্যাঁ চঞ্চল হরিণী একটি জ্ঞানগর্ভ মন্তব্য করেছেন অনবদ্যতার সাথে ।
আবারও আসাতে কৃতজ্ঞ ।
ভালো থাকুন ।
৪১| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:৪৯
পুলক ঢালী বলেছেন: মনের গভীর থেকে উঠে আসা ভাবনাকে এমন শব্দশৈলীতে রূপান্তর দেশ সমাজ মানুষের পলাতকা আত্মকেন্দ্রীক চরিত্রের বয়ান ভাবতে পারছিনা কত অতল জ্ঞান এবং ভাষার উপর দখল থাকলে এমন করে লেখা সম্ভব। একসময় রাজাকার শব্দটি উচ্চারন করা ছিলো মহাপাপ তখন হুমায়ন আহমেদ রূপক হিসাবে পাখীর মুখ দিয়ে বলিয়েছিলেন তুই রাজাকার। এখানে আইজুদ্দীন রূপক কিন্তু ব্লগার মানেই হলো নাস্তিক, ধর্ম বিরোধী, সরকার বিরোধী এরকম আখ্যান দেওয়া আছে তাই আইজুদ্দীর বিপদটি কিন্তু রূপক নয়। সারাদেশের সব মানুষের চরিত্র দারুনভাবে রূপায়ন করেছেন প্রশংসা করার ভাষা নেই। ভাল থাকুন এই কামনা রইলো।
০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:২৬
আহমেদ জী এস বলেছেন: পুলক ঢালী ,
প্রখর দৃষ্টিশক্তি ও ভাবনা আপনার । ঠিক ধরেছেন, সারাদেশের অধিকাংশ মানুষের চরিত্রই মোটামুটি তুলে ধরতে চেয়েছি । স্বল্প পরিসরে যতটুকু পারা যায় ।
যেমন, বিড়িওয়ালা নিজের বসার টুলটি ছেড়ে দিয়েছে জমায়েতের সুযোগে বেশি বিক্রীর আশায় । আইজদ্দিনের কথা শুনতে নয় ভিখিরিরা এসেছে যদি হাত পেতে কিছু পাওয়া যায়। হ্যান্ড মাইকটি দেয়া হয়েছে বিনে পয়সায় প্রচারের জন্যে , আইজদ্দিনকে ভালোবেসে নয় । পকেটকাটারা সমাগম দেখে সুযোগের অপেক্ষায় , এমনি অনেক চরিত্র । অর্থাৎ আমরা হাযারো মানুষ হাযারো ধান্ধা নিয়ে সুযোগের অপেক্ষায় আছি সারাক্ষন । সবাই মিলে একট্টা হয়ে এক একজন আইজদ্দিন হয়ে উঠতে পারছিনে কখনই ।
অসম্ভব প্রেরণাদায়ী মন্তব্যে কৃতজ্ঞ । আবারও বলছি মন্তব্যে ++++
সাথেই থাকুন এমনি করেই ।
৪২| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:৪০
আখেনাটেন বলেছেন: লাল-সবুজের জমিনে শকুনদের পদচিহ্ন নিপুণভাবে চিত্রিত করেছেন। এভাবেই আইজুদ্দিনেরা চিৎকার করবে, সুবোধেরা পালিয়ে বেড়াবে, কিন্তু কোনো পরিবর্তন কি হবে কখনও। মনে তো হয় না। এটাই এখন আমাদের নিয়তি।
হয়তবা কিছুদিন পরে আরেক আইজুদ্দিনের একইরূপ ভাষণের মুখোমুখি হতে হবে কোনো আরেক রাস্তার মোড়ে। চলছে, চলবে...। আমজনতাও তালিয়া...
০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:৫০
আহমেদ জী এস বলেছেন: আখেনাটেন ,
এই আইজুদ্দিনেরা সারাটি জীবন চিৎকার করে যাবে, সুবোধেরা পালিয়ে বেড়াবে জীবনভর । এ আমাদেরই বেছে নেয়া শকুনি জীবন । এ জীবন আমরাই তৈরি করেছি একান্তই নিজ নিজ স্বার্থের কারনে । যে চিৎকার আমরা করি সবই আমাদের কর্মফলের সৃষ্টি ।
ভালো করে ভেবে দেখুন , এ সমাজ , এ রাষ্ট্র কি আমাদেরই তৈরী নয় ? আমরা আমজনতা মিলেই তো সমাজ গড়ি, রাষ্ট্রকে পরিচালনা করি ।
যে দেশে সবাই নিজের বিষয়-আসয়ে ফুলে ফেঁপে উঠতে ব্যস্ত এবং তা করতে গিয়ে গা ভাসিয়ে দেই সীমাহীন অন্যায়ের স্রোতে, ধ্যানস্থ থাকি পরের মাথায় কাঠাল ভেঙে খেতে , মগ্ন থাকি সোনা-চান্দির সৌধ গড়ার স্বপ্নে তবে তো একজন বিবেকের মতো আইজুদ্দিনকে এসব কথা বলতেই হবে বারে বার । আমজনতা হয়তো তালিয়াও দেবে কিন্তু সে তালিয়া যে তারই গালের উপর সজোর চপেটাঘাত বুঝে উঠতে পারবেনা কখনই , কারন ব্যক্তিস্বার্থই তার বোধের দরজা বন্ধ করে রাখবে ।
শুভেচ্ছান্তে ।
৪৩| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:২৪
আখেনাটেন বলেছেন: এ জীবন আমরাই তৈরি করেছি একান্তই নিজ নিজ স্বার্থের কারনে -- অাসলে এটা মানব প্রকৃতি। দেশ ও জাতিভেদে এর কোনো ভিন্নতা নেই। প্রতিটি মানুষ, প্রতিটি জাতি নিজ নিজ অবস্থানে স্বার্থপর। তা না হলে বিশ্বে এত এত যুদ্ধ বিগ্রহ হওয়ার কথা না।
এখানে উন্নত দেশ বলে তাদের মন-মানসিকতা উন্নত আর আমরা অনুন্নত দেশ বলে আমরা খারাপ এটা নয়। বাস্তবতা হচ্ছে তারা অন্যায়গুলো করতে পারে না কারণ সুশৃঙ্খল আইনের শাসন। এখন হয়ত বলবেন 'তারা ভালো বলেই তো সেই শাসনব্যবস্থা তৈরি করেছে'। বরং উল্টোটা সত্যি যে 'শাসন ব্যবস্থা ভালো বলেই তারা ভালো হয়ে গেছে'। তাহলে এই ভালো শাসনব্যবস্থা কে তৈরি করল? এটার উত্তর হতে পারে 'কিছু সেইন মানুষ বা নেতা'। আর এই নেতা জনগণ তৈরি করে নি। ন্যাচারালী এবং এ্যাবরাপ্টলী ঘটেছে। এভাবেই সাধারণ জেলেপাড়া থেকে সিঙ্গাপুর হতে পারে এক লি কুয়ানের কারণে। মাহাথিররা তৈরি করতে পারে চাকচিক্যময় দেশ। দক্ষিণ কোরিয়ার মতো সম্পদহীন দেশও পার্কের কারণে উন্নত বিশ্বের কাতারে আসতে পারে। পাশাপাশি দেশ ফিলিপাইন, উত্তর কোরিয়া, ইন্দোনেশিয়ানরা এ দেশগুলোতে কামলা পাঠিয়ে খুশি হয়।
এই লি, মাহাথির, পার্কেদের মতো নেতা আমরা বা আমাদের মতো তৃতীয় বিশ্বের অপরাপর দেশেরা পায় নি বলেই এখনও আইজুদ্দিনের মতো মানুষদের ভাষণ দিতে হচ্ছে, সুবোধদের পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে।
যে পরিবারের কর্তা নিয়ম নীতির তোয়াক্কা করে না, সে পরিবারের সদস্যরা কি কর্তাকে বাধ্য করাতে পারে তা করতে। আর ঐ পরিবারের সদস্যরাতো নিয়ম ভঙ্গকারীই হবে। এইসব নিয়ম ভঙ্গকারীদের কন্ট্রোলে আনার জন্যই রাষ্ট্রের উদ্ভব হয়েছে। তাই 'কল্যাণকর রাষ্ট্রের' কাজই হচ্ছে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা। আর এটা করবে ঐ 'কিছু সেইন নেতা', জনগণ নয়। সেই নেতা একদলীয় হতে পারে, অথোরিটারিয়ান হতে পারে, ডিকটেটর হতে পারে। উপরের ঐ সব নেতারা এইসব উপাধীতেই ভূষিত। আর ঐ রকম নেতার অভাবে আমরা ভুগছি অর্ধ-শতাব্দী পরেও।
০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:০৪
আহমেদ জী এস বলেছেন: আখেনাটেন ,
সুন্দর বিশ্লেষন করেছেন । ধন্যবাদ ।
'শাসন ব্যবস্থা ভালো বলেই তারা ভালো হয়ে গেছে'। একশো ভাগ সত্যি ।
তাহলে এই ভালো শাসনব্যবস্থা কে তৈরি করল? এটার উত্তর হতে পারে 'কিছু সেইন মানুষ বা নেতা'।
আমাদের দেশে এরা এব্রাপ্টলি তৈরী হয়না । আমরা গণতন্ত্রের নামে এদের তৈরী করি ধীরে ধীরে । প্রথমে ওয়ার্ড কাউন্সেলর, পরে মেয়র, শেষে পার্লামেন্ট মেম্বর । এই ধারাতেই এদেশে নেতা তৈরী হয়েছে স্বাধীনতার পর থেকে । আর তা করেছি একটি মাত্র অস্ত্র "ভোট" দিয়ে ।
যে পরিবারের কর্তা নিয়ম নীতির তোয়াক্কা করে না, সে পরিবারের সদস্যরা কি কর্তাকে বাধ্য করাতে পারে তা করতে। আর ঐ পরিবারের সদস্যরাতো নিয়ম ভঙ্গকারীই হবে।................ আর ঐ রকম নেতার অভাবে আমরা ভুগছি অর্ধ-শতাব্দী পরেও।.............তাই 'কল্যাণকর রাষ্ট্রের' কাজই হচ্ছে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা।
আপনার কি মনে হয় এই দেশটি একটি কল্যাণকর রাষ্ট্র ? কেন তা নয় , কেন তা হবেনা এই সব কথার জবাব এখানে পাবেন ----
ভোট : ইফ দ্য কান্ট্রি ইজ দ্য আনসার, হোয়াট ইজ দ্য কোয়েশ্চেন ?
ভালো লাগলো এরকম মন্তব্যের মিথষ্ক্রীয়া ।
৪৪| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:৫৬
আহমেদ জী এস বলেছেন: আখেনাটেন ,
সুন্দর বিশ্লেষন করেছেন । ধন্যবাদ ।
'শাসন ব্যবস্থা ভালো বলেই তারা ভালো হয়ে গেছে'। একশো ভাগ সত্যি ।
তাহলে এই ভালো শাসনব্যবস্থা কে তৈরি করল? এটার উত্তর হতে পারে 'কিছু সেইন মানুষ বা নেতা'।
আমাদের দেশে এরা এব্রাপ্টলি তৈরী হয়না । আমরা গণতন্ত্রের নামে এদের তৈরী করি ধীরে ধীরে । প্রথমে ওয়ার্ড কাউন্সেলর, পরে মেয়র, শেষে পার্লামেন্ট মেম্বর । এই ধারাতেই এদেশে নেতা তৈরী হয়েছে স্বাধীনতার পর থেকে । আর তা করেছি একটি মাত্র অস্ত্র "ভোট" দিয়ে ।
যে পরিবারের কর্তা নিয়ম নীতির তোয়াক্কা করে না, সে পরিবারের সদস্যরা কি কর্তাকে বাধ্য করাতে পারে তা করতে। আর ঐ পরিবারের সদস্যরাতো নিয়ম ভঙ্গকারীই হবে।................ আর ঐ রকম নেতার অভাবে আমরা ভুগছি অর্ধ-শতাব্দী পরেও।.............তাই 'কল্যাণকর রাষ্ট্রের' কাজই হচ্ছে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা।
আপনার কি মনে হয় এই দেশটি একটি কল্যাণকর রাষ্ট্র ? কেন তা নয় , কেন তা হবেনা এই সব কথার জবাব এখানে পাবেন ---- ভোট : ইফ দ্য কান্ট্রি ইজ দ্য আনসার, হোয়াট ইজ দ্য কোয়েশ্চেন ?
ভালো লাগলো এরকম মন্তব্যের মিথষ্ক্রীয়া ।
৪৫| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:৪০
জুন বলেছেন: বিভাজন যে কত মারাত্মক সেটা ধর্মীয়ই হোক আর রাজনৈতিকই হোক এক সময় সেটা মানুষ এক সময় ঠিকই উপলব্ধি করে। আপনি আইজুদ্দিন এর মাধ্যমে বলেছেন। আজ বিশ্বের সবচেয়ে বড় গনতান্ত্রিক দেশ ভারতের সুশীল সমাজ নিজেদের উদার ও ধর্ম নিরপেক্ষ দেশ বলতেও লজ্জা পায়। গরু রক্ষার নামে মানুষ হত্যা করতেও তাদের হাত কাপে না শাসক গোষ্ঠীর মদদে। আমাদের দেশ আজ ততটা ধর্মীয় ক্ষেত্রে না হলেও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বিবেধ বিভাজনে গভীরভাবে নিবিষ্ট এর ফল ভোগ করবে এ দেশবাসী। আমাদের নেতারা আগেই দেখে লোকটি কোন দল? কোন মতের? ক্ষমতায় থাকা শাসকদল যাদের সবার দায়িত্ব দেশের নাগরিকদের আপন ভেবে নেয়া। তা না করে আজ সবাই এই বিভাজনকেই মদদ দিচ্ছে।
এ ক্ষেত্রে একটি উদাহরণ দিতে চাই থাইল্যান্ডে একবার আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণে বোমা বহনকারী সহ কয়েকজন মারা গিয়েছিল। সে ঘটনার বর্ননা দিতে গিয়ে একটি মেয়েটি চোখে পানি ছল ছল অবস্থায় ধরা গলায় আমাকে বলছিল, " মামা আওয়ার কিং ক্রাই, হি সেইড দে আর অল মাই চিলড্রেন"। মেয়েটি কেদেছিল কারন তাদের রাজা কষ্ট পেয়েছে, কেদেছে। আমাদের শাসক শ্রেনী কেন আমাদের বিশেষ করে তরুন যুবক কিশোর যারা বিভিন্ন আন্দোলনে নামে তাদের সবাইকে সন্তানের মত দেখতে পারে না? নিজের সন্তানের মত না পারুক ভাই বোনের সন্তানের মত তো ভাবতে পারে। দেশ ঐক্য বদ্ধ হোক সবাই সুখী হোক। আইজুদ্দিনএর মত কেউ যেন কষ্টে না থাকে।
আমি জানি না আমার মন্তব্যটি আইজুদ্দিন পছন্দ করবে কি না বা তার চিন্তা ভাবনাকে তুলে ধরতে পেরেছি কি না। তবে এটাই আমার মনের কথা পোষ্টটি পড়ে।
+
১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:৫২
আহমেদ জী এস বলেছেন: জুন ,
সেই যে ঢিল ছুঁড়ে মৌমাছিদের উড়িয়ে দিয়ে গেলেন আর এলেন এতোদিন পরে ! দৌড় বোধহয় অনেকটা শেষ হয়েছে ? যাক্ স্বস্তি পেলুম আপনাকে দেখে ।
হ্যাঁ..... রাজনৈতিক আর সামাজিক ক্ষমতা, জনতার সম্পদ কুক্ষিগত করে রাখার ফুলপ্রুফ কূটকৌশল হিসেবে বিভাজনকে জিইয়ে রাখতেই হয় । তাই ইতিহাস বিকৃত করে , সমাজ-সংস্কৃতির বিশুদ্ধতায় পরিবর্তনের নামে অসুস্থ্য হাওয়া দিয়ে , পরমত অসহিষ্ণু হয়ে, পেশীশক্তির লালন-পালনের মধ্যে দিয়েই ঘুমন্ত জনতাকে আরও ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয় জুজুর ভয় দেখিয়ে । আর আপনার কথামতো, আমরা স্বজ্ঞানে বা অজ্ঞানে এই বিভাজন নামের কূটকৌশলকে আরও ফুলপ্রুফ করে তুলি দিনে দিনে । ফলে আমরা নিজেকে ছাড়া চিনিনে আর কাউকে !
আমরা থাইল্যান্ডের রাজার মতো প্রাজ্ঞ নই , তার মতো শিক্ষিতও নই যে প্রজার জন্যে কাঁদবো !
আপনার মনের কথাটি আইজদ্দিন হয়তো বুঝতে পেরেছে ।
দেরীতে হলেও প্লাস দেয়াতে ধন্যবাদ ।
৪৬| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:০২
উম্মে সায়মা বলেছেন: পোস্ট একটু বড় হওয়ায় দুইদিনে পড়েছি লেখাটা। আইজুদ্দিনের কন্ঠে আমাদের সমাজের অনেকগুলো অসংগতি তুলে ধরেছেন। এমন একটা বক্তৃতায় এমন ভাষার ব্যবহারটা অভিনব লেগেছে।
মাঝে মাঝে এমন আইজুদ্দিনরা গলা ওঠায় বটে তবে তা আবার আরো উঁচু গলার আওয়াজে চাপা পড়ে যায়। যুগ যুগ ধরে এভাবেই চলে আসছে....
ধন্যবাদ আহমেদ জী এস ভাই।
১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:৩৮
আহমেদ জী এস বলেছেন: উম্মে সায়মা ,
দুইদিন লাগিয়ে লেখাটি পড়েছেন জেনে ভালো লাগলো । তবে এটা ঠিক বক্তৃতা নয় বরং আমাদের আত্মকেন্দ্রীক চরিত্রের বয়ান !
যে দেশে সবাই নিজের বিষয়-আসয়ে ফুলে ফেঁপে উঠতে ব্যস্ত এবং তা করতে গিয়ে গা ভাসিয়ে দেয় সীমাহীন অন্যায়ের স্রোতে, ধ্যানস্থ থাকে পরের মাথায় কাঠাল ভেঙে খেতে , মগ্ন থাকে সোনা-চান্দির সৌধ গড়ার স্বপ্নে তবে তো একজন বিবেকের মতো আইজুদ্দিনকে এমন অসংগতির বয়ান করতেই হবে বারে বার ।
এ আমাদের নিজের দিকে ফিরে দেখার ইঙ্গিত ।
মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ ।
শুভেচ্ছান্তে ।
৪৭| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:৫৪
মেহেদী হাসান হাসিব বলেছেন: ভাইয়া আপনার একটা লেখায় যে কতগুল চিত্র তুলে ধরেছেন লেখাটা না পড়লে বুঝতে পারতাম না। আর বাস্তবতা এমনটাই, বর্তমান সামাজিক অবস্থা এমনটাই। ধন্যবাদ ভাইয়া
১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:১১
আহমেদ জী এস বলেছেন: Mehedi Hasan Hasib ,
ঠিকই বলেছেন , এ হলো বর্তমান সামাজিক অবস্থা । তবে সে অবস্থা বেশ জটিল ।
আমার ব্লগে আপনাকে স্বাগতম ।
শুভেচ্ছান্তে ।
৪৮| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:২৪
জুন বলেছেন: সেই যে ঢিল ছুঁড়ে মৌমাছিদের উড়িয়ে দিয়ে গেলেন আর এলেন এতোদিন পরে ! দৌড় বোধহয় অনেকটা শেষ হয়েছে ?
হা হা হা ঠিকই বলেছেন আপনি, দৌড় শেষ হলেও প্রাইজটা জীবনে হাতে তুলতে পারি নি আহমেদ জী এস ।
শুধু দৌড়ানোই সার
আপনার প্রতি মন্তব্যে মুগ্ধতা একরাশ ।
১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:৫৮
আহমেদ জী এস বলেছেন: জুন ,
মন্তব্যে একরাশ না পাওয়ার হাহাকার !
হা....হা...হা... শুধু দৌঁড়ানোই সার তো হবেই ! অন্যদের পেছনে পেছনে দৌঁড়ুলে তো প্রথম হতে পারবেন না , প্রাইজ পাবেন কি করে ? সবার আগে দৌঁড়ুতে হবে । দৌঁড়ুনো অব্যাহত থাক যেন একটা প্রাইজ আপনার হাতে ওঠে ।
আর প্রাইজ না পেলেই বা কি ? এই যে আইজদ্দিন কতো কথা বলে গেলো কেউ কি তার হাতে কোনও প্রাইজ তুলে দিয়েছে ?
আপনার শুভকামনায় ।
৪৯| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:৩৭
শামচুল হক বলেছেন: আইজুদ্দিনের কাহিনাটা বড়ই বেদনাদায়ক। বিদেশের ঘানি টেনে সব টাকা পাঠিয়েছে বউয়ের কাছে। বউ পুরো টাকা নিয়ে আরেক জনের সাথে ভেগে গেছে। নিজের টাকা আর বউ নিয়ে অন্যে মউজ করে আর আইজুদ্দি রাস্তায় রাস্তায় না খেয়ে ঘোরে। অনেক পুরানো কথা মনে করে দিলেন উস্তাত।
২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:৫৪
আহমেদ জী এস বলেছেন: শামচুল হক ,
হ্যা........ আইজদ্দিনরা এভাবেই ঘানি টেনে টেনে মরে ।
কেন যে আইজদ্দিনরা এভাবে মরে তারই একটা ছবি আঁকতে চেয়েছি লেখাতে ।
৫০| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৪১
যবড়জং বলেছেন: আইজদ্দিনরা লাল দালানে, নীলগাড়ীতে বন্দি থাক ,কালের কল চলতে থাকুক দাঁত মাজা কয়লায়, জীবানুরা বাড়তে থাকুক ,১০ মিনেট দূরত্বের স্বপ্ননীড় হোক অনন্তের পথ । উর্দিপরা আর আঙুল হেলানো লোকেরা কাঁঠাল ভেঙে খাক আমাদের বীর্য বংশবিস্তার করুক কাকেদের মতন ময়লা খাক ।।
২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:৪৮
আহমেদ জী এস বলেছেন: যবড়জং ,
আমার ব্লগে আপনার আগমনী বার্তাকে স্বাগতম ।
তীব্র ক্ষোভের প্রকাশ মন্তব্যে ।
কিন্তু এ যে আমাদেরই বেছে নেয়া শকুনি জীবন । এ জীবন আমরাই তৈরি করেছি একান্তই নিজ নিজ স্বার্থের কারনে । যে চিৎকার আমরা করি সবই আমাদের কর্মফলের সৃষ্টি । ভালো করে ভেবে দেখুন , এ সমাজ , এ রাষ্ট্র কি আমাদেরই তৈরী নয় ? আমরা আমজনতা মিলেই তো সমাজ গড়ি, রাষ্ট্রকে পরিচালনা করি ।
যে দেশে সবাই নিজের বিষয়-আসয়ে ফুলে ফেঁপে উঠতে ব্যস্ত এবং তা করতে গিয়ে গা ভাসিয়ে দেই সীমাহীন অন্যায়ের স্রোতে, ধ্যানস্থ থাকি পরের মাথায় কাঠাল ভেঙে খেতে , মগ্ন থাকি সোনা-চান্দির সৌধ গড়ার স্বপ্নে , সে দেশের লোকেরা কিছুই না পেয়ে শুধু বংশ বিস্তার করেই যাবে । এদের হুশ হবেনা কখনও কেবল বেড়ে যাবে হুতাশন ।
মন্তব্যে ভালো লাগা ।
শুভেচ্ছান্তে ।
৫১| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১২:১৫
নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: আগে একবার পড়েছিলাম মনে হচ্ছে, হয়তো গাড়িতে বসে পড়েছিলাম, লাইক কমান্ড করার মনেই ছিল না, আজ পড়তে পড়তে মনে পড়ে গেল সেদিন পড়তে পড়তে একসময় গাড়ির গতিতে আর নেটওয়ার্ক কাজ করছিলনা, বেরিয়ে পড়েছিলাম।
দারুণ গল্প, আইজুদ্দিনের সাথে আরও অনেককিছু সম্পর্ক উঠে এসেছে গল্পে।
অসাধারণ কথাসাহিত্য। ভালো লাগা জানবেন শ্রদ্ধেয় প্রিয়।
শুভকামনা আপনার জন্য সবসময়
০৯ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১১:১১
আহমেদ জী এস বলেছেন: নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন,
অনিবার্য কারনবশতঃ উত্তর দিতে দেরী হলো বলে দুঃখিত ।
আমরা সবাই কিন্তু এক একজন আইজুদ্দিন । আমাদের একেকজনের একেক রকমের গল্প হলেও মূল কিন্তু সেই বঞ্ছনারই ।
মন্তব্যের জন্যে অবশ্যই ধন্যবাদ ।
৫২| ০৭ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:০৬
নীল আকাশ বলেছেন: ভাই, প্রথমেই আমি করজোড়ে মাপ চেয়ে নিচ্ছি, এরকম একটা লেখা আগে না পড়ার জন্য। কাজের ব্যস্ততায় সব সময় সামুতে লেখা পড়ার সময় হয় না। তবে কোন অজুহাতই দেব না, এরকম লেখা না পরার জন্য। মুগ্ধ না মুগ্ধতা নয়, এটা মনে হয় অন্য কিছু, হয়তো উপযুক্ত ভাষা আমার জানা নেই! এই লেখা নিয়ে কিছু বলার জন্য। এই রকম একটা লেখা আমি গোটা সামু তে আর মনে হয় আর পাইনি। লাইক তো দিয়েছিই, প্রিয় তে নিয়ে রাখলাম আবার, আবার পড়বো বলে। আমার প্রিয় লেখা গুলি আমি বার বার ফিরে এসে পড়ি। জানার, শেখার কত কিছু আছে এখানে...........
সবাই লেখাটা নিয়ে অনেক কিছু বলে গেছেন। আমি শুধু নিজেকে নিয়ে কিছু কথা বলে যেতে চাই। বুয়েট থেকে পাশ করার পর সাথের সবাই টুপ টুপ করে ৬ মাসের মধ্যে দেশ থেকে চলে গেল, দেশে ফিরে আসার কথা বললে শুধুই হাসে! কেন যেন দেশ কে ছেড়ে চলে যেতে ইচ্ছে করল না? এখন এই সব স্বার্থপর মানুষদের দেশটা কে এভাবে নষ্ট করে ফেলা দেখে খুব করে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে ইচ্ছে করে....নিজেকে খুব অর্থহীন মনে হয়, খুব জানতে ইচ্ছে হয় কবে, কবে এই সব স্বার্থপর মানুষদের বোধদয় হবে, কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হবে..........।
আপনার জন্য শুভ কামনা রইল!
০৭ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:০১
আহমেদ জী এস বলেছেন: নীল আকাশ ,
প্রথমেই আমি করজোড়ে মাপ চেয়ে নিচ্ছি, এরকম একটা লেখা আগে না পড়ার জন্য। কাজের ব্যস্ততায় সব সময় সামুতে লেখা পড়ার সময় হয় না। তবে কোন অজুহাতই দেব না, এরকম লেখা না পরার জন্য। মুগ্ধ না মুগ্ধতা নয়, এটা মনে হয় অন্য কিছু, হয়তো উপযুক্ত ভাষা আমার জানা নেই! এই লেখা নিয়ে কিছু বলার জন্য। এই রকম একটা লেখা আমি গোটা সামু তে আর মনে হয় আর পাইনি। লাইক তো দিয়েছিই, প্রিয় তে নিয়ে রাখলাম আবার, আবার পড়বো বলে।
এমন করে বলে শুধু কৃতজ্ঞই নয় ঋণী করেও রাখলেন ।
.......খুব জানতে ইচ্ছে হয় কবে, কবে এই সব স্বার্থপর মানুষদের বোধদয় হবে....
আইজদ্দিনের মতো আমরাও জানতে চাই , আমাদের মতো আহাম্মকদের বোধদয় হবে কবে ?
সুন্দর মন্তব্যে লাইক ।
শুভেচ্ছান্তে ।
৫৩| ১৩ ই জুন, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৫৯
মিরোরডডল বলেছেন:
২০১৮ লেখায় আইজুদ্দিনের কণ্ঠে যে সামাজিক অসংগতিগুলোর কথা বলা হয়েছে, সেগুলো কি ২০২৩শে এখনো আছে?
সেই সমস্যাগুলো পাঁচ বছরে কতখানি পরিবর্তন হয়েছে?
১৩ ই জুন, ২০২৩ রাত ১১:০৮
আহমেদ জী এস বলেছেন: মিরোরডডল,
প্রায় পাঁচটি বছর পরে এই লেখা আপনার চোখে পড়লো! তবুও বলতেই হয় - বেটার লেট দ্যান নেভার......
আইজুদ্দিনের কণ্ঠে সামাজিক অসংগতি নয় সমাজ-রাষ্ট্র- ব্যক্তি মানুষের লোভ-লালসায় তৈরীকৃত অব্যবস্থাপনার শেষ পরিনতির কথাই উঠে এসেছে।
পাঁচটি বছর ধরে সমস্যাগুলো আরও প্রকট হয়েছে মাত্র, পরিবর্তন যা হয়েছে তা সমস্যার ব্যাপকতায় , ধরনে আর উলঙ্গতায়। জটিলতা বেড়ে গেছে, বন্ধ মুখ আরো বন্ধ হয়েছে। ভয় - ত্রাস গেড়ে বসেছে সবখানে...............
৫৪| ১৩ ই জুন, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৪৩
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ভাই কিতা কইতাম,
কওনের ভাষা নাইককা।
শুধু কমু ফাটিয়ে দিয়েছেন। আর তার লাই লেহায় রইলো +++++++++++
তবে শুধু আপনি ফাটিয়ে দিয়েছেন এমনটাই নয়, তারাও ফাটিয়ে দিয়েছেন আইজুদদির পিছনটা এবং তার সাথে সাথে আমজনতারও ১২ টা বাজিয়ে দিয়ে উনারা আছে মহাসুখে । দেশ ভাসছে উন্নয়নের জোয়ারের পানিতে নানা ভাগে ভাগ হয়ে।
আইজুদদি হারিয়ে গেছে তা সত্যি তবে তাহার বর্ণিত সমস্যাগুলো ঠিকই রয়ে গেছে বরং কিছু কিছু আরও বেড়েছে।আসলে আমজনতা হারিয়ে যাবে সমস্যা ও জটিলতার বেড়াজালে খাকি কিংবা উচছিষ্ঠভোগীদের কল্যাণে তবে তারা রয়ে যাবে আমৃত্যু ।
কারন - দেশটা তাদের পারিবারিক সম্পদ আর জনগণ হলো তাদের সম্পদ জোগানোর মেশিন।
২২ শে জুন, ২০২৩ দুপুর ১২:৫১
আহমেদ জী এস বলেছেন: মোহামমদ কামরুজজামান,
প্রতিমন্তব্য দিতে দেরীর জন্যে দুঃখিত।
দেশটা তাদের পারিবারিক সম্পদ আর জনগণ হলো তাদের সম্পদ জোগানোর মেশিন।
এটাই বাস্তবতা অথচ মেশিনের মতো অবিরাম চলেও জনগণ কখনই শাটডাউন হয়না। এটাই মর্মান্তিক......
©somewhere in net ltd.
১| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:২৮
মোস্তফা সোহেল বলেছেন: না পড়েই সবাই আগে প্রথম কমেন্ট করে!
আমিও তাই চেষ্টা করলাম