![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কাহিনিকে কেন্দ্র করে কম উপন্যাস লেখা হয়নি। হুমায়ূন আহমেদের জোছনা ও জননীর গল্প, শ্যামল ছায়া, আগুনের পরশমণি; সেলিনা হোসেনের হাঙ্গর নদী গ্রেনেড, কাকতাড়ুয়া; রবীন্দ্রনাথ ত্রিবেদীর ৭১'র দশ মাস; মইদুল হাসানের মূলধারা ৭১ প্রভৃতি। প্রবন্ধজাতীয় নন-ফিকশন বা আত্মজীবনীমূলক অথবা কবি-লেখকদের ডায়েরিজাতীয় বইও বেরিয়েছে প্রচুর, এখনও বেরোচ্ছে। বেশিরভাগ বইগুলোতে আমরা সাধারণত মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের অভ্যন্তরে যেসব ঘটনা ঘটেছিল, তারই বহিঃপ্রকাশ দেখতে পাই। ৭ই মার্চের ভাষণ, অপারেশন সার্চলাইট, ঢাকা শহরের করুণ পরিণতি, মুজিবনগর সরকার, অভ্যন্তরীণ যুদ্ধ, সীমান্তে যুদ্ধ, রণাঙ্গনের ইতিবৃত্ত, বধ্যভূমির উপাখ্যান, পাক বাহিনির নৃসংসতা, রাজকারদের অত্যাচার, ভারতের সহায়তা, মিত্রবাহিনী গঠন, শেষ অবধি চূড়ান্ত বিজয়—এসব নিয়েই থরেথরে সাজনো থাকে মুক্তিযুদ্ধের উপন্যাসের প্লটগুলো।
কিন্তু এর বাইরেও একটা শ্রেণি ছিলো, তাদের নিয়ে কলম চালাতে বেমালুম ভুলে যান আমাদের লেখকরা, তাদের কথা খুব অল্পই জানতে পারি আমরা বইগুলোতে; তবে—এই বইটা এর ব্যতিক্রম। এখানে সীমান্তের ওপারে আশ্রিত বাংলাদেশিদের বৃত্তান্ত তুলে ধরা হয়েছে।
আমরা কি জানি, সেই শরণার্থী হিসেবে আমাদের কাঁটাতারের বেড়া ডিঙিয়ে ভিন্ন একটা দেশে যাওয়া খুব বেশি সুখকর কিছু ছিলো না; শরনার্থী শিবিরগুলোতে, কলকাতার এখানে সেখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বাংলাদেশিদের কতটুকু সম্মান দেওয়া হতো! যেখানে পায়ের স্যান্ডেলের নাম অবধি 'জয় বাংলা স্যান্ডেল' বানানো হয়েছিল, তুচ্ছ একটা চোখ ওঠা রোগের নাম করা হয়েছিল 'জয় বাংলা রোগ'—সেখানে আমাদেরকে কতটা হেয় করা হয়েছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ন্যূনতম জীবিকার তাগিদে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত অভিজাতদেরও কুলি-মুটের কাজ করতে পর্যন্ত বাধেনি তখন।
কিন্তু, কেন? কেননা আমাদের তখন কোন পরিচয় ছিলো না। আমরা তখন উদ্বাস্তু, সম্পদহীন—শেকড় উপড়ে ফেলা আগাছা। বেওয়ারিশ—নিজ দেশ থেকে উচ্ছেদ করা কোনো কিছুই কোথাও টিকে থাকতে পারে না যথাযথ সম্মানের সাথে, আমাদের অবস্থাও ছিল ঠিক তাই।
সেইরকম একটা সময়ে তুলে ধরা হয়েছে দুজন নর-নারীর অব্যক্ত প্রেম-কাহিনি। তায়েবা, যে কি-না প্রচণ্ড জেদী এবং পরম জীবনীশক্তিসম্পন্না এক নারী; শেষ-মেষ হার মানতে বাধ্য হয় ক্যান্সারের কাছে। সে কখনও দানিয়ালকে বলতে পারে নি তাঁর মনের কথা; মৃত্যু যখন দরজায় ঠকঠক করে ভিতরে আসার অনুমতি চাইছিল, খুব সন্তর্পণে সে হাত ধরতে চায় দানিয়ালের। কিন্তু................!
©somewhere in net ltd.