নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একটা ঘুড়ি ছিল হোসেনের। কালো সুতার মাঞ্জার, হাওয়াই মিঠাই রঙের ঘুড়ি। বড্ড মন পছন্দের ছিল। স্কুল শেষে বন্ধুরা মাঠে খেলায় যখন মেতে থাকত, হোসেন এক ছুট দিয়ে বাসায় যেত আর ঘুড়ি নিয়ে বেড়িয়ে পড়ত। প্রতিদিন একবেলা ঘুড়ি না ওড়ালে হোসেনের ভালো লাগত না।
হাওয়াই মিঠাই রঙের ঘুড়ি ঐ নীল আকাশে উড়তে উড়তে হোসেনও যে মুক্ত পাখির মত উড়ে বেড়াত তা ওই ঘুড়ি আর হোসেন ছাড়া আর কেই বা জানত। কে বলেছে সম্পর্ক কেবল প্রানের সাথে প্রানের ই হয়, নির্জীব এর সাথেও হয়। জীবনে কিছু কিছু সময় কেবল বলতেই ইচ্ছে করে, মনে হয় কেউ একজন শুধু কথা শুনেই যাবে, কোনো প্রতিউত্তর থাকবে না, কোনো প্রতিক্রিয়া থাকবে না। শুধু শুনবে, হোক কথা অসুন্দর, হোক তা ভুল, না হয় হোলোই একটু আবেগী, কোনো জড়তা থাকবে না বলায়। এমন হয়ত সম্ভব নয়, তাই ই হয়ত হোসেন ঘুড়ি টাকেই বেছে নিয়েছে তার সংগী হিসেবে।
বন্ধুরা খুব বলত কিরে হাসু, খেলবি না? আজ ফুটবল খেলা আছে পাশের পাড়ার সাথে। তোকে খেলতেই হবে। হোসেনের মন পড়ে থাকে আকাশে উড়বার জন্য তাই শর্ত জুড়ে দেয়, হাফ টাইম পর্যন্ত খেলার, নইলে বিকেল টা যে ঘুড়ি ওড়ানো হবে না। কত সে স্মৃতি তার ঘুড়ির সাথে, কি কালো মেঘে বৃষ্টি আসি আসি করছে, আচ্ছা? কালো মেঘে হাওয়াই মিঠাই রং কেমন লাগবে? এই ভেবেই বের হয়ে যেত, নাটাই ঘুড়ি নিয়ে
শরৎ এর পেজা পেজা তুলোর ওই আকাশে, মনের সাথে মন রাংগিয়ে, কখনো গান গাইতে গাইতে, কখনো শীষ বাজাতে বাজাতে, সুতো ধরে টানতে টানতে, দূরে...... বহু দূরে উড়তে উড়তে কত কিছু ভাবতে ভাবতে, ক্ষনিক আনমনা হতে হতে, কোলাহল ছাড়িয়ে ঘুড়ি ভাসত ওই সপ্নের আকাশে। কত জন বলত, কি মজা পাস তুই ঘুড়ি উড়িয়ে? হোসেনের কাছে কি শুধু ঘুড়ি খেলার ই মাধ্যম ছিল?
একবার ঘুড়ির সুতো কেটে ভাসতে ভাসতে গ্রাম পেড়িয়ে গেল, হোসেনের যেন আর কিচ্ছু চাই না, শুধু তার হাওয়াই মিঠাই কেই চাই।
চোখের কোনে অপ্রতিরোধ্য জল, বুকে প্রচন্ড খা খা নিয়ে খুজতে খুজতে হয়রান হয়ে খুজে পেয়েছিল অবশেষে। সেবার বেশ সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল, বাড়িতে বকুনিও জুটেছিল বেশ। কিন্তু মনে যে শান্তি ছিল। আহা কি সেই দিন গুলি। হোসেন কে কখনো ভাসাত, কখনো ওড়াতো, কখন খুব দূরে নিয়ে যেত, ওই সময় টুকু যেন আর কিচ্ছু নেই, জাগতিক আর কোন আচার ব্যবহার নেই। কি শান্তি।
বহু বছর পর, হোসেনের আজ বড্ড ঘুড়ি ওড়ানোর শখ জেগেছে। কিন্তু ঘুড়ি ওড়ানোর সেই মন মত আকাশ টা আর নেই। মন পছন্দের সেই হাওয়াই মিঠাই রং টাও কেন যেন আর মনে ধরছে না।
পিচ ঢালা রাস্তাটা বড্ড কর্কশ লাগে, নিজেকে বড্ড ভার ভার লাগে, আকাশে ওড়াটা আর হয় না।
২০ শে জুন, ২০২০ রাত ১১:৪৮
ঘুটুরি বলেছেন: শহরে ঘুড়ি ওড়ানো হয় না বললেই চলে।
২| ২১ শে জুন, ২০২০ রাত ১২:০৫
নেওয়াজ আলি বলেছেন: অসাধারণ উপস্থাপন ।
২১ শে জুন, ২০২০ রাত ১২:৫৯
ঘুটুরি বলেছেন: ধন্যবাদ অনেক
৩| ২১ শে জুন, ২০২০ রাত ১২:১২
মা.হাসান বলেছেন: হাওয়াই মিঠাইয়ে আাজকাল বিষাক্ত রঙের ব্যবহার, জড়ের সাথে কথা বলার সুযোগও কমে আসছে। নিজের সাথে নিজে কথা বলা ছাড়া অপশন বেশি একটা নেই।
পাতাঝরার গল্প না লিখে কিশলয়ের গল্প লিখুন না একটা প্লিজ।
২১ শে জুন, ২০২০ রাত ১:০৩
ঘুটুরি বলেছেন: ঠিক বলেছেন। পাতা যখন ঝড়তে শুরু করে তখন সব পাতা ঝড়ে যেতেই দেয়াই ভাল তাতে নতুন পাতা জায়গা পাবে। পাতা গুলি ঝড়ে যাক না হয়, এই পাতা ঝড়ার দিনগুলিতে না হয় একটু সাথে থাকুন। কিশলয় আসবেই। ধন্যবাদ জানবেন।
৪| ২১ শে জুন, ২০২০ রাত ১২:২৪
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
নষ্টালজিয়া মাঝে মাঝে
মানুষকে বহুদূর নিয়ে যায়।
মনের আনাচে কানাচে ঘুরে
ফিরে আসে তার বাল্য স্মৃতি!
আহা সে যে আমার নানান
রঙ্গের দিন গুলো সে যে আর
সোনার খাঁচায় রইলোনা!!
২১ শে জুন, ২০২০ রাত ১:০৫
ঘুটুরি বলেছেন: সুন্দর বলেছেন। ধন্যবাদ জানবেন
৫| ২১ শে জুন, ২০২০ রাত ২:১৩
কল্পদ্রুম বলেছেন: নস্টালজিয়ার বাংলা কি হতে পারে!
২১ শে জুন, ২০২০ রাত ২:৫৬
ঘুটুরি বলেছেন: অভিধানে যথার্থ অর্থ হয়ত পাওয়া যাবে, কিন্তু এই নস্টালজিয়ার মানে ব্যাক্তি থেকে ব্যাক্তি অর্থ বদলায়। আমি বলতে চাইছি আমার যে স্মৃতি ফিরে পাবার ব্যাকুলতা, সেই ফিরে ফিরে চাওয়া, সেই অতীতের ঘ্রান যেখানে আমার জুড়ায় পরান তা কি অভিধানের ছোট্ট অর্থেই প্রকাশ পাবে? তাই নস্টালজিয়ার বাংলা মানে আমি খুজে পাইনা সঠিক। যার যে অর্থে সস্তি আসে, আসুক না। ধন্যবাদ
৬| ২১ শে জুন, ২০২০ রাত ২:২৭
রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: শহরে ঘুড়ি ওড়ানো হয় না বললেই চলে।
অল্প কিছু ছেলে পেলে ছাদে ঘুড়ি উড়ায়। ভালো লাগে আমার।
৭| ২১ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১২:১১
ঊণকৌটী বলেছেন: এই লকডাউন সময়ে আমদের আগরতলায়,বহুযুগ বাদে ঘুড়ি খেলার চল টা আবার ফিরে এসেছে। ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা বাপ কাকাদের খেলতে দেখে বইয়ে পড়া আর বাস্ত্যবের ঘুড়ি খেলার পার্থক্য টা বেশ ভালই বুঝতে পারছে।
২১ শে জুন, ২০২০ বিকাল ৪:২৬
ঘুটুরি বলেছেন: পুরোনো কিছু শৈশব ফিরে আসুক বর্তমানে। বড্ড যন্ত্র নির্ভর হয়ে পড়ছি আমরা।
৮| ২১ শে জুন, ২০২০ বিকাল ৫:০০
মিরোরডডল বলেছেন: "ঘুড়ি তুমি কার আকাশে ওড়ো
তার আকাশ কি আমার চেয়ে বড়?"
হোসেনের ঘুড়িকে সঙ্গী হিসেবে নেয়াটা আমার স্বাভাবিক মনে হয়েছে কারণ এটা আমাদের জীবনে অনেকসময় হয়ে থাকে । মানুষের সঙ্গের সাথে হয়তো তার তুলনা হয়না কিন্তু ঘুড়ির মতো কোনকিছুর সঙ্গ হয়তো সাময়িকভাবে ভুলিয়ে রাখে আমাদের নিঃসঙ্গতা ।
হোসেন যেন আবারও তার আকাশটাকে খুঁজে পায় ।
২১ শে জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩৫
ঘুটুরি বলেছেন: একমত
৯| ২২ শে জুন, ২০২০ রাত ১২:৫২
শের শায়রী বলেছেন: অনেক আগেই লিখছিলাম সম্ভবতঃ আপনার প্রথম বা দ্বিতীয় পোষ্টে আপনার লেখার হাত শক্তিশালী। হ্যা হোসেনের আকাশটা হারিয়ে গেছে।
২২ শে জুন, ২০২০ রাত ১:২৫
ঘুটুরি বলেছেন: ধন্যবাদ। অনুপ্রানিত হলাম। তবে আমি আপনার লেখার একজন ফ্যান। গোগ্রাসে পড়ি
©somewhere in net ltd.
১| ২০ শে জুন, ২০২০ রাত ১১:৪১
রাজীব নুর বলেছেন: ঘুড়ি খুবই আনন্দের খেলা। চ্যালেঞ্জ আছে।
ঘুড়ি আমার খুব পছন্দের খেলা।