![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
‘‘আত্মত্যাগ সব সময় ভালো কিন্তু মাঝে মাঝে বিরক্তিকরও বটে...’’
পশ্চিমাকাশে ডুবে গেল 2014 সালের শেষ সূর্য। বিদায় নিয়েছে আরো একটি বছর। সদ্যবিগত বছর আগের বেশ কয়েকটি বছরের তুলনায় ছিলো একটু বেশি ভিন্ন! স্বভাবজাত খুন, গুম, হামলা-মামলা, নির্যাতন, পরিবেশ বিপর্যয় এর পাশাপাশি ছিলো রাজনৈতিক মত নিঃর্শেষসহ যুদ্ধাপরাধী বিচারের ফাঁসি এবং কূটনৈতিক শিষ্টাচার লঙ্ঘন! বছরের শুরুতে ৫ই জানুয়ারী 2014ইং তে ভোটারবিহীন নির্বাচন করে বিনা প্রতিদন্ধীতায় 153 জন প্রার্থীকে সংসদ সদস্য হিসেবে ঘোষনা করেন নির্বাচন কমিশন। এবং বাকী আসনগুলোতে 5-10% এর মতো ভোট কাষ্ট হয়েছে বলে খবর প্রকাশ হয়। এর পরবর্তীতে বিগত সংসদ সদস্যদের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পূর্বেই নবাগতদের শপথ করিয়ে এক আসনে দুই মন্ত্রী এবং কোনো কোনো আসনে দুই এমপি হওয়ার খবর প্রকাশ হতে থাকে!
ক্ষমতায় আসীন হওয়ার কিছু দিনের মধ্যে ঘটে গেলো গামেন্টস ইতিহাসে এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা! যার ফলশ্রুতিতে এই দেশ হারিয়েছে জিএসপি নামক যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে কোটা ভিত্তিক গামেন্টস তৈরি পোশাক রাপ্তানি ব্যবস্থা। তার ক্ষত শুকাতে না শুকাতে ঘটে গেলো আরেক নারকীয় তান্ডব। ৫ই মে 2014ইং শাপলা চত্ত্বর ট্র্যাজেডি! কি ভীবিষিকাময় ছিলো সেই দিনের রাত্রের বেলা! সেই রাতের কথা আজো ভুলেনি এই দেশের গণমানুষ। হঠাৎ একদিন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে সোনার ছেলেদের হাতে প্রকাশ্যে প্রাণ দিয়েছিলো বিশ্বজিৎ! এর রেশ কাটতে না কাটতেই পত্রিকার শিরোনাম হলো- নারায়ণগঞ্জের 7 খুন! অধ্যবদি পর্যন্ত এর কোনো কূল কিনারা করতে পারেনি সরকার। অতঃপর দেশের ইতিহাসে ঘটে গেলো আরেক তকমা লাগানো বিদ্যুৎ বিপর্যয়, যাকে বিদ্যুৎ ব্ল্যাক আউট হিসেবে অভিহিত করা হয়। তারপর একদিন শুক্রবার মসজিদে যাচ্ছিলাম হঠাৎ একটি দোকানে আবিষ্কার করি আমার দেশ পত্রিকা অফিসে আগুন এবং পত্রিকার সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পুড়ে ছাঁই! মুহুর্তের মধ্যে সব শেষ হয়ে গেলো এবং আজ পর্যন্ত তার কোনো খবর আর প্রকাশ হয়নি। অবশেষে বছরের শেষ প্রান্তে এসে শিশু জিয়াদের মৃত্যু প্রতিটি বিবেকবান মানুষকে যেনো কাঁদিয়ে গেলো সারা বছরের জন্য!
বলা হয়ে থাকে বর্তমান ক্ষমতাসীনারা ক্ষমতায় আসার পর থেকেই মূলত আইনের শাসনেরও অবনতি হয়েছিলো বৈকি! দুর্নীতি সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রবেশ করার খবর প্রকাশ হতে থাকে চারদিকে; কিন্তু রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান থেকে একে কোনো কোনো ক্ষেত্রে সেসব অন্যায়ের বৈধ সনদও দেয়া হয়েছে। যদিও অসংখ্য ব্যর্থতার গ্লানি ও হতাশার মধ্যে হারিয়ে গেছে জাতীয় জীবনের কিছু সাফল্য ও অগ্রগতি। যেমন – বছরের শুরুতেই ভোটারবিহীন নির্বাচন পুরো জাতিকে বিস্মিত ও ক্ষুদ্ধ করেছে। যদিও তা নিয়ম রক্ষার নির্বাচন বলে চালিয়ে দেয়া হয়েছিলো এবং পরবর্তীতে সবার অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে বলে জানানো হয়েছিলো। অথচো এর ও কোনো সমাধান আজো জাতী দেখতে পায়নি।
মূলত এই কারণে দূরত্ব বেড়েছে দাতাসংস্থা, বিশ্বব্যাংক, মুসলিম বিশ্ব, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে। অন্যদিকে সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে যোগ হয়েছে এক আধিপত্যবাদ। জাতীয় চ্যানেলগুলোতে হরহামেশায় উপস্থাপন করা হয় ভিন্ন দেশের সংস্কৃতি। অন্যান্য আগের বছরগুলোর মতোই মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে অনেক। রাজনৈতিক নিপীড়নে মাত্রা আগের বছরগুলোর চেয়ে কমেনি। বিরোধী রাজনৈতিক নেতারা মামলার চাপে চিঁড়েচ্যাপ্টা হয়েছেন। দলীয়করণে প্রশাসন স্থবির হয়ে রয়েছে! শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস আর খুনোখুনি বন্ধ হয়নি। প্রশ্নপত্র ফাঁসের মাধ্যমে কোমলমতি জিনিয়াস শিক্ষার্থীদের করা হয়েছে একঘরে। নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি এক ধরনের সংস্কৃতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে। বিশ্ব বাজারে জ্বালানির মূল্য কমার পরও আমাদের দেশে বরাবরের মতো বেড়ে চলেছে! জানা গেছে, সামনে আরো বাড়ানো হবে।
লুটপাটে ভেঙ্গেপড়া শেয়ারবাজারসহ দুর্বল হয়ে পড়া ব্যাংকিংব্যবস্থা আরো ঝিমিয়ে পড়েছে! সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারি চাপে আরো নতজানু নীতি গ্রহন করে চলেছে বলে মনে করা হয়। এমনকি বিচার বিভাগ নিয়ে মানুষের মধ্যে নেতিবাচক ধারণা আরো বেড়েছে। এরই ভিতর প্রশাসনিক বেতন কাঠামো শতভাগ বৃদ্ধি করে পুরো ষোলকোটি মানুষের জন- জীবনকে করে তুলেছে দুঃসহময়! কারণ দশ লক্ষ লোকের বেতন বৃদ্ধি করে বাকী 15কোটি 90লক্ষ লোকের মাথার উপর একটি বাড়তি বোঝা চাপিয়ে দেয়া হয়েছে! এর মধ্যে নতুন সূর্য উদিত হলো নববর্ষের বার্তা নিয়ে। স্বাগত-2015 সাল। জাতীয় জীবনে ইতিবাচক তথা স্বস্তিকর ধারা ফিরে আসবে এ বছরে এমনটি প্রত্যাশা করি।
©somewhere in net ltd.
১|
০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:৪৭
রুপম হাছান বলেছেন: আমাদের স্মরণশক্তি একটু কম বলে আমরা বিগত দিনের খিস্তি-খেউর এর কথা বেশি দিন মনে রাখতে পারিনা। আর তাই, এখন যারাই এই জাতীকে আগামী দিনের জন্য বেশি বেশি ভালো স্বপ্ন দেখাতে পারবেন আবার তারাই ক্ষমতায় আসবেন বলে মনে করি।