![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
‘‘আত্মত্যাগ সব সময় ভালো কিন্তু মাঝে মাঝে বিরক্তিকরও বটে...’’
আজ সারা বিশ্বে একযোগে পালিত হয়ে গেল বিশ্ব নারী দিবস। এবারের বিশ্ব নারী দিবসের মূল প্রতিপাদ্য ছিলো-নারীর ক্ষমতায়ন মানবতার উন্নয়ন। প্রতিবারের ন্যায় এবারেও ৮ই মার্চ পালিত হলো বিশ্ব নারী দিবসটি। নারী আজ স্বাধীন, আত্মনির্ভরশীল। তাদের এই স্বাধীনতা ও অর্জনের আত্মবিশ্বাস নির্মমভাবে হত্যার শিকার হচ্ছে প্রতিনিয়তই। থাকছে না তাদের নিজেদের যোগ্যতার সম্মানের সাথে কাজ করার অধিকার। কর্মক্ষেত্রে, পথ চলতে, পাবলিক পরিবহনে তারা অপমান আর লাঞ্ছনার শিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। শিক্ষিত, অশিক্ষিত, স্কুলশিক্ষিকা, ছাত্রী, গার্মেন্টসকর্মী, গৃহবধু সহ অবুঝ শিশু পর্যন্ত রেহায় পাচ্ছেনা লোভাতুর অসৎ কুচক্রী মহল থেকে। অথচ বাংলাদেশের অর্থনীতির বড় মেরুদন্ডটি টিকে আছে লাখ লাখ নারীর মাথার ঘাম পায়ে ফেলা পরিশ্রমের বিনিময়ে।
১৯১০ সালের এই দিনে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে আন্তর্জাতিক সমাজতান্ত্রিক সম্মেলনে জার্মানির নেত্রী ক্লারা জেটকিন ৮ই মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন। তবে নারী দিবসের পটভূমি রচিত হয় এরও অর্ধশতাধিক বছর আগে। সেই দিনটি ছিল ১৮৫৭ সালের ৮ই মার্চ। সেদিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে একটি সুই কারখানার নারীশ্রমিকেরা দৈনিক শ্রমঘন্টা ১২ থেকে কমিয়ে আট ঘন্টায় নির্ধারণ, নায্যমজুরি ও কর্মক্ষেত্রে সুস্থ ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবিতে সোচ্চার হয়েছিলেন। ১৮৬০ সালের একই দিনে গঠন করা হয় ;নারী শ্রমিক ইউনিয়ন। ১৯০৮ সালে পোশাক ও বস্ত্র শিল্পের কারখানার প্রায় দেড় হাজার নারীশ্রমিক একই দাবিতে আন্দোলন করেন। অবশেষে আদায় করে নেন দৈনিক আট ঘন্টা কাজ করার অধিকার। এরপর থেকেই সারা বিশ্বে দিবসটিআন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। জাতিসঙ্ঘ ১৯৭৫ সালে আন্তর্জাতিক নারীবর্ষে ৮ই মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালন শুরু করে। এর দুই বছর পরে জাতিসঙ্ঘ এই দিনটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
বর্তমান বিশ্বে নারীকে বাদ দিয়ে কোনো মানবীয় সমাজের কল্পনাও করা যায় না। সভ্যতার ইতিহাসে পুরুষের পাশাপাশি সমাজের ভিত রচিত হয়েছে নারীর ভূমিকা ও উদ্যেগের ফলেই। এজন্য দুনিয়ার বুকে সুন্দর ও কল্যাপণকর সমাজব্যবস্থা গড়ে তুলতে নারীর মর্যাদা ও সঠিক অধিকার জরুরি। তবে নারীর আধুনিকতার নামে নারী সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠনগুলো যেভাবে এই নারীর সম-অধিকার আদায়ের ব্যাপারে সোচ্চার হয়েছেন কিন্তু নারী কিসে খাটো হয় কিসে তার সম্মান নষ্ট হয় সেদিকে ঐসকল সংগঠনগুলোর কোন দায় আছে বলে মনে হয় না। মূলত এরা নারীদের পুরুষ শাসিত সমাজে সম-অধিকারের নামে পণ্যরুপে উপস্থাপন করছে বলে মনে করি। তাইতো আজ নারীদের অধিকারের নামে তাদের চাওয়া-পাওয়াকে ভূলুন্ঠিত করা হচ্ছে হীন করা হচ্ছে তাদের সম্মানকে। এমতাবস্থায় উন্নত নৈতিকতা সম্পন্ন ও কল্যাণকর সমাজব্যবস্থা গঠনের লক্ষ্যে নারীর অধিকার বেকল ইসলামেই সংরক্ষিত। বাস্তবতার নিরিখে ইসলামই তাকে সুষ্ঠু সুন্দর ও উন্নত মর্যাদাসম্পন্ন ব্যবস্থা প্রদান করেছে, তা সমাজে নারী-পুরুষ বৈষম্য দূরীকরণে সবচেয়ে কর্যকর। ইসলামি সমাজব্যবস্থা নারীর অর্থনৈতিক অধিকার, সামাজিক অধিকার, শিক্ষা গ্রহণের অধিকার দেয়ার পাশাপাশি সম্মান ও মর্যাদা সহকারে নারীকে তা অর্জন করার ও ব্যবস্থাও করে দিয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক যে নারীর অধিকার আদায়ের নামে কিছু কথিক নারীবাদী সংগঠনের হীন কৌশলের স্বীকার অনেক নিরীহ নারীরাও বুঝতে পারেন না, যে শাশ্বত বিধান তার অধিকারকে সংরক্ষণ করে এবং সর্বোচ্চ মর্যাদা প্রদান করে। নারীকে আল্লাহ যে উচ্চ মর্যাদা দান করেছেন, তার পরিপ্রেক্ষিতেই ইসলাম নারী ও পুরুষ উভয়ের কর্মক্ষেত্রকে পৃথক করে দিয়েছে। একমাত্র ইসলামি ব্যবস্থা নারীদের প্রকৃতি ও বৈশিষ্ট্যের দিকে লক্ষ রেখে তাদের সঠিক মর্যাদা ও সম্মান দেয়া হয়েছে।
আজ সারা বিশ্বে নারী অধিকারের কথা বলা হলেও বাংলাদেশসহ প্রায় দেশে এখনো নারীর অধিকার ও মর্যাদা ভূলুন্ঠিত। বর্তমানে নারী নীতিমালা তৈরি করে নারী অধিকারের নামে নারীকে পণ্য বানানোর অপচেষ্টা করছে। এছাড়া বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সেকুলারিজম এর নামে কোনো কারণ ছাড়াই কিংবা অভিযোগ বিহীন পর্দানশীল নারীদেরকে গ্রেফতার করেছে। সন্তানসম্ভবা কিংবা অশীতিপর বৃদ্ধা নারীও তাদের এই প্রতিহিংসা থেকে রক্ষা পায়না। শুধু গ্রেফতার নয়, সেখানে রিমান্ডের নামে করা হচ্ছে নির্মম নির্যাতন। মুখে নারী অধিকারের কথা বললেও বিশ্বের বিভিন্ন দেশগুলোতে এখোনো নারীদের মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে। তাইতো তুরষ্কের প্রেসিডেন্ট বলেছেন- নারীদের সম-অধিকার নয় বরং সমশ্রদ্ধা প্রয়োজন। যদি এই একটি বাক্য সারা পৃথিবীতে নারীদের কল্যাণে প্রয়োগ করা হয়, তাহলে হয়তো নারীরা তাদের প্রাপ্য অধিকার ফিরে পাবেন।
তাই আশা করি, সকল স্তরের নারীরা উজানে গা না ভাসিয়ে, তাঁরা তাঁদের নিজস্ব বিবেক, বুদ্ধি এবং নৈতিক চিন্তা-চেতনাকে কাজে লাগিয়ে প্রাপ্য অধিকারের প্রতি সম্মান জানাবেন; যা তাঁদের জন্য স্বয়ং মহান রাব্বুল আলামিন এর পক্ষ থেকে দান করা হয়েছে। আজকের এই দিনে নারীদের প্রতি জানাই অশেষ শ্রদ্ধা। শুভ হোক নারী দিবস।
০৯ ই মার্চ, ২০১৫ সকাল ১১:০৪
রুপম হাছান বলেছেন: জনাব জাফরুল মবীন ভাই আপনাকেও অশেষ ধন্যবাদ জানাই।
সাথে সাথে নারীদের আগামী দিনের পথচলা সুন্দর, ঝঞ্ঝাটমুক্ত, নির্বিঘ্ন ও আনন্দদায়ক হোক এই কামনা করি।
আপনার মূল্যাবান ফিডব্যাকের জন্য পুনরায় ধন্যবাদ লইবেন। লাইকস।
©somewhere in net ltd.
১|
০৯ ই মার্চ, ২০১৫ সকাল ৮:১০
জাফরুল মবীন বলেছেন: বিশ্বের সকল নারী তার প্রাপ্য মর্যাদা লাভ মানুষ হিসাবে এবং নারী হিসাবে এ শুভকামনা রইলো।সবাইকে “বিশ্ব নারী দিবস” শুভেচ্ছা।
রুপম হাছান আপনাকেও ধন্যবাদ বিষয়টি নিয়ে আলোকপাত করার জন্য।