নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

“আমি আপনার কথার সাথে দ্বিমত পোষণ করতেই পারি কিন্তু আপনার কথা বলার স্বাধীনতা রক্ষার প্রয়োজনে জীবনও উৎসর্গ করতে পারি”

রুপম হাছান

‘‘আত্মত্যাগ সব সময় ভালো কিন্তু মাঝে মাঝে বিরক্তিকরও বটে...’’

রুপম হাছান › বিস্তারিত পোস্টঃ

-ইসলামে অমুসলিমদের অধিকার : অতঃপর অবিশ্বাসীদের প্রতি বিশ্বাসীদের করণীয়-

০৯ ই মার্চ, ২০১৫ দুপুর ১২:০৩

ইসলামে বিধর্মী তথা অমুসলিমদের তথা অবিশ্বাসীদের জন্য ইনসাফপূর্ণ ব্যবহার পাওয়ার অধিকার রয়েছে। ইসলামী রাষ্ট্রেরন ছায়াতলে যেসব অমুসলিম বাস করে, তাদের জন্য ইসলাম বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। ইসলামী পরিভাষায় তাদের বলা হয় ‘জিম্মি’। জিম্মি শব্দের অর্থ ‘চুক্তি’ বা ওয়াদা। এ শব্দটি জানিয়ে দেয় যে, এদের জন্য মহান আল্লাহ তায়ালা এবং তাঁর রাসূল (সা.) এর একটা ওয়াদা রয়েছে। মুসলিম জামাত সে ওয়াদা পালনে বাধ্য। আর তা হচ্ছে এই, তারা ইসলামের সুশীতল ছায়াতালে সম্পূর্ণ নিরাপদ ও নিশ্চিন্ত জীবন যাপন করতে পারবে। আধুনিক ব্যাখ্যায় এরা ইসলামী রাষ্ট্রের অধিবাসী নাগরিক। প্রথম দিন থেকেই মুসলিম সমাজ এ সময় পর্যন্ত এ ব্যাপারে সম্পূর্ণ একমত যে, ইসলামী রাষ্ট্রে মুসলিমদের জন্য যে অধিকার, অমুসলিমদের জন্যও সেই একই অধিকার। তাদের যা দায়দায়িত্ব এদরও সেই একই দায়দায়িত্ব। তবে শুধু আকিদা, বিশ্বাস ও দ্বীনসংক্রান্ত ব্যাপারে তাদের সাথে কোনো মিল বা সামঞ্জস্য নেই। কেননা ইসলাম তাদেরকে তাদের ধর্মের ওপর বহাল থাকার পূর্ণ আজাদি দিয়েছে। জিম্মিদের সম্পর্কে নবী করিম (সা.) খুব কঠোর ভাষায় মুসলমানদের নসিহত করেছেন এবং সেই নসিহতের বিরোধতা বা লঙ্ঘন হতে আল্লাহর অসন্তোষ অবধারিত বলে জানিয়েছেন।



হাদিসে নবী করিম (সা.) এর কথা উদ্ধৃত করা হয়েছে-‘যে লোক কোনো জিম্মিকে কষ্ট বা জ্বালাযন্ত্রণা দিলো, সে যেনো আমাকে কষ্ট ও জ্বালাযন্ত্রণা দিলো। আর যে লোক আমাকে জ্বালাযন্ত্রণা ও কষ্ট দিলো, সে মহান আল্লাহকে কষ্ট দিলো। যে লোক কোনো জিম্মিকে কষ্ট দিলো, আমি তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরকারী। আর আমি যার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরকারী, তার বিরুদ্ধে কিয়ামতের দিন আমি মামলা লড়বো’ (আবু দাউদ)। মহানবী হযরত মুহম্মদ (সা.) আরো এরশাদ করেন, ‘যে লোক কোনো চুক্তিবদ্ধ ব্যাক্তির ওপর জুলুম করবে কিংবা তার হক নষ্ট করবে অথবা শক্তি-সামর্থ্যের অধিক বোঝা তার ওপর চাপাবে কিংবা তার ইচ্ছা ও অনুমতি ছাড়া তার কোনো জিনিস নিয়ে নেবে, কিয়ামতের দিন আমি তার বিরুদ্ধে মামলা লড়ব’।



রাসূল (সা.) এর খলিফারা এসব অমুসলিম নাগরিকদের অধিকার আদায় ও মর্যাদা রক্ষায় সবসময় সচেতন সতর্ক থাকতেন। ইসলামের ফিকাহবিদেরা মত পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও এসব অধিকার ও মর্যাদার ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছেন। মালিকি মাজহাবের ফিকাহবিদ শিহাবুদ্দিন আল-কিরাফি বলেছেন, জিম্মিদের সাথে কৃত চুক্তি আমাদের ওপর তাদের কিছু অধিকার ওয়াজিব করে দিয়েছে। কেননা তারা আমাদের প্রতিবেশী হয়ে আমাদের সংরক্ষণ ও নিরাপত্তার অধীন এসে গেছে। আল্লাহ, রাসূল ও দ্বীন-ইসলাম তাদের নিরাপত্তা দিয়েছেন। কাজেই যে লোক তাদের ওপর কোনো রকমের বাড়াবাড়ি করবে সামান্য মাত্রায় হলেও তা আল্লাহ, রাসূল (সা.) এবং দ্বীন-ইসলামের দেয়া নিরাপত্তা বিনষ্ট করার অপরাধে অপরাধী হবে।



কখনো তাদের খারাপ কথা বলা, তাদের মধ্য থেকে কারো গিবত করা বা তাদের কোনোরুপ কষ্ট জ্বালা দেয়া অথবা এ ধরনের কাজে সহযোগিতা করা ইত্যাদি সবই নিরাপত্তা বিনষ্টে দিক। জাহেরি মাজহাবের ফিকাহবিদ ইবনে হাজম (রা.) বলেছেন- ‘যেসব লোক জিম্মি, তাদের ওপর যদি কেই আক্রমণ করতে আসে, তাহলে তাদের পক্ষ হয়ে সশস্ত্র যুদ্ধ করার জন্য অগ্রসর হওয়া ও তাদের জন্য মৃত্যুবরণ করা আমাদের কর্তব্য’। তবেই আমরা আল্লাহ ও রাসূলের নিরাপত্তা দেয়া লোকদের সংরক্ষণ করতে সচেষ্ট হবো। কেননা এমতাবস্থায় তাদের অসহায় ও সহজ শিকার হতে দেয়া নিরাপত্তা দেয়ার দায়িত্ব পালনের পক্ষে বড্ড ক্ষতিকারক হবে।



আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহম্মদ (সা.) নিজে অমুসলিমের কাছ থেকে বিভিন্ন কাজে ও ক্ষেত্রে মজুরির বিনিময়ে সাহায্য নিয়েছেন এবং কাজ করিয়েছেন। হিজরত করার সময় পথ দেখানো উদ্দেশ্যে তিনি মক্কার মুশরিক আবদুল্লাহ ইবনে আরিকতের সাহায্য নিয়েছেন। আলেমগণ বলেন, কেউ কাফির হলে যেকোনো বিষয়েই তাকে বিশ্বাস করা যাবে না, এমন কথা জরুরি নয়। মদিনার পথে মক্কা ত্যাগ করার মতো কাজে পথ দেকিয়ে সাহায্য করার জন্য একজম মুশরিকের সাহায্য গ্রহণ করায় এ পর্যায়ের সব দ্বিধাদ্বন্দ্ব সহজেই দূর হয়ে যায়। সবচেয়ে বড় কথা, মুসলমানের নেতার পক্ষে অমুসলিমের কাছে সাহায্য চাওয়া, বিশেষ করে আহলি কিতাবের লোকদের কাছে। সম্পূর্ণ জায়েজ বলে বিশেষজ্ঞরা অভিমত ব্যক্ত করেছেন।



বিশেষ কোনো যুদ্ধে এদের শরিক করা ও বিজয় লাভ হলে মুসলমানদের মতো তাদেরও গনিমতের অংশ দেয়ায়ও নাজায়েজ কিছুই নেই। জুহরি (রা.) বর্ণনা করেছেন, রাসূলে করিম (সা.) যুদ্ধে ইহুদিদের সাহায্য নিয়েছেন ও মুসলমানদের মতো তাদেরকেও গনিমতের মাল দিয়েছেন। হুনাইন যুদ্ধে ছওবান ইবনে উমাইয়া (রা.) মুশরিক হওয়া সত্ত্বেও রাসূলে করিম (সা.) এর সঙ্গী হয়ে যুদ্ধ করেছেন। তবে শর্ত এই যে, যে অমুসলিমের সাহায্য গ্রহণ করা হবে, মুসলমানদের ব্যাপারে তার ভালো মত ও দৃষ্টিভঙ্গি থাকতে হবে। যদি তাদের বিশ্বাস করা না যায়, তাহলে অবশ্য সাহায্য গ্রহণ জায়েজ হবে না। কেননা বিশ্বাস অযোগ্য মুসলমানের সাহায্য গ্রহণই যখন নিষিদ্ধ, তখন বিশ্বাস অযোগ্য অমুসলিমের সাহায্য গ্রহণের তা কোনো প্রশ্নই ওঠে না।



এছাড়া মুসলিম অমুসলিমকে হাদিয়া তোহফা দিতে পারে এবং নিতেও পারে। নবী করিম (সা.) অমুসলিম রাজা-বাদশাহের দেয়া হাদিয়া-তোহফা কবুল করেছেন। এ ব্যাপারে বহুসংখ্যক হাদিস বর্ণিত হয়েছে। হযরত উম্মে সালমা (রা.) কে নবী করিম (সা.) বলেছিলেন-‘আমি নাজ্জাশি বাদশাহকে রেশমি চাদর ইত্যাদি তোহফা তথা উপহার হিসেবে পাঠিয়েছিলাম’। বস্তুত ইসলাম মানুষকে মানুষ হিসেবেই মর্যাদা দেয় এবং সম্মান করে। ইসলামের উদারতা ও ইনসাফকে বিকৃতভাবে দেখার প্রবণতা পরিত্যাগ করতে হবে। কখনোই বিধর্মীকে অনর্থক কথা বলে, তার ধর্মের ওপর কুঠারাঘাত করে, তার ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান নিয়ে তামাশা করে তাকে কষ্ট দেয়া সমীচীন নয়; বরং তাকে হিকমত আর প্রজ্ঞার মাধ্যমে সুকৌশল অবলম্বন করে তাওহিদের দাওয়াত দিতে হবে। তাকে বুঝাতে হবে উত্তম ও গ্রহণযোগ্য পন্থায়। এটা একজন মুসলমানের কাছে বিধর্মীর হক।



এক সময়ে ইসলামে মুতাজিলা নামের একটি গ্রুপ ছিলো। এরা ছিলেন যুক্তিবাদী। বিনা প্রমাণে কিছুই গ্রহণ করতেন না। আব্বাসিয়া আমলে এদের বিকাশ হয়েছিলো। এ চিন্তাধারার মানুষ এখন জগতে নেই। এরা বলতেন, জ্ঞান লাভের প্রধান হাতিয়ার হলো জিজ্ঞাসা করা। ইসলামে জ্ঞানার্জনকে ফরজ বা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ইসলামের মূলমন্ত্র হচ্ছে মানবতা, মানবসেবা। স্রষ্টা হচ্ছেন জ্ঞানের প্রতীক। তাই মানুষকে জ্ঞান সাধনা করতে হবে। দার্শনিক সক্রেটিস বলেছেন, Know Thyself.- নিজেকে চিনো। আর ইসলাম বলে, ‘মান আরাফা নাফসা, ফাকাদ আরাফা রাব্বা’। এর মানে হলো- আগে নিজেকে চেনো, তাহলেই তুমি প্রভুকে চিনতে পারবে। সালমান রুশদি যেমন মুক্তমন নিয়ে ‘স্যাটানিক ভার্সস’ নামে একটি বই লিখে জগৎজোড়া নাম কামিয়েছেন, এর পরে বাজারে তার দামও বেড়েছে। ব্রিটিশ সরকার তাকে নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছেন। বড় বড় মঞ্চে সম্মানিত অতিথি হিসেবে আপ্যায়িত হচ্ছেন। লেখক হিসেবে তিনি বড় মাপের লেখক। শয়তানের কবিতা বা শয়তান কাব্য না লিখলেও তিনি বড় লেখন থাকতেন, এতে কোনো সন্দেহ নাই। তবুও তিনি শয়তানের কাব্য লিখেছেন। যখন বইটি নিয়ে বিশ্বব্যাপী হিইচই পড়েছে, তখনো থেকে চৌদ্দ শ’ বছর ধরেই তো জগতের শ্রেষ্ঠতম মানুষ নবীজী (সা.)- এর বিরুদ্ধে কিছু লোক লিখে চলেছেন।



অনেকেই স্বয়ং আল্লাহ পাক এর বিরুদ্ধে লিখেও নাম কামাচ্ছেন। এতে আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল (সা.)-এর কিছুই যায় আসে না। ব্যক্তিগত জীবনে একজন ধার্মিক মানুষ মুক্তমনের হতে পারেন। অন্তত আমি তাই মনে করি। একজন অবিশ্বাসী মানুষও ভালো হতে পারেন, আবার বিশ্বাসী মন্দও হতে পারেন যা আগেই বলেছি। বহু লিখাপড়া জানা মানুষকে আমরা মন্দ হতে দেখেছি। স্টিফেন হকিন্স জগদ্বিখ্যাত একজন বিজ্ঞানী। তিনি জগতের সৃষ্টি নিয়ে ভাবেন। জগতেই সব মাসুষই তাকে সম্মান করেন। তিনি কখনো স্রষ্টাকে বা ধর্মকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করেননি। তাঁর মতো জগদ্বিখ্যাত আরো অনেক মুক্তমনের মানুষ ছিলেন, যারা কখনোই দর্শকে নিয়ে তামাশা করতেন না। মুক্ত মনের মানুষ মানেই তো হচ্ছে উদার মনের মানুষ। যারা পরের মত বা বিশ্বাসকে সব সময় সম্মান করেন।



ইদানিং বাংলাদেশে ব্লগার শব্দটির একধরণের নেগেটিভ বা নেতিবাচক ইমেজ সৃষ্টি করেছে। পরমত বা ধর্মবিশ্বাসকে গালমন্দ করে কিচু শিক্ষিত তরুণ কিছু ব্লগ সৃষ্টি করে লেখালেখি করেছে। শুনেছি, সরকার নাকি ওসব ব্লগ বন্ধ করে দিয়েছে। যদিও আমি সামু ছাড়া অন্য কোনো সাইটে ভিজিট করি নাই। অভিজিৎ একজন ইঞ্জিনিয়ার ও বিজ্ঞান বিষয়ক লেখন। এখন তার হমে হয়ে গেছে ব্লগার অভিজিৎ। কেমন যেন মনে হয় তার বোধ হয় অন্য কোনো পরিচয় নেই! তিনি আমেরিকায় থাকেন আবার মাঝে মাঝে বাংলাদেশে আসেন। সমমনা বন্ধুদের সাথে দেখা সাক্ষাৎ করেন। আবার আমেরিকায় ফিরে যান। আমাদের দেশের রাজনীতি ও সংস্কৃতিতে মুক্তমনাদের দাম বা কদর বেশি। অভিজিৎকে নিয়ে দেশে-বিদেশে এখন হইচই চলছে। এমন প্রতিক্রিয়া সাধারণত দেখা যায় না। এ ব্যাপারে পশ্চিমা জগতের সাথে আমাদের দেশের মুক্তমনারা এক কাতারে। এর পেছনে নিশ্চয়ই কোনো কারণ আছে!? চলমান সময়ে বা চলতি সপ্তাহে অভিজিৎ বিশ্বের এক নম্বর আলোচিত ব্যক্তি।



সৌদি আরবে এক ব্লগারকে সৌদি আদালত দশ বছর জেল ও এক হাজার বেত্রাঘাত শাস্তি দিয়েছেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে এই শাস্তির নিন্দা করি। এ ব্যাপারে পশ্চিমাসহ আমাদের এখানের মিডিয়াও অনেক লেখালেখি করেছে। কিন্তু সরকারগুলো চুপ! কারণ, ঘটনাটা সৌদি আরবের। কেউ সৌদি বাদশাহকে ঘাঁটতে চায় না। বাদশাহর বন্ধুত্বকে কেউ অবহেলা করতে চায় না। সৌদি সরকার সেকুলার বা ধর্মহীন নয়। বাংলাদেশ সরকার সেকুলার। তাই ভারতসহ পশ্চিমা বিশ্ব বাংলাদেশে এমন সরকার দেখতে চায়। এটা তাদের আদর্শ ও দর্শন স্বার্থগত ব্যাপার। ১৯৭১ সালে পূর্ব পাকিস্তানকে স্বাধীন করে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে দেশবাসীকে ১০০শতভাগ খাঁটি সেকুলার (ধর্মহীন বা ধর্মমুক্ত) বাঙ্গালী বানানোর জন্য। অনেকেই এখন বলেন-শুধু মুক্তিযোদ্ধা হলেই চলবে না, ধর্মমুক্ত চেতনা থাকতে হবে। ভারতও চায় বাংলাদেশের ৯০ভাগ মুসলমান যেন ধর্মমুক্ত থাকে। ধর্মচেতনা শক্তিশালী হলে ভারতের দর্শন বাস্তবায়ন হবে না। বাংলাদেশে ধর্মমুক্ত চেতনায় বিশ্বাসী বুদ্ধিজীবীর সংখ্যা কয়েক হাজার হতে পারে। এরাই মূলত রাষ্ট্রযন্ত্রকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে গেছে। যদিও সংবিধানে বলা আছে, বাংলাদেশের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম। এটা হচ্ছে ভোটারদের ধোঁকা দেয়ার জন্য।



যারাই সেকুলারিজমে বা ধর্মমুক্ত বা মুক্তচিন্তায় বিশ্বাসী মূলত তারাই সমাজে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে চলেছেন। এরা নিজেরা ধর্ম তো পালন করেই না, যারা ধর্ম পালন করে তাদের নিয়ে সমালোচনায় বিভোর থাকেন। অথচ এই ইসলামই হচ্ছে পৃথিবীর মধ্যে একমাত্র সহনশীল, উদার ও ক্ষমাশীল ধর্ম। মহান আল্লাহ পাক এর প্রধানতম গুণ হচ্ছে ভালোবাসা ও ক্ষমা করে দেয়া। মানুষকে বলেছেন, তোমরা আমার ভালোবাসা ও ক্ষমায় আস্থা রাখো। আমার ক্ষমা হচ্ছে অসীম সাগর, আর মানুষের অপরাধ হচ্ছে এক বিন্দু পানি। সেই দয়াবান ও ক্ষমাশীল খোদাকে কিংবা তাঁর রাসূলকে গালমন্দ করেন একশ্রেণীর তথাকথিত জ্ঞানী মানুষ আর তাদের অনুসারী বিপথগামী এক শ্রেণীর তরুণ। এরাই আবার মানবতা আর মানবিক অধিকারের নামে নারী-পুরুষের সমকামিতা, নারীমৈথুন, লিভ টুগেদার, ধর্মহীন বিয়েকে সমর্থন করে। প্রগতি মুক্তমনের নামে সমাজ বন্ধনকে ধ্বংস করতে চলেছে। খোদা সার্বোভৌম বললে তারা রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা করে।



খোঁদা ও রাসূর (সা.)-বিরোধী শক্তি আগেও ছিলো এখনো আছে। ফেরাউন, নমরুদ ও সাদ্দাদ কখনোই আল্লাহ বিশ্বাস করতো না। এরা নবীদের হত্যা করেছে। বিশ্বাসী মানুষদের ওপর অপবাদ দিয়েছে করেছে অত্যাচার ও নির্যাতন। মূলত আল্লাহ নিজেই খোদাদ্রোহীদের শাস্তি দিয়েছেন। যেমন-সদম ও গোমোরাহ নরীকে ধ্বংস করে দিয়ে সেসব নগরীর মানুষকে শাস্তি দিয়েছেন। এখনো জগতে ফেরাউনের মতো শাসক রয়েছে, কেয়ামত পর্যন্ত এরা থাকবে। এখনো প্রকৃতির শোধ আছে। জ্ঞানপাপীরা বুঝতে পারে না। তবে একটা বিষয় এখানে উল্লেখ করতে চাই, তা হলো মুখোশধারী মুনাফেক। এরা মুসলমান সেজে সমাজে চলাফেরা করে। কিন্তু মুক্তমনের নামে দিনরাত ইসলাম, মুস/লমানের বিরুদ্ধে কথা বলে। বাংলাদেশে এ রকম মুনাফেকের সংখ্যা কম নয়। আমরা সমাজে কঠোরভাবে শান্তি রক্ষা করতে চাই কিন্তু ওদের বিরুদ্ধ কথা বলতে চাই না। মুনাফেকদের আল কুরআনে কঠোরভাবে নিন্দা করা হয়েছে। বলা হয়েছে, এরা কাফেরের চেয়ে খারাপ। এরাই প্রচার করে মাদরাসা শিক্ষা নাকি সন্ত্রাসী ও উগ্রপন্থী জম্ম দেয়। এরাই প্রচার করে কতিব, ইমাম, মুয়াজ্জিনরা তেমন লেখাপড়া জানেন না ও করেন না। অথচ ইসলামের ব্যাপারে আদের অ আ ক খ বিদ্যাও নেই। বাংলাদেশে ইসরামের ব্যাপারে এমন বৈষম্য শক্তিশালীভাবে বিরাজ করেছে। এরা জানে না ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন (১৭৫৭-১৮৫৮) আলেম সমাজই সবচেয়ে বেশি জীবন দিয়েছে। তখন অমুসলমান মুনাফেকরা দখলদার লুটেরা বাহিনীকে সাহায্য করেছে।



‘৪৭সালে ভারত বিভক্ত হয়েছে অমুসলমানদের কারণে। ৭১ সালে মুনাফেকদের কারণেই পাকিস্তানি বেঈমানেরা বাঙ্গালী মুসলমানদের ওপর সীমাহীন অত্যাচার করেছে। ফলে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। সেই স্বাধীনতার বিরুদ্ধে জোট বেঁধেছে এক শ্রেণীর অমুসলমান ও মুনাফেক। এদের সর্মন ও সহযোগতি করছে কেউ কেউ। আজ এদের কারণেই দর্শনগতভাবে বাংলাদেশের মানুষ দ্বিধাবিভক্ত। মাত্র ৪৪ বছরের মাথায় বাংলাদেশের এমন হাল করেছে তথাকথিত প্রগতিশীল ও মুনাফেকরা। আল-কুরআন না জানার ফলে মুসলমানেরা আজ মার খাচ্ছে পদে পদে। যার ফলে ফারাবী-অভিজিৎ এর মতো বিভ্রান্ত-বিপথে পরিচালিত তরুণদের জম্ম হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি যা আগেই উল্লেখ করেছি, আমাদের মাঝে ধর্মজ্ঞান যথেষ্ট না থাকার কারণে খুব সহজেই আমরা অন্যর হক নষ্ট করে চলেছি কিংবা জিম্মিকে কষ্ট দিচ্ছি।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.