নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

“আমি আপনার কথার সাথে দ্বিমত পোষণ করতেই পারি কিন্তু আপনার কথা বলার স্বাধীনতা রক্ষার প্রয়োজনে জীবনও উৎসর্গ করতে পারি”

রুপম হাছান

‘‘আত্মত্যাগ সব সময় ভালো কিন্তু মাঝে মাঝে বিরক্তিকরও বটে...’’

রুপম হাছান › বিস্তারিত পোস্টঃ

-চরম গরমে, মরি শরমে!-

০৯ ই এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ১০:০৫



গরম কী : গরম হচ্ছে এমন এক অদৃশ্য বস্ত যা একজন শুকনো মানুষকেও ভিজিয়ে তোলে নিমিষেই! আপনি হয়তো ভেবে পাচ্ছেন না গরমে কী করে ভেজে। আপনার ধারণার সাথে সরাসরি বিরোধিতা করে বলতে পারি গরমে মানুষ ঘামে ভিজে একেবারে চৌচির হয়ে যায়। তা ছাড়া গরম হচ্ছে মানুষের একটি ইতিবাচক দিক, যা কোনো ব্যক্তি তার নিম্ন পদস্থ ব্যক্তিদের শাসাতে এক ধরনে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে থাকেন। তবে আদিমকালে এই অস্ত্র খুব ভালোভাবে ব্যবহৃত হয়ে এলেও বর্তমানে এই অস্ত্র অনেকের তেমন কোনো কাজে আসছে না বলেই প্রতিয়মান।

গরমের প্রকারভেদ : সমাজে নানা রকম গরম দেখা যায়। এই গরম দেখে আপনি কখনো নরম হন আবার কখনো চরম হন। তবে নরম চরম যাই হন না কেন, মাঝে মধ্যে এই গরম আপনার শরমও কেড়ে নেয়! তাহলে জেনে নিন কিভাবে আপনি শর্মিত হন :

 আপনার বউ অত্যন্ত রাগী। আপনি তাকে ভয়ের চোটে অত্যন্ত ইজ্জত দিয়ে চলেন। কিন্তু তাকে যতই ইজ্জত দিয়ে চলেন, তিনি যদি কোনো কারণে একবার গরম হয়েই যান তাহলে আপনার চৌদ্দগোষ্ঠীসহ আপনাকে এমনভাবে সাইজ করবে, আপনি আপনার ইজ্জত বাঁচাতে কোনো প্রতিত্তোর করারও সাহস পাবেন না। কারণ জানেন তো গরম তেলে পানি দিলে তা আরো উত্তপ্ত হয়ে উঠে। এমতাবস্থায় আপনাকে নিয়ে শংকিতবোধ করছি, কখন যে- গরম বটি কিংবা গরম খুন্তি দিয়ে গায়ের ওপর আলতো করে দু-চারটা বসিয়ে দেয়। সো শর্মিত না হওয়ার কোনো কারণ নাই!
 আপনার ক্লাসের বাংলা স্যার অত্যন্ত শান্ত-সরল প্রকৃতির। ভুলেও তিনি ক্লাসে পড়া ধরেন না কিংবা কারো উপর অহেতুক রাগ করেন না। কালেভদ্রে যদি মনে চায় তবেই হয়তো। কিন্তু তিনি যদি একবার কোনো কারণে গরম হয়ে যান তাহলে ওই দিন সব ছাত্রছাত্রীর অবস্থা যে খারাপ হবে তা চোখ বন্ধ করে বলে দিতে পারি। কারণ স্বাভাবিক স্যার যখন অস্বাভাবিক হয়ে মাইর আরম্ভ করেন তখন ছাত্রছাত্রীরা বাংলা ভুলে সংস্কৃত কিংবা হিব্রু ভাষায়ও উত্তর দিতে দ্বিধা করেন না! কারণ ঠেলার (গরম) নাম ... আব্বা!
 আপনার অফিসের বস বেহুদাই রেগে থাকেন। কাজ করেছি বললেও রেগে যান আবার না করেছি বললেও রেগে যান। কিন্তু এই রাগের ওপর যদি তিনি মাথা গরম করে ফেলেন তাহলে তো আর তাকে বেঁধে রাখাও মুশকিল। তখন তিনি আপনাকে এমন সব কথা বলে বসতে পারেন যাতে আপনি অফিস ছেড়ে পালিয়ে আসার পথ খোঁজা ছাড়া উপায় থাকেনা। বসের এই অহেতুক মর্জি (গরম) আপনাকে সকলের সামনে ভীষনভাবে শর্মিত করবেই।

গরমের খাবার-দাবার : আপনি জাতীয় খাদক ইনস্টিটিউটের সভাপতি বলেই ধরে নিচ্ছি। খাওয়া শুরু করলে এমন পরিমাণে খান আশপাশের কোনো লোক হাপুস-হুপুস শব্দ ছাড়া আর কিচুই শুনতে পায় না। কিন্তু গরমে যদি এই পরিমাণ খাওয়া জারি রাখেন তাহলে আপনার পেটের যে বারোটা বাজবেই পাশাপাশি আশপাশের সবাই আপনার কর্মকান্ড দেখে যে শর্মিত হবে তাতে কোনো সন্দেহ নাই। এমনি গরমে শরম পাওয়ার আরো কিছু নমুনা নিম্নে উপস্থাপন করা হলো:

 গরমের ভর দুপুরে আপনি পথ চলতে চলতে ক্লান্ত শরীরে চিন্তা করলেন সামনের দাঁড়িয়ে থাকা বড় গাছটির ছায়ায় একটু বিশ্রাম নিয়ে তারপর গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা হবেন। বিশ্রাম নেয়ার এক পর্যায়ে আপনি আবিষ্কার করলেন গাছের ওপর থেকে কিছু একটা আপনার মাথায় পড়ে তা আস্তে আস্তে নীচের দিকে নেমে আসছে। যখনি বুঝতে পারলেন গাছের ওপরে থাকা পাখিটি আপনাকে ট্রয়লেট ভেবে তার প্রাকৃতিক কর্ম সেরে নিয়েছে আর এজন্য আপনার গন্তব্যে যাওয়া হচ্ছে না। তখন একদিকে আপনার মেজাজটা হবে গরম অন্যদিকে আপনি যে কিঞ্চিত শর্মিত হওয়ার কারণে বাকী পথ চলতে পারছেন না, তা খু্বই স্পষ্ট।

 তবে এই গরমের সৃজনে মাঝে মাঝে বৃষ্টিও হয় এবং রাস্তা-ঘাট কদাচিৎ পিচ্ছিল হতে দেখা যায়। যখন আপনি রাস্তা চলবেন তখন একা চলার চেষ্টা করুন এবং আশেপাশে দেখে চলুন। বলা তো যায় না কখন কোথায় হঠাৎ আপনার পা দু’টো আকাশ ছুঁতে ওপরের দিকে উঠে আসে। যদি উঠে আসে তবে ধরে নিন আপনি একটু শর্মিত হয়েছেন বৈকি।

গরমে ত্বকের সুরক্ষা : আপনার চেহারার যে অবস্থা আফ্রিকার নিগ্রোরাও যদি এই চেহারা দেখে তাহলে আমি নিশ্চিত তারা হার্টফেল করবে। এই চেহারা নিয়ে আপনি বাইরে বের হতে লজ্জাবোধ করেন। লজ্জা ঢাকার ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। বাজারে যত প্রকার ডাল আছে তা এনে ভালোভাবে বেটে মুখের ওপর ডিস্টেম্পার করে দিন। তারপর গরমে রোদে বের হযে যান। কেউ আপনাকে চিনবে না এমনকি আপনি আপনার নিজেকেও হয়তো চিনতে পারবেন না। তবে কেউ চিনুক আর না চিনুক চলচিত্র পরিচালকেরা ঠিকই চিনে নেবে। এবং পরিচালকের পরবর্তী ছবির জন্য হয়তো আপনিই হতে পারেন কাঙ্খিত ব্যক্তি (কিঞ্চিৎ শরমের ব্যাপারতো থাকছেই)।

গরমে কোথায় ঘুরতে যাবেন : আপনি একজন সুন্দরী ললনা। এই গরমে আপনি ঘুরতে না চাইলেও আপনার আশপাশের যত পুরুষ আছে তাদের নাকে রশি দিয়ে ঘুরাতে পারেন। আবার রশি নিয়ে বেশি টানাটানি করতে যাবেন না তাহলে নাক সুদ্ধ ছিঁড়ে চলে আসার সমুহ সম্ভাবনা রয়েছে। এতে ছেঁড়া নাক নিয়ে আপনি আবার নাকানি চুবানি খেয়ে থাকতে পারেন। ফলে পারিবারিক শরমের খাঁচায় বন্দি হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যায় না।

গরমের ফল-ফলাদি : ফরমালিনের এই যুগে ভুলেও কোনো ফল খেতে যাবে না। তাহলে তার ফলাফল বেশি সুবিধা হবে না। এই ফল আপনার বিফলে যেতে পারে। হতে পারে ফুড পয়জনিং জাতীয় কিছু একটা। তবে একটা ফল আছে যা খেলে আপনার কোনো ক্ষতি হবে না। এবং খেতেও খুব সুস্বাদু, এই ফলের নাম ‘লাউ’। আমি একশত ভাগ নিশ্চিত, আপনি সব যায়গায় খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারে শরম পেলেও ‘লাউ’ খাওয়ার সময় আপনি কিঞ্চিত পরিমাণও শরম পাবেন না। :P B-)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.