![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
‘‘আত্মত্যাগ সব সময় ভালো কিন্তু মাঝে মাঝে বিরক্তিকরও বটে...’’
ভূমিকা :
আগামী কয়েকদিন পরেই পহেলা বৈশাখ। দিনটি বাংলাদেশের ইতিহাসে এক কালো অধ্যায়। গত বছর পয়লা বৈশাখের উৎসবে নারীদের ওপর একাধিক যৌন আক্রমনের ঘটনা ঘটেছিলো। এখন পর্যন্ত কোনো অপরাধীকে সনাক্ত করে বিচারের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি কিংবা বিচারের সম্মূখীন করা হয়নি। সেই থেকে আজ অব্দি পর্যন্ত এর ভেতরেই ঘটে গেলো হাজারো রকমের ঘটনা, যার প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ কোনো বিচার স্বাধীন বাংলার জনগণ এখন পর্যন্ত পায় নি। এরই মধ্যে গত কয়েকদিন আগে ঘটে গেলো তনু ধর্ষণ অতপর হত্যা। এই ধর্ষন এবং হত্যা পরবর্তী বিচারের সকল প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করার ব্যাপারে সকল ব্যাক্তি, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, সংগঠন যে যার মতো বিচার দাবী করে আসছিলো। যার ফলশ্রুতিতে সরকারী ভাবে এই হত্যার মোটিভ উৎঘাটনের তদন্ত করা হচ্ছে। কিন্তু এই তদন্ত কাজ করতে গিয়েও একাদিক বার তদন্ত কমিটির পরিবর্তন করা হয়েছে। এরপরেও এখন পর্যন্ত কোনো সুখবর অর্জন করা সম্ভব হয় নি, তবে আমরা আশাবাদী তনু হত্যার একটা সমোচিত বিচার তনুর পরিবার পাবে।
গত ৩রা মার্চে মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ঘোষণা করলেন, ৫ টার মধ্যেই পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠান শেষ করতে হবে, এবং সে সাথে ভূভূজেলার ওপরেও নির্দেশনা জারি করেন। এর পরবর্তীতে পয়লা বৈশাখের ব্যাপারে মন্ত্রী মহোদয়ের বিবৃতিকে উদ্দেশ্য করেই ‘সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট’ এবং ‘প্রতিবাদ নারী পক্ষ’ এর পক্ষ থেকে তনু হত্যার বিচার চাইতে গিয়ে আলাদা আলাদা বিক্ষোভ কর্মসূচিতে পয়লা বৈশাখের উৎসবের শোভাযাত্রার সরকারী বিধিনিষেধ আরোপের বিরোধিতার ঘোষণা করলেন! তারা বললেন, পয়লা বৈশাখের উৎসবে সরকারের সিদ্ধান্ত নাকি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত! এই সরকারের আমলে এ ধরনের সিদ্ধান্ত কিভাবে নেয়া হলো, তা নাকি তাদের বোধগম্য হচ্ছে না! এটা নাকি সম্পূর্ণরুপে অগ্রহনযোগ্য ও নন্দিনীয়! আরো বললেন, সরকার তাদের নিরাপত্তা দেয়ার দরকার নাই! তারা নিজেদের নিরাপত্তার ব্যাপারে নিজেরাই যথেষ্ট! তাদের এমন বক্তব্য থেকে যা প্রতিয়মান হয় তা হলো-হয় সরকার এসকল কুকর্মে সুবিধা দিয়ে থাকেন আর না হয় ঐসকল সাংস্কৃতি মনা গ্রুফগুলো আমাদের মা,বোনদের ঊস্রিঙ্খল জীবন-যাপনে একটি সক্রিয় সিন্ডিকেট হিসেবে কাজ করেন।
ভয় হয় এবং অনুমান করি :
পুলিশ প্রধান এ কে এম শহীদুল হক বলেছেন, পহেলা বৈশাখে বিকেল ৫টার পর উন্মুক্তস্থানে কোনো ধরনের অনুষ্ঠান করা যাবে না। উন্মুক্তস্থানে কেউ কোনো অনুষ্ঠান করলে এবং অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তার দায় পুলিশ নেবে না।’ উত্তরা ৩ নং সেক্টরে ফ্রেন্ডস ক্লাবে আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
এখন সংস্কৃতিমনা গ্রুপগুলোর কাছে আমার প্রশ্ন :
১. যদি নিজেরাই নিজেদের নিরাপত্তা দেওয়ার ব্যাপারে একাই একশ হন তবে কেনো খামোখা নিরাপত্তার অজুহাতে সরকারে টিকিটি নিয়ে রাজপথে মিছিল মিটিং এর আয়োজন করেন?
২. আপনাদের কে ষ্পষ্ট করেই বলতে হবে-সরকার যে নির্দেশনা জারি করেছেন, তা আপনার যুক্তিতে কেনো সঠিক হয় নি?
৩. গত বছর পয়লা বৈশাখে টিএসসি তে আপনাদের মত হাজারো ছোটোখাটো সংস্কৃতিক গ্রুপ সেখানে উপস্থিত ছিলো এবং বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলো, তবে সেদিন কেনো এতো নারীর সম্ভ্রম হানি ঘটেছিলো?
৪. তনু তো আপনাদের মতো কোনো না কোনো একটি সংস্কৃতিক গ্রুপের সদস্য ছিলো, তাহলে তার নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন কেনো?
৫. বিকাল ৫ টার পরে যদি কোনো পুলিশ কর্তৃক কোনো নারী আক্রান্ত হয়ে থাকেন এবং সেটা সরকারের বেধে দেয়া সময় অতিক্রম করার পরে তাহলে আপনি কাকে দোষ দিবেন? সরকারকে নাকি আলাদা করে পুলিশকে নাকি নিজেদের মনগড়া সিদ্ধান্তকে?
৬. নাকি লাইমলাইটে থাকার জন্য মাঝে মাঝে ইস্যু তৈরি করা আপনাদের কাজ?
উপসংহার :
এ পর্যন্ত যত সংস্কৃতিমনা ব্যাক্তি কিংবা পরিবার কিংবা প্রতিষ্ঠান দেখে আসছি, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখেছি ঊস্রিঙ্খলতায় আর যৌনতায় একাকার। এদের মূলত চিন্তা হচ্ছে, ছেলে/মেয়ে, ভাই/বোন, স্বামী/স্ত্রী, পরপুরুষ/পরনারী, বাবা/মা সবাই সমান এবং প্রত্যেকের অধিকার এবং স্বাধীনতা সমান। যার কুফল সমাজের রন্দ্রে রন্দ্রে বইতে শুরু করছে। মূলত এরাই সমাজে সংস্কৃতি চর্চার নামে যৌনতার আমদানি করে বেড়াচ্ছে। আমি ব্যাক্তিগত ভাবে সরকারের এই ভালো উদ্দ্যেগকে স্বাগত জানাই। কারণ, আমার মা, আমার বোন, আমার চাচি, আমার খালা, আমার ফুফু ভীড়ের মাঝে অন্য পুরুষের কর্তৃক কখনোই নিরাপদ নয়। ইচ্ছায় হোক আর অনিচ্ছাই হোক, ভীড়ের মাঝে পুরুষের শরীর, নারীর শরীকে ষ্পর্ষ্শ করবেই। আর সেখানেই আমাদের আপত্তি। তাই আমি ব্যাক্তিগত ভাবেই আমার পরিবারের সম্মান রক্ষার ব্যাপারে সোচ্চার । এবং নিজের অবস্থানের ব্যাপারে নিরাপত্তার অভাব বোধ করি সব সময়। এজন্য কোনো সংস্কৃতি গোষ্ঠির সাথে নিজের অবস্থানকে একাত্ন করতে পারি নি।
©somewhere in net ltd.