নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

“আমি আপনার কথার সাথে দ্বিমত পোষণ করতেই পারি কিন্তু আপনার কথা বলার স্বাধীনতা রক্ষার প্রয়োজনে জীবনও উৎসর্গ করতে পারি”

রুপম হাছান

‘‘আত্মত্যাগ সব সময় ভালো কিন্তু মাঝে মাঝে বিরক্তিকরও বটে...’’

রুপম হাছান › বিস্তারিত পোস্টঃ

-বর্তমান বাংলাদেশের অবস্থা হয়েছে গ্রামীন প্রচলিত একটি বাক্য দিয়েই বুঝানো যায়-বউ শাশুড়ির কাইজ্জা অবস্থা!-

৩০ শে মে, ২০১৬ সকাল ১১:৩৬

বউ শাশুড়ির ঝগড়া বা কাইজ্জা বাংলার হাজার বছরের ঐতিহ্য হয়ে আছে। শিক্ষাদীক্ষায় বা সামাজিকভাবে যেসব পরিবার একটু অগ্রসর হয়েছে, তাদের মধ্যে এই কাইজ্জা স্নায়ুযুদ্ধে রুপান্তরিত হয়ে গেছে।

এই ধরনের কাইজ্জার মাধ্যমে মনের ক্ষোভ প্রশমনের যে সুযোগ ছিলো-স্নায়ুযুদ্ধে পর্যবসিত হওয়ার পর ক্ষোভ রিলিজের সেই সুযোগটিও এখন সঙ্কুচিত হয়ে পড়েছে। বোতলজাত করা ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ এখন অত্যন্ত নির্মম এবং হিংস্র হয়ে পড়েছে। সমাজের মারাত্নক উঁচু পর্যায় থেকে এ ধরনের প্রশ্নবিদ্ধ বধূ মৃত্যুর সংবাদ এখন পত্রিকার পাতা খুললেই দেখতে পাওয়া যায়। যারা নিজের মেয়েকে এ ধরনের শক্তিশালী বেয়াইদের বাড়িতে পাঠিয়েছেন, অগত্যা কপালটা খারাপ হয়ে গেলে তাদের আল্লাহ আল্লাহ জপা ছাড়া অন্য কোনো উপায় থাকে না। বেয়াই বা বেয়াইনের রক্তচক্ষু দেখে আদরের মেয়েটির জন্য মন খুলে কাঁদতেও পারেন না তাদের মা-বাবারা।

সমাজবিজ্ঞানীরা বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করে দেখতে পারেন। স্নায়ুযুদ্ধের চেয়ে আগের মতো সশব্দ ঝগড়াকেই অধিকতর মঙ্গলজনক বলে মনে হতে পারে। এধরনের কাইজ্জা শুধু গ্রামবাংলার রসের হাড়িটিকেই ভরে দেয়নি, সমাজের স্বাস্থ্যটিও ভালো রাখার নিমিত্তে এর একটা বাস্তব উপকারিতাও ইতোমধ্যে স্পষ্ট হয়েছে।

বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এসব কাইজ্জার অবয়বটি হতো বর্তমান বিরোধীদল বিহীন সংসদের মতো। ফলে তার ডিফেক্ট বা ক্রটিটি সহজেই বোধগম্য। পদাধিকার বলে গ্রামবাংলার সেই সব গুচ্ছ সংসদের সংসদ নেত্রী হতেন শাশুড়ি। বাড়ির অবিবাহিতা ননদটি সরকারি দলকে ইচ্ছেমতো বলার সুযোগ করে দেয়ার নিমিত্তে স্পিকার সাজতেন। বাড়ির বাদবাকি সবাই মোটামুটি সরকারদলীয় এমপির ভূমিকায় অবতীর্ণ হতেন।

স্বল্পভাষী শ্বশুর মহাশয় যথারীতি প্রেসিডেন্টের ভূমিকা গ্রহণ করতেন। সরকারের লিখিত বক্তৃতাটিই তিনি একটু গরুগম্ভীর স্বরেই আবৃত্তি করে যেতেন। মাঝে মধ্যে পরিবেশটুকু হালকা করার জন্য একটু আধটু আলগা কিছিমের হাসি মশকরাও করতেন। ‘তিনি নিজেও আবার কয়েকটি মেয়ের বাবা’ও অর্থাৎ তিনি সবার প্রেসিডেন্ট, সর্বময় ক্ষমতার মালিক-এ ধরণের সেন্টিমেন্টাল বুলি আওড়াতেন। কিন্তু এই প্রেসিডেন্ট মহাশয়ের কথার সাথে তার কাজগুলো কখনোই মিলত না। পারিবারিক (সরকারি) ইগো বা স্বার্থ রক্ষা থেকে তিনি একচুলও এদিক-সেদিক নড়তেন না।

এসব গল্পের নায়িকা বধুটি মাঝে মধ্যে সংসদে গিয়ে দু-একটি কথার জবাব দিতে পারত কিংবা সংসদের বাইরে থাকা মূল বিরোধী দলের মতো চুপ মেরে থাকতে হতো। এর মধ্যে এক ধরনের কনফ্লিক্ট নায়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে বেচারা স্বামী। নায়কের অবস্থা হতো অনেকটা বহুরুপী কাকার মতো! একবার নিজের সহোদরকে খুশি করার জন্য কো-চেয়ারম্যান বানান তো পরক্ষণেই আবার নিজের বিবির মান ভাঙ্গাতে সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান বলে ঘোষণা দেন। যে কবি প্রতিভা এতদিন কম বয়স্কা সুন্দরীদের জন্যই সংরক্ষিত ছিল, এখন অবস্থা এতই বেগতিক হয়েছে যে, সেই কবিকে এখন প্রায় আশি বছরের বিবির মান ভাঙ্গানোর জন্য কবিতা লিখতে হয়। এমন মুহুর্তে নায়কের ভূমিকা নিয়ে সবার মধ্যেই সর্বদা সন্দেহ কাজ করত। সরকারি পক্ষ ও বিরোধী পক্ষ কেউই তার ওপর পূর্ণ আস্থাটি রাখতে পারতেন না।

যা হোক, সরকারদলীয় এমপিদের সম্মিলিত করতালির মধ্যদিয়ে সংসদনেত্রী নিজের বাপ-দাদার খান্দানের বাঘ ভাল্লুক মারার কীর্তিকাহিনী মনের সুখে বয়ান করে যেতেন। অন্য দিকে, নতুন বেয়াই বাড়ির সব ছোটলোকিপনা দাঁড়ি-কমাসহ মহান সংসদে তুলে ধরতেন। নিরীহ গ্রামবাসীর কাছে সব খান্দানের ইতিহাস ‘অ’ থেকে ‘চন্দ্রবিন্দু’ পর্যন্ত জানা আছে।তারপরেও অহতেুক ঝামেলা এড়ানোর জন্য কেউ মুখে টুঁ শব্দটি উচ্চারণও করতেন না।

এরকম এক কাইজ্জার সময় শাশুড়ি তার পুত্রবধূকে পোড়ামুখী বলে গালি দেন। কিন্তু গালিটি দেয়ার সময় মুখটি এতটুকু বাঁকিয়েছিলেন যে, ‘পোড়া’ শব্দটি উচ্চারণের সাথে সাথে মুখের চোয়লটি হঠাৎ আটকে যায়। অনেক চেষ্টা করেও সেই হা করা মুখটি আর বন্ধ করা যায়নি। গ্রামের নিরীহ মানুষ এটাকে স্রষ্টার পক্ষ থেকে তাদের জন্য উচিত বিচার বলে গণ্য করেন।

গ্রামের বৈদ্য কবিরাজ এই সুযোগে মুখরা শাশুড়ির গালেও থুতনিতে মনের মতো চড়-থাপ্পড় বসায়। তাতেও কোনো কাজ হয় না। সন্ধ্যায় থানা সদরের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানকার ডাক্তারেরা মেকানিজমটি বুঝতে পারায় অতি সহজেই ছুটিয়ে ফেলেন। সবচেয়ে অবাক করার বিষয় হলো, চোয়ালটি স্বস্থানে ফিরে আসার পর শাশুড়ির পাশে দাঁড়িয়ে থাকা পুত্রবধূর দিকে তির্যক দৃষ্টি হেনে দুর্ঘটনার আগে শুরু করা গালির বাকি অংশটি শেষ করেন। তার মুখ থেকে বের হয়, ‘মূখী’!

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে মে, ২০১৬ সকাল ১১:৪২

অবনি মণি বলেছেন: B-)

৩০ শে মে, ২০১৬ সকাল ১১:৪৮

রুপম হাছান বলেছেন: ধন্যবাদ অবনি মনি ম্যাম। ব্লগে অংশগ্রহণ করে আপনার অভিব্যাক্তি প্রকাশ করার জন্য।

২| ৩০ শে মে, ২০১৬ সকাল ১১:৪৫

রুপম হাছান বলেছেন: এই হলো বর্তমান দেশের বাস্তব চিত্র। যারা বিগত অনেকটা সময় ক্ষমতার বাহিরে তারাই নাকি এখন সব শেষ করে দিচ্ছে। অথচ ক্ষমতায় থাকা ব্যাক্তিদের কোনো অনুমানই নাই কোন খাতে কি হচ্ছে এবং কারা করছে এসব!? যা হচ্ছে-সব দোষ পরের বেটির!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.