![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
‘‘আত্মত্যাগ সব সময় ভালো কিন্তু মাঝে মাঝে বিরক্তিকরও বটে...’’
শিক্ষা ব্যাবস্থা নিয়ে গত কয়েকদিন ধরেই বিভিন্ন টিভি চ্যানেলসহ বিভিন্ন মিডিয়ায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু জিপিএ-৫ পাওয়া বিষয় নিয়ে। কতিপয় প্রশ্ন উত্তর এবং আমার ভাবনা-
1.আমি জিপিএ-৫ পেয়েছি - I am GPA-5
2. অপারেশন সার্চলাইট কি? অপারেশনের সময় যে লাইট জ্ব্বালানো হয়।
3. স্বাধীনতা দিবস কবে?? - ১৭ আগস্ট।
4. পিথাগোরাস কে ছিলেন? ঔপন্যাসিক
5. এভারেস্ট কোথায়? - ইংল্যান্ড
6. নেপালের রাজধানী কোথায়? নেপচুন
7.জাতীয় সংগীত কে রচনা করেন?- কাজী নজরুল।
8.শহীদ মিনার কই? - জানিনা
9.জাতীয় স্মৃতিসৌধ কোথায়? - জানিনা
10. আমাদের বর্তমান রাষ্ট্রপতির নাম কি? - জানিনা
11. নিউটনের সুত্র টা কি বল?-- ওই যে আপেল পড়ে।
এই হলো দেশে হাজার হাজার A+ প্রাপ্তদদের অবস্থা।
ধারণা : মা-বাবাকে ভারতীয় সিরিয়াল আর ছেলে-মেয়েদের Facebook থেকে প্রশ্ন করেন তাহলে ১০০% সঠিক উত্তর পাওয়া যাবে...।
এসব শুনলে কিংবা দেখলে এখন আর খারাপ লাগে না, কারণ এখন তো শিক্ষাব্যবস্থা হচ্ছে ডিজিটাল তার সাথে আবার যোগ হয়েছে সৃজনশীল অর্থাৎ উত্তরের চেয়ে প্রশ্নই বড় হয়! সেখানে ছাত্রছাত্রীদের থেকে এমন উত্তরই আশা করছি! কিছুদিন আগে কলকাতার একটি ছবিতেও ঠিক এমনটাই দেখেছিলাম। বাংলা পরীক্ষার দিন গুটি কয়েক ছাত্র ইতহাসের পুরো চ্যাপ্টার ভাগাভাগি করে নকল শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের সাথে ব্যান্ডেজ করে নিয়ে এসেছে! অর্থাৎ ক্লাসে তো বটেই; পরীক্ষা নিয়েও তাদের কোনো সঠিক চিন্তা-ভাবনা নাই। আর ফলাফল যা হওয়ার তা তো পাঁচ মিনিটের মধ্যে দেখলাম। এই হলো বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থার হালহকিকাত। অথচ ডিভিশন সিস্টেমে পরীক্ষা দিয়ে ফাস্ট ডিভিশন পেলে পয়েন্ট কাউন্ট হতো (৩) তিন। অার এখন ভুরি ভুরি (৩) তিন পয়েন্ট নিয়ে পাস করছে লক্ষ লক্ষ! তখনকার সময়ে ডিভিশন সিস্টেমে সারা দেশে মাত্র ২০ জনকে ব্রিলিয়ান্ট ঘোষণা করা হতো অর্থাৎ বোর্ডস্ট্যান্ড হতো; সেখানে বর্তমানে জিপিএ সিস্টেমে এসে এখন হাজার হাজার ব্রিলিয়ান্ট ঘোষনা হচ্ছে অর্থাৎ জিপিএ৫ পাচ্ছে! ভাবা যায়!? এদের মাঝে আবার অনেকেই বিভিন্ন সরকারী ভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার সুযোগই পায় না! তাহলে তারা কি লিখে জিপিএ৫ পায়!?
কিছুদিন আগেই আমি আমার বাসার সামনের স্কুলের ছাত্রছাত্রীদেরকে নিয়ে শিক্ষকদের একটি ছোট্ট ফিরিস্তি তুলে ধরেছিলাম। সেখানে একজন স্কুল শিক্ষক ছাত্রছাত্রীদের বিদায়ী অনুষ্ঠানে তাঁর বক্তব্যে বলেছিলেন-তোমরা (ছাত্রছাত্রীরা) কোনো প্রশ্ন এড়িয়ে যাবে না! আগে প্রশ্নটা ভালো করে পড়বে এবং যেটা বেশি ভালো পারবে আগে সেই প্রশ্নটার উত্তর দিবে। এভাবে সবগুলোর উত্তর দেয়ার চেষ্টা করবে। সবচেয়ে মনে রাখার মত কথা হলো, তোমরা একেবারে যদি কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে না পারো তবে সেটিও তোমরা বাদ দিবে না; ঐ প্রশ্নের উত্তরের যায়গায় লিখবে-আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি অথবা তোমার যা মনে পড়ে। মূল কথা হলো; খাতার পাতা খালি রাখা যাবে না! অর্থাৎ খাতার পাতা যতই লিখা দিয়ে ভরা যাবে ততই নম্বর যোগ হবে! তবে শর্ত আছে-লেখা কাঁটাছিঁড়া থাকতে পারবে না। এই যদি হয় শিক্ষক কর্তৃক ছাত্রছাত্রীদের প্রতি পরামর্শ, তবে আমার-আপনার মন্তব্যর অনুভূতি কেমন হওয়া উচিত!?
পারবে কিভাবে যেখানে গোড়ায় গলদ অর্থাৎ শিক্ষকেরাই যেখানে ছাত্রছাত্রীদের মেধা কিংবা যোগ্যতা অনুযায়ী শিক্ষাদান করেন না কিংবা বুঝান না সেখানে ছাত্রছাত্রীরাই বা কি করে শিখবে? আইনস্টাইন সম্পর্কে একটা কথা প্রচলিত আছে আর সেটা হলো উনি নাকি নিজের ফোন নাম্বার, হোম এড্রেস কিছুই মনে রাখতে পারতেন না! কেন প্রশ্ন করলে তিনি সবসময়ই বলতেন যে জিনিসটা আরেকজনকে জিজ্ঞেস করলেই সহজে জেনে নেওয়া জানা যায় সেটা মনে রাখার দরকার কি? ভিডিওর ছেলেগুলোও তাই বলতেই পারে "যে জিনিসগুলো গুগল করলেই হাতের কাছে পেতে পারি সে জিনিসগুলো জেনে রাখার প্রয়োজনটা কোথায়?" তাই বলছি আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায়ও এমন কিছু গুনগত পরিবর্তন আনতে হবে যা একটি ছাত্র কিংবা ছাত্রীর যোগ্যতাকে বিচার করে তার জন্য যোগ্যস্থান নির্ধারণে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। যেমনটি করে জাপানি এবং চিনারা।
যদিও এই জাতীয় আরকটি ছবি দেখেছিলাম যে, অহেতুক বেশি পড়ালেখা ছাত্রছাত্রীদের উপর ছাপিয়ে দিয়ে ভালো কিছু তাদের কাছ থেকে অর্জন করা সম্ভব নয়। তাই লেখাপড়ার যায়গাটা হতে হবে পরিবেশ বান্ধব, মানসম্মত এবং গ্রহণযোগ্য। আজকাল যা পড়াশুনা হয় তার অধিকাংশই বলা যায় চটি। আর এব্যাপারেও বিভিন্ন সংগঠন থেকে বারংবার মিছিল-মিটিংও করতে দেখেছি। সো, ছাত্রছাত্রীদের দোষ দিয়ে লাভ নাই। শিক্ষাব্যবস্থায় পুরোনো সিস্টেমকে ফলো না করলে এবং শিক্ষকদের মন-মানসিকতার উন্নয়ন না ঘটাতে পারলে এমন কিছুই ঘটবে বৈ ভালো কিছু হবে না। তাই বলছি পুরোনো শিক্ষা ব্যবস্থা ফিরিয়ে দিলেই এবং শিক্ষকদের মধ্যে উন্নত ট্রেনিংসহ কাউন্সেলিং এর ব্যবস্থা করতে পারলেই আমার মনে হয় ছাত্রছাত্রীরা তাদের পাঠ্য বিষয় সম্পর্কে পুরোপুরি না হলেও সাম্যক জ্ঞান রাখতে পারবে।
পাদটিকা : সর্বোপরি, সকলের মেধা বিকাশের সুযোগ দিতে না পারলেও কারো মেধা বিকাশের পথে বাধা না দেয়া হোক। অর্থাৎ ফেল ডিভিশন কিংবা এফ গ্রেড তুলে দিয়ে সেসকল শিক্ষার্থীদেরকেও কাজে লাগানো হোক। যে কাজে তারা বেশি সাচ্ছন্দ্য বোধ করবে সেই কাজেই তারা সফলও হতে পারে। যদিও তারা শিক্ষাখাতে সাফল্য দেখাতে পারেনি। তারা হতে পারে এক একজন রবীন্দ্রনাথ, শচীন টেন্ডুলকার কিংবা মোস্তাফিজুর রহমান। ধন্যবাদ।
০১ লা জুন, ২০১৬ দুপুর ১২:১১
রুপম হাছান বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই সভ্য, আপনার সুচিন্তিত এবং যুক্তিসংগত মতামত তুলে ধরার জন্য।
বিষয়টি দেখবহাল করার দায়িত্ব কিন্ত শিক্ষা বিভাগের সাথে জড়িত সকল কর্তৃপক্ষের। আমি এবং আপনি শুধু মতামত দিয়ে সহযোগিতাই করতে পারি।
যাই হোক আমরা শিক্ষা ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তনে বিশ্বাসী। যে শিক্ষা ব্যাক্তি, জাতি এবং সর্বপুরি দেশের মঙ্গলের কাজেই ব্যবহার করা যাবে।
২| ০১ লা জুন, ২০১৬ দুপুর ১:৪৪
সাধারন জন বলেছেন: শিক্ষা পদ্ধতির ব্যাপারে নতুন করে উদ্ভাবন করার কিছু নেই, শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য আগে যা ছিলো তাই আছে, পদ্ধতির একটু হেরফের হলেও মূল পদ্ধতি একই। সিঙ্গাপুর, জাপান কিভাবে সেই উদ্দেশ্য ও পদ্ধতিকে কাজে লাগায় সেটা সেখান থেকেই শিখলে হলো। কিন্তু আমাদের যে ঐ একটাই দোষ আমরা জাপান থেকে কারাওকে আমদানি করে সবাই মিলা/ফুয়াদ হতে চায় কিন্তু শিক্ষা পদ্ধতি আমদানি করে কেউ ভালো মানুষ বানাতে চায় না।
আসলে আমরা উদ্দেশ্যটাই এখনো নির্ধারন করতে পারিনি, তাহলে পদ্ধতি কিভাবে ঠিক থাকবে।
০৪ ঠা জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:১২
রুপম হাছান বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই জন। আপনি ঠিক কথা বলেছেন। আমি সেই কথাটাই উল্লেখ করেছি এবং করছি। ভিন্ন সংস্কৃতি অবশ্যই নেয়া যাবে তবে নিজস্ব সংস্কৃতিকে আগে প্রাধান্য দিতে হবে।
অন্যদিকে, শিক্ষা ব্যবস্থা বা পদ্ধতি ঠিক নাই বলছি কারণ আগে পুরো পদ্ধতিটিই ছিলো লিখিত। পরবর্তীতে এটা পরিবর্তন হয়ে অর্ধেক লিখিত এবং অর্ধেক এমসিকিউ পদ্ধতি হলো। আমরা দ্বিতীয় পদ্ধতিটিই ফলো করেছি এবং সেইভাবে শিক্ষা অর্জন করেছি। পার্থক্য হচ্ছে সেসময় ছিলো সাধারণ নিয়ম আর এখন হচ্ছে সৃজনশীল নিয়ম। যার ফলে এখন প্রশ্নের তুলনায় উত্তরই ছোট হয়ে গেছে। এখন তো ছাত্রছাত্রীরা প্রশ্নই মুখস্থ করতে হয় বেশি সময় নিয়ে। উত্তর যেহেতু ছোটই হয়ে গেছে সেহেতু প্রশ্নকেই মুখস্থ রাখা কাজ হয়ে পড়েছে। কারণ প্রশ্নটাই তো মনে রাখতে পারছেনা তো উত্তর দেবে কি!
তাছাড়া প্রতিটি বই থেকে কিছু মৌলিক বিষয় উঠিয়ে দেয়া হয়েছে সেখানে যোগ করা হয়েছে, নারীর শরীর বিষয়ক তথ্য। এবং ধর্ম বিষয়টিতেও বড় বাড়াবাড়ি করে ফেলেছে। যেটা স্বাভাবিক ভাবে গ্রহণ করাই যুক্তি সংগত নয়। এগুলো পড়ে ছাত্রছাত্রীরা মনোযোগের চেয়ে অমনোযোগীই হচ্ছে বেশি। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে-প্রাণী জগতকে শরীর সম্পর্কে ধারণা দেয়ার প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না। এটা প্রাকৃতিক গত ভাবেই হয়ে থাকে।
আর এই ধরণের শিক্ষা ব্যবস্থার ফলে তার বিরাট একটা নীতিবাচক প্রভাব পড়ছে আমাদের ছাত্রছাত্রীদের ওপর। ধন্যবাদ।
৩| ০১ লা জুন, ২০১৬ বিকাল ৪:৩৩
মার্কোপলো বলেছেন:
কথার কথা, দরকারী কিছু বলা হয়নি
০৪ ঠা জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:১৪
রুপম হাছান বলেছেন: হয়তোবা কিন্তু আমি, আপনার যুক্তিটি আশা করেছিলাম ভাই মার্কোপলো।
ধন্যবাদ আপনার মতামত প্রকাশের জন্য।
©somewhere in net ltd.
১|
০১ লা জুন, ২০১৬ সকাল ১১:৪১
সভ্য বলেছেন: ভাই, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্হা কতটা খারাপ তা আর নাই বা বললাম, তবে কেউ এর থেকে উত্তরণের পথ বাতলাতে পারছে্ন না, না আপনি না আমি, আমাদের উচিত এর থেকে বের হয়ে দেশের শিক্ষাখাতকে কিভাবে যুগাপোযোগী করা যায় সে বিষয় নিয়ে লেখা। আপনার লেখার সাথে আমি একমত। ধন্যবাদ বিষয়টি তুলে ধরার জন্য।