নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

“আমি আপনার কথার সাথে দ্বিমত পোষণ করতেই পারি কিন্তু আপনার কথা বলার স্বাধীনতা রক্ষার প্রয়োজনে জীবনও উৎসর্গ করতে পারি”

রুপম হাছান

‘‘আত্মত্যাগ সব সময় ভালো কিন্তু মাঝে মাঝে বিরক্তিকরও বটে...’’

রুপম হাছান › বিস্তারিত পোস্টঃ

-বাজেট বিষয়ক পোষ্টের অংশ বিশেষ-

১৮ ই জুন, ২০১৬ বিকাল ৫:৫৯

গত পোষ্টে বাংলাদেশের বাজেট নিয়ে লিখেছিলাম কিন্তু সেখানে কিছু তথ্য সংযোজন করা দরকার ছিলো বলে মনে করি। যা আমার লিখনিতে বাদ পড়ে গেছে। দেশের ব্যাংকিং খাতে সাম্প্রতিক কালে সংঘটিত আর্থিক কেলেঙ্কারির কোনো তথ্য অর্থ মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট প্রকাশনায় স্থান পায় নি। তাছাড়া বিগত সময়ে এদেশে যেসব সেক্টরে অর্থ কেলেঙ্কারীর ঘটনা ঘটেছে তা নিয়ে সরকারের উচ্চমহলের রয়েছে চরম উদাসীনতা। যেমন- শেয়ার মার্কেট লুট, ডেসটিনি গ্রুপ লুট, হলমার্ক প্রুপ লুট, বিসমিল্লাহ গ্রুপ লুট, রেল দুর্ণীতি, সড়ক দুর্ণীতি, গ্রামীন ব্যাংক লূট, বেসিক ব্যাংক লুট, অগ্রনী ব্যাংক লুট, সোনালী ব্যাংক লুট, ওয়ান ব্যাংক লুট, রেন্টাল বিদ্যুৎ এর নামে হরিলুট, সবশেষে যোগ হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক এর ৮শত কোটি টাকা লুট। প্রতি বছর বাজেটের সময় মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ একটি বই প্রকাশ করে থাকে। এতে তুলে ধরা হয় ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সার্বিক কার্যক্রমের ভালো-মন্দ নিয়ে।

এবার প্রকাশিত বইটিতে বাংলাদেশের সব ব্যাংক ও নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নানা তথ্য দেয়া হয়েছে, কিন্তু বহুল আলোচিত কোনো আর্থিক কেলেঙ্কারির তথ্যের ছিটেফোঁটাও দেয়া হয়নি। উপরে উল্লেখিত কোনো প্রতিষ্ঠানের আর্থিক কেলেঙ্কারির বিষয়ে কিছু লিখা হয়নি। এমনকি সর্বশেষ বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির মাধ্যমে ৮০০ কোটি টাকা লোপাটের তথ্যও এতে নেই! অথচ এসব কেলেঙ্কারির ঘটনায় বিগত পাঁচ বছরে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে। আমাদের মাননীয় অর্থমন্ত্রী মহোদয় জাতীয় সংসদে বলেছেন, আর্থিক খাতে গত কয়েক বছরে ‘সাগরচুরি’ হয়েছে। মাননীয় মন্ত্রী এটা স্বীকার করা সত্ত্বেও তারই অধীনস্ত দফতর এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি বেমালুম চেপে গেছে।

আলোচ্য রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ২০১৫-১৬ সালের কার্যক্রমের বিষয়ে প্রকাশিত ৪৫২ পৃষ্ঠার বইটিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জন্য বরাদ্দ ২০ পাতা। এতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাফল্যের ফিরিস্তি এবং ভবিষ্যৎ পদক্ষেপগুলো উপস্থাপিত হয়েছে। তবে রিজার্ভ চুরির সাম্প্রতিক ঘটনার উল্লেখ নেই একটুও। অথচ এই বিরাট কেলেঙ্কারির জের ধরে ব্যাংকের গভর্নর পদত্যাগ করেছেন; দু’জন ডেপুটি গভর্নর বরখাস্ত হয়েছেন। এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন প্রাত্তন গভর্নরের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি সরকারের কাছে চূড়ান্ত প্রতিবেদন পেশ করেছে; কিন্তু সরকারের ব্যাংকিং বিভাগের আলোচ্য বইতে এসব কিছুর বিন্দুবিসর্গও তুলে ধরা হয়নি মর্মে প্রকাশিত। একই কথা বলা চলে উল্লেখিত খাতগুলো নিয়েও। মূলত এসব লূটের অর্থ ফেরত আনার চেয়ে লূটের অর্থ তুলে নিতে সরকার সহায়ক ভুমিকা পালন করছে বলেই মনে হয়।

বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সময়ে আর্থিক খাতে কেলেঙ্কারি, তথা মারাত্মক অনিয়ম ও আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে বেশ কয়েকটি খাত ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে। সংশ্লিষ্ট অর্থের পরিমাণের দিক থেকে এসব কেলেঙ্কারি এক কথায় নজিরবিহীন। আমি মনে করি এগুলোর কোনোটাই ঘটত না, যদি সরকার তার দায়িত্ব যথাযথ ভাবে পালন করত। আমি এও বিশ্বাস করি, দেশে এত কেলেঙ্কারির ভিতরেও যদি সরকার চাইতো তবে প্রতিটি মানুষ তার চাহিদার প্রয়োজনীয় মৌলিক জিনিসপত্র খুব সহজেই হাতের নাগালে পেতে পারতো। যেটা এক ধরনের অসাধু ব্যবসায়ীদের সাথে সরকারের উচ্চ মহলের যোগসাজশের কারণে সম্ভব হচ্ছে না। যা ক্ষমতাশীল মহলের প্রশ্রয়ে তাদের ঘনিষ্ট জনেরাই এই কেলেঙ্কারিগুলো ঘটিয়ে চলছে একের পর এক। কিন্তু এযাবৎ ঘটে যাওয়া কোনো ঘটনার ক্ষেত্রেই দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া হয়নি সরকারের পক্ষ থেকে। লোক দেখানো কমিটি গঠন আর তাদের প্রেস কনফারেন্সেই আটকে থাকে কেলেঙ্কারির তদন্ত।

এখন সরকার যদি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন না করে এবং তা জনগনের চোখের আড়ালে লুকানোর ব্যর্থ প্রয়াস চালায়, তাহলে এ ক্ষেত্রে সরকার তার ব্যর্থতার বোঝাই শুধু বাড়াবে বৈ কমাবে না।

বিশেষ দ্রষ্টব্য : সমালোচনা, কাউকে ভালো কিছু পেতে সহায়তা করে বলেই মনে করি অর্থাৎ আমার ভুল কোথায় কিংবা খারাপ কিসে করলাম এবং সেই ভুল কিংবা খারাপটা কিভাবে কাটিয়ে উঠে সঠিকটা সম্পাদন করা যায়, সেই পথটা দেখিয়ে দিতে সহায়তা করে। এখন এই সমালোচনা যদি একান্ত ব্যক্তিগত সম্মানের মধ্যে আবদ্ধ করে নেয়া হয় তবে সেটা অন্যর জন্য তো নয়ই নিজেরও উপকারে আসেনা। তাই বলবো, সমালোচনা শুনে অন্যর প্ররোচনায় কারো উপর রাগ না করে তৃতীয় চোখ দিয়ে ভুলগুলো দেখার চেষ্টা করাই উত্তম। তবেই হয়তো দেশের মানুষ উপকৃতও হতে পারে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.