নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

“আমি আপনার কথার সাথে দ্বিমত পোষণ করতেই পারি কিন্তু আপনার কথা বলার স্বাধীনতা রক্ষার প্রয়োজনে জীবনও উৎসর্গ করতে পারি”

রুপম হাছান

‘‘আত্মত্যাগ সব সময় ভালো কিন্তু মাঝে মাঝে বিরক্তিকরও বটে...’’

রুপম হাছান › বিস্তারিত পোস্টঃ

১৫ এপ্রিল অতঃপর যাত্রী সাধারণের ভোগান্তী চরমে!

১৮ ই এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১২:১৭



অবশেষে আমাদের দেশের সকল বাস সার্ভিস গত ১৫ এপ্রিল সকাল থেকে লোকাল সার্ভিস হিসেবে চালু হলো। কিন্তু সমস্যা জিইয়ে রেখে আমাদের বিআরটিএ সহ সকল বাস মালিক-শ্রমিক ইউনিয়ন এমন ঘোষণা দিলো। যা আমাদের যাত্রী সাধারণের জন্য এক রকম ভোগান্তির ঘোষণা বলেই প্রতিয়মান হলো। অর্থাৎ সরকার কিংবা জাতীয় স্বার্থবাদী গ্রুপগুলো জনসাধারণের জন্য যতই গলা ফুলিয়ে সুযোগ-সুবিধার কথা বলুক না কেনো, এটা তাদের ‘কাজীর গরু/কিতাবে আছে, গোয়ালে নাই’ এর মতো!

একদিকে বললো কোনো ধরণের গেইটলক কিংবা সিটিং সার্ভিস থাকবে না অর্থাৎ সব বাস এক কোম্পানিভুক্ত হয়ে লোকাল হিসেবে চলবে। কিন্তু ভাড়া কোথায় থেকে কোথায় গেলে কত দিতে হবে? কিংবা প্রতিটি স্টপেজে বাস দাঁড়াবে কিনা? কিংবা প্রতি স্টপেজ থেকে পরের স্টপেজে যাত্রী ওঠার পর নামতে পারবে কিনা এবং এক স্টপেজ থেকে পরবর্তী স্টপেজে যাত্রী নামলে তাকে কত ভাড়া শোধ করতে হবে? তার কোনো নির্দেশনা বিআরটিএ এবং বাস মালিক-শ্রমিক সমিতি থেকে দেয়া হয়নি!

যার ফলশ্রুতিতে, গত ১৫ই এপ্রিল ২০১৭ইং তারিখে দেশের প্রায় গন্ত্যব্যের (সিটি সার্ভিস) গাড়ী মালিক সমিতি বন্ধ করে দেয়। যা দেশের নীয়ম-কানুন পরিপন্থি বলেই আমার কাছে মনে হয়েছে। একদিকে কর্তৃপক্ষ ঘোষণা দিয়ে লোকাল করে দিলো সব বাস সার্ভিস, অন্য দিকে ভাড়া আগেরটা রেখে কষ্ট বাড়িয়ে দিলো। এই নিয়ে গত ১৫ই এপ্রিল বাস ড্রাইভার-হেল্পার মিলেমিশে যেমন ইচ্ছে যাত্রীর সাথে করে গেছেন। মিরপুর ১২ নম্বর থেকে ক্যান্টনম্যান্ট হয়ে কাকলী পর্যন্ত পথের দূরত্ব বেশি হলে ৫ কিলোমিটার হবে। সেখানে যাত্রী প্রতি ভাড়া পরিশোধ করতে হয়েছিলো ২০ টাকা। যারা মহাখালী আসবেন তারা আবার ১৪নম্বরের গাড়ীতে উঠে মহাখালী এসেছেন আরো বাড়তি ৫ টাকা পরিশোধ স্বাপেক্ষে!

যখন হেল্পার কে বললাম, এটা তো ঠিক হচ্ছে না। একদিকে গাড়ী বোঝাই লোক নিলা আর টাকার পরিমান আগের টা রেখে দূরত্ব কমিয়ে দিলা; এটাতো কোনো মতেই যুক্তি সংগত হতে পারে না!? এই কনক গাড়ী মূলত ১২ নম্বর থেকে ১০ হয়ে আগারগাঁও নতুন রাস্তা দিয়ে মহাখালী তারপর কাকলী যেতো। কিন্তু ১৫ তারিখে কনক গাড়ী তার রুট পরিবর্তন করে ১২ নম্বর থেকে কালসী হয়ে কাকলী আসলো এবং তারপর কাকলী থেকে আবার সেই রুটে ১২ নম্বর গেলো। সেই দিন বিহঙ্গসহ প্রায় গাড়ীগুলো মালিক কর্তৃপক্ষ বন্ধ করে দিয়েছিলো! কিন্তু কেনো!? বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ কেনো তাদের এমন মনগড়া সিদ্ধান্তের ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করলো না!? কেনো তাদের এই অবৈধ হস্তক্ষেপকে আইনি ভাবে মোকাবেলা করলো না!? কেনো তাদের বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যাবস্থা গ্রহণ করলো না!? কেনো যৌথ ঘোষণা দেয়ার পরে ১৫ তারিখে এসে সকল গাড়ী বন্ধ করে রেখেছিলো!? যেসব কোম্পানী গাড়ী বন্ধ রেখেছিলো তাদের সকল রুট পারমিট বাতিল করলো না!? নাকি বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ সাধারণ মানুষকে বোকা বানিয়ে পুঁজিবাদীদের স্বার্থ রক্ষায় এমন পদক্ষেপ গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকলেনে!?

এটা তো কর্তৃপক্ষ থেকে যাত্রী সাধারণের প্রতি এক ধরণের হটকারী সিদ্ধান্ত বলেই প্রতিয়মান হলো!

আজকে যখন বিহঙ্গ তে উঠলাম গুলশান আসবো ঠিক তখন ১২ নম্বর কাউন্টারে বিহঙ্গ বাস মালিক এর পক্ষ থেকে জানালো এক আবদার। একজন বাস মালিক বললেন, যাত্রী ভাইসব; আমরা সবাই সবার পরিচিত। সবাই পল্লবী সহ এখানকার লোক। আমরা-আপনারা একই এলাকার। এই গাড়ী আপনাদের। আপনারাই আসবেন আবার যাবেন। তাই আপনাদের কাছে আমার ছোট্ট একটি অনুরোধ, গতকালকে আমরা গাড়ী বন্ধ রেখেছিলাম ভাড়া নির্ধারণ করার জন্য। তাই আমি আমাদের সার্ভিসের পক্ষ থেকে দুঃখিত প্রকাশ করছি, গতকালকে আপনাদেরকে অনাকাঙ্খিত কষ্ট দেয়ার জন্য। আজকে আপনারা প্রতিজন ভাড়া দিবেন ১৯টাকা করে। যা আপনারা এতোদিন দিয়ে আসছেন ২০ টাকা করে! মালিক পক্ষের আবদার দেখে বেশ অবাকই হলাম। সিটিং সার্ভিস আর লোকাল সার্ভিসের ভাড়ার ব্যবধান মাত্র ১ টাকা!!! তাহলে সিটিং সার্ভিস আর লোকাল এর মধ্যে ব্যবধান কি তা বুঝতে হিমশিম খেতে হলো। আগে দেখতাম ৩৭ জনের সিটিং সার্ভিস আর এখন দেখি ৩৭ জন সহ মাঝে প্রায় ২০ জন দাঁড়িয়ে আছে। তাহলে ভাড়ার ব্যবধান ১ টাকা হবে কেনো!? এর ভিতরে আমি বললাম আমাদের বাকী এক টাকা করে ফেরত দিতে হবে। কিন্তু বাদ সাধলো আমার পেছনের এক ভদ্র বুড়ো লোক। তার কথা হলো আমি ভাংতি দিতে হবে, না হয় কয়েন দিয়ে বাকীটা নিতে হবে। কন্ট্রাক্টর দিতে পারবে না!!! আমার মনে হলো সে একজন দালাল কিংবা সুবিধাবাদী লোক। সেই অন্য কথা। (একটু রাগারাগি তারপর সে তার ভুল বুঝতে পেরে চুপ হয়ে গেলো।)

তারপর হঠাৎ চোখ পড়লো উপরে ঝুলানো কোম্পানী এবং বিআরটিএ কর্তৃক নির্ধারিত ভাড়ার তালিকা। সেখানে দেখতে পেলাম মিরপুর থেকে মহাখালী ১১.১ টাকা/ গুলশান পর্যন্ত ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪.৬ টাকা/ নতুন বাজার পর্যন্ত ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬.৪ টাকা অথচো কোম্পানী (মালিক পক্ষ) গাড়ীতে উঠা যাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলতেছে সবাই যেনো ১৯ টাকা করে পরিশোধ করি। তার সাথে যোগ হয়েছে পেছনের বুড়ো! এরপর গাড়ী যখন শেওড়াপাড়া পার হচ্ছিলাম তখন ভাড়া চাইতে আমিই প্রথম ভাড়া দিলাম একটি ২০ টাকার নোট আর ফেরত চাইলাম ৫ টাকা এবং বললাম আমি ভাড়ার তালিকা অনুযায়ী ভাড়া দিবো। আপনি ১৫ টাকা ভাড়া রাখবেন, বাকি ৫ টাকা আমাকে ফেরত দিতে হবে। এরপর ড্রাইবার, হেল্পারের উদ্দেশ্যে বললেন, সবার কাছ থেকে তালিকা অনুযায়ী ভাড়া কাট। যাত্রীদের সাথে ঝামেলার দরকার নাই। তারপর সবাই খুশি কিন্তু কর্তৃপক্ষের প্রতি আমার খুব রাগ রাগলো তারা কেনো এসব আগে থেকেই নির্ধারণ করে তবেই ঘোষণা দেয় না। যাতে করে কেউ ঘোষণা ব্যাতিরেকে কার্য করলে দেশীয় আইন অনুযায়ী শাস্তির আওতায় আসবেন এবং সে সকল গাড়ীর রুট পারমিট সহ সকল অনুমোদিত কাগজপত্র বাতিল বলিয়া গণ্য করা হবে। পুণরায় ঐ কোম্পানী কিংবা ঐ সকল গাড়ীর আর অনুমোদন করা হবে না। এমনকি, সেসব গাড়ী অন্য কোনো রুটে কিংবা অন্য কোনো নামেও অনুমোদন করা হবে না।

তাহলেই কেবল যাত্রীর সুবিধা নিশ্চিত হতো বলে মনে করি।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১২:৩৪

রুপম হাছান বলেছেন: অবশেষে ১৬ টাকায় গুলশান পৌঁছালাম। বাকী ৪ টাকা ফেরত দিলো। লোকাল বাস জিন্দাবাদ। হা হা হা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.