নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

“আমি আপনার কথার সাথে দ্বিমত পোষণ করতেই পারি কিন্তু আপনার কথা বলার স্বাধীনতা রক্ষার প্রয়োজনে জীবনও উৎসর্গ করতে পারি”

রুপম হাছান

‘‘আত্মত্যাগ সব সময় ভালো কিন্তু মাঝে মাঝে বিরক্তিকরও বটে...’’

রুপম হাছান › বিস্তারিত পোস্টঃ

-‘চার পাপে’ নৌকা ডুবে!-

২৪ শে এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৫:২৯



ভালো কাজ খারাপ পদ্ধতিতে হয় না। এটা নীতিশাস্ত্রের কথা। কিন্তু অনেক সময় প্রত্যাশা করা হয় না, এমন মানুষ কিংবা আদর্শিক ভাবে ভিন্ন মেরুর লোকের মাধ্যমেও অপ্রত্যাশিত ভাবে কিছু ভালো কাজ হয়ে যেতে পারে। ভালো মন্দ বিচারের উর্ধ্বে অনেক শাসকই কিছু দৃষ্টান্তমূলুক ভালো কাজ করে ফেলেন। কখনো তা করেন জনসাধারণকে শান্ত রাখার জন্য। কখনো বা গণসম্মতির সাথে নিজের চিন্তা ও বিশ্বাসের মিল খুঁজে পান বলেই ইতিবাচক পদক্ষেপ নেন।

তেমনি হয়তো অনেক অমিলের মধ্যেও সরকারের গত কয়েকটি সিদ্ধান্ত ছিলো মন্দের ভালোর মাঝে কয়েকটি। ভোটের রাজনীতিতে ইমেজ রিপেয়ারিংয়ের জন্য অনিচ্ছা সত্ত্বেও শাসকদের কিছু সিদ্ধান্ত নিতে হয়। যেমন স্বপক্ষীয় বুদ্ধিজীবিদের নাখোশ হওয়া সত্ত্বেও স্কুল পাঠ্যবইয়ের সিলেবাস বিতর্কে প্রধানমন্ত্রী কিছু বিষয় পুনর্বহাল করে সাধুবাদ পেয়েছেন। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সৌদি আরব থেকে মক্কা-মদিনা সংশ্লিষ্ট আলেম আনাটাও স্বাভাবিক নয়। কারণ দরবারের সাথে সংশ্লিষ্টরা কেউ সৌদি আলেমদের পছন্দ করার কথা নয়; বিশেষত ‘আকিদাগত’ কারণে। কওমি মাদ্রাসার সনদ নিয়েও প্রধানমন্ত্রীর পদক্ষেপ আলেম ওলামার ক্ষোভ কিছুটা হলেও প্রশমিত করবে। কওমি মাদ্রাসার সনদবিতর্কের সবটুকু সুরাহা হয়নি। তবে দাওরায়ে হাদিসের স্নাতকোত্তর মান নির্ধারণ ইতিবাচকভাবে নেয়া সম্ভব। কওমি আলমরা এখনো এক মঞ্চে উঠতে পারেননি। অবশ্য অনৈক্যর মাঝেও তাদের একটা ঐক্য আছে। সনদ ইস্যুতে তাদের চাহিদা কী তা-ও তারা স্পষ্ট করতে পারে নি। সেই ক্ষেত্রে হেফাজতের শীর্ষ নেতা এবং সরকারের অনুগত অংশের মেলবন্ধনে যা হলো তাতো মন্দের ভালো।

এটা সত্য যে, আলেম সমাজ জাতির কাছে স্পষ্ট করতে পারেন নি তারা কেমন স্বীকৃতি চান। আবার দেওবন্দ ধারার মৌলিকত্ব ও হারাতে চান না। একই সাথে, সরকারের নিয়ন্ত্রণের স্বরুপটি কেমন হলে ভালো হবে সে ব্যাপারেও সুস্পষ্ট ধারণা দিতে পারেন নি। তাই যা হয়েছে সেটাকে অগ্রগতি ভেবে আরো সামনে এগিয়ে নেয়াই ভালো। এখন সরকারে দেয়া সুযোগ কিভাবে কাজে লাগানো হবে, সে ব্যাপারে ভেবে সিদ্ধান্ত নেয়া উত্তম। স্মরণে রাখতে হবে, যত কমিটিই হোক দরবারিরা সব কিছু ঠিকঠাক হতে দিতে চাইবেন না এবং সরকারি স্বীকৃতির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে খানিকটা নিয়ন্ত্রণের কারণে জবাবদিহির জন্যও প্রস্তুত থাকতে হবে। স্বীকৃতির ফলস্বরুপ একটি সমন্বিত মানের ভিত্তিতে আগামী দিনে সনদের বিষয়টি বাস্তবতা পাবে। এ প্রসঙ্গে বলে রাখা ভালো-আমাদের কওমি ধারার আলেমরা মূলত ধর্মীয় নেতা হতে আগ্রহী, রাজনৈতি শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেতে আগ্রহী নন। তবে এটা ঠিক, বাংলাদেশের আলেম সমাজ সবচেয়ে প্রভাবক সামাজিক শক্তি যারা নীতি নৈতিকতাও ধর্মকর্মের চাষাবাদ করেন। জনগণের চোখে তারা ভালো মানুষ। এদের গণভিত্তির শেকড় অনেক গভীরে। যারা তাদের উপস্থিতি সহ্য করতে চান না-তারা যে কতটা গণবিচ্ছিন্ন, সেটা তারা জানেন বলেই ভয় পান।

হাইকোর্টের সামনে শাড়ি পড়া গ্রিক মূর্তির ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য অভিনন্দন পাওয়ার যোগ্য। কারণ জনগণ এই মূর্তি বা ভাস্কর্য রাখার মাঝে ভালো কিছু দেখছেন না। বরং এসবকে অপকর্ম ভাবেন এবং বিশ্বাসের সাথে এটাকে সাংঘর্ষিক হিসেবেই বুঝে নিয়েছেন; যদিও কিছু চিহ্নিত মানুষ, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের ভেতর ‘অশনি সংকেত’ দেখতে পাচ্ছেন। সেই সাথে প্রশ্ন উঠেছে, দেশের সর্বোচ্চ আদালত ও জাতীয় ঈদগাহর সামনে ইনসাফের প্রতীক হিসেবে গ্রিক মূর্তি স্থাপনের বিষয়টি সরকারের প্রধান নির্বাহী জানেন না কেনো!? জাতীয় ঈদগাহ লাগোয়া স্থানে এই কাজটি যারা করলেন তারা কার অনুমিত নিয়ে করলেন? দাঁড়িপাল্লা ইনসাফের প্রতীক। হাইকোর্টের দেয়ালে এটি রয়েছে। আবার গ্রিক মূর্তির হাতে দাঁড়িপাল্লা ধরিয়ে দিয়ে সেটি স্থাপন করা মানে উচ্চ আদালতের মনোগ্রাম পাল্টে ফেলা। মিডিয়ার দলবাজ অংশটি আদালতের প্রশ্ন উঠলেই গ্রিক মূর্তির ছবিটি দেখানোর সুযোগ নেন। তাতে ধারণা জম্মে, উচ্চ আদালতের মনোগ্রাম হয়তো পাল্টে ফেলা হয়েছে। গ্রিক মূর্তি ভাস্কর্য কি না-সেটি অবান্তর। ভাস্কর্য ও মূর্তির ফারাক শিল্পীদের বিষয়, বিশ্বাস-অবিশ্বাসের বিষয় নয়।

এখন অনেকের যুক্তি দেশটা সেক্যুলার হয়ে গেছে! দুর্ভাগ্য, অজ্ঞরা জানে না মূর্তিও ধর্মের প্রতীক। বুঝতে হবে ‘ধর্ম’ নিরপেক্ষ নয়, গ্রিক মূর্তিটি ধর্ম বিশ্বাসের একটি অংশ। ‘লেডি অব জাস্টিস’ নিয়ে পড়লে জানতে পারবেন। তাই বলছি- প্রধানমন্ত্রীর চার পাশের লোকদের উৎপাত এখন বেশ দেখার মতো। তাদের ভাষায় ‘চার পাপে, শেখ হাসিনার নৌকা ডুববে!’ প্রথম পাপ স্কুল সিলেবাসে হস্তক্ষেপ, দ্বিতীয় পাপ সৌদি আলেমদের নিমন্ত্রণ, তৃতীয় পাপ কওমি মাদ্রাসার সনদের স্বীকৃতি এবং চতুর্থ পাপ গ্রিক মূর্তি নিয়ে দেয়া অভিমত। আসলে যারা এসব বলছেন-তারা কোনো সরকারের বন্ধু হলে সেই সরকারের আর কোনো শত্রুর প্রয়োজন হয় না। এরাই ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট কুড়ায় আবার পড়ন্ত বিকেলে ক্ষমতার আপদ হয়ে ওঠে!

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৩০

চাঁদগাজী বলেছেন:

"হাইকোর্টের সামনে শাড়ি পড়া গ্রিক মূর্তির ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য অভিনন্দন পাওয়ার যোগ্য। কারণ জনগণ এই মূর্তি বা ভাস্কর্য রাখার মাঝে ভালো কিছু দেখছেন না। "

-শহীদ মিনার, ঈশা খাঁ'র মুর্তি, দু'বাইর ঘোড়ার মুর্তি, বাগদাদের জিলানী সাহেবের কবরের ব্যাপারে, "আপনার জনগণ " কি ভাবেন?

২| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৫:১৪

রুপম হাছান বলেছেন: আমাদের দেশের জনগণ তাদের চিন্তাভাবনার প্রতিফলন দেখিয়েছে আদর্শগত ভাবে বা আকিদাগতভাবে, আর এটা গ্রহণযোগ্য। এখন দেখার বিষয়, ঐসব দেশের রাজনীতি, দেশীয় সংস্কৃতি এবং সেইসব দেশের গণমানুষের চিন্ত-ভাবনা এবং আদর্শগত দিক কেমন। আর এটা একান্তই সেসব দেশের মানুষের নীতি-নৈতিকতার উপর নির্ভরশীল। তাদের সাথে আমাদের দেশের মানুষের চিন্তা-ভাবনার মিল খোঁজা অযৌক্তিকই হবে।

যেমন-আমরা আদর্শগত দিক থেকে হিলারির ব্যাপারেই বেশি আশাবাদী ছিলাম কিন্তু মার্কিন নাগরিক তাদের দেশের ব্যাপারে তাদের চিন্তা-ভাবনার প্রতিফলন ঘটিয়েছেন ঠিক তাদের নীতি-নৈতিকতার উপর ভর করে। এখানে কোনো দেশের মানুষের চাওয়া-পাওয়ার মূল্যায়ন হবে এটা ভাবা অযৌক্তিক।

তাই বলছি-কারো দেশের সংস্কৃতি কি হবে কিংবা সেসব দেশের সংস্কৃতি নিয়ে আমাদের দেশের জনগণ কি ভাববে এটা সত্যি উপযোগী কোনো প্রশ্ন হতে পারে না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.