নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

গোলাম রব্বানী ৮৪

আমি গোলাম রব্বানী,পেশা-ব্যবসায় (আই,টি)

গোলাম রব্বানী ৮৪ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বৃষ্টি তুমি চোখের পানি ছুঁয়ো না

১৬ ই জুন, ২০১৫ বিকাল ৩:০৯

মজিবর সাহেবের মেজাজটা চরম খিচড়ে আছে।আজ তিনদিন হল এই বিশ্রী বৃষ্টিটার।থামার নামই নিচ্ছেনা বরং থেমে থেমে সারাদিনই হচ্ছে।ব্যাবসা বানিজ্য একেবারে গোল্লায় গেছে। ,যাবে না কেন?দোকানের সামনের রাস্তায় উরু সমান পানি।দোকানে খদ্দের যেতে হলে তো নৌকায় করে যেতে হবে।রাস্তায় যেহেতু নৌকার ব্যবস্থা নাই দোকানেও খদ্দেরের আনাগোনা নাই।
তারউপর বউটা পড়েছে একেবারে হাড় বজ্জাত।ক্রমাগত কানের কাছে ঘ্যনর ঘ্যনর করেছে ছাদে গিয়ে বৃষ্টি ভেজার জন্য।আরে বাবা মানুষ ঘর বানাইছে রোদ-বৃষ্টি থেকে বাঁচার জন্য আর তুই কিনা ঘর থেকে বাইর হইয়া যাবি বৃষ্টিতে ভিজতে?মাথা মোটা হলে যা হয় আর কি!অল্পবয়সী মেয়ে বিয়ে করার মজা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে মজিবর সাহেব।গতবছর ও এমন দিনে বৃষ্টি ভিজে ঠান্ডা লাগিয়ে তিনশ বিয়াল্লিশ টাকা জরিমানা লাগিয়েছিল।এখানে ও কত প্যাখনা।ছোট থেকে এত বড় হয়েছেন তিনি কখনও ঠান্ডা সারাতে দশ টাকার প্যারাসিটামলের বেশী লাগেনি।
ঘরে থাকতে আর ভাল লাগছেনা,কাপড়চোপড় পাল্টে ও রাস্তার ওপাশের হোটেলটায় চলে এল।চা সিগারেট খেয়ে বন্ধু-বান্ধব কাউকে পেলে কিছুক্ষণ আড্ডা মারা যাবে।
হোটেল থেকে বসে বাসার ছাদটা দেখা যায়।শম্পা আসার পর ছাদের চেহারাটা ই পাল্টে গেছে।নানারকম গাছগাছালিতে মনে হয় ছোটখাট একটা জঙ্গল।দেখতে ভাল লাগে।বজ্জাত বৃষ্টিটা আবার নেমেছে মষুলধারে।
মজিবর সাহেব যা আশংকা করেছিল তাই হয়েছে।পইপই করে মানা করার পরও শম্পা ছাদে উঠে এসেছে বৃষ্টি ভেজার জন্য।তার আর চা খাওয়া হলনা।আজ শম্পার বজ্জাতি ছুটাতে হবে।প্রচন্ড ধমক দিয়ে নাকের জল চোখের জল এক করে ফেলতে হবে। মজিবর সাহেব ঝুমবৃষ্টির মধ্যেই বের হয়ে এলেন।ওদিকে শম্পার পিঠে মনে হচ্ছে পাখা গজিয়েছে।মুক্তপাখির মত ছাদের এ মাথা ও মাথা ঘুরছে।রাস্তা পার হতেই মজিবর সাহেব ভিজে চপচপ।গা থেকে টপটপ পানি পড়ছে তবে এটা বড় কোন ব্যাপার না,ব্যাপার হচ্ছে তার এখন আর রাগ লাগছেনা।তারও মনে হচ্ছে বৃষ্টিতে একটু ভিজলে মন্দ হতনা।শম্পার এইসব বজ্জাতি যদি তার মধ্যে সংক্রমিত হয় তাহলে বড় মুশকিল হয়ে যাবে কিন্তু তারপরও বৃষ্টি ভেজার ইচ্ছেটা প্রবলতর হচ্ছে। মজিবর সাহেব ঘরে না গিয়ে সোজা ছাদে উঠে এলেন।তাকে দেখেই শম্পা যেন পাথরের মূর্তি হয়ে গেল,অসম্ভব ভয় পেয়েছে সে।এই সময়ে উনি চলে আসবেন তা ও কল্পনাতেও ভাবেনি,সাধারণত উনি রাতের বেলায় ই ফেরেন।
“এমন তবদা লাইগ্যা গেলা কেন?খুব তো নাচানাচি করতেছিলা এতক্ষণ।”
‘না ..না..”
‘আরে কি না না করতাছ,যাও ভিজ গিয়া তবে লাফালাফিটা একটু সাবধানে।পইড়া যেন কোমরটা না ভাঙ্গে।তবে একটা কথা খুব ক্লিয়ার শুনে রাখ আমারে নাচানাচি করবার জন্য টানবানা।আমি এমনি এমনি একটু ভিজমু।”
শম্পা এখনও দাঁড়িয়ে।তার মুখ দেখে কোন কিছু বুঝা না গেলেও চোখদুটোয় আনন্দ খেলা করছে।কেন জানি ও চোখের পানি ধরে রাখতে পারছেনা।
সবচেয়ে মজার ব্যাপার হল মজিবর সাহেব এই ঝুম বুষ্টির মধ্যেও শম্পার চোখের পানি চিনতে পারছে।কেবলই মনে হচ্ছে পানিগুলো বৃষ্টিতে ধুয়ে না গেলে বড়ই ভাল হত।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.