নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি গর্বিত আমি বাঙ্গালী

নিজের সম্পর্কে লেখার মত কিছুই নেই , খুব ই অগোছালো মানুষ আমি । গোরস্থান পাহারা দেওয়ার বাইরে টুকটাক লেখালেখি করি। গান গাইতে খুব ভালোবাসি !

গোরস্থানের প্রহরী

নিজের সম্পর্কে লেখার মতকিছুই নাই , খুব ই অগোছালো মানুষ আমি । গোরস্থান পাহারা দেওয়ার বাইরে টুকটাক লেখালেখি করি। গান গাইতে খুব ভালোবাসি !

গোরস্থানের প্রহরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

এই দেশের বিপুল সংখ্যক মানুষকে বঞ্চিত রেখে , দূরে ঠেলে দিয়ে

০৭ ই মে, ২০১৩ রাত ১১:১২



• আজকের আমার লেখার বিষয়টা ভিন্ন। অনেক

দিন থেকে লিখব লিখব

করে বিষয়টা নিয়ে লেখা হয়ে উঠছিল না।

আজও লিখতাম না কিন্তু...। এখন

এটা নিয়ে লেখা বোকামি ব্যতীত আর কিছুই

না। লোকজন তো আজকাল ট্যাগের

নামে বিভিন্ন সার্টিফিকেট

বিলি করে বেড়ান। যাগ গে, ট্যাগের

সার্টিফিকেট দিয়ে কী করব, জুকারবার্গ

কেনে কিনা কে জানে!



দুধে পানি মেশানো চাবুক মেরেও বন্ধ

করা যায় না, দুধের যোগান

বাড়িয়ে দিতে হয়। নইলে পানির পরিমাণ

কেবল বাড়তেই থাকে। তেমনি যেমনটা এই

দেশের বিপুল সংখ্যক মানুষদের বঞ্চিত,

দূরে রেখে...।



হুজুরদের নিয়ে আলোচনায় যে সুখ তা অন্যত্র

কোথায়। অবশ্য আমরা হুজুর কমই বলি।

বলি মোল্লা বা কাঠমোল্লা। কিন্তু আমি কখনই

এদেরকে ধর্মীয় শিক্ষক বলতে শুনিনি। কেন,

কে জানে! অথচ এই মানুষটাকেই আমাদের

অনেকের জন্ম-মৃত্যুর পর প্রয়োজন হয়। তখন

আবার আমরা মাখনের মত গলে যাই।



ভাল কথা, আমরা কি এটা জানি, আমাদের

দেশের অধিকাংশ ইমাম-মোয়াজ্জিনের

(সম্মানি বা বেতন যে নামই বলা হোক

না কেন) বেতন কত? আমি বায়তুল মোকারমের

মত মসজিদের কথা বলছি না। অধিকাংশ

মসজিদের, বিশেষ করে গ্রাম, মফঃস্বলের?

১৫০০/ ২০০০/ ২৫০০। এর উপর খুব কম

উদাহরণই আছে।



আচ্ছা, আমাকে কী কেউ অন্য যে-কোনো পেশার

মানুষকে এনে দিতে পারবেন যিনি এই টাকায়

সারাটা মাস কাজ করবেন? তো, এই টাকায়

একালে একজন মানুষ চলেন কেমন করে? কেবল

চাউল কিনে কাচা চিবিয়ে খেলেও তো চলার

কথা না! অনেকে বলবেন, হুজুররা তো তিন

বেলা অন্যের বাড়িতে খান। তা খান।

পনেরো দিন এখানে তো পনেরো ওখানে। কেন

রে ভাই, মানুষটা কী ভিক্ষুক!

এটা সত্য, মিলাদ পড়িয়ে বা খতম

পড়িয়ে তিনি টাকা পান। এও সত্য, স্বজনের

চোখের জল শুকিয়ে যায় কিন্তু হুজুরের চোখ

তখন চাপকল।

এই সব অধিকাংশ সফেদ

মানুষকে আমরা কালে কালে ধূর্ত

বানিয়ে ফেলি। তখন তিনি আবার

ফতোয়া ঝাড়েন।

• কয়জন হুজুরকে দেখেছেন তাঁর পরিবার-পরিজন

নিয়ে বসবাস করতে? কয়েক মাস পর সুযোগ

পেলে তিনি বাড়িতে যাবেন। ধর্মীয়

পুস্তকে বলা হবে, সমস্যা হলে বিবির

কাছে যান কিন্তু বিবি কোথায়? একজন কবি,

একজন আঁতেল বিবি না-থাকলে 'টিবির'

কাছে যেতে সমস্যা নেই। তিনি অতি আধুনিক

হলে সেটা আবার জনে জনে বলে বেড়াবেন

কিন্তু হুজুরের সে সুযোগ কোথায়? ফল

যা হওয়ার তাই হয়- তখন সাত

গ্রামে ঢিঢি পড়ে যায়। ছ্যা-ছ্যা-ছ্যা, হুজুর

এই কাম করছে! আহা, হুজুর তো মানুষ না, অন্য

ভুবন থেকে এসেছেন ধর্মউদ্ধার করতে।

এই উদাহরণগুলো দিলাম এই কারণে-

আমরা ইচ্ছা করে, জেনেশুনে এই সমস্ত

মানুষকে অন্ধকারে ঠেলে দেই আবার এই

আমরাই হইচই করি।

কয়জন হুজুরকে দেখেছেন পত্রিকা পড়তে,

রেডিও শুনতে? যে মানুষটার দিনদুনিয়ার

খবরই নাই সেই মানুষটা সংশোধন করবেন

আমাদেরকে, এই আশায় থাকি আমরা! আবার

রমজানে হুজুর মুড়ি বিক্রি করতে পারবেন

না কারণ এতে আমাদের যে আঁতে লাগে বড়।



মাদ্রাসার ছেলেদের নিয়ে আমরা খুব

রসিয়ে রসিয়ে আলোচনা করি। এরা এই,

এরা সেই- এরা হেন, এরা তেন! কিন্তু

আমরা কি খানিক খোঁজ

নিয়ে দেখেছি অধিকাংশ মাদ্রাসায়

এঁরা কী মানবেতর জীবন-যাপন করে?

খাবারের কী কষ্ট করে! এ সত্য,

দাওয়াতে এরা ভালমন্দ খায় কিন্তু অন্য

দিনগুলো? তারউপর ছিনতাই হয়ে যায় এদের

শৈশব। অধিকাংশ মাদ্রাসায় এদের খেলার

কোনো সুযোগ নেই। আমার নিজের চোখে দেখা,

স্পঞ্জের স্যান্ডেল

দিয়ে চুরি করে ব্যাডমিন্টন খেলার

অপচেষ্টা করছিল!

লাখ টাকা দামের প্রশ্ন, এরা মাদ্রাসায়

কেন পড়ে? ওটা বৃহৎ পরিসরের আলোচনা।

কেবল ছোট্ট করে বলি, কেউ শেক্সপিয়র পড়েন,

কেউ কোরান শরীফ, যার যার অভিরুচি।

কোরান শরীফ

পড়া নিয়ে কারো আপত্তি থাকতেই পারে,

আবার কারো শেক্সপীয়র নিয়ে! লিও

তলস্তয়ের ভাষায়, "শেক্সপিয়র

পড়ে আমি ক্রমাগত, ক্রমাগত বিতৃষ্ণা আর

বিরক্তির মুখোমুখি হয়েছি"।



সবচেয়ে বড়ো কথা হচ্ছে, ঢাকার একটি অংশ

যেমন সমগ্র ঢাকা না তেমনি সমগ্র

বাংলাদেশও ঢাকা না, যে গোটা দেশের

লোকজনেরা কেবল তাদের মত করেই ভাববে।

(ঢাকার উদাহরণটা এখানে এই কারণে-

আমরা মনে করি, গোটা দেশ ঘুরপাক খায়

ঢাকাকে কেন্দ্র করে। সত্যটা হচ্ছে,

এটা সমগ্র বাংলাদেশের চিত্র না। সেই

কারণে ভোটের সময় হিজাব লাগে,

টুপি লাগে।)

গতকাল দুপুরে ব্যাক্তিগত কাজে যাচ্ছিলাম এক যায়গায়।

ঝুম বৃষ্টি। শেয়ারের স্কুটারে আমার

সহযাত্রী মাদ্রাসার এক ছেলে। আমার

ঔচিত্য বোধ কম। আগ্রহ বোধ করলে যে-

কারো সঙ্গে আলাপ

চালিয়ে যেতে সমস্যা নাই, কেবল

মানুষটা অতিরিক্ত জ্ঞানী না-হলেই হয়! এই

ছেলে যাচ্ছে হুজুর তাকে একটা দায়িত্ব

দিয়েছেন এটার কারণে। দায়িত্বের

বিস্তারিত ও আমাকে বলেনি।



আমি তার কাছে জানতে চাইলাম, তোমাদের

আসলে সমস্যা কোথায়?

সে আমাকে বলল, আমাদের ধর্ম নিয়ে খুব

খারাপ কাজ করার চেষ্টা হয়েছে।

আমি জানতে চাইলাম, কেমন?

সে বলল, একজন বলেছে, মসজিদ

ভেঙ্গে নাকি বাথরুম (এখানে আঞ্চলিক

ভাষাটা আমি খানিক বদলে দিলাম)

করা হবে।

আমি এমন হতবাক হলাম। সামলে উঠতে খানিক

সময় লাগল। বললাম, এটা তো খুবই খারাপ,

জঘণ্য কথা। কে বলেছে এই খারাপ

কাজটা করবে?

সে আমাকে একটা নাম বলল। আমি বুঝে গেলাম

ওর তথ্যের বিভ্রান্তি কোথায়।

হাবিজাবি আরও অনেক কথাই হলো তার

সঙ্গে এখন এখানে এই সব বলাটা জরুরি না।

তো, এই হচ্ছে অবস্থা...।



অনেকে বলেন, মাদ্রাসাখাতে সরকারের

বিনিয়োগ কমিয়ে বা বন্ধ করে দেয়া হোক।

আমি উল্টো মত পোষণ করি। আমি মনে করি, এই

বিনিয়োগ কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেয়া হোক।

প্রতিটি মাদ্রাসা এমপিও ভুক্ত হবে, ধর্মীয়

শিক্ষক সরকারের কাছ থেকে বেতন পাবেন।

ওখানে কেবল আরবিই শেখানো হবে না।

কম্পিউটার থাকবে। এরা ইন্টারনেট ব্যবহার

করবে- এরা নিজেরাই জানবে ধর্ম

নিয়ে যেমন কুৎসিত কথা বলা হয়

তেমনি চমৎকার কথাও লেখা হয়। এরা চোখ

বড় বড় করে মাল্টিমিডিয়ায় মুক্তিযুদ্ধের

অসাধারণ সব বীরত্বের প্রামাণ্যচিত্র

দেখবে। লাইব্রেরিতে শিক্ষামূলক বই

থাকবে। এরা অতি অখ্যাত প্রকাশনীর

সূত্রবিহীন জয়ীফ হাদিসই কেবল পড়বে না।

সহীহ এমন হাদীসও পড়বে:

"আমি যখন কোনো ধর্মীয় বিষয়ে তোমাদের

জন্য কোনো বক্তব্য রাখি,

তোমরা তদনুসারে ধর্মের কাজ করবে কিন্তু

আমি যখন দুনিয়াদারীর ব্যাপারে তোমাদের

কোনো কথা বলি, তখন মনে রাখবে যে,

দুনিয়াদারীর ব্যাপারে তোমাদের নিকটেই

উত্তম জ্ঞান রয়েছে"। -প্রিন্সিপলস (আল-

ওসুল), আল সারাকসী



নইলে যেটা হবে, এই হুজুর, মাদ্রাসার

ছাত্ররা কখনও জামায়েতে ইসলামীর পক্ষে,

কখনও হেফাজতি ইসলামের ঢাল

হিসাবে বা আগামীতে 'ইসলাম বাঁচাও' এমন

কোনো সংগঠনের নামে ব্যবহৃত হবেন, হতেই

থাকবেন। আজ চাঁদে কোন মহাপুরুষকে(!)

দেখা গেছে বলে এরা লাফিয়ে বেরিয়ে আসেন

আগামীতে সূর্যে কাউকে দেখা গেলে মুক্তকচ্ছে

ছুটবেন। সঙ্গে থাকবে নাঙ্গা তরবারি,

গজারি লাঠি।

আর এমনিতে এদের শরীর থেকে যে রক্ত বের

হয়, এদের যে নিথর প্রাণহীন

দেহটা পড়ে থাকে; হতে পারত এটা আমার

স্বজনের রক্ত, ঠান্ডা শরীর। কোনো-না-

কোনো প্রকারে এরা তো আমাদেরই স্বজন, এই

দেশেরই সন্তান। এদের মা যখন হাহাকার

করে কাঁদেন তখন কান্নাটা অন্য রকম হয়

বুঝি! নাকি আমাদের মা অন্য

ভঙ্গিতে কাঁদেন?



সরকারের আজ তিন উল্লাস করছেন

যে এদেরকে হঠিয়ে দেয়া গেছে। কিন্তু

বাস্তবতা হচ্ছে জড়শুদ্ধ

এদেরকে হঠানো যাবে না। এদের

খাটো করে দেখার অবকাশ নাই কারণ আমাদের

সবার প্রাণের মায়া আছে কিন্তু এদের নাই।

কেন নাই এটা বলার

আবশ্যকতা আছে বলে মনে করি না।

কালে কালে এরা হবে একেকটা চলমান

হিউম্যান বম্ব- তখন এদের রুখে দেয় এই

সাধ্য কার...।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.