![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মিঃ আরিফ সাধারণ একটা এনজিও তে মাসিক ১৬০০০ টাকা বেতনে চাকরি করেন। পড়ালেখায় অত্যন্ত মেধাবী। তবু ও তিনি একটা ছোট্ট এনজিও তে চাকরি করেন তার কারণ টা হল তার একটা বদ অভ্যাস তিনি কথায় কথায় গালাগালি করেন। কিচ্ছু হলেই ইংরেজি চার অক্ষরের একটা ওয়ার্ড ( fuck) বলে মেজাজ গরম করে ফেলেন। চাকরি জন্য লিখিত পরিক্ষায় মার্কের দিক থেকে সবার চাইতে এগিয়ে থাকা সত্ত্বেও ওরাল এক্সামে ইন্টার্ভিউ তে গিয়ে আর ঠিকেন না। তার অর্থ এই নয় যে তিনি ভাইবা এক্সামে কোন প্রশ্নের আন্সার দিতে পারেন না। এর কারণ টা হল উনি ওই চার অক্ষরের গালি টাই ইন্টার্ভিউ তে গিয়েও ইউজ করেন। যেমন ধরে পরীক্ষক প্রশ্ন জিজ্ঞেস করছেন
পরীক্ষকঃ- আপনার নাম কি?
আরিফঃ- জ্বি আরিফুল ইসলাম আরিফ।
পরীক্ষকঃ- তাহলে আপনার ডাক নাম আরিফ। তাই ত??
আরিফঃ- জ্বি।
পরীক্ষকঃ- আচ্ছা আপনি কোন বিষয়ে অনার্স/ মাস্টার্স করলেন??
আরিফঃ- আমি একাউন্টিং নিয়ে মাস্টার্স করেছি।
পরীক্ষকঃ- আচ্চা আপনি কোন বিষয় ভাল পারেন??
আরিফঃ- একাউন্টিং।
আরেকজন পরীক্ষক মাঝখান থেকে কিছুক্ষণ পর প্রশ্ন ডাকার আগে আবার জিজ্ঞেস করলেন
আচ্ছা আপনি ত একাউন্টিং নিয়ে মাস্টার্স করেছেন তাই ত??
আরিফঃ- বিরক্ত হয়ে উফফ ! এক কথা কত বার বলবো?? fuck....
পরীক্ষক রেগে গিয়ে বললেন আপনাকে আমারা এখানে শুধু মেধা যাচাই করতে বসি নি। তার সাথে পরীক্ষা করছি আপনার ধৈর্যের ক্ষমতা। যেটা আপনার নেই।
এভাবে কোন চাকরি ই হয় না আরিফের। শেষমেশ অনেক কষ্টে বড় কর্তা আর বিশেষ সম্মানী দিয়ে একটা এনজিও এর চাকরি যোগার করে। কিন্তু বেতন কম থাকায় এখনো চাকরি সন্ধানে ইন্টার্ভিউ দিচ্ছে আর তার চার অক্ষরের বিশেষ বুলিটার জন্য সব চাকরি ই ভেস্তে যায়।
পড়া লেখার চাপে এতদিন প্রেমের ভূত মাথায় চাপে নি। কিন্তু পরিবারের চাপে একরকম বাধ্য হয়েই বিয়ের জন্য পাত্রী দেখতে গেল আরিফ। আরিফ সহ আরিফের পক্ষের লোক আর পাত্রী সহ পাত্রীর পক্ষের লোক সবাই বসে পাত্র-পাত্রী দেখা চলছে। পাত্রীর পরিবারের সাথে পাত্রীর কিছু বান্ধবী ও ছিল সাথে। আরিফের পরিবার পাত্রী কে বিভিন্ন রকম কথা বার্তা বলার পর বললেন যে আরিফের কোন কিছু বলার থাকলে অথবা পাত্রীর কাছ থেকে কিছু জানার থাকলে প্রশ্ন করতে। আরিফ পাত্রী কে প্রশ্ন করছে
তোমার মূল নাম ত ফাহমিদা আক্তার। আচ্ছা তোমার ভালো নাম কি??
পাত্রী কিছু বললো না।
আবার জিজ্ঞেস করলো তুমি কত টুকু পড়ালেখা করেছ??
পাত্রী এখনো কিছু বললো না।
পাত্রী লজ্জা পেয়ে যেন বোবা হয়ে গেছে।
সাধারণত প্রথম পাত্র পক্ষের সামনে দাঁড়ালে যেটা হয় আর কি।।
আরিফ আবার জিজ্ঞেস করলো
আমাকে কি তোমার পছন্দ হয় নি???
পাত্রী তখন লজ্জায় কিছু বললো না।
এক পর্যায়ে রেগে গিয়ে আরিফ বলে উঠলো সমস্যা কি (Fuck)....
ঘর ভরতি সবাই আড়চোখে তাকাতে লাগলো আরিফের দিকে।।
পরে পাত্রী পক্ষ জানালো তারা অজ্ঞাত কোন কারণে তাদের মেয়ে কে এই পাত্রের কাছে বিয়ে দিতে চান না।।।
পাত্র পক্ষ ও বুঝতে বাকি রইলো না যে এক্সেক্টলি কারণ টা কি।
আরিফ সাহেব খুব চিন্তায় পরে গেলেন। ভাবলেন ওনার এই অভ্যাস টা বদলাতেই হবে। কিভাবে এই অভ্যাসের পরিবর্তন করবেন তাই ভীষণ বিপদে পরলেন। শেষমেশ উনার এক বন্ধুর কথায় এক মানসিক ডাক্তারের কাছে গেলেন। ডাক্তার সাহেব উনার সাথে কথা বলে উনার রুচি অভ্যাস সব জানলেন। অনেকক্ষণ কথা বললেন। কিন্তু কিছুক্ষণ পর পর ই আরিফ সাহেব বিরক্ত হয়ে এক কথাই বলে fuck। ডাক্তার সাহেব একটা কথাই বুঝলেন যে সব কিছুর মূলে দায়ী উনার টেম্পারেচার। তাই মাথা ঠান্ডা রাখার জন্য ঔষধ দিলেন এবং কিছু টিপস দিলেন। আর এক সপ্তাহ পর আবার দেখা করতে বললেন।
এক সপ্তাহ পর আরিফ সাহেব আবার ডাক্তারের কাছে দেখা করতে গেলেন।
ডাক্তারঃ- কি ব্যাপার?? এখন কি আগের মত মাথা গরম হয়???
আরিফঃ- ডাক্তার সাহেব উল্টো আর ও বেশি রেগে যাই। গত ২ দিন আগে আমার এক বন্ধুর স্ত্রীর সাথে কথা বলছি। কথা বলার এক পর্যায়ে মেজাজ গরম করে বলে উঠলাম fu**। এই জন্য ঔ ভদ্র মহিলা আর আমার বন্ধু আমার সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিছে।
ডাক্তারঃ- আচ্ছা। আপনার ফ্রেন্ড সার্কেল এর কেউ কি এইসব গালাগালি বেশি করতো। সম্ভবত খারাপ ফ্রেন্ডদের সাথে মিশলে এমন অভ্যাস হয়ে যায়।
আরিফঃ- না। আমার ফ্রেন্ড সার্কেল এমন কি আমার পরিবারের কেউ ই এমন ওয়ার্ড মুখেই আনে নি কোনদিন।
ডাক্তারঃ- তাহলে কি কোন মুভি বা প্রিয় একটরস এর কোন চরিত্র ফলো করেছিলেন??
আরিফঃ- না ডাক্তার সাহেব। আচ্ছা ডাক্তার সাহেব একটা কথা বলি??
ডাক্তারঃ- হে বলেন।
আরিফঃ- যে এমন কথা বলে তার সাথে থাকলে বা মিশলে তার চরিত্রেও ত মাঝে মাঝে এমন অভ্যাস হয়ে যায়।
ডাক্তারঃ- হুমম। তা হয়তো হয়ে যায়। একটা প্রবাদ আছে না সঙ্গ গুনে লোহা জলে ভাসে।
আরিফঃ- তাহলে আপনি যে আমার সাথে এমন করে মিশছেন আপনার ও ত এই অভ্যাস টা হয়ে যেতে পারে।
ডাক্তারঃ- না। আসলে আমাকে ত অনেক রোগীর সাথেই মিশতে হয়।
আরিফ ভাবলো ডাক্তার কে একটু খেপিয়ে দেখি। ওর অভ্যাস টা ডাক্তারের ও মগজে ডুকে গেছে কি না।
তাই সে ইচ্ছে করেই খেপাতে শুরু করলো।
ডাক্তার সাহেব আপনি কি এমন আমার চিকিৎসা করলেন যে আমার একটু ও চেঞ্জ হলো না।
ডাক্তারঃ- What do u mean?? (একটু রেগে গিয়ে)
আরিফঃ- আপনি আমার অনেক টাকা নষ্ট করছেন। আসলে আপনি কোন ডাক্তার ই না।।
ডাক্তার সাহেব পুরোদমে রেগে গিয়েছেন।
ডাক্তারঃ- আপনার চরিত্র ই ঠিক না। বলেই বললেন Fuck..(ভীষণ রেগে গিয়ে আস্তে আস্তে কিন্তু ঠিকি তা আরিফের কানে আসলো)।
ডাক্তার সাহেব ভীষণ রেগে গেছেন এখন। আরিফ সাহেব মনে মনে হাসতে হাসতে চেম্বার থেকে চলে গেলেন।
চেম্বারে আরেকজন রোগী গেলেন। হঠাৎ করে রোগীর উপর রেগে গিয়ে চিৎকার করে আবার বলে উঠলেন fuck। ডাক্তার সাহেবের এবারের গালি টা চেম্বারের বাইরে থেকেও শোনা গেল।
দেখে বুঝা যাচ্ছে ডাক্তার সাহেবের অভ্যাস টা ভাল ভাবেই রপ্ত হয়েছে।।
কিছুদিন পরে যখন আরিফ সাহেবের চাকরি চলে গেলে সেই একটা অভ্যাসের জন্যই তখন তাকে এটা প্রবল ভাবে এফেক্ট করলো। ঠিক মত ফাইল রেডি করতে না পাড়ায় বস কিছুক্ষণ বকাঝকা দিয়ে পানিশমেন্ট দিচ্ছিল তখন রেগে-মেগে সেই অকথ্য শ্রাব্য টা মুখ থেকে বের করতেই বস ওরে বরখাস্ত করেন।
আরিফ প্রবলভাবে ভেঙ্গে পরলো এবং নিজের চরিত্রের দোষ টাকে সংশোধন করতে প্রতিজ্ঞা করলো। এতদিন খেয়ে বেঁচে থাকার মত একটা কিছু ছিল কিন্তু এখন তার সেই সম্ভল টুকু ও নাই। সে দিন রাত আয়নার সামনে নিজেকে প্রকাশ করতে লাগলো। কেউ কিছু বললে নিজেকে অনেক কষ্টে নিয়ন্ত্রণ করতে লাগলো। চলতে ফিরতে সব সময় ই নিজের মন ও মাথা কে ঠান্ডা ভাবে নিয়ন্ত্রণ করে মুখ দিয়ে সেই শব্দ টা বের না করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে লাগলেন। তিনি আস্তে আস্তে সবার সাথে মাথা ঠান্ডা করে অনেক্ষণ কথা বলার প্রেক্টিস করলেন।
অনেক দিন পর তিনি আবার ভাইবা এক্সাম দিতে গেলেন। এবং ঠিক টাক সব প্রশ্নের উত্তর দিলেন মাথা ঠান্ডা রেখে। উনার ভাইবা এক্সাম নিয়ে পরীক্ষক খুশি হলেন। কয়েকদিন পর সেই চাকরির এপয়েন্টমেন্ট লেটার দেখে সত্যি উনি চমকে যান।। লেটারে লিখা ছিল ১৫ দিনের ভিতরে উনি চাকরি তে জয়েন্ট করার কথা।।
১০ দিন পর আজ তিনি একটা বড় কোম্পানি তে চাকরি করতে যাচ্ছেন মাসিক ৩০০০০ টাকা বেতনে একটা বড় কোম্পানি তে। নতুন শার্ট,প্যান্ট পড়ে শার্ট ইন করে কোম্পানি তে গেলেন। আজ উনার প্রথম দিন তাই ম্যানেজার সাহেব কোম্পানির অন্য কলিগের সাথে উনার পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন আর পিয়ন কে বললেন সবার জন্য চা,কফির ব্যবস্থা করতে। পিয়ন চা এনে সবাইকে দিচ্ছেন। আরিফ দাঁড়িয়ে ছিল। আরিফ কে পিয়ন চা দেওয়ার সময় পিয়ন বেখেয়ালে চা আরিফের নতুন শার্টে ফেলে দিলো। হঠাৎ করে আরিফ ম্যানেজার আর সব কলিগদের সামনে পিয়ন কে গালি দিয়ে উঠলেন দেখে চলতে পারেন না?? Fuck। এমন ব্যবহার দেখে সবাই আরিফের দিকে হা করে তাকিয়ে আছেন আর আরিফ ও মাথা নিচু করে লজ্জায় দাঁড়িয়ে আছে।
এজন্য তার অবশ্য আর চাকরি যায় নি। ম্যানেজার সাহেব কিছুক্ষণ পর শুধু ডেকে নিয়ে বললেন এটা ভদ্র লোকের অফিস। সব জায়গায় সব কথা বলে চটে যাওয়া যায় না। So b cearful.. আমি মোটেই চাইবো না আপনি নেক্সট টাইম আর এমন ভাষা ব্যবহার করেন।।
......................... সমাপ্ত...................
গল্পঃ- অভ্যাস
লেখকঃ- হাবিব শুভ
২| ২১ শে জুলাই, ২০১৬ দুপুর ২:২৬
হাবিব শুভ বলেছেন: :-)
৩| ২১ শে জুলাই, ২০১৬ দুপুর ২:৫৯
অপরিচিত মানব শুণ্য বলেছেন:
৪| ২১ শে জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৩:১১
হাবিব শুভ বলেছেন: :-)
©somewhere in net ltd.
১|
২১ শে জুলাই, ২০১৬ দুপুর ২:১৬
রাসেল বলেছেন: Thanks for your lesson