![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
রোকসানা বেগম বড় মেয়ের ছবি হাতে নিয়ে ছবি দেখে দেখে কাঁদছেন। আজকে উনার বড় মেয়ে ফারিয়ার বিয়ে। রোকসানা বেগমের মেয়ের বিয়ে এইজন্য উনি কাঁদছেন না। উনার কান্নার কারণ হলো আজকে সেই মেয়ে বিয়ের আসর ছেঁড়ে পালিয়ে গিয়েছে। চারিদিকে লোক পাঠানো হয়েছে সবাই এসে এসে বলছে যে , কেউ ফারিয়া কে খুঁজে পাচ্ছে না। বরের পক্ষরা এখনো আসে নি। কিন্তু ওরা ফোন দিয়ে বলেছে আসার জন্য অনেক আগে রওয়ানা দিয়েছে। আর হয়তো ঘণ্টা খানেকের ভিতরে বরপক্ষরা এসে যাবে। এসে যদি কনে কে না পায় তাহলে মুখে চুন-কালি পড়বে। ঘরে আরেকটা ছোট মেয়ে আছে ওর বিয়ে হবে না ভালো কোন জায়গায়। সবাই বলবে, বড় মেয়ে বিয়ের আসর ছেঁড়ে পালিয়ে গিয়েছে , এই মেয়েও এমন হবে।
রোকসানা বেগম মেয়েকে নিয়ে পিছনের স্মৃতি গুলো ভাবছেন।
ফারিয়ার বয়স যখন পাঁচ বছর তখন উনার ছোট মেয়ে উনার গর্ভে ছিল। প্রসব বেদনায় যখন উনি ছটফট করছিলেন, তখন ফারিয়া ওর বাবা কে বলেছিল মায়ের পেটে কি হয়েছে বাবা,
ওর বাবা বলেছিলেন, মায়ের পেট ব্যথা হয়েছে। এখন হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছি। তারপর রোকসানা বেগমের ছোট মেয়ের জন্ম হলো। ছোট বোন কে দেখে ফারিয়া খুব খুশি হয়েছিল। আর রোকসানা বেগম কে বলেছিল, আচ্ছা মা, পেট ব্যথা হলে, পেটের ভিতর থেকে বাচ্ছা বের হয়??
এ কথা শুনে রোকসানা বেগম আর ফারিয়ার বাবা খুব হেসেছিলেন।
তার কয়েকদিন পর, ফারিয়ার পেটে খুব ব্যথা হয়। কিন্তু পেট ব্যথার পর কোন বাচ্ছা কে না দেখে খুব কান্নাকাটি শুরু করেছিল। তারপর কয়েক বছর পর ওর বাবা সাথে রোকসানা বেগমের ঝগড়া হওয়ায় তিনি ফারিয়া আর ওর ছোট বোন কে নিয়ে মামার বাড়ি চলে আসেন। অনেক কষ্টে মেয়ে দুটোকে বড় করেছেন উনি। আর আজ এই মেয়ে উনার মুখে চুন-কালি দিতে একটুও ভাবলো না।
কিছুক্ষণ পর রোকসানা বেগমের ছোট মেয়ে দৌঁড়ে এসে জানালো, ফারিয়া ফিরে এসেছে।
তিনি হাতের ছবি রেখে ড্রয়িং রুমে গিয়ে দেখলেন ফারিয়া সত্যি সত্যি ফিরে এসেছে। কিন্তু ও একা ফিরে নি। সাথে আরেকজন কে নিয়ে এসেছে। লোকটি এই মুহূর্তে ফারিয়ার পাশে দাঁড়িয়ে আছে। লোকটি হলো ফারিয়ার বাবা। মাথা নিচু করে ফারিয়ার এক পাশে দাঁড়িয়ে আছেন।
ফারিয়া আস্তে আস্তে ওর মায়ের কাছে যায় আর বললো, মা আমি বাবাকে আনতে গিয়েছিলাম। তুমি কি ভাবছো আমি পালিয়ে গিয়েছি বিয়ের আসর থেকে?? মা আমি সে শিক্ষা পাই নি। যার মা-বাবা এত ভাল তাদের মেয়ে এমন খারাপ কাজ কিভাবে করবে মা।
ফারিয়া ওর মা কে বললো, মা আমি কয়েকদিন পর পর ই বাবার সাথে দেখা করতাম। আমি দেখেছি বাবার চোখে মুখে তোমার জন্য কত ভালবাসা। বাবা পরোক্ষ ভাবে তোমার কথা আমার কাছ থেকে জানতে চাইতেন। বাবা কেউ আমি তোমার কথা বলতাম। বাবা মনে করতেন আমি কিছুই বুঝি না।
আর মা তোমাকেউ ত আমি কতদিন দেখেছি একলা রুমে বাবা-আমাদের পুরুনো ছবির এলবাম বের করে কাঁদতে। আজকে সকালেউ দেখেছি বাবার ছবির এলবাম বের করে ছবির সাথে ফিসফিস করে কি যেন কথা বলছো। তাহলে মা এত লজ্জা কিসের?? কেন এত দূরত্ব??
আমার আমার জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ পার্ট তোমাদের আশীর্বাদ ছাড়া শুরু করতে পারবো না। দুজনের উপস্থিত ছাড়া আমি কোনদিন ও সুখি হতে পারবো না।
রোকসানা বেগম আর উনার স্বামী এক রুমের দুই প্রান্তে নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে আছেন। আজ কত বছর পর দুজনের সম্মুখে দেখা। কত অভিমান লুকিয়ে আছে দুজনের মাঝে তা হয়তো তারা নিজেও জানে না।
ফারিয়া বুঝতে পারলো মা-বাবার মাঝে কেউ ই আগে কথা বলতে চাইবে না। তাই দুজনকেই দুই পাশে দাঁড় করিয়ে বলল, ওকে জড়িয়ে ধরতে, যখন ই মা-বাবা ওকে জড়িয়ে ধরছেন তখন ই ও মাঝখান থেকে সরে যায়। ফলে দুজন দুজন কে জড়িয়ে ধরেছেন। ফারিয়া আর ওর ছোট বোন হাসছে। মা-বাবা লজ্জা পেয়ে একটু দূরে সরে গেলেন ঠিকি কিন্তু এতদিনের রাগ, অভিমান চিরতরে দূরে চলে গেলো এই একটুখানি স্পর্শেই। । দীর্ঘ একুশ বছর ওর মা-বাবা সহ ওরা পুরো পরিবার এক সাথে।
বাইরে থেকে বরের গাড়ির হর্ণ শোনা যাচ্ছে। এতদিনের পর মিলনের পর আবার যেন একটা বিচ্ছেদ। একটু পর বড় মেয়ে ফারিয়ার বিয়ে হয়ে যাবে। বরের গাড়ি এসে গেছে। বিদায় দিতে হবে। তবুও যেন এই বিদায়ের মাঝে একটাই সুখ আজ উনার বড় মেয়ের বিয়ে।
এক বছর পর.....
ফারিয়ার পেটে অসহ্য ব্যথা। প্রসব বেদনায় ছটফট করে ফারিয়াকে হাসপাতালে নেওয়া হলো। রোকসানা বেগম ফারিয়ার মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়ার পর ডাক্তার রা ফারিয়া কে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে গেছেন।
কিছুক্ষণ পর ফারিয়ার কোল জুরে এলো ওর সন্তান। ফারিয়ার স্বামী এই খুশিতে মিষ্টি আনতে গিয়েছেন।
রোকসানা বেগম ফারিয়াকে বললেন, কি রে তর মনে আছে সে কথা, তর বোনের জন্ম হবার পর তর পেট ব্যথা হওয়ার পর বাচ্চার জন্য বায়না ধরেছিলি??
ফারিয়াঃ- মা প্লিজ। তখন আমি ছোট ছিলাম তাই এমনটা করেছি। এখন ত আমি সত্যি সত্যি একটা পুচকে সোনামণির মা। আর সোনামণি টার সামনে এসব বলে আমাকে লজ্জা দিও না ত।
তারপর ফারিয়া ওর সন্তান কে কোলে নিল। ওকে কোলে নিয়ে আদর করে ফারিয়া যে সুখ অনুভব করলো তা এর আগে কখনো পায় নি।
৩১ শে অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ১০:০৫
হাবিব শুভ বলেছেন:
২| ৩১ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১:৩৩
কালীদাস বলেছেন: লেখাটা খুব ভাল লাগেনি; বেশি নাটক নাটক টাইপের হয়েছে।
ব্যাপার না, চালিয়ে যান
৩১ শে অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ১০:০৭
হাবিব শুভ বলেছেন: হুমম। এটা গল্প টা একটু নাটকীয় ভাবেই তুলে ধরতে চেয়েছি যাতে মনে একটু রিফ্রেশমেন্ট হয়। তারপরও ধন্যবাদ আপনার ফিডব্যাক দেয়ার জন্য
©somewhere in net ltd.
১|
৩০ শে অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৪:২৯
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: বেশেতো!
একদম ডায়াবেটস মিঠা গপ
+++++++