নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কি বলবো!

হালিমা সাদিয়া

আহা! জীবন কত সুন্দর! আর সে জীবনের খোরাক হচ্ছে লেখালেখি।

হালিমা সাদিয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অসামাজিকতার সাতকাহন!

২২ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ১০:২৩

একটা ইউনিভার্সাল ট্রুথ এর মত ব্যপার আছে, যে নিজে অভদ্র তার অন্যের ভদ্রতা/অভদ্রতা নিয়ে দারুণ মাথা ব্যথা। আমার হয়েছে সেই অবস্থা। আমি নিজে ব্যক্তিগত জীবনে মোটামুটি অসামাজিক একজন মানুষ, এই কারণেই হয়তো অন্যের অসামাজিকতা আমার চোখে লাগে-কানে বাজে-আর হৃদয়ে খটখটায়। :| আমার সকল মাথা ব্যথা অবশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (আমার কাছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বলতে শুধু মাত্র ফেসবুক) মানুষের অসামাজিকতা নিয়ে। এখানে এসে দেখেছি, হায় আল্লাহ! কী বানাইলা! অসামাজিকতায় আমারও আঙ্কেল-আন্টি অনেকে! অবশ্য আমি অন্যের সামাজিকতা নিয়ে এখানে কিছু বলছি না, নিজেরটা নিয়েই বলছি।

"আগে ঘর! তবে তো পর!"



--- এই যেমন কোনো স্ট্যাটাসের কথাই ধরুন না!

আমি নিজেই বহু স্ট্যাটাস দিয়েছি অন্যকে গালি দিয়ে (যদিও কোথাও কারো নাম প্রকাশ করিনি), রাগের মাথায় দিয়েছি। হয়তো সরাসরি কোনো কথা উল্লেখও করিনি কিন্তু যাকে উদ্দেশ্য করে রুপক স্ট্যাটাস দিয়েছি সে হয়ত ঠিকই বুঝতে পেরেছে। স্ট্যাটাসটা দেয়ার পর যথারীতি রাগ ঠান্ডা হয়েছে কিন্তু আমি স্ট্যাটাসও ডিলিট করিনি আর ওই ব্যক্তির কাছে ক্ষমাও চাইনি। বুঝুন এটা কেমন সামাজিকতা আমার!

এরপর হয়তো আমার কোনো ভালো স্ট্যাটাসেই কেউ সুন্দর একটা মন্তব্য করলো, আমি কী করলাম! কোনো পাল্টা মন্তব্য করলাম না! সেটাও মানা যায়, হয়তো আমি সময়ের অভাবে পালটা মন্তব্য সবসময় করতে পারি না, অথবা আসলেই পালটা মন্তব্য করার কিছু নেই। কিন্তু অন্তত ওই মন্তব্যে একটা লাইক তো আমার দেয়াই উচিত! আমি নালায়েক তা ও করি না মাঝে মাঝে! এতে কী হয় জানেন? মন্তব্যকারী ব্যক্তি হয়ত মনের অজান্তেই ঠিক একইভাবে আমাকে ইগনোর করা শুরু করেন, অথবা আন্তরিকতাটা হারিয়ে ফেলেন।



---এরপর ধরুন আমার কোনো ছবির কথা

এখানেও আমি স্ট্যাটাস লাইক-কমেন্ট এর মত একই কাজ করি। পালটা উত্তর তো দেইই না, আবার মন্তব্যে লাইকও দেই না! কিন্তু ঠিকই কয়দিন পরে ভাবি, আরে! আমার নতুন প্রোফাইল পিকচারটা এত সুন্দর! অথচ লাইক এত কম কেনো! অথচ এটা ভাবি না যে আমি সামাজিকতার ধার-ধারিনা, অন্যের কী ঠ্যাকা যে সেধে সামাজিকতা করবে! :-*



---এবার আসি চ্যাটবক্সের কথায়

এই কাজটাই আমি সবচেয়ে বেশি করি। হয়তো চ্যাটবক্সে কারো সাথে আড্ডা দিচ্ছি, হুট করে কোনো কাজ সামনে এসে গেলো। আমি কী করলাম! বিদায় না নিয়েই অফলাইনে চলে গেলাম! বিদায় না নেয়াটাও মানা যায়, কিন্তু পরে সময় হলে তো একবার দুঃখিত বলবো! তা বলারও ফুসরত থাকে না আমার। এই একই ব্যপার ঘটে যখন নেট এর কানেকশন চলে যায়।

আবার অনেক সময় হয় কী আমি অনলাইনে থাকি তখন অনেকে নক করে, আমি তাদের মেসেজ দেখি কিন্তু কোনো কারণে উত্তর দেয়া হয় না বা দিতে ইচ্ছে করে না। তখন আমি মেসেজ যেখানকার টা সেখানে রেখে দেই। অপরপক্ষ যে জেনে যাচ্ছে যে মেসেজটা সিন হয়েছে তা আমার মাথায়ই থাকে না! আরে ভাই আমার কথা বলতে ইচ্ছা করছে না ভালো কথা! বা আমি ব্যস্ত সেটাও ভালো কথা! কিন্তু আমি ইগনোর করছি কেন! আমার তো তখনই বা পরে জানিয়ে দেয়া উচিত যে "দুঃখিত ব্যস্ত আছি/ছিলাম /:)"

এসব আকাজ কুকাজ করার পরও আমি অন্য আরেকদিন কী ভাবি জানেন? আমার বন্ধুরা আর আমাকে আগের মত দাম দেয় না! আমি অনলাইনে থাকি অথচ তারা আমাকে নক করে না! শুধু দরকার হলেই আসে কথা বলতে! :|



---এবার আসি ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠানোর কথায়

সুন্দর-হ্যান্ডসাম ছেলেদের প্রোফাইলের প্রতি আমার একটা আলাদা দুর্বলতা আছে। দেখলেই ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়ে দেই! যথারীতি সেই ছেলে আমাকে চেনে না বলে একসেপ্ট করে না। আমি ভাবি, উহ! কি ঢং! আমাকে ঝুলায়া রাখসে! অথচ আমি যদি ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠানোর সাথে সাথে তাকে একটা সুন্দর মেসেজ লিখে নিজের পরিচয়টা জানিয়ে রাখতাম তাহলে কী এমন হত! বরং তার ফ্রেন্ড লিস্টে ঢোকার সম্ভাবনাটা বেড়ে যেত আর অহেতুক একটা ধোঁয়াটে ভাবও তৈরি হত না!

আর একবার যদি সে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট একসেপ্ট করেও ফেলে, আমি একদম হর-বর করে প্রথম দিনেই তার সব কথা জেনে নেয়ার চেষ্টা করতে থাকি। রাতে কী খেয়েছেন পর্যন্ত চলে যায় আমার জিজ্ঞেস করার পাল্লা!

এটা অবশ্য আমি আমার পুরোনো বন্ধুদেরও জিজ্ঞেস করি, ডিনার করেছিস? কি খেয়েছিস? এই প্রশ্নে ওরা অনেকে বিব্রতও বোধ করে কিন্তু আমি গাধী তা বুঝি না! :-*



---এবার আসি সব মিলিয়ে আমার 'অনলাইন এটিটিউড' এর ব্যপারে

আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসেছিলাম আরো বেশি সামাজিক হতে, বন্ধুত্বের পরিধি বাড়াতে, মানুষের সাথে আরো আন্তরিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে আর সবচেয়ে বড় কথা নিজেকে প্রকাশ করতে। উপরি দেখায় সামাজিক আমি হয়েছি ঠিকই কিন্তু সুক্ষ্ম সামাজিকতার ব্যপারটিকে আমি একদম হেয় করে ফেলেছি, বন্ধুত্ব বাড়াতে গিয়ে নিজেকে একদম হাস্যকর বস্তুতে পরিণত করেছি অনেকসময়। নিজে নিজে ভাবি অনেক সময়, এ কোথায় চলে এসেছি আমি! জুনিয়র কারো সাথে কথা বলার সময় আমার সে কী ভাব! যদি কাউকে বুঝি যে তাকে একটা খোঁচা দেয়া যাবে, অমুক নায়ক-নায়িকা খেলোয়ারকে নিয়ে ট্রল করা যাবে তাহলে একটুও সুযোগ হাতছাড়া করছি না আমি। সামনের মানুষটির কাছে কি আসলেই আমার আন্তরিকতা পৌঁছাচ্ছে? নাকী আমি আরো পিঁছিয়ে যাচ্ছি একটু একটু করে! /:)

তবে আমি প্রতিবারই চেষ্টা করছি নিজেকে বদলানোর। হয়ত কাল আর আমি এমন থাকবো না! কে জানে হয়ত পরশু হবে সেই দিনটি! যেদিন আসলেই আমি সামাজিক হব! ততদিনের জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী। মন থেকে, অন্তর দিয়ে।



(বিঃদ্রঃ অনেকের সাথে এই সামাজিকতা করারও চেষ্টা করেছি কিন্তু তারা ভালোভাবে নেয়নি বরং ফালতু ভেবেছে, তাদের জন্য এটি প্রযোজ্য নয়। এই যাহ! আবারও অসামাজিকতা করে ফেললাম! B-) )

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ১:১৩

মনিরা সুলতানা বলেছেন: অন লাইনে মানে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে অসামাজিক হওয়াই সবচাইতে সেফ ...

২৩ শে মার্চ, ২০১৫ সকাল ৮:০৬

হালিমা সাদিয়া বলেছেন: অপরিচিতদের জন্য বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সেফ আপু। কিন্তু এসব ছোট ছোট ব্যপার পরিচিতদের এবং কাছের মানুষদের অনেক সময়ই দূরে ঠেলে দেয় মনের অজান্তেই :(

ধন্যবাদ আপু! এত্ত ভালো কেন আপনি! :D সবসময় অনুপ্রেরণা :D

২| ২৩ শে মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৫:২৭

দিশেহারা রাজপুত্র বলেছেন: ফেবু

এটা মানবসৃষ্ট এক নয়া মুসিবত। ওমুখো হই না।
আপনার সামাজিক অসামাজিক কথাবার্তা ভাল্লাগল।

২৩ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ৮:৫২

হালিমা সাদিয়া বলেছেন: মাথায় থাকলো আপনার কথাটি, কে জানে! হয়তো একদিন "সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সামাজিকতার সাতকাহন" ও লিখে ফেলবো! :D
সুন্দর মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে :)

৩| ১০ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১:০৪

মহাকাল333 বলেছেন: হালিমা সাদিয়া আপু,দরুন লিখেছেন।লেখাটি পড়ে ভাল লাগলো।

১২ ই এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৩:০১

হালিমা সাদিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই আপনাকে :) :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.