![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার মন জঞ্জাল দিয়ে ভরে গেছে। আজ রাতের মধ্যে আবারও নতুন কিছু জঞ্জাল আসবে, এই জঞ্জাল আসা যাওয়ার প্রক্রিয়া কমপক্ষে এক সপ্তাহ চলবে! এগুলো হচ্ছে পহেলা ফাল্গুণ আর ভালোবাসা দিবসের ফ্রি জঞ্জাল। আমি বসেছি আমার মনের নিউজফিড থেকে এসব জঞ্জাল ঝেটিয়ে দূর করতে। কীভাবে দূর করব! আমি এরকম অবস্থায় পরলে মানুষকে সেই লেভেল এর ঝেড়ে দেই, তাতে অন্যের কিছু হয় না; কিন্তু নিজের মনে হুর হুর করে শান্তি আসে।
এখন আমি একটা নতুন থিওরি পেয়েছি সেটা হচ্ছে পিকে থিওরি, আমার মতে Love is waste of time! আমি আসলেই কাউকে ভালোবাসতে পারি কিনা এটাই প্রশ্ন!
আমার কাছে ভালোবাসা মানেই নোংরামি! এই নোংরামি নিয়েই সৎ (!) স্ট্যাটাসে ভরে যাচ্ছে আমার মন। মেয়েরা কেন শাড়ি পরে, সুন্দর করে সেজে প্রেমিকের সাথে বের হবে! নাউজুবিল্লাহ! কাছের ছেলে বন্ধুটি কেন লাল পাঞ্জাবি পরে মাঞ্জা লেভেলের সাজ দিয়ে তার প্রেমিকার সাথে বাইরে গেল! তারা কেন হাত ধরে হাটলো ফুটপাথ দিয়ে! ছেলেটি কেনো মেয়েটির খোপায় ফুল পড়িয়ে দিল! মেয়েটি কেন ছেলেটিকে মুখে তুলে খাইয়ে দিল! তারা কেন ভালোবাসার মিষ্টি খুনসুটিতে মাঝ-রাস্তায় হো-হো করে হেসে উঠলো! পাবলিক প্লেস না! এইসব করতে রাস্তায় কী! হোটেলে যাও! যেনো তারা পাবলেক প্লেসে বসে শরীরের মজা নিচ্ছে! সেজে বের হলেই ছেলে-মেয়ের সতীত্ব চলে যাচ্ছে! প্রেমিকযুগল যখন আমার জ্বালায় অতিষ্ট হয়ে উঠে চলে যাবে তখন পরবে হৈ হৈ রব! গেল গেল রে! লিটনের ফ্ল্যাটে গেল!
অন্যকে ভালোবাসতে দেখলে আমার গা জ্বলে যায় কারণ আমি ভালোবাসা পাই না, অন্যকে সুন্দর দেখালে আমি মোটেও আনন্দ পাই না, কারণ আমি বাইরে দেখতে যতই সুন্দর হই আমার ভেতরে এখনো একটুখানি অসুন্দর লুকিয়ে আছে।
অথচ এই আমি যখন ভাগ্যগুণে প্রেমিক/প্রেমিকা জুটিয়ে ফেলি তখন বিশেষ দিবসে সে আমার জন্য সুন্দর করে না সাজলে আমার মন খারাপ থাকে, তাকে রিকশায় নিয়ে ঘুরতে না পারলে আমার দিন ভালো যায় না, তার হাতটা একবার ধরতে না পারলে আমার প্রেম মরে যায়। এটাই স্বাভাবিক! আমরা মানুষ, ভালোবাসার মানুষের কাছে থাকতে চাওয়াই আমাদের বৈশিষ্ট্য! নাহলে তো শুধু কুকুর-বিড়াল সম্পর্ক হত!
আরেকটা জঞ্জাল আছে আমার মনে, মেয়ে/ছেলে! তুমি এই দিনে প্রেমিকের/প্রেমিকার সাথে বের হলে, সময় কাটালে! তোমার তো বাবা-মায়ের প্রতি ভালোবাসা নেই! তাদের প্রতি কর্তব্য নেই! আমি তাদের উপদেশ দিতে যাই, যাও যাও! বাবা-মাকে ভালোবাসো! ভাই রে! কত বড় গাধা আমি! মানুষকে শেখাতে যাই মা-বাবা কে কীভাবে ভালবাসতে হবে! কোনদিন ভালোবাসতে হবে!
কিন্তু আমার আমি বলে অন্য কথা! আমার আমি বলে, প্রগতিশীল হও কিন্তু হিপোক্রেট হয়ো না! নিজের মনে ভালোবাসা নেই তাই বলে অন্যের মনের ভালোবাসাকে মারতে মরিয়া হয়ে যেও না। বরং আমার আমি বলে, প্রেমিকটি যখন প্রেমিকার হাত ধরে হাটছে তখন তারা তাদের ব্যক্তিগত মুহুর্তে আছে, আমার যদি ভালো না লাগে, আমি না তাকাই! ভালো লাগলে মুগ্ধ চোখে তাকাই! তারা যখন নিজেরা পাবলিক প্লেসে আছে, কিন্তু তাদের ভালোবাসা উপভোগ করছে- দেই না তাদের ভালোবাসা উপভোগ করতে! কেন তাদেরকে ঠেলে লিটনের ফ্ল্যাটের নোংরা অনুভূতিতে নিয়ে যাচ্ছি! বরং তাদের বলি, বাহ! আপনারা তো জুটি হিসেবে খুব সুন্দর! আপু আপনাকে আজ অনেক সুন্দর লাগছে! ভাইয়া আপনি তো আসর কেড়ে নিচ্ছেন! (আমি নিজে এই কাজটা কালকে কয়েকবার করেছি, আনন্দই লাগে) না বলতে পারলে আমার মুগ্ধতার দৃষ্টিতে ভালোবাসা ছড়াই, মানুষ মুগ্ধতার দৃষ্টি বোঝে, বোঝে নোংরামিরও। সুতরাং আজ ভালোবাসা দিবসে আমি আমার দৃষ্টিতে ভালোবাসাই ছড়াবো, নোংরামি না! স্ট্যাটাসে ভালোবাসা জানাবো, থাপ্পর না। দেখাবো আমার চোখ সুন্দর না হলেও, আমার দৃষ্টি অনেক সুন্দর। আমি দেখতে হয়ত সুন্দর নই, কিন্তু আমার মনে একটুখানিও অসুন্দর নেই। আমার পাশে হয়ত প্রেমিক নেই, কিন্তু আমি প্রেমকে উপভোগ করতে জানি!
আর আসলেই যারা নোংরামি করছে (আমি জানিনা সেই নোংরামির স্ট্যান্ডার্ড কতটুকু এখন!), তাদের নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে ভালোবাসা দিয়ে ভরিয়ে দেই। আমার ভালোবাসার দৃষ্টিতে হয়তো তাদের নোংরামি কেটে যাবে! হয়তো!
দেরিই হয়ে গেলো, কারণ জঞ্জাল ছিল যে মনে! বিদায় করলাম! তাই একটু দেরি করে হলেও সবাইকে ভালোবাসা দিবসের খাঁটি শুভেচ্ছা!
(লেখাটি ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে আমার ফেবু আইডি এবং ব্লগে প্রকাশ করেছিলাম, আবারো প্রকাশ করলাম কারণ পহেলা বৈশাখেও ঠিক এমনই অবস্থা হয়। শুভেচ্ছা সকলকে)
©somewhere in net ltd.
১|
১৪ ই এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ১০:১৪
মনিরা সুলতানা বলেছেন: