![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কিছুদিন ধরেই প্রেম ভালোবাসা নিয়ে এক বান্ধবীর সাথে বিশাল আলাপ হচ্ছে। বান্ধবীর অনুমতি নিয়েই শেয়ার করছি সবার সাথে। একটু বড়, পড়তে বোরিং লাগলে বাদ দিন
আমার বান্ধবীর সমস্যা হচ্ছে সে মাস সাতেক আগে নতুন করে এক ছেলের প্রেমে পড়েছে। প্রথম দর্শনেই প্রেম যাকে বলে! আহা! ছেলেটার মধ্যে কি যেন বিশেষ কিছু আছে! কেমন যেন মায়া মায়া! সমস্যা একটাই, ছেলেটা ওর সদ্য বিদেশ ফেরত কাজিন এবং ওদের ধর্মে কাজিনের সাথে বিয়ে হওয়া একদমই অসম্ভব ব্যপার!
এই অসম্ভব জেনেও আমার বান্ধবী আবেগের বসে সামনে আগাতেই থাকলো। ভাববেন না যেন যে ছেলেটার দোষ ছিলো! ছেলেটাও বিপুল উৎসাহে আমার বান্ধবীকে নিরুৎসাহিত করতো, না না! এ সম্পর্ক কোনদিনই সম্ভব নয়। কিন্তু বান্ধবীর জিদ আর ভালোবাসার শক্তির (!) কাছে ছেলেটা প্রতিদিনই হার মানতে থাকলো। একদিন বলেই বসলো, আমিও তোমাকে বিশেষ ভেবেছিলাম প্রথম দেখাতেই! ভালোবাসি তোমায়! অনেক ভালোবাসি!
ব্যাস আর যায় কোথায়! আমার বান্ধবী আকাশ কুসুম স্বপ্ন দেখা শুরু করে। তবে একটা ব্যপার বলবো, আমার বান্ধবীর মনের জোর অনেক। সে একটা ব্যপার বিশ্বাস করতো, এই অসম্ভবকে জয় করার শক্তি তার আছে। না! সে এই ছেলের জন্য নিজের পরিবার ছাড়বে না! কিন্তু পরিবারের প্রতি তার অসম্ভব ভালোবাসার জোড়ে সে ঠিকই নিজের পরিবারকে সব কিছু মানাতে পারবে। একদিন আবেগের বশে ছেলেটিকে বলেছিলো, আমি তোমার জন্য সারা দুনিয়ার সাথে লড়তে পারি! শুধু বিশ্বাস রাখো আমার উপর! ছেলেটি নিরুত্তর তাকিয়ে ছিলো।
সমস্যা আরো ছিলো, আমার বান্ধবীর খুব ঘুরে বেড়ানোর শখ আর খাওয়ার শখ। আর ওইদিকে শহরে যদি দুইজনকে একসাথে দেখা যায় তবে তো আর রক্ষা নেই! তাই ওরা মাঝে মাঝে দূরের কোন এক রেস্তোরায় দেখা করতো। এভাবে দেখা করতে করতে ছোটখাটো শারীরিক আকর্ষণও তৈরি হলো। আমি বলেছিলাম, তুই বাঁধা দিসনি! ও হেসে বললো, না দোস্ত! ভালোবাসি তো! কেন বাঁধা দেবো! আমিতো নিজেকে বিশেষ কেউ মনে করতাম! পরী পরী লাগতো নিজেকে! ছেলেটাকেও জিজ্ঞেস করেছিলাম, আপনি কেন করলেন! ছেলেটিরও উত্তর, আমি তো ভালোবাসা ছাড়া হাতটাও স্পর্শ করিনি! আমি একটু মুচকি হেসেছিলাম।
সেদিন বান্ধবী হুট করেই বললো, উফফ দোস্ত! ও আর এখন আমার কোন কিছুর রিপ্লাই দেয় না! না ফোন, না মেসেজ! শুধু বার বার ওকে ভুলে যেতে বলে! এই সম্পর্ক নাকি সম্ভব না! ও আমার জন্য কেউকে কষ্ট দিতে পারবেনা! আমি প্রতিদিন ওকে নানান ভাবে সুযোগ দিয়ে যাচ্ছি, বোঝানোর চেষ্টা করছি, কিন্ত ওর একই কথা, আমাকে প্রেশার দিয়ো না! আমি পারবো না! যেটা হবে না, সেটা নিয়ে কেন খামখা বসে থাকবো! অথচ এই ছেলেই একদিন বলেছিলো, ছেড়ে যেতে হবে জানি, কিন্তু মৃত্যু পর্যন্ত ভালোবাসবো তোমাকে! আর এখন বলে, খামাখা! ছেড়ে না হয় দিলাম, কিন্তু স্মৃতিগুলো কীভাবে ভুলবো! একমাত্র আমার বাসা ছাড়া সকল জায়গায় ওর স্মৃতি! এইজন্য বাসা থেকেও বের হই না! বাইরে গেলেই সব মনে পড়ে যায়!
আমি বললাম, ধরে রাখিস না দোস্ত! দুর্বল লোক! মাফ করে দে! আর না পারলে চেষ্টা করতে থাক, সাহস পেলে নিশ্চয়ই আগাবে! এই চেষ্টার কথা বলেই বিরাট ভুলটা করেছিলাম সেদিন! বান্ধবী নানান উপায়ে এরপর চেষ্টা করেই যাচ্ছিলো। আমিই ওকে বলেছিলাম, মানুষ কখনো হাল ছাড়ে না!
এরপর আরেকদিন ফোন দিয়ে বললো, দোস্ত! ওর আরেকটা মেয়ের সাথে সম্পর্ক হয়ে গেসে! এখন?
আমি এবার সব যুক্তি দিয়েই বললাম, মাফ করে দে দোস্ত! দুর্বল মানুষ!ভালোবেসেছিলো, পেয়েওছিলো, কিন্তু ধরে রাখতে পারেনি। এই রকম মানুষ ধরে রাখতে জানেও না। গাধা প্রকৃতির! বাদ দে!
আজ বান্ধবী ফোন দিয়ে বললো, দোস্ত! মাফ করে দিসি! এই ছেলে আমাকে কষ্ট দেয়ার জন্য কোনদিন সরি ফীল করেনি, কিন্তু দুনিয়ার সবাইকে কষ্ট দেয়ার জন্য সরি ফীল করতো! আমি যেন একটা পুতুল ছিলাম, যাকে যখন খুশি বলতো দূরে যাও আর যখন দেখা হতো, বলতো ছেড়ে যেও না! আসলেই দুর্বল লোক! মাফ করে দিসি। ও আমাকে আসলেই ভালোবাসতো, কিন্তু আমি যতটুকু ভালোবাসতাম তার তুলনায় ওর ভালোবাসা এককানাকড়িও ছিল না! যথেষ্ট ভালোবাসা ছিল না ওর মনে। আর কে জানে! ভালোবাসাই হয়তো ছিল না, শুধু মুগ্ধতাই ছিল হয়তো! মাফ করে দিসি দোস্ত! সম্মান করি ওকে আর ওর নতুন পছন্দকেও। তবে দোস্ত! স্মৃতিগুলো ভুলতে অনেক কষ্ট হবে রে! হয়ত কোনদিন ভুলবোও না। কিন্তু দাবি আর রাখবো না দোস্ত! আশাও করবো না। মুচকি হাসবো আর ভাববো, জীবনে একটা অভিজ্ঞতা হয়েছিলো! ভালো ছিল অভিজ্ঞতাটা!
শেষ কিছু কথাঃ
অনেকেই হয়তো ভাবছেন, এই গল্পের মানে কি? ইদানীং সময়ের আত্মহত্যা, ঘর ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া- এইসব খবরগুলো পড়লে বুঝবেন এই গল্পের মানে! আমি ব্যক্তিগতভাবে দুজনকেই চিনি। জানি এরা দুজন দুজনকে অসম্ভব ভালোবেসেছিলো। আবেগ ছিলো, হয়তো কিছু ভুল আর দুর্বল সিদ্ধান্তও ছিল। কিন্তু এরা শেষ পর্যন্ত চরম কোন ভুল পদক্ষেপ কিন্তু নেয়নি! না আত্মহত্যা, না পালিয়ে যাওয়া! ছেলেটা মেয়েটার কাছ থেকে পালিয়ে ছিল কিছুদিন কিন্তু সে তার নিজের সহ্যশক্তির স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী কিন্তু ঠিক সিদ্ধান্তই নিয়ে ফেলেছে! মেয়েটাও ঠিক তা-ই করছে, ভালোবাসার মানুষের সদ্ধান্তকে সম্মান করছে এবং নিজেও সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। সুতরাং, যারা কথায় কথায় বলেন, মরে যাবো, মেরে ফেলবো! তারা একটু ভেবে বলুন প্লিজ! এদের একজন কিন্তু প্রচন্ড মানসিক শক্তি নিয়ে আগাচ্ছিলো, আরেকজনের সেটা ছিল না। এমন হতেই পারে! এটাই তো জীবন! সবার ভালোবাসা সবার জন্য সমান হবে বা প্রকাশের ভঙ্গী এক হবে, সাহস এক হবে- এমন দিব্যি কে দিয়েছে শুনি! ভালোবাসার মানুষকে না পেয়ে মরে যাওয়া, মাতাল হওয়া, হাত কেটে বসে থাকা- এগুলো কোন সমাধানই না! কষ্ট পেয়েছেন?? একটু হাঁক ছেড়ে কাঁদুন এরপর মুচকি হেসে স্মৃতি হাতড়ে ভাবুন, আহা! ভালোবেসেছিলাম! ভালো ছিল সময়টা!
!ধন্যবাদ!
প্রতিদিন ভালোবাসুন, কিন্তু মরে যাবেন না প্লিজ! ভালোবাসার সাথে সাথে মাফ করে দিতেও শিখুন
৩১ শে মে, ২০১৬ সকাল ১১:১৪
হালিমা সাদিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১|
৩০ শে মে, ২০১৬ রাত ১১:২৭
নীল বর্তনী বলেছেন: ভাল লাগল।