নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

উল্টা সাব্বিরের পাল্টা লেখা

সত্য কথা মুখের উপর কইতে ভালবাসি, তাই আমি খারাপ!

সাব্বির ০০৭

আমি মুসলিম,আমি বাঙ্গালী,আমি বাংলাদেশী...আমি গর্বিত!!!

সাব্বির ০০৭ › বিস্তারিত পোস্টঃ

সব চরিত্রই কি কাল্পনিক?

২৯ শে নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:২৯

জেলার সাহেবুদ্দিন জীবনে অনেক ফাঁসির আসামী দেখেছেন, তবে এখন যে আসামীর সামনে তিনি দাড়িয়ে আছেন, তার হাবভাব মোটেই অন্যকোনো আসামীর সাথে মিলছে না। যতবড় খুনিই হোক না কেন, নিজের মৃত্যুর ক্ষণ যত ঘনিয়ে আসতে থাকে, ততই আসামীর সাহসের পারদ নীচে নামতে থাকে। আসন্ন মৃত্যুর কথা চিন্তা করে সে অস্থির হয়ে ওঠে। সাধারণত এসব কয়েদীর শেষ খাবারটা বেশ ভাল হয়। পোলাও, মাংস সহ নানারকম ভাল ভাল পদের খাবারও কেন যেন টানতে পারে না কয়েদীকে। যখন তিনি তাদের শেষ ইচ্ছা জিজ্ঞাসা করেন, অধিকাংশই বোবা দৃষ্টিতে চেয়ে থাকে। সে চাহনিতে থাকে বেঁচে থাকার তীব্র আকুতি। কিন্তু এই ষাটোর্ধ বয়সের কয়েদীর চোখে কেমন যেন একটা আনন্দ আনন্দ ভাব খেলা করছে। একমাস হল এই জেলে আছে সে। নাম ফরিদ আলী। অবসরপ্রাপ্ত সরকারী কর্মকর্তা। সাহেবুদ্দিন একটু দম নিলেন। তারপর সেই চিরাচরিত প্রশ্নটি জিজ্ঞেস করলেন, "আপনার শেষ ইচ্ছা কি?" ফরিদ আলী এবার চোখ তুলে তাকালেন। উজ্জ্বল আর অন্তর্ভেদী সেই দৃষ্টির সামনে জীবনে প্রথমবারের মত কুঁকড়ে গেলেন সাহেবুদ্দিন।



৩ মাস আগে:



মধ্য দুপুর। ঘড়ির কাঁটায় সময় ১২.৩০।দৈনিক বাংলার ব্যস্ত মোড়টি যেন হঠাৎ করেই থমকে গেছে। শ পাঁচেক মানুষের জটলাটি অবাক বিষ্ময়ে তাকিয়ে আছে রাস্তায় বসে থাকা তিনটা যুবকের দিকে। তিনজনের হাতই পিছমোড়া করে বাঁধা। একটু দূরে আহত অবস্থায় গোঙ্গাচ্ছে দুই পুলিশ সদস্য। দু'জনেরই পায়ে গুলি করা হয়েছে। তারা ঐ তিনজনকে বাঁচাতে এসেছিল। ওদের এই অবস্থা দেখে বাকীরা আর কেউই এগিয়ে আসার সাহস করছে না। দুই পুলিশের কাছ থেকেই ওয়াকিটকি কেড়ে নেওয়া হয়েছে। অবশ্য জটলার মধ্যে থাকা জনতার কাছে যে মোবাইল ফোন আছে, তার তো আর বিশ্বাস নেই। তাছাড়া থানাও বেশী দূরে নয়। ঐ যে, পুলিশের গাড়ির সাইরেনও শোনা যাচ্ছে। নাহ্‌, আর দেরী করা ঠিক হবে না। ঝট্‌ করে হাতে থাকা পেট্রোল ক্যানের পেট্রোলগুলো ঢাললেন তিন যুবকের উপরে। জনতা তখনও বিষ্ময়ভরা দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখছে। মুখে স্কচ্‌টেপ বাঁধা থাকায় তিনজনের কেউই চিৎকার করতে পারছে না। পুলিশের গাড়ী চলে এসেছে। তিন চারটা একসাথে। আসুক। আজ কেউ ওদের বাঁচাতে পারবে না। কেউ না। তার ছেলে যখন পুড়ে মরছিল তখন এরা কেউ আসেনি। জ্বলন্ত ম্যাচের কাঠিটা পেট্রোলের সংস্পর্শ পেতেই দাউ দাউ করে জ্বলে উঠল। ভীড় ঠেলে পুলিশ যতক্ষণে ফরিদ আলীকে ধরে ফেলল, ততক্ষণে তিনজনেরই অর্ধেকের বেশী পুড়ে কয়লা হয়ে গেছে। দুই দিক থেকে শক্ত করে ধরে রেখেছে দুইজন পুলিশ, তার মধ্যেই চিৎকার করে বলছে ফরিদ আলী, "দেখ হুমুন্দির পুতেরা, পুড়তে কেমন লাগে দেখ, আমার পোলারে যখন জ্বালাইছিলি, তখন হের কেমন লাগছিল দেখ.....হা হা হা...", হিষ্টিরিয়াগ্রস্থ রোগীর মত হেসে ওঠে ফরিদ আলী।



কেস হিস্ট্রিতে জানা যায়, কয়েকদিন আগে অবরোধের সময় বাসে দেওয়া আগুনে মারা যায় ফরিদ আলীর ছেলে মাসুম। যে তিনজনকে পুড়িয়ে মারা হয়েছে, তাদের মধ্যে একজন ঐ বাসে আগুন দিয়েছিল, বাকী দুইজন দিয়েছিল অন্য দুই বাসে। মারা গিয়েছিল আরও তিনজন। ওরা প্রত্যকেই ছিল মাদকাসক্ত। রাত-দিন নিজের জমানো সব টাকা খরচ করে পুলিশের ইনফর্মারদের টাকা খাইয়ে এই তিনজনের খবর জোগাড় করেছিলেন ফরিদ আলী। তারপর কাজ আছে বলে ডেকে নিয়ে এসে ফেন্সিডিলের মধ্যে ঘুমের ঔষধ মিশিয়ে অজ্ঞান করে বাকী কাজ সেরেছিলেন তিনি। নিজের সব দোষ অবলীলায় আদালতে স্বীকার করেছিলেন ফরিদ আলি, কোনো উকিলও নেননি। বিচারে তার ফাঁসী হয়েছিল।



সাহেবুদ্দিন আবার জিজ্ঞেস করলেন, "আপনার কোনো শেষ ইচ্ছা আছে?"

"আছে, পূরণ করবার পারবেন?"

"সুযোগ থাকলে অবশ্যই করব।"

ফরিদ আলীর দৃষ্টি এবার আরও উজ্জ্বল হয়। বলে ওঠেন, "যারা চেতনা আর গণতন্ত্র ধুইয়া পানি খায়, আর ঘরে বইসা বড় বড় বুলি আওরায়, হেইগুলারে আগুনে জ্বালাইয়া দিবার চাই। কি, পারবেন সুযোগ দিতে?"

সাহেবুদ্দিন কোন কথা বলেন না। অবশ্য বলার মত কিছু খুঁজেও পান না তিনি।







১ সপ্তাহ পর:



জাফর আহমেদ একজন নামকরা টকশো বক্তা। একটি রাজনৈতিক দলের সমর্থনে প্রায়ই বিভিন্ন টকশোতে কথাবাজী বা চাপাবাজী মারতে হয়। ঘটনা যাই হোক না কেন, সেটাকে টেনে নিজের দিকে নিতে তিনি ওস্তাদ। আজ অবশ্য মেজাজ একটু তিরিক্ষি হয়ে আছে। বিপক্ষ দলের এক তরুণ ছোকড়া তাকে নাজেহাল করে ছেড়েছে। তিনি শুধু বলতে গিয়েছিলেন, এরকম হরতাল অবরোধে ওরকম দু'চারটা প্রাণ যাবেই। তাতেই সেদিনের পুঁচকে ছোকড়াটা তাকে একেবারে ধুয়ে দিল! গাড়ীটাও শালা আজকেই নষ্ট হল। এতরাতে কোনো রিকশাও নজরে আসছে না। বাড়ীর দিকে একরকম হাটা শুরু করলেন তিনি। তবে খেয়াল করলেন না, পিছনে ধীরে ধীরে তাকে অনুসরণ করা পেট্রোলবোমা হাতে ষাটোর্ধ বৃদ্ধটিকে।



বি.দ্র.: ইহা একটি নিষ্কর্মা ব্যক্তির উর্বর মষ্তিষ্ক প্রসূত গল্পমাত্র। বাস্তবের সাথে কেউ ইহার মিল খুজিতে গিয়া পেট খারাপ করিলে লেখক দায়ী থাকিবে না!!!

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:৩৯

ইউরো-বাংলা বলেছেন: "যারা চেতনা আর গণতন্ত্র ধুইয়া পানি খায়, আর ঘরে বইসা বড় বড় বুলি আওরায়, হেইগুলারে আগুনে জ্বালাইয়া দিবার চাই। কি, পারবেন সুযোগ দিতে?"

আমরা হগ্গলে এই সুযোগটা চাই, দিতে হবে, দিতে হবে।

২৯ শে নভেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৪

সাব্বির ০০৭ বলেছেন: সুযোগ কেউ দেবে না, দিলে ওদের বিপদ! নিজেদের সুযোগ নিজেদেরই তৈরী করে নিতে হবে!

২| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১০

অলওয়েজ এ্যান্টি গর্ভণমেন্ট বলেছেন: শুরু হয়েছে আমাদের আড়মোড়া ভাঙ্গা।

১/১১ এলো বলে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.