![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি মুসলিম,আমি বাঙ্গালী,আমি বাংলাদেশী...আমি গর্বিত!!!
-কোন টেনশন নাই, আমরাই জিতব!
লোটাস ভাইয়ের কনফিডেন্স লেভেল দেখে মুগ্ধ হয়ে যাই! সদ্য নাইজেরিয়া ফেরত লোটাস ভাই আমাদের পাড়ার স্বঘোষিত ক্রীড়া সংগঠক। উত্তর পাড়ার সাথে ফুটবল খেলার আইডিয়াটা তার মাথা থেকেই বেড়িয়েছে।
-তা আমাদের খেলোয়ার কই, আমি জিজ্ঞেস করি।
- কেন, তুই আছিস, সুজন, বিপ্লব, রাজীব, পারভেজ, রিপন, পুলক সবাই আছে।
ঢোক গিললাম! বলে কি! ক্রিকেটে আমার প্রচুর নামডাক হলেও এই ফুটবলে আমার দক্ষতা সাত বছরের বাচ্চার চাইতেও কম, লজ্জার সাথে স্বীকার করতে হয়। আর উত্তরপাড়ার সাথে আমাদের প্রতিটি খেলাই ইজ্জতের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়! ক্রিকেটে আমরা ওদের রেগুলার বাঁশডলা দিলেও ফুটবল সহজে খেলতে চাই না! কারণ ওদের টিম দেখলে মনে হয়, বিগশো, বাতিস্তা, রক, সিনা রেসলিং বাদ দিয়ে ফুটবল খেলতে নেমেছে। আর আমাদের কোন স্বীকৃত গোলকীপারও নেই।
-বায়োজিদ আছে না। ঐ এবার কীপ করবে!
-কিন্ত ঐ ব্যাটা ওর প্রেমিকার সাথে ডেটিং বাদ দিয়ে আসবে তো? রাজীব প্রশ্ন করে।
চিন্তার বিষয়। সবসময় মেয়েদের পিছনে ঘোরা বায়োজিদকে মেয়ে আর কোটি টাকা, এই দুটার একটা নিতে বলা হলে ব্যাটা মেয়েই নিবে, কোন সন্দেহ নেই।
-সে আমি দেখব। আর এবার নাইজেরিয়া থেকে একটা টোটকা নিয়ে এসেছি। টোটকাটা গোলপোষ্টের পাশে রেখে দিলে আমাদের গোলে কোনভাবেই বল ঢুকবে না!
পেশায় জিয়োলজিস্ট লোটাস ভাইয়ের কথা শুনে কিছুটা অবাক হই। তার মত বিজ্ঞানী মানুষ আবার টোটকায় বিশ্বাস শুরু করল কবে থেকে?
-আরে, নাইজেরিয়াতে একবার এক জঙ্গলে রাতে আটকা পড়েছিলাম। পরে স্হানীয় এক উপজাতির ওঝার ওখানে রাত কাটিয়েছিলাম। ঐ ব্যাটাই এটা দিয়েছে। ওরা তো এটা বিশ্বকাপেও ব্যবহার করে। এটার গুণেই তো ৯০ এর বিশ্বকাপে নাইজেরিয়া অতদূর গিয়েছিল।
-তা পরের বিশ্বকাপগুলোতে কি এটার পাওয়ার ড্যামেজ হয়ে গিয়েছিল, নাকি ওঝা বাবাজী সেলামি না পেয়ে পরের বার ভেজাল মাল সাপ্লাই দিয়েছিল? পারভেজ টিপ্পনী কাটে।
-না বুঝে কথা বলা তোর জন্মের স্বভাব, রেগে ওঠেন লোটাস ভাই। পরের বার গুলোতে বিদেশী কোচ নিয়ে খেলতে গিয়েছিল ওরা। নির্বোধগুলো কুসংস্কার মনে করে ওটা ব্যবহারই করেনি। যাক, তোর অত বুঝে কাজ নেই, কাল ৩ টায় যেন সবগুলোকে মাঠে দেখি।
৩ টা বাজে। লোটাস ভাইয়ের পুরোদিন আকবরিয়া হোটেলে ফ্রী খাওয়ার লোভও টলাতে পারেনি বায়জিদকে। সে ঠিকই প্রেমিকাকে নিয়ে সিনেমা দেখতে চলে গিয়েছে। বাধ্য হয়েই দুনম্বর গোলকীপারকেই মাঠে নামাতে হল আমাদের। খেলা শুরুর পাঁচ মিনিটের মধ্যেই গোল দিয়ে ফেললাম আমরা, অনেকটা খেলার বিপরীতে এবং ওদের অমনোযোগীতার সুযোগে। কিন্ত, ঠেলা বুঝলাম তারপর। গোল খেয়ে তারা পাগলের মত আমাদের এন্ডে আক্রমণ শুরু করল। ওদের দুই সেন্টার ফরোয়ার্ডের একটা হল সিনা, আরেকটা হল বাতিস্তা। মাঝে আবার মিডফিল্ড থেকে বিগশো, রক আর রাইটব্যাক অরটনও উঠে আসতে থাকল। একে তো ফুটবল পারিনা বলে আমাকে লেফটব্যাকে দাড়িয়ে থাকতে বলেছিল লোটাস ভাই, কিন্ত রেসলিং এ আমার বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই, তাই ওদের দেখলেই সসম্মানে রাস্তা ছেড়ে দিচ্ছিলাম আমি। ভাবখানা এমন, যতযাই হোক, গোল তো হবে না, লোটাস ভাইয়ের নাইজেরিয়ান টোটকা আছে না! কিন্ত শেষরক্ষা হল না। ওদের বাতিস্তারুপী ফরোয়ার্ডের শট ঠেকাতে গিয়ে আমাদের গোলকীপার মারাত্নক ভাবে আহত হল। এখন উপায়? শেষমেষ সবাই গিয়ে ধরলাম লোটাস ভাইকে। বললাম,
-ভাই, আপনিই নেমে যান।
-না না, আমি কেন।
-আরে আপনার নাইজেরিয়ান টোটকা আছে না? কিচ্ছু হবে না।
-সমস্যা নেই তো। আমি গোলের পেছনে আছি।
-পেছনে থাকলে হবে না। সামনে দাড়ানোর লোক চাই। আর কেউ নেই, আপনেই ভরসা।
সবাই ধরেবেধে চ্যাংদোলা করে লোটাস ভাইকে বুট জার্সি পড়িয়ে নাঠে নামানো হলো। ওদিকে খেলা শুরুর সাথে সাথে ওদের আক্রমণ গেল আরও বেড়ে। কিন্ত আমরা অবাক হয়ে লক্ষ করলাম লোটাস ভাই অসাধারণ পারফর্মেন্স দিচ্ছেন। অসাধারণ সব ডাইভ দিয়ে গোল বাঁচাচ্ছেন। প্রতিপক্ষ তাদের সব শক্তি দিয়ে আক্রমণ করেও গোল করতে পারছে না। লোটাস ভাই শুধু হাত দিয়ে নয়, বুক, পিঠ, মুখ সব দিয়ে বল ঠেকাচ্ছেন। তার এই পারফর্মেন্স দেখে আমরাও নতুন করে উজ্জীবিত হয়ে খেলা শুরু করলাম। শেষমেষ১-০ গোলে আমরাই জিতলাম। লোটাস ভাই হলেন ম্যান অব দা ম্যাচ।
রাতে লোটাস ভাইয়ের খোজ নিতে গেলাম। গিয়ে দেখি তার অবস্থা শোচনীয়। গায়ে ১০৪ ডিগ্রী জ্বর। নাক ফুলে বেগুন। সারা শরীরের ব্যাথায় কোকাচ্ছেন। আমি বললাম
-লোটাস ভাই, এখন কেমন লাগছে?
-ভাল নারে সাব্বির। আমি শ্যাষ।
-আরে, কি বলেন। আপনিই তো আজকের হিরো। যাই বলেন, আপনার টোটকা কিন্ত দারূন কাজ দিয়েছে।
-আরে ধুর, সব বুজরুকি। ওটা কোন কাজই করেনি।
-সেকি, ওটার গুণেই তো আপনি ওরকম সব দুর্দান্ত সেভ করলেন।
-কিসের সেভ? আমি তো বল দেখে বারবার পালাচ্ছিলাম। কপাল এতই খারাপ, শালা যেদিকেই দৌড়াই না কেন, শালার বল খালি আমার গায়েই এসে লাগে! ওরে বাবারে.... বলে আবার ককিয়ে উঠেন তিনি!!!
আমরা সবাই এর ওর মুখ চাওয়া চাওয়ি করতে থাকি!!!
১৭ ই অক্টোবর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:১৭
সাব্বির ০০৭ বলেছেন: রসগোল্লা থেকে!
২| ০৬ ই জুলাই, ২০১৪ সকাল ১০:৪৩
বটের ফল বলেছেন: ++++++++++++++
১৭ ই অক্টোবর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:১৮
সাব্বির ০০৭ বলেছেন: থ্যাঙ্কু!
©somewhere in net ltd.
১|
০৬ ই জুলাই, ২০১৪ সকাল ১০:৪৩
বটের ফল বলেছেন: হাসতে হাসতে শেষ আমি। এত রস পান কোথায়?