![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
https://www.facebook.com/HaqueIsOne
সময়ের প্রয়োজনে সাধারণভাবে সাময়িক সমাজবিপ্লব হতেই পারে, কিন্তু একটা জাতির সকল ব্যক্তিমানুষকে বিশ্বাস ও চরিত্রে আমূল বদলে দিয়ে ভেতর থেকে নতুন করে গড়ে তুলে জীবন-সমাজ-রাষ্ট্রবিপ্লব সাধন করা দুঃসাধ্য ব্যাপার — রাসূল সা. সেটি সার্থকতার সঙ্গেই করেছেন, বিশ্ববিপ্লবের সূচনা করে গিয়েছেন। আল্লাহর সাহায্যের পাশাপাশি মুখ্য যে কারণটি এর মূলে ক্রিয়মান ছিল, তা হলো রাসূলের বিনম্র স্বভাব, সৃষ্টির প্রতি দয়া ও মানুষের জন্যে মমতা। সূরা আলে-ইমরানের ১৪৯ সংখ্যক আয়াতে বলা হয়েছে:
“অতএব আল্লাহর অনুগ্রহেই তুমি তাদের প্রতি কোমলচিত্ত; যদি রুক্ষভাষী ও কঠোর হতে, তবে তারা তোমাকে ছেড়ে দূরে চলে যেত।”
সূরা তাওবার ১২৮ সংখ্যক আয়াতেও রাসূলের চরিত্র-মাধুর্য, সমবেদনা, শুভকামনা ও দয়াশীলতার উল্লেখ করে বলা হয়েছে:
“তোমাদের মধ্যে এসেছে তোমাদেরই মধ্যকার এমন একজন রাসূল, তোমাদের দুঃখ যার কাছে দুঃসহ। তিনি তোমাদের হিতাকাঙ্ক্ষী, বিশ্বাসীদের প্রতি স্নেহশীল, দয়াময়।”
রাসূলের দয়াদর্শন যথার্থভাবে উপলব্ধির জন্যে তাঁর কথা ও কাজ দুটোই সামনে রাখতে হবে। তাই আমরা কিছু বিশুদ্ধ হাদীস উদ্ধৃত করছি:
জারীর ইবনে আব্দুল্লাহ থেকে, রাসূল বলেছেন: "আমি মুমিনদের খুবই ঘনিষ্ঠ, এমনকি তাদের নিজেদের চেয়েও। অতএব যে ঋণগ্রস্ত অবস্থায় মারা যায় তার ঋণ শোধের দায়িত্ব আমার। আর যদি সে সম্পদ রেখে যায়, তবে তা তার উত্তরাধীকারীদের।" (সহীহ বুখারী-৬৭৩২, সহীহ মুসলিম-২৩১৯।)
জারীর ইবনে আব্দুল্লাহ থেকে, রাসূল বলেছেন: "যে মানুষের প্রতি দয়া করে না, আল্লাহও তার প্রতি দয়া করেন না।" (সহীহ মুসলিম-২৩১৯।)
সাহাবী আমর ইবনে আব্দুল্লাহ থেকে, রাসূল বলেছেন: "যারা অন্যের প্রতি দয়া করে, আল্লাহ তাদের দয়া করেন। যারা পৃথিবীতে আছে তোমরা তাদের প্রতি দয়া করো, তাহলে যিনি আসমানে আছেন তিনিও তোমাদের দয়া করবেন। দয়া হলো আল্লাহর নৈকট্য, যে এতে পৌঁছুতে পারল সে আল্লাহর কাছে পৌঁছে গেল, আর যে তা কেটে ফেলল সে তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করল।" (তিরমিযী-১৯২৪।)
বিশিষ্ট ইহুদি পণ্ডিত আব্দুল্লাহ ইবনে সালামের প্রতি লক্ষ করুন। রাসূল মদীনায় এলে তিনি গিয়ে দেখা করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রথম যে-কথাটি আমি তাঁর মুখ থেকে শুনলাম, তা হলো:
"হে মানবমন্ডলি! সালামের প্রচলন করো, (অভুক্ত) মানুষকে খাবার দাও, আত্মীয়তার সম্পর্ক অটুট রাখো।" (তিরমিযী-২৫৮৫।)
আসলে সৃষ্টির প্রতি দয়া আর মানুষের প্রতি ভালোবাসা ইসলামের মূল শক্তি। রাসূল দুর্গত মানুষের সাহায্যকে সবচেয়ে বড় ইবাদত বলেছেন। বলেছেন, যে প্রতিবেশীকে অভুক্ত রেখে তৃপ্তির সঙ্গে খায়, সে মুসলমান নয়। তিনি আর্তজনের সেবা, অসুস্থকে দেখতে যাওয়া, বিপন্নকে উদ্ধার করা, ঋণগ্রস্তকে সাহায্য করা, অভাবী ও ইয়াতীমকে আশ্রয় দেওয়া, প্রতিকারের শক্তি থাকা সত্ত্বেও শত্রুকে ক্ষমা করা ইত্যাদি মানবিক চরিত্রের পূর্ণতা সাধন করে গিয়েছেন। যে-নবী মানুষের দুঃখ সইতে পারতেন না, আমরা তাঁরই অনুসারীরা আজ নির্দয় ও আত্মকেন্দ্রিক হয়ে পড়েছি। মানুষের প্রতি দয়া ও ভালোবাসা ছাড়া যে আল্লাহকে পাওয়া যায় না, এটি ভুলে যাচ্ছি।
মানবতার দৃষ্টান্ত দেখুন: আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ মসজিদে নববীতে ইতিকাফ করছিলেন। এক ব্যক্তি তাঁর সঙ্গে দেখা করতে এল। তাকে বিমর্ষ দেখাচ্ছিল। জিজ্ঞেস করে জানলেন, সে ঋণগ্রস্ত। তারিখ পেরিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু শোধ করতে পারছে না। আব্দুল্লাহ দাঁড়িয়ে গেলেন, তৎক্ষণাৎ জুতো পরে বেরিয়ে এলেন মসজিদ থেকে। আগন্তুক তখন বাধা দিয়ে বলছিলেন, এ কী! আপনি না ইতিকাফে আছেন। জবাবে তিনি আঙুল তুলে রাসূলের কবর দেখিয়ে বললেন, ওই ওখানে যিনি শুয়ে আছেন, আমি তাঁকে বলতে শুনেছি— "যে-কেউ তার ভাইয়ের সাহায্যের জন্যে পা বাড়ায়, তাঁকে দশ বছর ইতিকাফের সাওয়াব লিখে দেওয়া হয়।"
এই হলো ইসলামের মানবপ্রেম। এমনই ছিল ইসলামের নবী আর তাঁর সঙ্গীদের দয়াদর্শন। এই ঘটনার আয়নার সামনে আমরা যদি নিজেদেরকে, এমনকি আজকের মাওলানা, পীর, তসবি-জপা ধার্মিকদের দাঁড় করিয়ে দেই, তাহলে কি লজ্জায় মাথা নুয়ে আসবে না?
১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৫:৩৬
আবদুল হক বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ, ভাই!
©somewhere in net ltd.
১|
১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৫:২৪
বেলা শেষে বলেছেন: আবদুল হক, Brother Assalamualikum, you had writen a very good article, good Quality, good description, with super quatation.Please write more more. Respect to you for good selection.
তাদের পালনকর্তার কাছে রয়েছে তাদের প্রতিদান চিরকাল বসবাসের জান্নাত, যার তলদেশে নির্ঝরিণী প্রবাহিত। তারা সেখানে থাকবে অনন্তকাল। আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট এবং তারা আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট। এটা তার জন্যে, যে তার পালনকর্তাকে ভয় কর।