![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জীবনে ভাল কিছু করায় আমার উদ্দ্যেশ। মানুষকে উপকার করতে ভাল লাগে, উপকার করাার মধ্যে আনন্দ পাওয়া যায়। এমন উপকার করব না যা নিজের বা অন্যের ক্ষতি হয়
দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা-লম্ব কোনো গভীর জীবনসত্য লোকপ্রিয় কোনো সংক্ষিপ্ত উক্তির মধ্যে সংহত হয়ে প্রকাশিত হলে তাকে প্রবাদ বলা হয়।
বাংলায় প্রবাদ ও প্রবচন প্রায় সমার্থক শব্দ হলেও এ দুয়ের মধ্যে সূক্ষ্ম পার্থক্য লক্ষ করা যায়। প্রবাদ অজ্ঞাত পরিচয় সাধারন মানুষের লোক পরম্পরাগত সৃষ্টি। কবি, সাহিত্যিক ও চিন্তাশীল বিজ্ঞজনই প্রবচনের স্রষ্টা। তাদের পরিচয় আমাদের অজানা নয়। এককথায় প্রবাদ লোক-অভিজ্ঞতার ফসল, প্রবচন ব্যক্তিগত মনীষীর সৃষ্টি। প্রবচনের আধুনিক প্রতিশব্দ হচ্ছে—সুভাষন বা সুভাষিত। প্রবচন বা সুভাষিতর কিছু নিদশন:
ক) চোর না শুনে ধর্মের কাহিনী।(কাশীরাম দাম)
খ) জমাতা ভাগিনা যম আপনার নয়।(মুকুন্দরাম)
গ) কড়িতে বাঘের দুধ মিলে।(ভারত চন্দ্য)
ঘ) বিনে স্বদেশী ভাষা মিটে কি আমা।(রামনিধি গুপ্ত)
ঙ) এত ভঙ্গ ভঙ্গদেশ তবু রঙ্গে ভরা। (ঈশ্বর গুপ্ত)
চ) বন্যেরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে।(সঞ্জীবচন্দ্র)
ছ) যৌবনে অন্যায় ব্যয়ে বয়সে কাঙালি। (মধুসূদন)
ভাষায় ব্যবহার ক্ষেএে প্রবাদ ও প্রবচনগুলোকে আলাদা করে দেখা হয় না। এ জন্যে প্রবাদ ও প্রবচন দুটিকেই অভিন্ন অর্থে প্রকাশ করার জন্য প্রবাদ- প্রবচন কথাটি ব্যবহৃত হয়। তবে মনে রাখা দরকার, যেসব প্রবচন বা সুভাষিত উক্তি পরিসরে কিছুটা দীর্ঘ সেগুলো প্রবাদের মতো সুপ্রচলিত নয়।
প্রবাদ- প্রবচন:
১/ আপন হাত জগন্নাথ
পরের হাত এটো পাত"
ব্যাখ্যাঃ শুধু নিজের জিনিস কে ভালো জ্ঞান করা, এবং অন্যের সম পর্যায়ের জিনিস কে ঘৃনা করার প্রবনতা বোঝাতে এই প্রবাদ বলা হয়।
২/ আপনি গেলে ঘোল পায়না
চাকর কে পাঠায় দুধের তরে"
ব্যাখ্যাঃ এক লোক আরেক লোকের কাছে অনেক অনুরোধ করেও সামান্য ঘোল (ছানা কেটে ফেলার পর দুধের জলীয় অংশ বাঁ মাঠা) আদায় করতে পারলোনা। সেখানে কিছু পরে সে তার চাকর কে পাঠালো একই লোকের কাছ থেকে দুধ চেয়ে আনতে। প্রথম অভিজ্ঞতা দিয়েই তার বোঝা উচিত ছিলো যে এ ক্ষেত্রে কার্যোদ্ধার বৃথা। কেউ কার্যোদ্ধারের যদি এমন কোন প্রচেষ্টা চালায় যা আগে থেকেই অনুমান করা যায় যে ব্যর্থ হবে, তখন তার প্রচেষ্টা কে ব্যংগ করে এই প্রবাদ বলা হয়।
৩/ আড়াই কড়ার কাসুন্দি
হাজার কাকের গোল"
ব্যাখ্যাঃ এক জায়গায় সামান্য একটু কাসুন্দি আছে, তা খাওয়ার জন্য অসংখ্য কাক ভীর জমিয়েছে। কোথাও যদি যোগানের তুলনায়, দাবীদারের সংখ্যা বেশী থাকে, সেই পরিস্থিতি বর্ণনা করতে এই প্রবাদ বলা হয়।
৪/ আপন পাঁজি পরকে দিয়ে
দৈবজ্ঞ বেড়ায় পথে পথে"
ব্যাখ্যাঃ জ্যোতিষীর গননা করার জন্য পঞ্জিকার প্রয়োজন হয়। এক জ্যোতিষী নিজের পঞ্জিকা অন্যকে দিয়ে এখন আর গণনা করতে পারছেনা। ফলে তার রুজি-রোজগার বন্ধ হয়ে সে পথে পথে ঘুরে বেড়াচ্ছে। অন্যের উপকার করতে গিয়ে কেউ নিজের ক্ষতি করে ফেললে তার অবস্থা বর্ণনা করতে এই প্রবাদ বলা হয়।
৫/ আগে না বুঝিলে বাছা যৌবনের ভরে
পশ্চাতে কাঁদিতে হবে নয়নের ঝোরে"
ব্যাখ্যাঃ সময় থাকতে সাবধান হওয়ার পরামর্শ। কেননা ভুল পথে বেশী দূর চলে গেলে আফসোস করে কান্না করেও কোন লাভ হয়না।
৬/ আগে আপন সামাল কর
পরে গিয়ে পরকে ধর"
ব্যাখ্যাঃ কোন কিছু ঘটলে আমরা সাধারণত তার দায়ভার অন্যের উপর বর্তাতে চেষ্টা করি। কিন্তু সেক্ষেত্রে হয়তো আমাদের নিজেদের দোষ ও কম ছিলোনা। নিজের দোষটা না জানলে কিন্তু পরবর্তীতে নিজের ভুলের জন্য একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে। তাই আগে নিজের দোষ খুজে বের করার উপদেশ দিয়ে এই প্রবাদ বলা হয়।
৭/ অসারের তর্জন গর্জন সার"
ব্যাখ্যাঃ ক্ষমতাহীন ব্যক্তি সাধারণত আস্ফালন বেশী করে। এটা আসলে তার অনেক ক্ষমতা আছে এটা বুঝানোর ই একটা প্রচেষ্টা মাত্র।
৮/ আপন বুদ্ধি ছিলো ভালো,
পর বুদ্ধিতে পাগল হলো"
ব্যাখ্যাঃ নিজের বুদ্ধিতে কাজ না করে, পরের বুদ্ধির উপর ভরসা করে সে অনুযায়ী কাজ করে বিপদে পরে আফসোস করে এই প্রবাদ বলা হয়।
৯/ "দৌড় ছাড়া হাডা নাই
বাইত গা দ্যাহে কাম নাই"
ব্যাখ্যাঃ এক লোক বাড়িতে যাচ্ছে হাটার বদলে দৌড়ে দৌড়ে যেন তার অনেক কাজ, কিন্তু বাসায় পৌছে দেখলো বাসায় কাজ নেই। কোন কাজ না থাকলেও কেউ অযথা কাজের জন্য তোরজোর দেখালে এই প্রবাদ বলা হয়।
১০/ ইজ্জত যায়না ধুলে
স্বভাব যায় না মলে"
ব্যাখ্যাঃ মানী লোকের ইজ্জত সহজে নষ্ট হয়না। সামান্য কালিমা তার সারাজীবনের অর্জন লোকের চোখে নষ্ট করে দেয়না। ইজ্জতদারের ইজ্জত নষ্ট হওয়া যেমন কঠিন, খারাপ লোকের স্বভাব পরিবর্তন হওয়াও তেমন কঠিন। তাই ব্যংগ করে বলা হয় যে মরলেও তাদের স্বভাব যায় না। এই দুটি চিরন্তন সত্যই এক প্রবাদে বর্ণিত হয়েছে।
১১/ "চুরি বিদ্যে বড় বিদ্যে
যদি না পরো ধরা"
ব্যাখ্যাঃ একটু হাস্যরস দিয়ে চুরি করার পরিণাম এর কথা স্মরণ করিয়ে চুরি করতে অনুতসাহিত করা হচ্ছে। একটি উপদেশ মূলক প্রবাদ।
১২/ কাচায় না নোয়ালে বাশ
পাকলে করে ট্যাশ ট্যাশ"
ব্যাখ্যাঃ বাশকে কাচা অবস্থাতেই বাকানো যায়। পেকে গেলে তা শক্ত হয়ে যায়, বাকাতে চাইলে ঠাস করে সোজা হয়ে যায়। তেমন ভাবে সঠিক সময়ে বদঅভ্যাসের লাগাম টেনে না ধরলে পরে তা পরিবর্তন করা যায় না। তাই যে কোন কিছুই নিয়ন্ত্রন করতে চাইলে প্রাথমিক অবস্থাতেই করা উচিত তা বোঝাতে এই প্রবাদ বলা হয়।
১৩/ পোলা হওয়ার খবর নাই
হাজমের লগে দোস্তি"
গাছে কাঠাল, গোফে তেল" এর সমতূল্য একটি প্রবাদ।
ব্যাখ্যাঃ এক লোকের এখনো ছেলে হয়েনি, কিন্তু হলে তার খতনা করাতে হবে ভেবে এখন থেকেই সে হাজম (সুন্নতে খতনা অথবা মুসলমানি করাবার পেশাদার লোক) এর সাথে বন্ধুত্ব করে রাখছে। কোন কাজের জন্য অতি আগাম প্রস্তুতি নিলে এই প্রবাদ বলা হয়।
১৪/ খালি দুয়া করলে
পুয়া (ছেলে) অয় (হয়) না"
ব্যাখ্যাঃ কার্যোদ্ধারে শুধু দোয়া নয়, কর্ম তৎপরতা প্রয়োজন।
১৫/ অস্থানে তুলসী,
অপাত্রে রূপসী"
"বানরের গলায় মুক্তোর মালা" এর সমতূল্য একটি প্রবাদ।
ব্যাখ্যাঃ তুলসীগাছ হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জন্য পবিত্র বস্তু। এটি কোন অপবিত্র জায়গায় থাকলে তা মানানসই নয়। তেমনি কোন সুন্দরী নারীর অযোগ্য/অসুন্দর বরের সাথে বিয়ে হলে তা মানানসই নয়। কোন সুন্দর/মূল্যবান বস্তু তার সঙ্গে মানানসই নয় এমন স্থানে থাকলে এই প্রবাদ বলা হয়।
১৬/ উপকারী গাছের ছাল থাকেনা"
ব্যাখ্যাঃ যে গাছের ওষধি গুন থাকে, সবাই তার বাকল নিয়ে যায় খাওয়ার জন্য। ফলে গাছ তার সৌন্দর্য্য হারায়। এখন যদি কেউ তার অসুন্দর রূপ দেখে ভাবে যে সে কাজের না, তাহলে তা ভুল।বরঞ্চ দেখা যায় যে সাধারণত অসুন্দর বস্তু গুলোই বেশী কাজের হয়। তাই, কোন কিছুকে বাহ্যিক রূপ দেখে বিচার করতে গেলে এই প্রবাদ বলা হয়।
১৭/ উনো ভাতে দুনো বল,
অধিক ভাতে রসাতল"
একটি স্বাস্থ্যসংক্রান্ত প্রবাদ
"লাভের গুড় পিপড়ায় খায়"
ব্যাখ্যাঃ এক লোক অল্প কিছু অর্থপ্রাপ্তি হয়ে গুড় কিনে আনলো। কিন্তু তার আর তা খাওয়ার ভাগ্য হলোনা, পিপড়াই তা খেয়ে ফেললো। আসলে কোন ব্যবসায় সাম্ন্য লাভ হলে তা দিয়ে আর নতুন কোন বড় কাজ করা যায়না, অল্প লাভ এদিক সেদিক ই নষ্ট হয়ে যায়। তাই কেউ লাভ করে তা ভোগ করতে না পারলে এই প্রবাদ বলা হয়।
১৮/ "ঝরে বক মরে,
ফকিরের কেরামতি বাড়ে"
ব্যাখ্যাঃ এক জায়গায় ঝরে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে একটা বক মারা যায়। ওই একই সময় একজন ফকির বক মারার জন্য লোক দেখানো মন্ত্র পড়ছিল। ফলে, বক ঝরে মারা গেলেও তা ফকিরের কেরামতিতে মারা গিয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়। কাকতলীয় ভাবে কেউ কোন কাজের কৃতিত্ব পেলে এই প্রবাদ বলা হয়।
১৯/ ভাইয়ের শত্রু ভাই,
মাছের শত্রু ছাই"
ব্যাখ্যাঃ ভাইয়ের দ্বারা কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হলে আফসোস প্রকাশ করতে এই প্রবাদ বলা হয়।
২০/ হাতি ঘোড়া গেল তল,
মশা বলে কত জল
ব্যাখ্যাঃ এক স্থানে অনেক পানি ছিলো। এতটা পানি যা হাতির পক্ষেও পা্র হওয়া সম্ভব ছিলোনা। তখন মশা সে পার হতে পারবে এমনটা বুঝাতে অবজ্ঞা করে জিজ্ঞেস করলো যে এখানে আর কত পানিই আছে যে পার হওয়া যাবেন!!
কোন কাজ উদ্ধারে সবল যেখানে ব্যর্থ হয়েছে সেখানে দূর্বল বাহাদুরি করে প্রচেষ্টা দেখাতে গেলে তাকে ব্যাঙ্গ করে এই প্রবাদ বলা হয়।
২১/ নিজের পোদে ন মন গু,
আমারে বলে তোর খান ধু"
ব্যাখ্যাঃ একজনের নিজের পশ্চাতদেশে ময়লা থাকা সত্ত্বেও অন্যকে উপদেশ দিচ্ছে তার টা পরিষ্কার করার জন্য। অথচ নিজের দিকে তাকিয়ে দেখছেনা। কেউ যদি নিজের ত্রুটির দিকে ভ্রুক্ষেপ না করে, একই ত্রুটি থাকার জন্য অন্যকে তিরষ্কার করে, তখন এই প্রবাদ বলা হয়।
২২/ আপন বোন ভাত পায়না
শালীর তরে মন্ডা"
ব্যাখ্যাঃ এক লোকের বোন গরীব, ভাত খাওয়ার পয়সা নেই। কিন্তু বোনকে সহায়তা না করে সে স্ত্রীর বোনের জন্য মন্ডা (এক ধরণের মিষ্টি) কিনছে)...যখন কোন ব্যাপারে যে ন্যায্য দাবীদার তাকে উপেক্ষা করে বাইরের কাউকে সাহায্য করা হয়, তখন তিরষ্কার করে এই প্রবাদ বলা হয়।
২৩/ খাচ্ছিল তাতি তাত বুনে
কাল হল তার এড়ে গরু কিনে"
ব্যাখ্যাঃ এক তাতি তার নিজের পেশায় ভালোই রোজগার করছিলো। কি মনে করে সে, গরু কিনে কৃষকের কাজ শুরু করলো। অভিজ্ঞতার অভাবে ঠিকমত উতপাদন করতে না পেরে ক্ষতির সম্মুখীন হলো। আসলে যে যে পেশায় অভিজ্ঞ তাতেই সে ভালো করে। অন্যের কথায়/ বেশী লাভের আশায় কেউ পেশা বদল করে লোকসানের ভাগীদার হলে, তার অবস্থা বুঝাতে এই প্রবাদ ব্যবহৃত হয়।
২৪/ কাজের বেলায় কাজী
কাজ ফুরালে পাজী"
ব্যাখ্যাঃ প্রয়োজনের সময় কাউকে তোষামোদ করা আর প্রয়োজন শেষ হলে তাকে ভুলে যাওয়া।
২৫/ অলক্ষীর নিদ্রা বেশী
কাঙ্গালের ক্ষুদা বেশী"
একা ঘরের বউ, খেতে বড় সুখ
মারতে এলে ধরতে নাই, তাতে বড় দুখ"
ব্যাখ্যাঃ অনেক মেয়েই সবার সঙ্গে সব সুযোগ-সুবিধা ভাগাভাগি করতে হবে বিধায় যৌথ পরিবারে শ্বশুর-শাশুরি-দেবর-ননদের সাথে থাকতে চায়না। একক পরিবারে গিয়ে তারা খেয়ে পরে আনন্দেই থাকে। কিন্তু দাম্পত্য কলহ যখন বাধে তখন মিটমাট করিয়ে দেয়ার মত কোন মুরব্বি থাকেনা। একক পরিবারের কুফল বর্ণনা করতে এই প্রবাদ ব্যবহৃত হয়।
২৬/ অভ্যাস দোষ না ছাড়ে চোরে,
শূণ্য ভিটায় মাটি খোড়ে"
ব্যাখ্যাঃ একজন চোর, চুরি করায় এতই অভ্যস্ত যে না করলে ভালো লাগেনা। চুরি করার সুযোগ না থাকলে দরকার হলে পরিত্যক্ত বাড়ি (যেখানে চুরি করার কিছুই নেই) গিয়ে হলেও চুরি করা অনুশীলন করে। কোন মানুষ যখন অভ্যাসের বশবর্তী হয়ে কোন কাজ করে তখন তার অবস্থা বর্ণনা করতে এই প্রবাদ ব্যবহৃত হয়।
২৭/ এক গাঁয়ের কুকুর
আর গাঁয়ের ঠাকুর
ব্যাখ্যাঃ কেউ স্থানান্তর করে নিজ পরিচয় লুকিয়ে সাধু সেজে বসলে এই প্রবাদ বলা হয়।
২৮/ গোয়ায় নাই ছাল চামড়া
খোদার নামে দেয় সাত দামড়া"
ব্যাখ্যাঃ সামর্থ্যের বাইরে গিয়ে লোক দেখানো পর্যায়ের কোরবানি দেওয়া
২৯/ এত সুখ যদি কপালে
তবে কেন তোর কাঁথা বগলে
ব্যাখ্যাঃ নিজের অবস্থা বাড়িয়ে বর্ণনাকারীকে উপহাস
৩০/ এক মুখে তিন কথা,
শুনে লাগে মনে ব্যথা
ব্যাখ্যাঃ কথার হেরফের কারীর উদ্দেশ্যে বচন
৩১/ চৈতের গীত বৈশাখে গায়
তারে পুছে কোন হালায়
ব্যাখ্যাঃ যথা সময়ে কথা না বললে পরে বললে কোন লাভ নাই।
৩২/ কথায় কথা বাড়ে, ক্রোধে হয় ঝড়,
কথা না বাড়িয়ে সখি যাও তবে ঘর
ব্যাখ্যাঃ কথা না বাড়ানোর উপদেশ
৩৩/ যে বনে যাই
সে ফল খাই।
ব্যাখ্যাঃ বুদ্ধিমান ব্যক্তি পরিবেশের সাথে সহজে খাপ খাইয়ে চলে।
৩৪/ জাত রাখ্যা গাল
ঝি রাখ্যা মার
ব্যাখ্যাঃ কাউকে গালি দিলেও চরম ধরনের দিতে নেই, কাজের লোক কে মারলেও এমন মার দিতে নেই যাতে সে কাজ ছেড়ে চলে যায়। শাসন করার সময় সীমার মধ্যে শাসন করার উপদেশ দিয়ে, এই প্রবাদ বলা হয়।
৩৫/ যার দউলতে রামের মা
তারে তুমি চেননা।
ব্যাখ্যাঃ যার দ্বারা কার্য সম্পন্ন হয় তাঁকে মূল্যায়ন না করা।
৩৬/ শুয়োর বড় হলেও হাতি হয়না।
ব্যাখ্যাঃ আপন প্রকৃতিকে অতিক্রম করার সাধ্য কারো নেই।
৩৭/ কাউয়ায় হামলায় (লুকিয়ে) মনে করে
দুইন্যার (দুনিয়ার) কেউ দ্যাহে নাই
~ ঢাকা
ব্যাখ্যাঃ কাক কোন কিছু চুরি করে চোখ বন্ধ করে লুকায়। সে মনে করে যে, সে যেমন লুকানোর জায়গাটা দেখেনি, তেমনি অন্য কেউ ও লুকানোর জায়গাটা দেখেনি, ফলে তার লুকানো জিনিসটা অন্য কেউ নিতে পারবে না। বোকা লোক অনেক সময় অভিজ্ঞ কে ফাকি দিতে পেরেছে মনে করে মিথ্যা আত্মতৃপ্তি লাভ করলে, তাকে উদ্দেশ্য করে এই প্রবাদ বলা হয়।
৩৮/ আষাঢ়ে পনের শ্রাবণে পুরো
ধান লাগাও যত পারো।
ব্যাখ্যাঃ আষাঢ় মাসের ১৫তারিখ থেকে শ্রাবণ মাসের শেষ দিন পর্যন্ত ধান লাগানোর উপযুক্ত সময়।
৩৯/ পটল বুনলে ফাগুনে
ফলন বাড়ে দ্বিগুণে।
ব্যাখ্যাঃ ফালগুন মাসে পটল চাড়া বুনলে ভাল ফলন পাওয়া যায়।
৪০/ শোনরে বাপু চাষার পো
সুপারী বাগে মান্দার রো।
মান্দার পাতা পচলে গোড়ায়
ফড়ফড়াইয়া ফল বাড়ায়।
ব্যাখ্যাঃ মান্দর গাছে প্রচুর পাতা হয় এবং একটা নিদৃষ্ট সময় পর সেই পাতা ঝরে পরে। সুপারী বাগানে মান্দর গাছ লাগালে তার পাতা পচে ভালো জৈবসার হয়, এর ফলে সুপারি ফলন ভালো হয়।
৪১/ গাছ-গাছালি ঘন রোবে না
গাছ হবে তাতে ফল হবে না।
ব্যাখ্যাঃ ঘন করে গাছ লাগালে সেখান থেকে আশানুরুপ ফলন হয় না। তাই একটু ফাঁকা ফাঁকা করে গাছ লাগাতে হয়।
৪২/ সুপারীতে গোবর, বাশে মাটি
অফলা নারিকেল শিকর কাটি।
ব্যাখ্যাঃ সুপারী গাছের গোড়ায় গোবর (জৈব সার) আর বাশের গোড়ায় মাটি বেশী থাকলে তা ফলনের জন্য ভালো। আর ডাব বা নারকেল গাছে ডাব না হলে সেই গাছ কেটে ফেলাই ভালো।
৪৩/কাম নাই কুত্তার আইলে আইলে দৌড়।
ব্যাখ্যাঃ এর মানে হল, যার কাজ না থাকে সে ফালতু কাজ বেশী করে।
৪৪/ মাইয়্যার নাম রাম বালা
কান্দে আর বান্দে ছালা ।
ব্যাখ্যাঃ ঘটনা হল রাম বালা গেসে বাপের বাড়ি ।তারপর বাপের বাড়ি থেকে যাবার দিন একদিকে কান্দে আর এক দিকে বাপের বাড়ির তত্ত্ব , জিনিস পত্র নেবার জন্য ছালা বাঁধে । মানে একটু কটাক্ষ করে বলা হইসে আর কি !
৪৪/ মাইয়্যা এক যায় খাইয়া
আরেক যায় লইয়্যা
আবার থাকে পথের দিকে চাইয়্যা ।:-*
ব্যাখ্যাঃ মানে এটাও বাপের বাড়ি সংক্রান্ত ।মেয়ে খেয়ে যায় , নিয়ে যায় আবার বাপের বাড়ি থেকে কি পাঠানো হবে তার আশায় চেয়ে থাকে (হ কৈসে) / ।এখানেও কটাক্ষ করে বলা হয়েছে ।
আগের দিনে মেয়েরা বাপের বাড়ি আসত হয়ত দিনের পর দিন অপেক্ষার পর , স্বামী , শ্বশুর বাড়ির সবার মর্জি হলে । দীর্ঘ দিন পর বাপের বাড়ি এসে দেখত তার লাগানো গাছ টা হয়ত মরে গেসে , গরু টা হয়ত নেই ।তারপর যাওয়ার সময় , মায়ের হাতের বাপের বাড়ির সব ভাল খাবার দাবার এসব দিয়ে দেয়া হত । আবার কবে আসবে ! এই নিয়ে ও প্রচলিত আছে সমাজে এমন বাঁকা কথা
৪৫/ পোলারে তুতিবুতি
মাইয়্যারে লাই
তার চৌদ্দ গুষ্ঠির নাই
নরকে ঠাই ।
ব্যাখ্যাঃ যদি ছেলে কে অতি আহ্লাদ দেন , আর মেয়েকে প্রশ্রয় , তা হলে ছেলে মেয়ে গোল্লায় যাবে আর জীবন অতিষ্ঠ হয়ে যাবে ।
৪৬/ ছোট কালে সোনামুখ
বয়সের কালে আয়না
বুড়া কালে বান্দরীমুখ
কেউর দিকে কেউ চায় না ।
ব্যাখ্যাঃ বয়সের সাথে সাথে মেয়েদের রুপের যে পরিবর্তন হয় , সেটাই বলা হয়েছে ।
৪৭/ ভাগের হতিন সখিনা
রাত পোহালে দেখি না ।
ব্যাখ্যাঃ সখিনা কে শুধু ভাগ যোগের সময় পাওয়া যায় ,তারপর তার আর খবর পাওয়া যায় না। বোঝানো হয়েছে স্বার্থপর মানুষ কিংবা যারা শুধু মাত্র নিজেদের পাওয়ার ব্যাপারে সচেষ্ট ।
৪৮/ মোটে মায় রান্দে না
পান্তায় তেরসা ।
ব্যাখ্যাঃ গরীব মানুষ তাদের বাড়িতে তো রান্না বান্নাই তেমন হয়না ,পান্তাই তাদের তত্ত্ব ।
৪৯/ পাইলাম থালে
দিলাম গালে
পাপ নাই তার
কোন কালে ।
ব্যাখ্যাঃ পড়ে পাওয়া জিনিস এর কোন মালিকানা নেই , যেই পাবে সেই নেবে ।
৫০/ তোমার আছে , আমার নাই
রস চুরিতে পাপ নাই
যদি কর বাড়াবাড়ি
থাকবে নাকো রসের হাড়ি
ব্যাখ্যাঃ রস চুরি হালাল করার অজুহাত , বাড়াবাড়ি করলে রসের হাড়ি ঢিল দিয়ে ভেঙ্গে দেয়া হবে ।রস চুরি করে এই ছড়া কাটা হয় মনে হয়।
৫১/ আছে গরু না পায় হালে
দুঃখ না ছাড়ে কোন কালে ।
ব্যাখ্যাঃ যার গরু আছে কিন্তু হাল চাষ করে না , তার দুঃখ অভাব কখনই যাবে না । পরিশ্রম না করলে সৌভাগ্য আসবে না ।
৫২/ বাইন্না কুইট্টা মরে কেউ
ক্ষুদ দিয়া পেট ভরে কেউ ।
ব্যাখ্যাঃ ঢেঁকি তে চাল ভাঙ্গার সময় ,ঢেঁকি আসে পাশে চালের ক্ষুদ জমে যায় ।কেউ হয়ত তখনি খাওয়াতে ব্যাস্ত হয় । প্রতিকি হিসেবে বলা হয়েছে যারা রান্নার কাজের আশেপাশেও আসেনা কিন্তু খাবার সময় ঠিক হাজির ।
৫৩/ ঘরের মধ্যে ঘর
জনে জনে হাওলাদার।
ব্যাখ্যাঃ ঘরের সবাই নিজেকে মাতব্বর মনে করে !
৫৪/ আর গাব খাব না
গাবতলা দিয়া যাব না
গাব খাব না, খাব কি ?
গাবের তুল্য আছে কি ?
ব্যাখ্যাঃ এক কাকের গলায় গাব আটকে গেসে । সাথে সাথে তার প্রতিজ্ঞা , সে জীবনেও গাব খাবে না । বলতে বলতে ই যেই গলা থেকে চলে গেসে ,সেই তার উল্টো উপলব্ধি ! প্রতিজ্ঞা ভাঙ্গতে কতক্ষণ!
৫৫/ যেখানে মজিবে কায়া
নাও থুইয়া তরেও জায়া ।
ব্যাখ্যাঃ যেখানে মৃত্যু কপালে আছে সেখানে যেভাবেই হোক ,অদৃষ্ট টেনে নিয়ে যাবে ।
৫৬/ বামন গেল ঘর তো লাঙ্গল তুলে ধর-
ব্যাখ্যাঃ কর্মচারীদের উপর দৃষ্টি না রাখলে তারা কাজ করে না।
৫৭/ বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ-
ব্যাখ্যাঃ বৃদ্ধ বয়সে শিশু বা যুবকের মতো আচরণ করা।
৫৮/ বাতাসের সঙ্গে লড়াই করা-
ব্যাখ্যাঃ বিনা কারণে ঝগড়া করা।
৫৯/ বুকে বসে দাড়ি উপড়ানো-
ব্যাখ্যাঃ আশ্রয়দাতা বা প্রতিপালকের অনিষ্ট সাধন করা।
৬০/ ঢেঁকির শব্দ বড়-
ব্যাখ্যাঃ ভিতরে যার কিছুই নেই তার বাজে বেশি।
৬১/ মাথার ঘায়ে কুকুর পাগল-
ব্যাখ্যাঃ বিষম বিপদে পড়ে পাগল হওয়া।
৬২/ গাছে তুলে দিয়ে মই কেড়ে নেওয়া-
ব্যাখ্যাঃ উৎসাহ দিয়ে কর্মে প্রবৃত্ত করে অসহায় অবস্থায় সরে দাঁড়ানো।
৬৩/ ভাই বড় ধন
রক্তের বাধন
যদিও বা পৃথক হয়
তবে, নারীর কারণ
ব্যাখ্যাঃ ভাই যে কারো বেশ আদরের ধন তা বলাই বাহুল্য কিন্তু ধরেই নেয়া হয় যে বিয়ের পর (স্বাভাবিক সামাজিকতা) ভাই ততোক্ষণই কাছে থাকবে যতোক্ষণ কোন নারী তার উপর কোন নঞর্থক প্রভাব বিস্তার করবে না। কিন্তু সাধারণত এমন ভাবা হয় না যে পৃথক ভাইও কোন কারেণ হতে পারে নারী দ্বারা প্রভাবিত না হয়েই।
৬৪/ নদীতে নদীতে দেখা হয়
কিন্তু বোনে বোনে
দেখা হয় না।
ব্যাখ্যাঃ সাধারণত নারীদের বিয়ের পর তাদের স্থান হয় স্বামীর ঘরে সেখানে তারা স্বামীর হুকুমের বাইরে কিছু করার ক্ষমতা রাখে না (যদিও বর্তমানে এই অবস্থার উন্নতি হচ্ছে)। আর এর ফলে বোনে বোনে চাইলেও দেখা হয় না। যেটা সাধারণত পুরুষদের বেলায় ঘটে না।
৬৫/ জাতের নারী কালো ভালো
নদীর জল ঘোলা ভালো।
ব্যাখ্যাঃ সাধারণত আগে (বর্তমানেও অনেক ক্ষেত্রেই) পাত্র পক্ষ নারীর জাত দেখে মুলত বিয়ের সম্বন্ধ আনতো। এক্ষেত্রে নারী কতোটা শিক্ষিত বা কতোটা গুণী তার চেয়ে বেশি তার জাত ভালো কিনা তা দেখা হতো। এক্ষেত্রে হিন্দুদের মধ্যে শুদ্র শ্রেণীরা বেশি অবহেলিত ছিল। বর্তমানে যার উত্তরণ হচ্ছে।
৬৬/পুরুষ রাগলে হয় বাদশা
নারী রাগলে হয় বেশ্যা।
ব্যাখ্যাঃ পুরুষরা যদি রেগে ঘর ছাড়ে তবে সে স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু নারী যেহেতু হেরেমবাসিনী তাই সে রাগ করে ঘর ছাড়লে তার শরীর বিক্রী করে জীবন চালানো ছাড়া আর কোন গতি থাকে না। কিন্তু বর্তমান সময়ে নারী শিক্ষিত হচ্ছে, অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছে। কাজেই এক সময়ের এই প্রচলিত প্রবাদটি এখন আর গ্রহণ যোগ্য হতে পারে না।
৬৭/ উচঁ কপালী চিঁড়ল দাঁতী
লম্বা মাথার কেশ
এমন নারী করলে বিয়ে
ঘুরবে নানান দেশ।
ব্যাখ্যাঃ এখানে নারীর বাহ্যিক রুপকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে বিয়ের ক্ষেত্রে। অথচ গুণ থাকলে যে, বাহ্যিক রুপ কোন ব্যাপার না তা বর্তমান সময় গুলোতে অনেকটাই প্রমাণিত।
৬৮/ রান্ধিয়া বারিয়া যেই বা নারী
পতির আগে খায়
সেই নারীর বাড়িতে শীঘগীর
অলক্ষী হামায়।
ব্যাখ্যাঃ রান্না করার পর ততক্ষণ পর্যন্ত একজন স্ত্রী খেতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না তার স্বামী খাবে। বর্তমাণ সময়ের অনেক শ্বাশুরীদের মাঝেও এই প্রবণতা দেখা যায় যে, আগে তার পুত্র খাবে তারপর তার পুত্রবধু খাবে। এতে সাধারণতই নারীরা গ্যাস্ট্রিক সহ নানারকমের শারীরিক সমস্যায় ভুগে থাকে। এখন নারী/পুরুষ উভয় কেএষত্রই সচেতনতা বৃদ্ধির ফলে এই অবস্থা অনেকাংশেই হ্রাস পাচ্ছে।
৬৯/ পতি বিনে
গতি নেই
ব্যাখ্যাঃ এই প্রবচনটিতে প্রকাশ পায় যে, পতি ছাড়া নারী চলতে পারে না। লৈঙ্গিক শ্রমবিভাজন আর জেন্ডার অসম সম্পর্কের মধ্যে নারীকে স্বামীর মুখাপেক্ষী থাকতে হয়। এই অবস্থা সত্যিকার অর্থে এখনও অনেকাংশেই সত্যি। তারপরও নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের ফলে এই অবস্থার কিছুটা উন্নতি হচ্ছে।
৭০/ পতির পায়ে থাকে মতি
তবে তারে বলে সতী
ব্যাখ্যাঃ বিয়ের আগে নারীর সতীত্বের ধারণা নির্ভরশীল তার শরীরকে বাচিয়েঁ চলার উপর আর বিয়ের পর নারীর সতীত্ব রক্ষার ধরণ পাল্টে তা হয়ে যায় স্বামী নির্ভর। এখানে স্বামী অর্থাৎ পুরুষদের সতীত্বের বিষয়ে কখনোই কিছু শোনা যায় না সাধারণত।
৭১/ পতি হারা নারী
মাঝি হারা তরী
ব্যাখ্যাঃ নারী যে নিজের মতো করে জীবন যাপন করার ক্ষমতা নেই, এই ধারণাটাকে প্রতিষ্ঠিত করতেই এই প্রবচনটির সৃষ্টি হয়েছে বলে ধরে নেয়া হয়। এখানে নারীকে তরী আর পতিকে মাঝির সাথে তুলনা করা হয়েছে। নারীর শিক্ষা বিস্তার, অর্থনৈতিক সামর্থ্যই পারে একমাত্র এসকল ধারণা থেকে তাকে বের করে আনতে।
৭২/ পথি নারী বিবর্জিতা
ব্যাখ্যাঃ খুবই দুঃখজনক বিষয় হলো এই প্রবচন দ্বারা চলার পথেও নিজের আপন নারী কুলকেও বিবর্জিত করে চলার ধারণঅকে প্রতিষ্ঠিত করে। যেই নারী আলোর মুখই দেখেনি সে ঠিকমতো পথ চলতে পারবে না এটাই স্বাভাবিক বিষয়। হেরেমবাসিনী বন্দিনীর পক্ষেতো পথ চলার অভ্যাস/অভিজ্ঞতা কোনটাই থাকার কথা নয়। বর্তমাণ সময়েও অনেক নারীরাই আধুনিক, শিক্ষিত হওয়ার পরও পুরুষের উপর নির্ভর করে পথ চলতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। এই অব্যবস্থা থেকে নারীকে যেমন বেরিয়ে আসতে হবে, পুরুষদেরও সচেতন হবে নারীকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে।
৭৩/ পদ্মমুখি ঝি আমার পরের বাড়ি যায়
খেদা নাকি বউ এসে বাটার পান খায়
ব্যাখ্যাঃ এখানে যদিও পরিষ্কার করে লৈঙ্গিক বিষয়টা উঠে আসে নি...এটা কোন পুরুষ বা নারীর মুখ থেকে আসা তারপরও সমাজের বউ-শ্বাশুড়ীর টানাপোড়েনের মুখরোচক বিষয়ই এর মূখ্য। নিজের মেয়ে যেমনই হোক তার দোষ যেমন মায়েদের চোখে পড়ে না, ঠিক তেমনই পরের মেয়ে যখন পুত্র বধু হিসেবে আসে তখন তার দোষগুলো খুব সহজেই শ্বাশুরীদের চোখে পড়ে। আর শ্বাশুরীদের এই মনোভাব বোঝাতেই সম্ভবত এই প্রবচনটির প্রচলন। এর থেকে আসলে বেরিয়ে আসা এখনও সম্ভব হয়ে উঠেনি। আজকে যেই নারী পুত্রবধু আগামীতে সেই শ্বাশুরী হয়ে একই ভুমিকায় অবতীর্ণ হচ্ছে। এর থেকে সমাধানের পথ খুঁজতে সচেতনতার, মানবিকতার বিকল্প নেই।
৭৪/ "আগুন পোহাতে গেলে,
ধোয়া সইতে হয়"
ব্যাখ্যাঃ শীতকালে অনেকেই আগুনের কাছে বসে আরাম পোহায়। কিন্তু ধোয়ার কারণে কিছুটা বিড়ম্বনার সৃষ্টি হয়। তবুও আগুন পোহানোর নিমিত্তে মানুষ এতটুকু সহ্য করে নেয়। তেমনি ভাবে জীবনের সব ক্ষেত্রেই কিছু অর্জন করতে হলে, কিছু বিষয় কম্প্রোমাইজ করতে হয় বা কিছু ঝামেলা সহ্য করতে হয়। এতটুকু সহ্য করতে পারলেই, বড় অর্জন সম্ভব। আর সহ্য করতে না পারলে কোন অর্জনই সম্ভব নয়।
৭৫/ যার দউলতে রামের মা
তারে তুমি চেননা।
ব্যাখ্যাঃ যার দ্বারা কার্য সম্পন্ন হয় তাঁকে মূল্যায়ন না করা।
৭৬/ সেদিন আর নাইরে নাথু, খাবলা খাবলা খাবা ছাতু "
ব্যাখ্যাঃ আগের মত জিনিস-পত্রের দাম এত সস্তা নেই যে চাইলেই পর্যাপ্ত পরিমানে খাবার আয়েশ করে খাওয়া যাবে।
৭৭/ কাউয়ায় হামলায় (লুকিয়ে) মনে করে দুইন্যার (দুনিয়ার) কেউ দ্যাহে নাই।(ঢাকা)
ব্যাখ্যাঃ কাক কোন কিছু চুরি করে চোখ বন্ধ করে লুকায়। সে মনে করে যে, সে যেমন লুকানোর জায়গাটা দেখেনি, তেমনি অন্য কেউ ও লুকানোর জায়গাটা দেখেনি, ফলে তার লুকানো জিনিসটা অন্য কেউ নিতে পারবে না। বোকা লোক অনেক সময় অভিজ্ঞ কে ফাকি দিতে পেরেছে মনে করে মিথ্যা আত্মতৃপ্তি লাভ করলে, তাকে উদ্দেশ্য করে এই প্রবাদ বলা হয়।
৭৮/ আপনায় আপনায় কারবার ভালা অয়না
ব্যাখ্যাঃ আত্মীয়ের সাথে ব্যবসা ভালো হয়না। কেননা সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার ভয় ও চক্ষুলজ্জার কারণে আত্মীয়কে অনেক কিছু বলা যায়না।
৭৯/ জামাই কৈন্যার দেখা নাই
শুক্কুর বারে বিয়া
~ ময়মনসিংহ
ব্যাখ্যাঃ কেউ অতি আগাম পরিকল্পনা করলে এই প্রবাদ বলা হয়।
৮০/ মাটিতে থাপ্পর পরলে, গুনাহগার চমকে উঠে।
ব্যাখ্যাঃ পাপী ব্যাক্তি সর্বদা পাপ প্রকাশ হয়ে যাওয়ার ভয়ে থকে যা তার আচরনে ফুটে উঠে।
("চোরের মন পুলিশ পুলিশ"-এর সমর্থক।)
৮১/ তোর তেল আঁচলে ধর
আমার তেল ভাড়ে ভর
ব্যাখ্যাঃ স্বার্থপর ব্যক্তি অন্যের স্বার্থ নষ্ট করে হলেও নিজের স্বার্থ ঠিক রাখে। অন্যের তেল আঁচলে ভরলে পরে যাবে জেনেও তাকে আচলে ভরার পরামর্শ দিয়ে নিজের তেলটুকু পাত্রে ভরার পায়তারা করছে।
(লাং (প্রেমিক) ধরলে ঠাকুর, মাছ ধরলে মাগুর " কথ্য ভাষার এই প্রবাদ টাও একি অর্থে ব্যাবহার হয়।)
৮২/ আমি যার করি আশ
সেই করে সর্বনাশ
অর্থঃ যার কাছ থেকে সাহায্য আশা করা হয়েছে তার কাছ থেকে উল্টো ফল পেলে এই প্রবাদ বলা হয়।
৮৩/ পেট কাটলে মশাও মরে, হাতিও মরে
অর্থঃ বড় বিপদ ছোট-বড় সবার জন্য সমান বিপদজনক।
৮৪/ ভালা মাইনসে মাইর খায়
গাল আতাইয়া বাড়িত যায়
~সিলেট
ব্যাখ্যাঃ- ভদ্রলোক ছোটলোকের কাছে অপমানিত হলেও জবাব দিতে পারে না।মান সম্মান নষ্ট হওয়ার ভয়ে চুপচাপ থাকে। তখন তার জন্য এভাবে সমবেদনা প্রকাশ করা হয়।
৮৫/ বাছা শাকে পোকা বেশী।
ব্যাখ্যাঃ- বেশী মাত্রায় খুঁতখুঁতানি থাকলে ভালো কিছু আশা করা যায়না।
৮৬/ জামা-জোব্বা বেশুমার
আক্কল বিনা ছারখার
ব্যাখ্যাঃ- পোশাকের আড়ম্বর দ্বারা বুদ্ধির দৈন্য দূর করা যায়না।
৮৭/ বেআক্কলরে আক্কল দিলে নিজের আক্কল ক্ষয়,
আক্কলরে আক্কল দিলে আরো আক্কল হয়।
~চট্টগ্রাম
ব্যাখ্যাঃ- বুদ্ধিহীনরা সুপরামর্শ দিলে কোন কাজে লাগেনা, বুদ্ধিমানকে সুপরামর্শ দিতে গেলে আলোচনার মাধ্যমে নিজেরও কিছু বুদ্ধি বৃদ্ধি হয়।
৮৮/ কারো শাকে বালি
কারো দুধে চিনি।
(যশোর)
ব্যাখ্যাঃ- ক্ষতিগ্রস্তের আরো ক্ষতি, লাভবানের আরো লাভ।
৮৯/ যে নয় আমার অনুগত, কাইন্দা প্রেম বাড়াবা কত?"
ব্যাখ্যাঃ- যে তোমার কথা শোনে না বা যুক্তি মানে না তাকে উপদেশ দেয়া বৃথা ।
৯০/ টানবার যে সে না টানলে
লাভ নাই কোন কানলে।
ব্যাখ্যাঃ- কেদে কোন কার্য উদ্ধার করা যায় না, যদি কর্তা বিরুপ থাকে।
বাস্থ্য সংক্রান্ত একটি প্রবাদ-
১০০/ মাংসে মাংস বাড়ে,
ঘৃতে বাড়ে বল,
দুধে শুক্র বাড়ে,
শাকে বৃদ্ধি মল।
মাছ চিনে গভীর জল
পাখী চিনে উচু ডাল।
ব্যাখ্যাঃ- নিজ নিজ পরিবেশ অনুযায়ী অভিজ্ঞতা লাভ হয়।
১০১/ লাং (প্রেমিক) ধরলে ঠাকুর, মাছ ধরলে মাগুর " কথ্য ভাষার এই প্রবাদ টাও একি অর্থে ব্যাবহার হয়।
ব্যাখ্যাঃ স্বার্থপর ব্যক্তি অন্যের স্বার্থ নষ্ট করে হলেও নিজের স্বার্থ ঠিক রাখে। অন্যের তেল আঁচলে ভরলে পরে যাবে জেনেও তাকে আচলে ভরার পরামর্শ দিয়ে নিজের তেলটুকু পাত্রে ভরার পায়তারা করছে।
১০২/ শেয়ালের কাছে মুরগি বর্গা।
শুঁটকির বাজারে বিড়াল চৌকিদার।
ব্যাখ্যাঃ চোর-ডাকাতের কাছে কোন কিছু আমানত রাখলে এই প্রবাদ টি বলা হয়।
১০৩/ কর্কশ কথা অগ্নিদাহের চেয়েও ভয়ঙ্কর।
ব্যাখ্যাঃ কোন মানুষকে কটাক্ষ করে কথা বললে এই প্রবাদ বলা হয়
১০৪/ তেল কম ভাজা মচ মচ।
ব্যাখ্যাঃ আয়োজনের স্বল্পতা থাকলেও প্রত্যাশা বেশী হওয়া।
১০৫/ হওয়া ছল যায় গড়াগড়ি,
পেটের ছলের জন্য খাড়ু গড়ি।
ব্যাখ্যাঃ (ছল = ছেলে, খাড়ু = হাতে বা পায়ে পরার চুড়ি বিশেষ, গড়ি = তৈরি করি ) আশু প্রয়োজনীয় বিষয়ের প্রতি দৃষ্টি না দিয়ে অনাগত বিষয় নিয়ে ব্যাস্ততা দেখান।
১০৬/ পয়সা নাই দুই আনা
বউ চায় সেয়ানা।
ব্যাখ্যাঃ নিজের সামর্থ্য বা যোগ্যতার চেয়ে বেশী প্রত্যাশা করা।
১০৭/ যে খাইছে সাত বার, তার জন্য ভাত বাড়,
যে খায়নাই একবার, তার জন্য চাল ঝাড়।
ব্যাখ্যাঃসুবিধা বঞ্চিত ব্যাক্তিকে বাদ দিয়ে সুবিধা প্রাপ্ত ব্যাক্তিকে পুনরায় আনুকুল্য দেখানোর ক্ষেত্রে এ কথা বলা হয়। (তেলা মাথায় তেল দেয়া)।
১০৮/ পান্তা ভাতে ঘি নষ্ট,
বাপের বাড়ী ঝি নষ্ট।
ব্যাখ্যাঃ বিয়ের পরে মেয়েদের বাবার বাড়িতে দীর্ঘ দিন থাকা ঠিক নয়।
১০৯/ মূলধন ছাড়াই ব্যাবসা করার জন্য অযথা নাচানাচি করা।
দ্যাশ বুইঝ্যা ব্যাশ, পাথার বুইঝ্যা চাষ ।
(দ্যাশ = দেশ, ব্যাশ = বেশ, পাথার = জমি)
ব্যাখ্যাঃ দেশের প্রচলিত প্রথা অনুযায়ী পোশাক আশাক পরতে হয়, আর জমির অবস্থা বুঝে চাষাবাদ করতে হয়।
১১০/ পাশের বাড়ী বিয়ালো গাই,
সেই সুত্রে পাড়াতো ভাই”
ব্যাখ্যাঃ দূর সম্পর্কের আত্মীয় সম্পর্কে (তুচ্ছার্থে)এ কথা বলা হয়।
১১১/ "ঘড় পোড়ার মাঝে আইছে আলু পোড়া দিতে"
ব্যাখ্যাঃ অপরের বিপদের মাঝেও নিজের লাভের সর্বোচ্চ চেষ্টা, যার ফলে বিপদগ্রস্থের কষ্ট আরো বহুগুন বেড়ে যায়।
১১২/ আমার নাও আমার ছইয়া
আমিই থাকি বাইরে বইয়া।
(কুমিল্লার একটি আঞলিক প্রবাদ)
ব্যাখ্যাঃ তাকে ছারাই সব কিছু করে ফেলা বা সুবিদা ভোগ করা যে ঐ জিনিসের মালিক।
১১৩/ যে যেমনঢেমনি জগত দ্যাখে তেমনি
ব্যাখ্যাঃ যে সাধু সে মনে করে জগত সাধুময় তেমনি যে চোর তার দৃষ্টিতে সাধু খুজে পাওয়া দুরহ ।
১১৪/ গাঙ ও নাই যে ডুবাইয়া নাবো,
মা ও নাই যে কাইন্দা কব।
ব্যাখ্যাঃ (গাঙ = নদী; নাবো = নাইবো = স্নান করর) কষ্টের কথা শোনার মত সমব্যথি না পাওয়া গেলে এ কথা বলা হয়।
১১৫/ জ্যান্তে দেয়না চাল ভাজার খোলা
মরলে দেবে রামায়নের পালা।
ব্যাখ্যাঃ (খোলা অর্থ পাত্র) জীবিত অবস্থায় কাউকে সামান্যতম সাহায্য না করে তার মৃত্যুর পর অনেক কিছু করার প্রতিশ্রুতি দেয়া।
১১৬/ নতুন নতুন খই এর মোয়া মচ মচ করে।
ব্যাখ্যাঃ শুরুতে সব বিষয়ের প্রতি মানুষের উৎসাহ বেশী বেশী থাকে।
১১৭/ পরের হাতের পিঠা
খাইতে লাগে মিঠা !
পরের হাতের পান
খাইলে মুখে আসে গান !
আহ্লাদীলো ঢ্যাপের খই
এতো ঠমক পাইলি কই?
ব্যাখ্যাঃ অতি মাত্রায় আদুরে ভাব দেখিয়ে যারা সহজসাধ্য কাজও কঠিন বলে এড়িয়ে চলে তাদের ক্ষেত্রে এ উক্তি করা হয়।
১১৮/ যার দউলতে রামের মা
তারে তুমি চেননা।
ব্যাখ্যাঃ যার দ্বারা কার্য সম্পন্ন হয় তাঁকে মূল্যায়ন না করা।
১১৯/ তোমরা তো কও আহা !
আমার গেছে টাহা (টাকা)।
ব্যাখ্যাঃ বিপদের পরে লোকজন সান্তনা দিতে পারে কিন্তু যার সর্বনাশ হয়ে যায় সে ই তার মুল্য বোঝে।
১২০/ আমার শিল আমার নোড়া, ভাঙ্গ আমার দাঁতের গোঁড়া ।
ব্যাখ্যাঃ কারও অস্ত্র দিয়ে তাকেই ঘায়েল করতে চাওয়া ।
১২১/ শরিরের নাম মহাশয়, যাহা সহাও তাহাই সয় "
ব্যাখ্যাঃ মানুষের শারীরিক ক্ষমতা তার চেষ্টার উপর নির্ভরশীল ।
১২২/" ভরা পেটে সন্দেশে কয় ছুঁচোর গন্ধ "
ব্যাখ্যাঃ চাহিদা বা তৃপ্তি মিটে গেলে সুস্বাদু খাবারও বিস্বাদ মনে হয় ।
১২৩/ বারো বচ্ছর চোংগার মইধ্যে থাকলেও কুত্তার ল্যাঁজ সোজা অয় না
ব্যাখ্যাঃ খারাপ মানুষকে বার বার ভাল হবার কথা বলেও যখন ভাল হয়না তখন এই কথা বলা হয়
১২৪/ ধর্মের ঢাক আপনি বাজে।
ব্যাখ্যাঃ পাপ কোন দিন চাপা থাকে না।
১২৫/ চোরে না শোনে ধর্মের কাহিনী।
ব্যাখ্যাঃ অসৎ লোককে উপদেশ দান বৃথা।
১২৬/ অভাগা যেদিকে চায়,
সাগর শুকিয়ে যায়।
ব্যাখ্যাঃ দূর্ভাগার সকল কাজেই ব্যর্থতা নেমে আসে।
১২৭/ অভাবে স্বভাব নষ্ট,
অন্ধ লোকের বেজায় কষ্ট
ব্যাখ্যাঃ অভাবে পড়লে সততা থাকে না।
১২৮/ আতি দর্পে হত লঙ্কা।
ব্যাখ্যাঃ অহংকার পতনের মূল।
১৩০/ বিপদে পড় নহে ভয়
অভিজ্ঞতায় হবে জয়
ব্যাখ্যাঃ বিপদে পড়েই অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হয়, আর অভিজ্ঞতার বলেই বিপদকে জয় করা যায়। তাই বিপদে ভয় পেতে নেই।
১৩১/ কপালে নাই ঘি,
ঠকঠকালে হবে কি!
ব্যাখ্যাঃ নিঃষ্ঠুর নিয়তি। ভাগ্যে না থাকলে কিছুই পায়া যায় না। (যদি আপনি ভাগ্যে বিশ্বাস করেন।)
১৩২/ খনা বলে শুনে যাও
নারিকেল মুলে চিটা দাও
গাছ হয় তাজা মোটা
তাড়াতাড়ি ধরে গোটা।
ব্যাখ্যাঃ অনেক আগে, সেই ছোট বেলায় দেখেছি- ধান মাড়ানোর পরে যে চিটা ধান (যে ধানের ভিতরে চাল হয় না) পাওয়া যেত, সেগুলি ছোট নারকেল চারার গোঢ়ায় দিয়ে দিতো। এখানে হয়তো এটার কথাই বলা হয়েছে।
১৩৩/ বেঙ ডাকে ঘন ঘন
শীঘ্র হবে বৃষ্টি জান।
ব্যাখ্যাঃ বৃষ্টি হবার আগে আগে ব্যাঙগুলি অবিরাম ডাকতে থাকে।
১৩৪/ শুনরে বাপু চাষার বেটা
মাটির মধ্যে বেলে যেটা
তাতে যদি বুনিস পটল
তাতে তোর আশার সফল।
ব্যাখ্যাঃ বেলে মাটিতে পটলের ফলন সবচেয়ে ভালো হয়।
১৩৫/ জামাই কৈন্যার দেখা নাই
শুক্কুর বারে বিয়া
ব্যাখ্যাঃ কেউ অতি আগাম পরিকল্পনা করলে এই প্রবাদ বলা হয়।
১৩৬/ মাটিতে থাপ্পর পরলে, গুনাহগার চমকে উঠে।
"চোরের মন পুলিশ পুলিশ"-এর সমর্থক।
ব্যাখ্যাঃ পাপী ব্যাক্তি সর্বদা পাপ প্রকাশ হয়ে যাওয়ার ভয়ে থকে যা তার আচরনে ফুটে উঠে।
১৩৭/ তোর তেল আঁচলে ধর
আমার তেল ভাড়ে ভর।
ব্যাখ্যাঃ স্বার্থপর ব্যক্তি অন্যের স্বার্থ নষ্ট করে হলেও নিজের স্বার্থ ঠিক রাখে। অন্যের তেল আঁচলে ভরলে পরে যাবে জেনেও তাকে আচলে ভরার পরামর্শ দিয়ে নিজের তেলটুকু পাত্রে ভরার পায়তারা করছে।
১৩৮/ আমি যার করি আশ
সেই করে সর্বনাশ
ব্যাখ্যাঃ যার কাছ থেকে সাহায্য আশা করা হয়েছে তার কাছ থেকে উল্টো ফল পেলে এই প্রবাদ বলা হয়।
১৩৯/ পেট কাটলে মশাও মরে, হাতিও মরে
ব্যাখ্যাঃ বড় বিপদ ছোট-বড় সবার জন্য সমান বিপদজনক।
১৪০/ বাছা শাকে পোকা বেশী।
ব্যাখ্যাঃ বেশী মাত্রায় খুঁতখুঁতানি থাকলে ভালো কিছু আশা করা যায়না।
১৪১/ বেআক্কলরে আক্কল দিলে নিজের আক্কল ক্ষয়,
আক্কলরে আক্কল দিলে আরো আক্কল হয়।
~চট্টগ্রাম
ব্যাখ্যাঃ বুদ্ধিহীনরা সুপরামর্শ দিলে কোন কাজে লাগেনা, বুদ্ধিমানকে সুপরামর্শ দিতে গেলে আলোচনার মাধ্যমে নিজেরও কিছু বুদ্ধি বৃদ্ধি হয়।
১৪২/ হাত দিয়ে হাতি ঠেলা।
ব্যাখ্যাঃ- অসম্ভবকে সম্ভব করার বৃথা চেষ্টা।
১৪৩/ তোমরা তো কও আহা !
আমার গেছে টাহা (টাকা)।
ব্যাখ্যাঃ বিপদের পরে লোকজন সান্তনা দিতে পারে কিন্তু যার সর্বনাশ হয়ে যায় সে ই তার মুল্য বোঝে।
১৪৪/ সাতার না জানলে, বাপের পুকুরেও ডুবে মরে
~রাজশাহি
ব্যাখ্যাঃ অনভিজ্ঞ ব্যক্তি সুবিধাজনক স্থানে থাকলেও বিপদগ্রস্ত হয়।
১৪৫/ যে নয় আমার অনুগত, কাইন্দা প্রেম বাড়াবা কত?"
অর্থ- যে তোমার কথা শোনে না বা যুক্তি মানে না তাকে উপদেশ দেয়া বৃথা
১৪৬/ টানবার যে সে না টানলে
লাভ নাই কোন কানলে
ব্যাখ্যাঃ কেদে কোন কার্য উদ্ধার করা যায় না, যদি কর্তা বিরুপ থাকে।
১৪৭/ সেদিন আর নাইরে নাথু, খাবলা খাবলা খাবা ছাতু "
ব্যাখ্যাঃ- আগের মত জিনিস-পত্রের দাম এত সস্তা নেই যে চাইলেই পর্যাপ্ত পরিমানে খাবার আয়েশ করে খাওয়া যাবে।
১৪৮/ মাছ চিনে গভীর জল
পাখী চিনে উচু ডাল
ব্যাখ্যাঃ নিজ নিজ পরিবেশ অনুযায়ী অভিজ্ঞতা লাভ হয়।
১৪৯/জাতে মাতাল
তালে ঠিক।
বিচার মানি তাল গাছটা আমার।
ব্যাখ্যাঃ- কিছু মানুষকে দেখে মনে হয় কিছুই বুঝেনা, কিন্তু নিজের স্বার্থের বেলায় দেখা যায় সে সবই বুঝে।
সিলেটি প্রবাদ প্রবচন নিয়ে
১৫০/ রান্ধুনীর আতো, রউ মাছে কান্দে, না জানি কেমনে রান্ধে’।
ব্যাখ্যাঃ- রান্ধুনী মানে যে রাধতে জানে না ভাল মত।তেল নুন পএইমান মত দিতে পারে না।মাঝে মাঝে চিনি আর লবনের পার্থক্য ধরতে পারে না-এই টাইপের।
আতো মানে হাতে।
রান্না চিনে না এমন রাধুনীঁর হাতে পড়লে, রউ মাছ ও কাদেঁ!তার কত স্বপ্ন ছিল তাকে খেয়ে সবাই বলবে, কি একটা মাছ!ফাটাফাটি জিনিশ!কিন্তু এই রাধুনীর হাতে পড়ছে,এখন তো কেউ মুখেও দিব না।
১৫১/ এক গাতো দি দিলাম ধুমা, আর গাতোদি যায়
যার লাগি দিলাম ধুমা তারে খায় মশায়।
(গাত মানে গর্ত,ধুমা মানে ধোঁয়া।)
আক্ষরিক ব্যাখ্যাঃ- এক গর্তে দিলাম ধোঁয়া অন্য গর্তে যায়/
১৫২/ যার জন্য ধোঁয়া দেয়া, তারে মশায় খায়(কামড়ায়)।
ব্যাখ্যাঃ-একজনের জন্য কষ্ট করলাম কিন্তু তার কোন লাভ হল না।উল্টা অন্য আরেকজনের লাভ হয়ে গেল।দুনিয়া বড়ই বিচিত্র!
১৫৩/ যোগী চিনি ধিয়ানো, ছাগি চিনি বিয়ানো, ঘোড়া চিনি কানো,
নাপতর পুত যে বাদশা অইছইন তানে চিনি দানো ।
ব্যাখ্যাঃ- যোগী চেনা যায় ধ্যানে, ছাগল চেনা যায় বিয়ানো তে(বিয়ানো মনে হয় দুধ বিয়ানো),ঘোড়া চিনা যায় কান দেখে।আর নাপিতের পুত্র সন্তান বাদশাহ হলে তাকে চেনা যায় তার দান করা দেখে।
১৫৪/ উঠতে বেকা চান, জনম বেকা গ্যাং,
তেতই বেকা ফুলো, মানু বেকা মুলো।
বা,
যার হাতো অয় না, তার হাতাইশ ও অয় না—যার সাত বছরে জ্ঞান বুদ্ধি হয় না,তার সাতাশি বছরেও হবে না।
ব্যাখ্যাঃ- চন্দ্র উঠিবার সময় বাকাঁ থাকে, গাং থাকে সারাজীবন ই বাকাঁ।(গ্যাং মনে হয় খাল)।তেতই মানে তেতুল।তেতুল ফুল বাকাঁ থাকে। আর মানুষ বাকাঁ হয় ছোটবেলায়।এরকম আরেকটি প্রবাদ আছে,
১৫৫/ এড়া মাউগ আগে হাজে, ফাটা ঢোল আগে বাজে।
ব্যাখ্যাঃ-যে কম জানে সে সব ক্কিছু আগে আগে করতে যায়।অনেক টা খালি কলসী বাজে বেশী ভরা কলসী বাজে না টাইপের প্রবাদ।
১৫৬/ জামাই মরলা হাঞ্জা রাইত/ কান্দিয়া উঠইন পথা রাইত
ব্যাখ্যাঃ- এর মানে হল, স্বামীর মৃত্যু হইছে সন্ধ্যায়।কিন্তু বউ মাঝ রাতে দুঃখে কেদে উঠলো।ফথা রাইত হচ্ছে রোজায় সেহরী খাওয়ার যে সময় সেটা।
১৫৭/ সারাদিন দিন অনে আর হনে/ হাই আইলে বারা বানে
ব্যাখ্যাঃ- সারাদিন ঘোরাঘোরি করে,কিন্তু স্বামী ঘরে আসলেই কাজে লেগে যায়!
১৫৮/ আটাত্ চিনা যায় বাড়ী কোন গাঁও।
ব্যাখ্যাঃ- হাটা দেখেই বুঝা যায় কে কোন গ্রামের লোক।
১৫৯/ এন্ডা পাড়ে না মুরগী কর্করানিত ডাটঁ।
ব্যাখ্যাঃ- মুরগী ডিম পাড়ে না,কিন্তু চিল্লানি শুনলে মনে হয় ঘর ভরে ফেলছে।বেয়াদব মুরগী।
১৬০/ ধীরে আটে বয়না, তার লাগ কেউ পায় না
ব্যাখ্যাঃ- অধ্যাবসায় ও স্থিতধী ব্যাক্তির জয় নিশ্চিত।খরগোশ কচ্ছপের গল্পের থিমটাই এই প্রবাধের অর্থ।ধীরে আটে মানে আস্তে হাটে, বয়না মানে বসে না,তার লাগ কেউ পায় না মানে তাকে কেউ ধরতে পারে না।
১৬১/ আইল দারুন বারিষা কাল, ছাইগ্যে চাটে বাঘর গাল ।
ব্যাখ্যাঃ- সময় খারাপ।কেয়ামতের আলামত।প্রবল শত্রু রাও মিত্র এখন!
১৬২/ ঝি দিলাম হাই ঠাইন, পুত দিলাম বউ ঠাইন-আরদাশ করমু কার ঠাইন ।
ব্যাখ্যাঃ- ঝি দিলাম হাই ঠাইন মানে মেয়ে দিলাম মেয়ের জামাইর কাছে,পুত দিলাম বউ ঠাইন মানে ছেলেকে দিলাম বউয়ের কাছে।এখন কাকে আদেশ করব!
১৬৩/ মায় কাড়ে গু মূত, হইড়্যে খায় ঘি, অমন দুখখর কথা কারে কৈমুগি ।
ব্যাখ্যাঃ- মা কে রেখে যেসব ছেলে শাশুড়ি কে বেশী পছন্দ করে তাদের জন্য এই প্রবাদ।
১৬৪/ তন দেখাইলে মন নাশ, তল দেখাইলে যোগীর ও অয় সর্বনাশ
>>! এটা বুঝতে হলে একটা গল্প পড়তে হবে।ঈশ্বরচন্দ্রের বেতাল পঞ্চবিংশতি তে এই গল্প সন্ধান পাই।কোন এক বনে থাকতেন এক ঋষি।তিনি তেতুল গাছে উল্টা হয়ে ঝুলে ধ্যান করতেন। অনেক বছর ধ্যান করে প্রায় বৃদ্ধ হয়ে পড়েছেন। হটাত এক রাজার ইচ্ছা হল উনার ধ্যান ভাঙ্গাবেন।অনেক চেস্টা করেও ভাঙ্গাতে পারলেন না।পরে রাজ্যে ঘোষনা দিলেন যে ওই ঋষির ধ্যান ভাঙ্গাতে পারবে তিনি তাকে অর্ধেক রাজ্য লিখে দিবেন। এক মেয়ে এসে বলল, এইটা কোন ব্যাপার হইল!আমি ঋষির ধ্যান ভাঙ্গাব এবং তার ঔরষজাত সন্তানকে তার কাধে চড়িয়ে রাজ্যে নিয়ে আসব। মেয়েটা তার কথা রেখেছিল সে কয়েকবছর পর সাধু কে রাজ্যে নিয়ে আসল তখন সাধুর কাধে ছিল তারই গর্ভজাত ও সাধুর ঔরষজাত পুত্রসন্তান!!
ব্যাখ্যাঃ- যোগীর ধ্যান ও মেয়েরা ভাঙতে পারে।দে আর পাওয়ারফুল।
১৬৫/ ''আইছেরে ভাই কলি কাল,
ছাগিয়ে চাটে বাঘর গাল।।''
ব্যাখ্যাঃ- অসামঞ্জস্য ।
১৬৬/ ক)“বাপে বেটা -গাছে গোটা,
মায় ঝি-গাইয়ে ঘি।।”
খ) “আগর হাল যেবায় যায়,
পরর হালও অবায় যায়।।”
ব্যাখ্যাঃ- ছেলে-মেয়েরা সাধারনত পিতা-মাতা কে অনুসরণ করে।
১৬৭/ “আদেখায় দেখলা,
পুটিমাছে লেখলা।।”
ব্যাখ্যাঃ- সাধারন কাজ করে অনেক বেশি গর্ববোধ করা।
১৬৮/ ক)“হারা রাইত কানভরি হুনলো বেটায় পুঁথি,
বিয়ানে উঠি জিগায়, সোনাভান বেটা না বেটি”
খ) “সাত খণ্ড রামায়ণ পড়ি কয়,
সীতা কার বাপ।”
ব্যাখ্যাঃ- আদ্যোপান্ত সবকিছু জানার পরও না জানার ভান করা।
১৬৯/ ক) যম, জামাই, ভাইগ্না
তিন নয় আপনা।।
খ) ভাইগ্না কুটুম নিমকহারাম।।
গ) মামার বাড়িত ভাইগ্না বইতল।
ব্যাখ্যাঃ- বিশ্বাসের অভাব।
১৭০/ “পাইয়া পরার ধন,
বাপে পুতে করে কীর্তন।।”
ব্যাখ্যাঃ- পরের ধনে পোদ্দারি।
১৭১/ “চোররে কয় চুরি করিস,
গিরস্তরে কয় হজাগ থাকিস।।”
ব্যাখ্যাঃ- দুমুখো সাপ।
১৭২/ ক)“হক মাতো আহম্মক বেজার,
গরম ভাতও বিলাই বেজার।।”
খ) “উচিত মাতো ভাত নাই,
রাস্তাবায় পথ নাই।। ”
ব্যাখ্যাঃ- রুঢ় সত্য সব সময় তিক্তই হয়।
১৭৩/ “বালা মাইনশে চড় খায়,
গাল হাতইয়া বাড়িত যায়।।”
ব্যাখ্যাঃ- এই ভবে ভালো মানুষের গুরুত্ব একটু কমই।
১৭৪/ “চুরোর মাউগর বড় গলা,
আরও মাংগইন দুধ আর কলা।।”
ব্যাখ্যাঃ- চোরের মার বড় গলা।
১৭৫/ “বোঢ়ায়-ধুঢ়ায়(বিষহীন সাপবিশেষ) রাজ্য পাইলা,
কালসর্প বিওড়ে(গর্ত) গেলা।”
ব্যাখ্যাঃ- অযোগ্য লোকের শাসন।
১৭৬/ “ছালিয়ে লেট-পেট দুইকান কাটা,
ত্রিভুবন দেখাইলেরে তুই চিলাবেটা।”
ব্যাখ্যাঃ- কষ্টসাধ্য কাজ।
১৭৭/ “জলদি কাম(কাজ) শয়তানী,
আস্তে কাম(কাজ) রহমানী।”
ব্যাখ্যাঃ- ধীরে-সুস্থে কাজ করা বাঞ্ছনীয়।
১৭৮/ “চুরে চুরে আলি,
এক চুরে বিয়া করলা আরেক চুরর হালি(শালি)।”
ব্যাখ্যাঃ- চোরে-চোরে মাসতুতো ভাই।
১৭৯/ “বাপে নায় গুতে,
চুঙ্গা ভরি মুতে।”
ব্যাখ্যাঃ- আতিসাজ্য।
১৮০/ “খাওরা আছইন কররা নাই,
বুড়ি মরলে কানরা নাই।”
ব্যাখ্যাঃ- সুসময়ের বন্ধু(দুধের মাছি)।
১৮১/ “জোয়ানোর জোয়ানকি,
আর বুড়ার এক ধামকি।”
ব্যাখ্যাঃ- অভিজ্ঞতা সব জায়গায়ই কাজে লাগে।
১৮২/ “চেমা ইমানদার থাকি,
খাড়া বেইমান বালা।”
ব্যাখ্যাঃ- স্পষ্টভাষী শত্রু,
নির্বাক মিত্র অপেক্ষা শ্রেয়।
১৮৩/ “দুই নাওয়ে চড়ে যে,
উপোইত হইয়া মরে সে।”
ব্যাখ্যাঃ- এক সাথে দুই কাজ কখনো ঠিক ভাবে হয় না।
১৮৪/ “ঘাট পার হইলেও,
খেওয়ানি হালা।”
ব্যাখ্যাঃ- উপকার করার পরে উপকারীর কথা ভুলে গেলে এই প্রবাদ বলা হয়।
১৮৫/ “হুটকির ভাড়ারও,
বিলাই চকিদার।”
ব্যাখ্যাঃ- যে রক্ষক সেই ভক্ষক।
১৮৬/ “যে যারে নিন্দে,
হে তার পিন্দে।”
ব্যাখ্যাঃ- অকৃতজ্ঞ।
১৮৭/ “আধ মন তেলো হইতো নায়,
আর রাধার নাছও হইতো নায়।”
ব্যাখ্যাঃ- অনিচ্ছা।
১৮৮/ “চুন চুন চুনের ঘটি,
রাইত পোহাইলে উজান-ভাটি।”
ব্যাখ্যাঃ- অস্থায়ী।
১৮৯/ “যার হাতো(সাতো) হয় না,
তার হাতাইশোও(সাতাইশ) হয় না।”
ব্যাখ্যাঃ-সময়ের কাজ সময়ে করতে হয়।
১৯০/ মায়ের পেটে ভাত নেই বউয়ের চন্দ্রহার!
ব্যাখাঃ- মা কে উপেক্ষাকারী বউ পাগল ছেলে কে তিরস্কার!
১৯১/ “আইজ বুঝবিনা বুঝবি কাইল বুক চাপরাব পারবি গাইল”
ব্যাখাঃ- কাউকে কোন বিষয়ে বার বার সাবধান করার পরেও না শুনলে এই প্রবাদ বলা হয়!
১৯২/ বৌ ভাঈলে চাড়া শ্বাশুড়ি ভাঈলে খোলা।
ব্যাখাঃ-পক্ষপাতিত্ব পুর্ন আচরন।
১৯৩/ বড় উকুন লড়ে-চরে, ছোট উকুন কামড়ায়ে মারে।
ব্যাখাঃ- ছোট শএুর আচমকা আক্রমনে বেশি ক্ষতি হলে এই প্রবাদ বলা হয়্
১৯৪/ আহ্লাদের বউ তুমি,
কেদোনা কেদোনা।
চাল চিবিয়ে খাব আমি,
রেধোনা রেধোনা।
ব্যাখাঃ- বুড়ো যখন তার স্তীকে অতিরিক্ত আহ্লাদ করে তখন এই প্রবাদ বলা হয়।
১৯৫/ বাতাসে পাতিয়া ফাঁদ, ধরে দিতে পারি চাঁদ।
ব্যাখাঃ-দুরুহ কার্য সম্পাদন করে দেওয়ার মিথ্যা আশ্বাস কে কটাক্ষ করে এই প্রবাদ বলা হয়।
১৯৬/ মারবো তো গন্ডার,
লুটবো তো ভান্ডার।
ব্যাখাঃ- কোন কাজ করতে হলে বড় লক্ষ্য নিয়ে করা উচিত।
১৯৭/ কথায় টলার চেয়ে পায়ে টলা ভালো
ব্যাখাঃ- যেখানে থাকলে মুখের কথায় নড়চর করতে হবে, সেখানে থেকে চলে যাওয়াই শ্রেয়।
১৯৮/ হাট-বাজারে লজ্জা নাই,
ঘড়ে ফুলের কুড়ি।
ব্যাখাঃ- নির্লজ্জ মানুষ যখন লজ্জাশীলতার ভান করে তখন এই প্রবাদ বলা হয়।
১৯৯/ ইঁদুর র্গত খুড়েঁ মরে সাপ এসে দখল করে
ব্যাখাঃ- একজন মানুষ কষ্ট করে বাড়ি তৈরি করল আর (গোন্ডারা) খারাপ মানুষ এসে তা দখল করে নিল।
২০০/ কাজের বেলায় ভাগে খাবার বেলায় আগে
ব্যাখাঃ- কিছু সুবিধাবাধি মানুষ আছে কাজের সময় ১০০ হাত দুরে থাকে আর খাবার সময় সবার আগে থাকে।
২০১/ ছড়ায় যে জন পথের কাটা,
তার যেন থাকে জুতা আটা।
ব্যাখাঃ- যে অন্যের ক্ষতি করে নিজেও একদিন একই ক্ষতির সম্মুক্ষীন হতে পারে।
পরের অনিষ্টকারী কে সর্তক করে এই প্রবাদ বলা হয়।
২০২/ ভাত পায় না চা খায়,
সাইকেল চালায়া বাথরুমে যায়।
((পাইলায় ভাত নাই,
ডেউয়ায় নাচে))
ব্যাখাঃ- যার কাছে ১০ টাকা নাই সে যদি ১০০ টাকা খরচ করে তখন এই প্রবাদ বলে।
২০৩/ যত দোষ নন্দ ঘোষ
ব্যাখাঃ- অন্যদের সব অপরাধের দায়,
একজনের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা।
২০৪/ ‘‘মুঘল-পাঠান হদ্দ হল, ফারসি পড়েন তাতিঁ’’
ব্যাখাঃ- পন্ডিতেরা যেখানে ব্যার্থ, মূর্খ লোক সেখানে হাস্যকর চেষ্টায় মাতে
২০৫/ ভেক না ধরলে ভিক দিলে না।
ব্যাখাঃ- পেশা ও কাজের উপযোগী বেশভূষা দরকার হয়।
২০৬/ ভাই ভাই ঠাঁই ঠাঁই।
ব্যাখাঃ- নিকট আত্নীয়দের মধ্যে নিত্য কোন্দল।
২০৭/ বারে বারে ঘুঘু তুমি খেয়ে যাও থান,
এবারে তোমায় ঘুঘু বধিব পরান।
ব্যাখাঃ- খারাপ মানুষ বদমায়েশিতে বারবার সফল হলেও শেষ পর্যন্ত তার শাস্তি হয়।
২০৮/ দশচক্রে ভগবান ভূত।
ব্যাখাঃ- ভগবান নামে এক লোক রাজার আশ্রয়ে প্রশ্রয়ে বড় হচ্ছিল। রাজার কয়েকজন লোক তা সহ্য করতে না পেরে ষড়যন্ত করে তার মৃত্যুর কথা রটিয়ে দিল। রাজা একদিন তার গলার স্বর গুনতে পেয়ে ভগবানের মৃত্যু সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করলে ষড়যন্তকারীরা রাজাকে জানিয়ে দিল যে, মৃত ভগবান ভূত হয়ে এসেছে। সকলের মুখে একই কথা শুনে রাজা বাধ্য হয়ে তাতেই বিশ্বাস করলেন।
২০৯/ বামুন গেল ঘর তো লাঙল তুলে ধর।
ব্যাখাঃ- এক ব্যাহ্মণ লোকজন লাগিয়ে জমি চাষাবাদ করাতেন। কাজের সময় উপস্থিত থাকলে লোকজন ঠিকমতে কাজ করত। ব্রাহ্মণ বাড়িতে গেলে বা অন্য কাজে গেলেই চাষের কাজের লোকজন আরাম করার জন্যে হালকা করে লাঙল ধরত। এতে জমি আলতোভাবে চায় হত। তদারকহীন কাজে এভাবেই ফাকি চলে।
(পোস্ট উৎসর্গ করলাম)
মামুন রশিদ, বৃষ্টিধারা, সাদা মনের মানুষ, কান্ডারি অথর্ব, শায়মা, এন ইউ এমিল, স্বপ্নবাজ অভি, নেক্সাস, হেডস্যার, দি সুফি, ভোরের সূর্য, সেলিম আনোয়ার, সুমন কর, কাল্পনিক_ভালোবাসা, ঢাকাবাসী, অপ্রচলিত, পরিবেশ বন্ধু, ভিটামিন সি,
ওনারা সবাই নতুন ব্লগারদের সব সময় উৎসাহ দিয়ে থাকে।
সকল ব্লগার দের কাছে আমার অনুরোধ, নতুন ব্লগারদের বেশি বেশি উৎসাহ দিন।
আরো অনেক গুলো প্রবাদ-প্রবচন আছে, পরে কোন এক সময় সেই গুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করব।
এখানে কয়েকটা প্রবাদ-প্রবচন সামু থেকে(আরজুপনি আপু, অদ্বিতীয়া আমি আপু,) নিয়েছি।
আরো কয়েকটি নিয়েছি ফেসবুক থেকে।
কোন প্রকার অশুদ্ধ হলে অনুগ্রহ করে ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন।
০৭ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ২:২৯
হাসান স্কাই৯৯৯ বলেছেন: ধন্যবাদ ইমরাজ কবির মুন ভাই আমার পোস্টে প্রথম মন্তব্য করার জন্য।
ভাই এই পোস্ট কি নির্বাচিত পাতায় যাবে।
২| ০৭ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ২:৩২
ইমরাজ কবির মুন বলেছেন:
সম্ভাবনা কম।
আপনি জেনারেল/সেফ হওয়ার পর এ পোস্টটা দেয়া উচিৎ ছিল।এখন হয়তো অধিকাংশেরই চোখে পড়বেনা ||
০৭ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ২:৪০
হাসান স্কাই৯৯৯ বলেছেন: শিয়ালের মত একশত বছর জীবন ধারণের চেয়ে সিংহের মত একদিন বাঁচাও ভাল - সক্রেটিস
ভাই আমি ইচ্ছা করলে প্রবাদ-প্রবচন ৩০টা করে দিতে পারতান কিন্তু, সক্রেটিস সেই কথাটা সব সময় মনে পরে।
৩| ০৭ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ২:৩৯
হতাশ নািবক বলেছেন: বাংলা ভাষার অমুল্য সম্পদ কে সকলের সম্মুখে আনার জন্য আপনাকে অভিনন্দন।
প্রিয়তে রাখার মতো একটা পোস্ট।
ভাল থাকুন , সবসময় ভালর সাথেই থাকুন।
০৭ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ২:৪৪
হাসান স্কাই৯৯৯ বলেছেন: ধন্যবাদ =হতাশ নিবাক= পোস্টে টু মারার জন্য। দয়া করে সব গুলো প্রবাদ-প্রবচন পড়ার চেষ্টা করবেন।
৪| ০৭ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ২:৫৫
উদাস কিশোর বলেছেন: চমত্কার পোষ্ট
০৭ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ২:৫৯
হাসান স্কাই৯৯৯ বলেছেন: ধন্যবাদ উদাস কিশোর
৫| ০৭ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ২:৫৯
হতাশ নািবক বলেছেন: @লেখক, হতাশ নিবাক নয় হতাশ নাবিক
০৭ ই মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৩:২২
হাসান স্কাই৯৯৯ বলেছেন: ভাই আপনার নামটা এমন হল কেন ( হতাশ নািবক)
৬| ০৭ ই মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৫:৫০
সুমন কর বলেছেন: অনেক কিছু জানতে পারলাম। গুড পোস্ট। ধন্যবাদ।
০৭ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১১:০১
হাসান স্কাই৯৯৯ বলেছেন: প্রবাদ-প্রবচন গুলো পড়ার জন্য ধন্যবাদ সুমন দা
৭| ০৭ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:২৬
স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: দুর্দান্ত পোষ্ট !
০৭ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১১:০৩
হাসান স্কাই৯৯৯ বলেছেন: ধন্যবাদ অভি ভাই ভাল থাকুন সব সময়
৮| ০৭ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ৯:২৮
মামুন রশিদ বলেছেন: এতো বিশাল পোস্ট! শ্রমসাধ্য এবং দুর্দান্ত!
০৭ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১১:০৪
হাসান স্কাই৯৯৯ বলেছেন: ধন্যবাদ মামুন রশিদ ভাই, আসা করি ভাল আছেন
৯| ০৭ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ৯:৫০
আহমেদ আলাউদ্দিন বলেছেন:
আপনি ব্লগে নতুন কেউ না। এ ব্যাপারে সিউর।
যাই হোক ব্লগে স্বাগত।
আপনার পোষ্ট পড়ে মন্তব্য করব।
০৭ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১১:১১
হাসান স্কাই৯৯৯ বলেছেন: আহমেদ আলাউদ্দিন ভাই নতুন বলতে কি বুঝাচ্ছনে জানিনা তবে সামুর অনেক পুরাতন পাঠক আমি।
ধন্যবাদ মন্তব্য করার জন্য
১০| ০৮ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১:০৯
নতুন বলেছেন: ভাল জিনিস... এই গুলি পাওয়াই এখন কস্ট...
০৮ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:২০
হাসান স্কাই৯৯৯ বলেছেন: প্রবাদ-প্রবচন গুলো পড়ার জন্য ধন্যবাদ নতুন
১১| ০৮ ই মার্চ, ২০১৪ সকাল ১১:৩০
বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় বলেছেন: ভালো কাজ।
ধন্যবাদ।
০৮ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:২১
হাসান স্কাই৯৯৯ বলেছেন: প্রবাদ-প্রবচন গুলো পড়ার জন্য ধন্যবাদ বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় ভাই
১২| ০৮ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১:০৭
শাহ আলম বাদশাহ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ, পারলে ধারাবাহিক চালিয়ে যান--
০৮ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:২৩
হাসান স্কাই৯৯৯ বলেছেন: চেষ্টা করব ধারাবাহিক ভাবে চালিয়ে যেতে
প্রবাদ-প্রবচন গুলো পড়ার জন্য ধন্যবাদ শাহ আলম বাদশাহ ভাই
১৩| ০৮ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৪২
নাছির84 বলেছেন: এক পোষ্টেই আপনাকে অনুসরনে নিলাম। লেখার বিষয়বস্তুর ব্যাপারে মন্তব্য বোধহয় নিষ্প্রয়োজন। সবাই তা বলে দিয়েছে। শুধু বলবো চালিয়ে যান। সঙ্গেই থাকবো।
শুভ কামনা।
০৮ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:২১
হাসান স্কাই৯৯৯ বলেছেন: ধন্যবাদ নাছির ভাই ভাল থাকবেন সব সময়
১৪| ০৮ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৪৩
নাছির84 বলেছেন: আর...অতি অবশ্যই প্রিয়তে।
১৫| ০৮ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১১:১৬
স্বপ্নসমুদ্র বলেছেন: অসম্ভব সুন্দর পোস্ট। প্রিয়তে নিলাম।
০৯ ই মার্চ, ২০১৪ সকাল ১০:২৬
হাসান স্কাই৯৯৯ বলেছেন: প্রিয়তে রাখার জন্য ধন্যবাদ স্বপ্নসমুদ্র ভাই
১৬| ১০ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১২:১৩
বেকার সব ০০৭ বলেছেন: অসম্ভব সুন্দর পোস্ট। প্রিয়তে নিলাম।
১০ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১:০৫
হাসান স্কাই৯৯৯ বলেছেন: প্রিয়তে রাখার জন্য ধন্যবাদ বেকার সব ০০৭
১৭| ১০ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১১:৪২
প্রবাসী পাঠক বলেছেন: বিশাল কর্মযজ্ঞ। অনেক কষ্টসাধ্য একটা কাজ করেছেন।
এতগুলো একসঙ্গে পড়া কষ্টসাধ্য ব্যাপার। সময় নিয়ে সবগুলো পড়তে হবে। পোস্ট প্রিয়তে নিলাম।
১৩ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১০:৫১
হাসান স্কাই৯৯৯ বলেছেন: প্রিয়তে রাখার জন্য ধন্যবাদ প্রবাসী পাঠক
১৮| ১৩ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১০:১৯
অদ্বিতীয়া আমি বলেছেন: ব্যাপক পোস্ট !!!! তবে দুই পর্বে দিলে ভালো হত , এক পর্বের জন্য বেশি হয়ে গেল , সব একসাথে পড়ে শেষকরা কঠিন।
হ্যাপি ব্লগিং !
১৩ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১০:৫৮
হাসান স্কাই৯৯৯ বলেছেন: আপু দুই পর্বে দিবার ইচ্ছা ছিল কিন্তু, প্রবাদ -প্রবচন গুলো প্রিয়তে বা পিসিতে এক সাথে রাখতে সুবিধা হবে সেই জন্য এক পর্বে দিয়ে দিলাম।
কষ্ট করে পোস্ট পড়ার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে
১৯| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:১৪
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: প্রিয়তে নেয়ার মতো পোস্ট বটে
২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:৫৩
হাসান স্কাই৯৯৯ বলেছেন: ধন্যবাদ আরণ্যক রাখাল পোস্টে টু মারার জন্য
২০| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:৩১
শায়মা বলেছেন: মজার পোস্ট ভাইয়া।
২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:১০
হাসান স্কাই৯৯৯ বলেছেন: ধন্যবাদ শায়মা আপু
২১| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:৪০
জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: মজার আর কাজের পোস্ট।
সময়ের কাজ সময়ে সারতে এবং কিছুটা সঞ্চয়ী হইবার উৎসাহ দিতে একটা -
দিন থাকতে হাইট্যা যাও, সম্বল থাকতে রাইখ্যা খাও।
২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:১১
হাসান স্কাই৯৯৯ বলেছেন: ধন্যবাদ জুলিয়ান সিদ্দিকী ভাই
২২| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:০২
পাঠকের প্রতিক্রিয়া ! বলেছেন: প্রিয়তে
©somewhere in net ltd.
১|
০৭ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ২:১৯
ইমরাজ কবির মুন বলেছেন:
খাইসে কপাল ! ভয়াবহ কাজ করে ফেলসেন দেখি !
গুড ওয়ার্ক ||