![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কঙ্কালষাড় দেহটি পরে আছে খাটিয়ার উপর। চারপাশে অসংখ্য মানুষ ঘিড়ে রেখেছে দেহটি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল প্রায় ৭৩ এর মত ।
.
১৯৮৮ সালের দিকে নিজ গ্রাম ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন গুচ্ছগ্রামে। প্রেসিডেন্ট এরশাদের দেয়া জমিটি। সেই সময় এরশাদ সাহেব বেশকিছু গৃহহীন মানুষকে সেটেল করে দিয়েছিলেন পাহাড়ি এলাকা, গুচ্ছগ্রামে।
.
পেছনের গল্পটা বলি,
১৯৭১ সালের মুক্তিযোদ্ধেরর এক সক্রিয় যোদ্ধা ছিলেন মজনু মিয়া। সেইসময় এর তার সহযোদ্ধারা যারা তারসাথে একসাথে বসে চা-সিগারেট খেত, তাস খেলত, তারা এখন সরকারের বড় বড় পদে আছে। দামী এপার্টমেন্টে থাকে, ব্রান্ডের গাড়িতে চড়ে, কিন্ত ওসব কিছুরই প্রতি কোনরকম লোভ ছিলনা মজনু মিয়ার। কোন মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট ও ছিলনা , তাই কোনরকম ভাতা কিংবা তার সন্তানরা পাইনি কোনরকম কোঠা সুবিধা । খুবই সাদামাটা জীবন ছিল তার।
.
ঝামেলা টা বাজে তখন, যখন মজনু মিয়ার লাশ দাফন করার জন্য নিয়ে আসতে চাই তার পৈত্রিক-নিবাসের লোকজন। জানা যায়, মজনু মিয়া গুচ্ছ গ্রামের সর্দার ছিলেন। এখন সেই এলাকার লোকজন তাদের প্রানপ্রিয় সর্দারকে বাইরে নিয়ে যেতে দিবেনা। মজনু মিয়ার প্রতি সেই এলাকার লোকজনের ভালবাসা, ভাষায় প্রকাশ করার মত নয়। অথচ তাদের সাথে মজনু মিয়ার ছিলনা কোন রক্তের সম্পর্ক। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা গৃহহারা লোকজন নিয়ে গঠিট হয়েছিল সেই গুচ্ছগ্রাম।
.
মজনু মিয়ার নাম ইতিহাসে লেখা থাকবেনা। তার সন্তানরাও পাবেনা কোন সরকারি সুবিধা। কিন্ত মজনু মিয়া বেঁচে থাকবেন চিরকাল গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দাদের হৃদয়ে।
.
আমাদের সমাজে অসংখ্য মজনু মিয়া আছে, যারা সাধারণ মানুষ। জাতির ক্রান্তিকালে সেই সাধারণ মানুষগুলোয় হয়ে উঠে অসাধারণ । পরবর্তীতে তারা পুনরায় মিশে যায় সাধারণের কাতারে।
.
তাদের নিয়ে ইতিহাস লেখা হয়না কিন্ত তারা বেঁচে থাকে চিরকাল, মানুষের অন্তরে। তাদের কবরের পাশে কেউ একজন দাঁড়িয়ে তাদের মাগফেরাতের জন্য দোয়া করবে,
এটাকেই তারা জীবনের পরম পাওয়া মনে করে।
.
(n.b: এইখানে মজনু মিয়া ছদ্মনামের বাস্তবিক চরিত্র)
Like
©somewhere in net ltd.