নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হেলোফেনাসের ব্লগ

হেলোফেনাস

হেলোফেনাস › বিস্তারিত পোস্টঃ

জয়

০৫ ই অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১২:৩৮

আজ বিকেলের পর থেকে ট্রমা থেকে বের হতে পারছি না!
বাড়ির সামনে একটা লাল এম্বুলেন্স এসে দাড়ালো। ভেতর থেকে বেড়িয়ে আসল নানা মামারা। অপেক্ষায় ছিলাম জয় কে একবার দেখার জন্য। কিছুক্ষণ পর লাশের পাশ দিয়ে এম্বুলেন্স থেকে বেড়িয়ে আসল জয়। একজোড়া লাল টকটকে চোখ! একদিনেই ছেলেটার চোখ দেখে মনে হল যেন দেড় ইঞ্চি ভেতরে ঢুকে গেছে। মুখে কোন কথা নেই। অন্যসময় হলে বলে উঠত " আ..রে.. মামু নি কি! কি অবস্থা কেমন আছো?" আজ ছেলেটা তেমন কিছুই বলল না। নির্বাক দৃষ্টিতে চারপাশ টা একবার দেখে নিল। একটা কথাও বের হল না ওর মুখ থেকে। মনে হল কে যেন ওর গলা টা চিপে ধরেছে। ঠিক এখন ই হয়ত গলার টুটি ছিড়ে রক্ত বের হয়ে যাবে। দমদম করে সামনে দিয়ে হেটে গেল। একবার শুধু চোখে চোখ পড়ল আমার। তাকাতে পারি নি। নিজের চোখ দুটো শুধু মাটির দিকে নামিয়ে নিয়ে নিলাম। ফুসফুস থেকে শুধু একটা দীর্ঘশ্বাস মাটিতে আছড়ে গিয়ে পড়ল। জয় কে চেনাই যাচ্ছে না। এ ই নাকি আমাদের সেই হাসি খুশি কলেজ পড়ুয়া সেই শান্ত ছেলেটা! বিশ্বাস ই হচ্ছিল না আমার। কাল রাতের সেই হাসি খুশি ছেলেটা যে আজ বিকেলে এম্বুলেন্স থেকে পাথর হয়ে বের হবে কে জানত? জয় তো নয় ই, এ যেন এক পাথুরে মূর্তি! যার ভেতরে এক অশ্রুর ঝর্ণা বইছে। শুধু বার বার পাথুরে মনের গায়ে আঘাত পেয়ে ফিরে যাচ্ছে। আমি জানি, এ ঝর্ণা একদিন বইবে। নীরবে! যেদিন গ্রামের বাড়িতে মায়ের দাফন সেরে বাড়ি ফিরে আসবে। যখন দরজা টা খুলে এলোমেলো ঘরে দেখবে যে আগলে রাখার মানুষটি আর নেই। যখন কলেজ থেকে ফিরে এসে দেখবে যে ভাত বাড়ার মানুষটি আর নেই। সেদিন এই অশ্রু র ঝর্ণা তার বেরুবার পথ খুঁজে পাবে। সেদিন আর এই বেপরোয়া পাথুরে মন সেই ঝর্ণার পথ আগলে রাখতে পারবে না। কেউ ১৪৪ ধরা জারি করে বলতে পারবে না যে, "পুরুষ মানুষের কাদতে নেই, আছে শুধু দায়িত্ব।" যেই দায়িত্ব আজ জয় কে পাথর করে তুলেছে। কেউ না জানুক, আমি জানি। একদিন এই পাথর গলে মোমের মত করে দু'চোখ বেয়ে পড়বে। সেদিন কেউ দেখবে না, জানবেও না। শুধু জানবে জয়, শুধু জয়!!!

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১২:৪৭

মোটা ফ্রেমের চশমা বলেছেন: মনটাই খারাপ করে দিলেন।
ছোট লেখা, কিন্তু ভালো লেগেছে।

২| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১২:৪৯

এস আই সুমন বলেছেন: ভাল লাগলো।

৩| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১:৩০

রক্তিম দিগন্ত বলেছেন:
লেখাটা ছোট। প্রথমদিকে ভালও লাগেনি অতটা।

শেষে এসে...
আসলেই পুরুষ মানুষের কাঁদতে নেই। কাঁদতে চাইলেও কান্না আসেনা।
কিন্তু জগতে একটা মাত্র মানুষই আছে যে পারে একটা পুরুষের চোখকে ভিজিয়ে দিতে। অবশ্য সেই মানুষের কাছে সে পুরুষ হিসেবেও থাকে না, থাকে সেই ছোট বাচ্চাটি হয়েই।

মা তো মা ই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.