![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
শাশুড়ির কাছে জামাই হল পেটের ছেলের চেয়েও এক কাঠি বেশি। সে তাঁর আদরের মেয়ের সারা জীবনের ভাত-কাপড়ের দায়িত্ব নিয়েছে, তার মুখে হাসি ফোটানোর, তার সুখস্বাচ্ছন্দ্যের দায়িত্ব নিয়েছে, তো বছরের ওই একটিমাত্র দিন ‘জামাই ষষ্ঠী’তে তাকে একটু আদর-যত্ন না করলে চলে! অথচ মজার ব্যাপার কি জানেন, শাশুড়ি ঠাকরুন জামাইকে নিয়ে আহ্লাদে সব সময় গদগদ হয়ে থাকলেও পোস্টাপিস থেকে সদ্য অবসর নেওয়া বাংলা শার্ট আর শান্তিপুরি ধুতির সঙ্গে পাম্প-শু পরা শ্বশুরমশায়ের মুখের হাসিটা কিন্তু এ ক’দিন আর গুঁড়ো সাবান দিয়ে ঘষে মাজার মতো তেমন ঝকঝক করে না। এর এক এবং একমাত্র কারণ যে জামাই বাবাজির খাওয়াদাওয়া, জামাকাপড় ও জামাইষষ্ঠীর বিশাল তত্ত্বের ফর্দ— তা তো আর বুঝিয়ে বলবার প্রয়োজন নেই। অথচ দেখুন, জ্যৈষ্ঠমাসের কৃষ্ণপক্ষের এই সাবিত্রী চতুর্দশীর তিথিটিতেই নাকি সাবিত্রী তাঁর স্বামী সত্যবানের জীবনভিক্ষা করেছিলেন যমদেবতার কাছে। আর এই লোকায়ত আচারটির মোড়কে মা-ষষ্ঠীর সন্তানবৎসল ইমেজটিকে সামনে রেখে এই দিনটি সারা বাংলার জামাইকুলের কব্জি ডুবিয়ে খাওয়া ও জিনিসপত্র পাওয়ার বাঁধা দিন হিসেবে ক্যালেন্ডারে উঠে গেল
অনেক খাদ্যরসিক গোলগাল শ্বশুরমশাই আছেন যাঁদের প্রেসার, সুগার বা কোলোস্টেরলের ওষুধ টুকটাক চালু হয়ে গিয়েছে। খাওয়াদাওয়ায় এসে গিয়েছে নানা বাধানিষেধ। তেল নয়, ভাজাভুজি নয়, মিষ্টি বাদ— তাঁদের কিন্তু বাজারের উৎসাহ অন্য সুস্থ শ্বশুরদের চেয়ে অন্তত দশগুণ বেশি। এর কারণ কিন্তু সেই প্রাচীন বাংলা প্রবাদটি— ‘জামাইয়ের নামে মেরে হাঁস/ছাঁইগুষ্টি খায় মাস।’ মানে জামাই যতই খাওয়াদাওয়া করুক না কেন তার কিছু ছিটে-ফোঁটা তো বাড়ির অন্য মেম্বারদের পাতেও আসবে। আর যদি এই উৎসবটিও বন্ধ হয়ে যায়, বা এখনকার মতো জামাইকে হাতে থোক টাকা দিয়ে বলা হয়— ‘তুমি বাবা কোনও রেস্তোরাঁয় গিয়ে পছন্দমতো কিছু খেয়ে নিও!’ তবে ওই শ্বশুরবাবাদের পাতে আর ভালমন্দ কিছু পড়ার সুযোগ থাকবে কি! তা ছাড়া বাড়িতে এ ধরনের আচার-অনুষ্ঠান হলে মেয়ে-বউরাও একটু আনমনা থাকে, ব্যস্ত থাকে। সেই সুযোগে চট করে মিষ্টির বাক্স থেকে একখানা রসমালাই বা জড়ো করে রাখা ফিশফ্রাই বা কিমার বড়ার মধ্যে থেকে একখানা টুক করে তুলে নিয়ে ছাতের ঘরে বা পুজোর ঘরের পিছন দিকটিতে চলে গেলেই হল। আর পরের বাড়ির ছেলে, যে এখন প্রায় নিজের ছেলেরই মতো, হাতে করে শাশুড়ির জন্য একখানা দামি তাঁতের শাড়ির সঙ্গে যে মিষ্টির বড় বাক্স আর হাঁড়িটা এনেছে, তা থেকে যদি সোমবচ্ছরে এক-আধখানা চেখেও না দ্যাখা হয়, তবে তারও কি একটু মন খারাপ হবে না! বলুন দেখি!
সুএঃ আনন্দ বাজার
২| ১০ ই জুন, ২০১৬ বিকাল ৪:৫৭
ঢাকাবাসী বলেছেন: জামাইষষ্ঠী আজকালকার এই আক্রার বাজারে অতটা ঘটা করে হয় না মনে হয়! তবু যেটুকু হয়, ভালই লাগে!
©somewhere in net ltd.
১|
১০ ই জুন, ২০১৬ বিকাল ৩:৩০
বিজন রয় বলেছেন: জামাইষষ্ঠী আজকাল কি আর সেভাবে হয়?