![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিজের অজ্ঞতা নিজের কাছে যতই ধরা পড়ছে প্রচলিত বিশ্বাসের প্রতি ততই অবিশ্বাস জন্মাছে!
আহা, কী দিনকাল পড়লো! এতদিন শুনে আসছিলাম, 'গণতন্ত্রের মানসকন্যা' আর 'গণতন্ত্রের মুক্তিদাতা'—এইসব নিয়েই তো আমাদের দেশের রাজনীতির চালচিত্র। কিন্তু সম্প্রতি চরমোনাই পীরের কিছু মুক্তোঝরা বাণী শুনে মনে হচ্ছে, গণতন্ত্রের সংজ্ঞাই পাল্টে দিতে হবে। বিশেষ করে খালেদ মুহিউদ্দিনের টকশোতে হুজুরের সাফ জবাব, "আফগানিস্তান ও ইরানের মতো শরিয়া ব্যবস্থা চাই" এ যেন বাংলা সিনেমার 'হঠাৎ বৃষ্টি'র মতো এক ধাক্কায় সব হিসেব পাল্টে দিলো !
ভাবুন তো, যেই লাউ সেই কদুর মতো বছরের পর বছর ধরে নির্বাচন এলেই যেই রাজনৈতিক ইসলামিক দলগুলো নড়েচড়ে বসে, নির্বাচন শেষ হলেই যাদের কদর শেষ, সেইসব দলের মধ্যমণি আজ গভীর প্রেমের দৃষ্টিতে ইন্টেরিম সরকারের চোখে ধরা দিয়েছেন! আর এর মধ্যে চরমোনাই পীর সাহেব তো নিজেকে 'এলিট প্রেমিকা' ভাবতে শুরু করেছেন। এটা কি আর এমনি এমনি ? এতোদিনের রাজনৈতিক জঞ্জালের মধ্যে হুজুররা এখন 'সংস্কার'-এর মিষ্টি স্বপ্নে বিভোর।
চরমোনাই পীর সাহেব নিজেকে জামায়াতে ইসলামীর পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জনপ্রিয় দল মনে করেন। এবং তার এই ধারণাটা বছরের পর বছর ধরে আওয়ামী লীগ-বিএনপি দু'দলের সাথেই তার 'ভালো রিলেশন' বজায় রাখার ফল। অবশ্য, স্থানীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আমলে যখন মাথা ফাটল, তখন গণতন্ত্রের প্রতি 'মোহভঙ্গ' হয়ে নির্বাচন বয়কট করা হয়েছিলো। কিন্তু সেই মোহভঙ্গ কি আর স্থায়ী হয়? ক্ষমতার নেক নজর আর হাতপাখার বাতাস দেওয়ার প্রতিযোগিতা তো সব যুগেই ছিল! পীর সাহেবও তো বিগত স্বৈরাচারী দলকে বাতাস করে কম হাততালি কুড়াননি!
জুলাই অভ্যুত্থানের পর দেশে যখন নতুন পদ্ধতি, পিআর নিয়ে জোর আলোচনা চলছে, উচ্চকক্ষ-নিম্নকক্ষ নিয়ে যখন রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে চুলোচুলি চলছে, তখন বিএনপিকে চাপের মধ্যে রাখার জন্য ইন্টেরিম সরকার বাকি দলগুলোকে মাঠে নামিয়েছে। আর এই 'চাপ প্রয়োগকারী' দলের মধ্যে চরমোনাই হুজুর অত্যন্ত দক্ষতার সাথে নিজের ভূমিকা পালন করে আসছিলেন। তবে খালেদ মুহিউদ্দিনের টকশোতে আফগানিস্তান আর ইরানের কথা টেনে এনে হুজুর যে গোলটা দিলেন, তা রীতিমতো ঐতিহাসিক!
গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত হয়ে শরিয়া কায়েম করার স্বপ্ন ! এটা সত্যিই এক অদ্ভুত মিশ্রণ। যেন একদিকে গরম চা, অন্যদিকে ঠাণ্ডা আইসক্রিম – দুটো একসঙ্গে বাঙালির পেটে ডাইজেস্ট হওয়া বেশ কঠিন! যখন শেখ হাসিনার আমলে গণতন্ত্রের জন্য লড়াই চলছিল, তখন চরমোনাই হুজুরকে তো আর সম্মুখ সারির যোদ্ধা হিসেবে দেখা যায়নি। হুজুরের দলের অস্তিত্ব মূলত বিএনপির 'দয়া'তেই টিকে আছে। কারণ শেখ হাসিনা যদি কম্বোডিয়া স্টাইলে বিরোধী দল শেষ করে দিতে পারতেন , তবে চরমোনাই পীরের কতজন লোক গুম হতো বা কতজনের নামে দশটা মামলা পড়তো, তার হিসাব সম্ভবত উনারা দেখাতে পারবেন না।
সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, সংস্কার কমিশনে আর কোনো ইসলামিক দল কিন্তু গণতন্ত্র ব্যতীত অন্য কোনো শাসন ব্যবস্থা চায়নি। চরমোনাই হুজুর দেশকে আফগানিস্তান বানাতে চান, ঠিক আছে। কিন্তু তালেবানরা তো অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করে শরিয়া কায়েম করেছে, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে তারা 'কুফরি ব্যবস্থা' মনে করে। তাহলে পীর সাহেবের কি উচিত ছিল না একই পথ অনুসরণ করা ? একদিকে গণতন্ত্রের সুবিধা নিয়ে সংসদে যাবেন, আর অন্যদিকে শরিয়া কায়েমের স্বপ্ন দেখবেন? এই 'খানিকটা গণতন্ত্র আর খানিকটা শরিয়া' – এই হাইব্রিড মডেল বোধ হয় বাংলার মানুষ এখনো হজম করতে শেখেনি।
আফগানিস্তানের শাসন ব্যবস্থা অধিকাংশ ইসলামিক রাজনৈতিক দলের কাছে ভালো লাগার কারণ নাকি একটাই সেখানে মিডিয়া সেন্সরড! তালেবানদের 'আকাম কুকাম' কিছুই নিউজে আসে না, তাই আফগানিস্তানের মানুষ নাকি সুখে আছে ! বাংলাদেশের মধ্যেও বিগত ১৫-১৬ বছর ধরে এমন একদল মানুষ তৈরি হয়েছে, যারা নিজেদের মত প্রকাশে বাধা পেলে প্রতিবাদ করে, কিন্তু অন্যের মত প্রকাশের প্রতি তাদের কোনো শ্রদ্ধা নেই। চরমোনাই পীরের এই 'ডাবল স্ট্যান্ডার্ড' মনোভাব দেখে মনে হয়, উনি একদিকে গণতন্ত্রের মিষ্টি বাতাসের মজা নিতে চান, আবার অন্যদিকে তালেবানি কঠোরতার ছড়ি ঘোরাতে চান। এ যেন একদিকে গণতন্ত্রের 'হাতপাখা' আর অন্যদিকে শরিয়ার 'আফগানিস্তান'! এই দুই নৌকায় পা দিয়ে পীর সাহেব কতদূর যেতে পারবেন, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
---
০৫ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ৩:৩৩
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: যা যা ঘটছে সব সাজানো ।
২| ০৫ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ২:২৫
কলিমুদ্দি দফাদার বলেছেন: দুনিয়া কোন দিকে যাচ্ছে, সারাবিশ্ব কিভাবে চলছে ওনারা কি সত্যি বুঝে???
বর্তমানে যেখানে সমাজে সমকামীতা, লিভ টুগেদার, মদের
মত বিষয়গুলো নরমাল হয়ে যাচ্ছে, সেখানে
ওনি ক্ষমতার আসলে দেশে শরিয়া আইন চালু করবে?
দেশকে আফগানিস্তান স্টাইলে পরিচালনা করবে।
চরমোনাই, জামাত কি সৌদির গ্রান্ড মুফতির থেকে ও বেশি আল্লাহ ওয়ালী?
সৌদির গান-বাজনা, ক্লাব, কনসার্ট সমাজ ব্যবস্থায় পরিবর্তন ই কি ওনারা জিহাদের ডাক দিয়েছেন?
বাংলাদেশে কি বিচ্ছিন্ন কোন দেশ, পশ্চিমারা কি ইহা জীবনে ও করতে দিবে?
০৫ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ৩:৩৭
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: চরমোনাই সাহেব আওয়ামি আমলে হেফাজত থেকে বেশি সুবিধা পে্যেছেন । উনার নামে মামলা নাই কোনো ।
আপনি যে বিষয় নিয়ে বলছেন সেগুলো দিয়ে আরেকদিন আলাপ হবে ।
৩| ০৫ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ৩:০২
ওমর খাইয়াম বলেছেন:
মুসলিম দেশগুলোকে ধ্বংস করেছে এসব অপদার্থরা।
০৫ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ৩:৩৯
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: মুসলিম দেশ গুলো বেশি ধুকছে ভালো লিডারশিপ না থাকার কারণে। বিভেদ ও আরেকটা কারণ ।
৪| ০৫ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ৩:৫৯
ওমর খাইয়াম বলেছেন:
আমাদেরকে ধ্বংস করেছে আমাদের মিলিটারী, জামাত ও পাকিস্তান মিলে; ৩টিই ফ্যানটিক মুসলমানদের প্রতিষ্ঠান
০৫ ই জুলাই, ২০২৫ সকাল ৯:৪৮
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: বাংগালি মুসলিম এমন নয় । আপনি যেটার কথা বলছেন সেটা আমদানি করা হয়েছে।
৫| ০৫ ই জুলাই, ২০২৫ সকাল ৯:০৮
শেরজা তপন বলেছেন: একদিকে খারাপ নয় উনার মনে যা আছে মুখে তা সরাসরি বলে দিয়েছেন।ভন্ডামি করেননি, এজন্য তার ধন্যবাদ প্রাপ্য। আমরা বুঝতে পারছি, সত্যিকারে কে কি চায়
০৫ ই জুলাই, ২০২৫ সকাল ৯:৫১
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: "তাদের দল এখন পর্যন্ত সংসদে একটি সিটও পায়নি। যদি আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (PR) পদ্ধতি চালু হয়, তাহলে ২-৩টি সিট পেতে পারে। বাংলাদেশের অধিকাংশ ইসলামিক রাজনৈতিক দল এমন মত পোষণ করে যে, গণতান্ত্রিক উপায়ে ক্ষমতায় গিয়েই তারা তা বাস্তবায়ন করবে ।
৬| ০৫ ই জুলাই, ২০২৫ সকাল ৯:৫৮
কামাল১৮ বলেছেন: ইউনুসের মতো মতলবাজ না।যা মনে আছে তা বলে দিয়েছেন।এবার পছন্দ আপনাদের।
০৫ ই জুলাই, ২০২৫ সকাল ১০:০২
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: সারাদিন দোয়া ইউনুস পড়বেন । শেখ হাসিনার সাজা দেয়া শুরু হয়েছে। ৬ মাসের জেল ।
৭| ০৫ ই জুলাই, ২০২৫ সকাল ১০:৫৩
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
বাংলাদেশের সর্বাধিক উচ্চারিত বাক্য- আগেই ভালো ছিলাম।
©somewhere in net ltd.
১|
০৫ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ২:১০
ওমর খাইয়াম বলেছেন:
পিআর, মিআর, বিয়ার, যা হওয়ার হবে, রেজল্ট দিবে মিলিটারী।