![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।
গতকাল সালাহউদ্দিন আহমেদ ঐকমত্য কমিশনের আলোচনা থেকে ওয়াক আউট করলেন কেন?
উত্তর:
এক কথায় বলতে গেলে, রাষ্ট্র পরিচালনায় দ্বৈত-শাসন ব্যবস্থা যাতে না আসে, ঠিক এজন্যই গণতান্ত্রিক রীতি অনুযায়ী সালাহউদ্দিন আহমেদ ওয়াক আউট করেছেন৷
দ্বৈত-শাসন ব্যবস্থা বলতে কী বোঝায়?
একটি রাষ্ট্র বলতে আমরা প্রধানত সরকারের নির্বাহী বিভাগকেই বুঝি। একটি রাষ্ট্র তিনটি প্রধান অঙ্গ দিয়ে চলে- বিচার বিভাগ, আইন বিভাগ (সংসদ) ও নির্বাহী বিভাগ।
সংসদ আইন তৈরি করে,
আদালত আইনের বৈধতা পরীক্ষা করে,
আর নির্বাহী বিভাগ সেই আইন বাস্তবায়ন করে।
রাষ্ট্র পরিচালনার এই বাস্তবতা অনুযায়ী, নির্বাহী বিভাগই হলো জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার- যারা মন্ত্রীসভা গঠন করে, প্রশাসন চালায়, পলিসি নেয়, বাজেট করে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করে, আমলাতন্ত্রকে পরিচালনা করে।
এই নির্বাহী বিভাগ যদি শুধু নামে থেকে যায়, আর বাস্তবে তাদের কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা না থাকে- তাহলে সেটা হবে কেবল 'কাগুজে বাঘ'।
নির্বাহী বিভাগে আসীনরা যদি ক্ষমতাহীন হন, কাগুজে বাঘ হন, তাহলে আমলা ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কেন নির্বাহী বিভাগের কথা মেনে চলবে?
উত্তর হলো- চলবে না। যেটা আরো পরিষ্কার উদাহরণে দেখা যায় বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বেলায়। প্রায় ১ বছর ক্ষমতায় থাকার পরেও এই সরকারকে পুলিশ এবং আমলারা পাত্তা দেয় না। কারণ, এই সরকার তথা নির্বাহী বিভাগ একটি কাগুজে বাঘ, তাদের ক্ষমতা প্রয়োগের সক্ষমতা নেই৷ ফলতঃ অভিযোগ উঠেছে, এই সরকারের মধ্যেই রয়েছে আরো একটি সরকার, যা মূলত দ্বৈত শাসনকেই ইঙ্গিত করে।
তাহলে, একটি নির্বাচিত সরকারের হাতে যদি খুব কম ক্ষমতা দেওয়া হয়, এবং ক্ষমতার বড় একটি অংশ যদি বিভিন্ন কমিটি বা কমিশনকে ন্যস্ত করা হয়- তাহলে নির্বাচিত সরকারের আমলেও দ্বৈত শাসন চলবে। ফলাফল- ঐ নির্বাচিত সরকার দুর্বল হওয়ায় আরো বিতর্কিত হবে৷
গতকাল ঐকমত্য কমিশনের যে আলোচনা ছিলো, তার অন্যতম এজেন্ডা ছিলো 'সরকারি কর্মকমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক এবং ন্যায়পাল' নিয়োগের বিধান সম্পর্কিত।
কমিশন প্রস্তাব করেছে, এসব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের জন্য একটি কমিটি গঠন করতে হবে। সালাউদ্দিন আহমেদ এই জায়গাটাতেই আপত্তি করেছেন। কারণ, সরকারে থাকবো আমি, অথচ আমি আমার টিম কাদের নিয়ে সাজাবো- তা নির্ধারণ করার ক্ষমতা আমার থাকবে না! এটা একটা অযৌক্তিক আইডিয়া।
বারবার একটা অজুহাত দেওয়া হচ্ছে যে ফ্যাসিবাদ ফিরে আসবে। অথচ, নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য ঐকমত্য কমিশনের সকল প্রস্তাব মেনে নেওয়া হলো৷ কেউ ১০ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবে না, সেই প্রস্তাবও মেনে নেওয়া হলো। কিন্তু, তারপরেও যদি নির্বাহী বিভাগে হাত দিতে হয়, তা মেনে নেওয়ার কোনো যৌক্তিক কারণ থাকে কী?
বিচার বিভাগকে বলা হয় গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ। আমরা বিচার বিভাগ সংস্কার করলাম। এর অর্থ হলো নির্বাহী বিভাগের বিভিন্ন একশন যদি অসাংবিধানিক বা বেআইনী হয়, তাহলে অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে আদালত সামনের দিনগুলোতে তার জুশিডিয়াল পাওয়ারের মাধ্যমে অধিকতর ভূমিকা রাখতে পারবে। তাহলে নির্বাহী বিভাগকে ক্ষমতাহীন করতে চাওয়ার যুক্তি কি?
নির্বাহী বিভাগে যারা দায়িত্বপ্রাপ্ত হন, তারা প্রত্যেকে জনগণের আস্থায় নির্বাচিত হয়েই তো মন্ত্রী, উপ-মন্ত্রী হন। সেক্ষেত্রে, তাদেরকে সরাসরি জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হয়৷ তাহলে সরকার এবং রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য 'পর্যাপ্ত অথরিটি' আপনি আমাকে দেবেন না, ওদিকে আমার টিম গুছিয়ে দেবে অন্য কেউ আর তার জবাবদিহি করতে হবে আমাকে — এটা কি একটা উদ্ভট আইডিয়া না? সংস্কারের নামে কেন নির্বাহী বিভাগকে প্রোপারলি ফাংশন করতে দিবেন না?
সালাহউদ্দিন আহেমদ আরো বলেছেন, সাংবিধানিক যে প্রতিষ্ঠানগুলো আছে, সেখানে নিয়োগের জন্য আলাদা কমিটি না করে আপনারা শক্ত আইন পাস করেন। তাহলেই তো অনেকটা চেক এন্ড ব্যালান্স চলে আসে।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, সাংবিধানিক ও আইনগত সংস্থাগুলোর নিয়োগে নির্বাহী বিভাগের নিয়ন্ত্রণ সীমিত করা হলে শাসন ব্যবস্থায় ভারসাম্য নষ্ট হবে।
অবশ্যই তা হবে। কারণ, দ্বৈত শাসন চলে আসলে ভারসাম্য বলে আর কিছু তো থাকেই না।
এখন আপনি আরো পরিষ্কারভাবে চিন্তা করুন।
দেশে যদি কেউ ১০ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রী না হতে পারে,
দেশে যদি কার্যকর সার্চ কমিটির দ্বারা তৈরী নির্বাচন কমিশন থাকে, দেশে যদি মুক্ত স্বাধীন বিচার বিভাগ এবং গণমাধ্যম থাকে, দেশে যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা থাকে, দেশে যদি সাংবিধানিক কমিশনগুলোতে নিয়োগের শক্ত আইন থাকে, তাহলে নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা কমানোর আদৌ কি কোনো যৌক্তিকতা আছে? যে বা যারাই নির্বাচিত হোক, তর্কসাপেক্ষে ধরে নিলাম, তারা খুব খারাপভাবে দেশ চালালো। তবুও তো আপনার হাতে ভোট দিয়ে সরকার পরিবর্তন করার অপশন আছে। সরকারের বিভিন্ন সিদ্ধান্তকে আদালতে চ্যালেঞ্জ করার সুযোগ আছে। তো এতো কিছু থাকতে কেন নির্বাহী বিভাগের অথোরিটি কেড়ে নেওয়াটাই একমাত্র সমাধান গণ্য করতেছেন?
কুদরত-ই-এলাহী বনাম রাষ্ট্র মামলায় বিচারপতি মুস্তফা কামাল মন্তব্য করেছিলেন, “আদালতই শুধু সুড়ঙ্গের শেষে একমাত্র আলো নয়।”- তেমনি, নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা কমানোই টানেলের শেষ প্রান্তে থাকা একমাত্র আলোর উৎস না৷
তাই, সংস্কারের নামে দয়া করে দেশটাতে দুর্বল সরকার স্থাপন করার বিদেশী শক্তির সাজেশন চাপায় দিয়েন না।
আপনারা 'নোট অব ডিসেন্ট' দিয়ে একটা সিদ্ধান্ত চাপায় দিতে চান বলেই সালাহউদ্দিন সাহেব ওয়াকআউট করেছেন।
৩০ শে জুলাই, ২০২৫ দুপুর ১:৪১
জুল ভার্ন বলেছেন: সংস্কার কমিশন নামক বিদেশী এজেন্টরা ৭১৫ টা সংস্কার প্রস্তাব করেছে, যার মধ্যে ৬৫০ টা দাবি / প্রস্তাব বিএনপি মেনে নিয়েছে এবং বাকিগুলো কি কারণে মানা সম্ভব না, তাও ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ দিয়েছে।
২| ৩০ শে জুলাই, ২০২৫ বিকাল ৩:৪৭
রিফাত হোসেন বলেছেন: সালাহউদ্দিন আহমেদের ওয়াক আউটের কারণ হিসেবে দ্বৈত-শাসন এড়ানোর যে যুক্তি আপনি দিয়েছেন, তা একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। তবে, পৃথিবীর উন্নত গণতান্ত্রিক দেশগুলোর অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যায় যে, নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতার ওপর একটি সুচিন্তিত নিয়ন্ত্রণ এবং সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বাধীনতা কেবল দ্বৈত-শাসন সৃষ্টি করে না, বরং এটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী, স্থিতিশীল এবং জবাবদিহিমূলক করে তোলে। এটি নিশ্চিত করে যে, ক্ষমতার অপব্যবহার না হয় এবং আইনের শাসন বজায় থাকে, যা দীর্ঘমেয়াদে দেশের উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য। এটি সরকারকে দুর্বল করার পরিবর্তে, এর ভিত্তি মজবুত করে এবং জনগণের আস্থা অর্জন করতে সাহায্য করে।
১ টি বা ১০০০টি বিএনপি মেনে নিয়েছে বা অমুক মেনে নিয়েছে এটা বলা বাহুল্য! মূল কথা হল এগুলো যৌক্তিক কিনা, দেশের জন্য ইতিবাচক কিনা। একটি দল বা সংঘ ভিত্তিক চিন্তা থেকে বের হয়ে, একটি দেশের জন্য ভাবনা আমাদের মঙ্গল ত্বরান্বিত করবে। তবে জিয়ার আদর্শিক বিএনপিকে আমাদের পাশে লাগবে, যে দেশকে সবার আগে priority দিত, তার ধারণা থেকে হারিয়ে যাওয়া বিএনপিকে নয়, ধন্যবাদ।
৩০ শে জুলাই, ২০২৫ বিকাল ৪:৫২
জুল ভার্ন বলেছেন: আপনার মন্তব্যের সারবত্তা আছে। তবে আপনি যে ভাবে সহজ করে বলেছেন, বিষয়টা তত সহজ নয় এবং প্রেক্ষাপটও ভিন্ন। যেসব দেশে দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ আছে সেসব দেশের জনসংখ্যা, শিক্ষার হার, রাজনৈতিক মতবাদ আমাদের দেশের মতো বিচিত্র এবং বৈচিত্র্যময় নয়। রাজনৈতিক মতপার্থক্যের ব্যবধান যৎসামান্য হলেই সহজে মতভিন্নতা এড়িয়ে এক বিন্দুতে পৌঁছানো সহজ হয়। কিন্তু আমাদের দেশের মতো শত শত রাজনৈতিক দলের ক্ষেত্রে সেটা আদৌ সম্ভব নয়। সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবিত দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদের বিরোধিতায় কিছু গুরুত্বপূর্ণ যুক্তি নিম্নরূপঃ
১. গণতান্ত্রিক কাঠামোয় জটিলতা সৃষ্টিঃ
দ্বিকক্ষ সংসদ (Bicameral Legislature) অনেক সময় আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে জটিলতা তৈরি করে। একটি কক্ষে পাস হওয়া আইন আরেক কক্ষে আটকে গেলে রাজনৈতিক অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়।
২. অতিরিক্ত ব্যয় ও প্রশাসনিক বোঝাঃ
দ্বিতীয় একটি কক্ষ পরিচালনা করতে গেলে সরকারকে নতুন অবকাঠামো, স্টাফ, ভাতা, নিরাপত্তা ও অন্যান্য প্রশাসনিক খাতে বিশাল অর্থ ব্যয় করতে হয়, যা বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়াবে।
৩. ক্ষমতার ভারসাম্যে বিঘ্নঃ
উচ্চ কক্ষ (সাধারণত সিনেট বা জাতীয় পরিষদ) অনেক সময় নিম্ন কক্ষের জনপ্রতিনিধিদের উপর অযাচিত প্রভাব বিস্তার করে, যা সরাসরি ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধি ও জনগণের মতামতকে দুর্বল করে দেয়।
৪. ভোটার ও জনসাধারণের বিভ্রান্তিঃ
দুই কক্ষ থাকলে সাধারণ মানুষ কোন কক্ষের প্রতিনিধি কিসের জন্য দায়ী, তা বোঝতে পারে না। এতে রাজনৈতিক সচেতনতা হ্রাস পায় এবং জবাবদিহিতার অভাব তৈরি হয়।
৫. অপ্রয়োজনীয় এলিটিকরণঃ
উচ্চ কক্ষে সাধারণত সমাজের প্রভাবশালী, ধনী, ক্ষমতাবান শ্রেণির লোকদের স্থান দেওয়া হয়। এতে করে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ কমে যায় এবং গণতন্ত্র এলিটদের খেলায় পরিণত হয়।
৬. বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতা উপযোগী নয়ঃ
বাংলাদেশের মতো রাজনৈতিকভাবে তীব্র মেরুকরণ ও দমনমূলক পরিবেশে দ্বিকক্ষ সংসদ বরং ক্ষমতাসীনদের হাতে আরও সুবিধা এনে দিতে পারে, কারণ উচ্চ কক্ষে দলীয় নিয়ন্ত্রণ সহজে প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।
৭. ঐতিহাসিক ও সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা ভঙ্গঃ
১৯৭২ সালের সংবিধান এককক্ষ বিশিষ্ট সংসদ গঠন করেছিল। এটি ছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতিফলন। দ্বিকক্ষ সংসদ চালু করলে সেই মূল দর্শন থেকে সরে যাওয়া হবে।
সর্বপরি, সংবিধান পরিবর্তন করতে হলে সেটা সংসদেই করতে হবে এবং তা সংখ্যাগরিষ্ঠ সাংসদের ভোটের মাধ্যমে। বিএনপি তাদের নোটস অব ডিসেন্টস এ ব্যাখ্যা দিয়েছে। যেখানে বিএনপি সুস্পষ্ট ভাবে বলেছে- বিষয়টা যেহেতু সাংবিধানিক তাই সেটা সংসদেই নিস্পত্তি হতে হবে।
৩| ৩১ শে জুলাই, ২০২৫ সকাল ৯:০১
ইএম সেলিম আহমেদ বলেছেন: সালাহউদ্দিন আহমেদের ওয়াকআউট নিয়ে যেভাবে একতরফাভাবে "দ্বৈত শাসন", "বিদেশি চাপে দুর্বল সরকার" কিংবা "ক্ষমতা হরণ" এর মতো শব্দ প্রয়োগ করে পুরো বিষয়টিকে উপস্থাপন করেছেন, তা একান্তই পক্ষপাতদুষ্ট ও বাস্তবতা বিবর্জিত।
আপনি যে ‘দ্বৈত শাসন’ বা ‘কাগুজে বাঘ’ তত্ত্ব তুলে ধরেছেন, তা আসলে নির্বাহী বিভাগের অযোগ্যতা ও রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব আড়াল করার একটি চিরাচরিত অজুহাত মাত্র। কোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স অর্থাৎ ক্ষমতার ভারসাম্য বজায় রাখার ব্যবস্থাই হলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কেবল একদলীয় কর্তৃত্ব কায়েমের নাম নয়।
কমিটি গঠনের বিরোধিতা কেন অযৌক্তিক:
যে প্রস্তাব নিয়ে সালাহউদ্দিন আহমেদ ওয়াকআউট করেছেন, তা হলো সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসমূহে (যেমন: দুর্নীতি দমন কমিশন, পিএসসি, সিএজি, ওমবাডসম্যান) নিয়োগের জন্য একটি স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ কমিটি গঠনের সুপারিশ।
প্রশ্ন হচ্ছে, এতে দ্বৈত শাসনের কী আসে যায়?
এই প্রস্তাবের মূল উদ্দেশ্যই হলো, নিয়োগে দলীয়করণ ও স্বজনপ্রীতি বন্ধ করা এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করা।
একটি সংসদীয় গণতন্ত্রে যদি প্রধানমন্ত্রীই বিচারক, প্রশাসক ও নিয়ন্ত্রক হয়ে যান, তাহলে সেটাকে তো ‘একনায়কতন্ত্র’ বলা যায়। সেখানে তো জনগণের ভোটের অর্থই তখন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে।
ক্ষমতা নয়, দায়বদ্ধতা জরুরি:
নির্বাহী বিভাগের উদ্দেশ্য যদি হয় কেবল ‘ক্ষমতা কুক্ষিগত করা’, তাহলে সেটা দীর্ঘমেয়াদে দেশের জন্য বিপদজনক। প্রতিষ্ঠানগুলো স্বাধীনভাবে কাজ না করলে, দুর্নীতি ও স্বৈরতন্ত্রই তার শেষ পরিণতি হয়।
যদি নিয়োগে দলীয়করণ চলতেই থাকে, তাহলে আপনি যতই শক্তিশালী সরকার চান না কেন—তাতে কাজের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা বা জনগণের আস্থা অর্জন সম্ভব নয়।
সরকার গঠনের মানে সবকিছু এক হাতে নেওয়া নয়:
এখানে স্পষ্ট করে বলা প্রয়োজন, নির্বাহী বিভাগের কাজ হলো আইন অনুযায়ী প্রশাসন পরিচালনা করা। কিন্তু যখন প্রধানমন্ত্রী বা নির্বাহী শাখা চাইবে আদালত, দুর্নীতি দমন কমিশন, নির্বাচন কমিশন - সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করতে, তখনই তো ভারসাম্য নষ্ট হয়।
একটা উদাহরণ নেওয়া যাক - যদি একজন দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তা পিএসসির মাধ্যমে নিয়োগ পায় এবং তদন্ত করতে গিয়ে দেখা যায়, তাকে নিয়োগ দিয়েছেন সরাসরি প্রধানমন্ত্রী, তখন কি সেই তদন্ত আদৌ নিরপেক্ষভাবে পরিচালিত হবে?
সংবিধানের চেতনা ও বাস্তবতা মেলানো দরকার:
সংবিধান প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষতার নিশ্চয়তা দিয়েছে। একে পাশ কাটিয়ে নির্বাহী শাখার অধীনে সব কিছু নিয়ে আসা মানে সংবিধানের আত্মাকে বিকৃত করা।
আর সালাহউদ্দিন আহমেদ যেভাবে এটিকে "বিদেশি চাপ", "সরকার হরণ" বা “নোট অব ডিসেন্ট চাপিয়ে দেওয়া” হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন, তাতে বরং প্রমাণ হয়, আলোচনা বা সমঝোতার মাধ্যমে সংস্কারের পথে না গিয়ে, সব কিছু নিজের মতো করে চালাতে চাওয়ার প্রবণতাই তিনি বজায় রাখতে চান।
সরকার চাইলে, ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষার মধ্য দিয়েও ভালো প্রশাসন দিতে পারে। শক্তিশালী সরকার মানেই সব ক্ষমতা নিজের হাতে রাখার অধিকার না। বরং শক্তিশালী সরকার মানে - স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও জনস্বার্থে কাজ করার দৃঢ়তা।
তাই ওয়াকআউট করে না এসে, সালাহউদ্দিন আহমেদ যদি আলোচনায় থেকে যুক্তি দিয়ে মত দিতেন, তাহলে সেটা গণতান্ত্রিক শিষ্টাচার হতো। “আমাকে সব সিদ্ধান্ত নিতে দিতে হবে, নয়তো আমি থাকবো না”—এই মনোভাব কখনোই গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে পারে না।
সংবিধান ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো কারো একক দখলের জায়গা নয়, এটা সবারই বুঝতে হবে।
৩১ শে জুলাই, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৯
জুল ভার্ন বলেছেন: আলোচনায় ওয়াক আউট একটি স্বতসিদ্ধ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা। সালাহউদ্দিন আহমদের ওয়াক আউট একটি গতিশীল রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া, যা সংবিধান সংস্কার ও নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিয়ে উদ্বেগ এবং বিষয়টিতে বিতর্ক আছে। পরবর্তীতে আলোচনায় যোগ দেওয়ার পদক্ষেপ আলোচনার প্রতি সম্মান ও অংশগ্রহণের প্রতিফলন। এ অবস্থায়, ওয়াক আউটকে বিচ্ছিন্ন কর্ম না দেখিয়ে অংশ নেওয়ার একটি চিন্তাশীল প্রতিক্রিয়া হিসেবেই বিচার করা যুক্তিযুক্ত।
৪| ৩১ শে জুলাই, ২০২৫ সকাল ১০:৪৭
সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়োগের জন্য একটি স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ কমিটি গঠনের সুপারিশ খুবই যুক্তিযুক্ত একটি প্রস্তাবনা এটার বিরোধিতা করে ওয়াক আউট করা মানে হলো দলীয়করণ ও স্বজনপ্রীতি বন্ধ হবে তাই গোস্যা করে চলে যাওয়া।
৩১ শে জুলাই, ২০২৫ বিকাল ৩:৪২
জুল ভার্ন বলেছেন: সালাউদ্দিন আহমেদ ওয়াক আউট করেছিলেন- সাংবিধানিক বিষয়গুলো সংসদে সিদ্ধান্ত নেওয়া কথা বলে। নির্বাহী আদেশে সংসদীয় কার্যক্রম নেওয়ার অধিকার নাই।
৫| ৩১ শে জুলাই, ২০২৫ বিকাল ৪:০৮
ইএম সেলিম আহমেদ বলেছেন: লেখক বলেছেন: আলোচনায় ওয়াক আউট একটি স্বতসিদ্ধ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা। সালাহউদ্দিন আহমদের ওয়াক আউট একটি গতিশীল রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া, যা সংবিধান সংস্কার ও নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিয়ে উদ্বেগ এবং বিষয়টিতে বিতর্ক আছে। পরবর্তীতে আলোচনায় যোগ দেওয়ার পদক্ষেপ আলোচনার প্রতি সম্মান ও অংশগ্রহণের প্রতিফলন। এ অবস্থায়, ওয়াক আউটকে বিচ্ছিন্ন কর্ম না দেখিয়ে অংশ নেওয়ার একটি চিন্তাশীল প্রতিক্রিয়া হিসেবেই বিচার করা যুক্তিযুক্ত।
যখন কোনো রাজনৈতিক নেতা ওয়াক আউট করেন, তখন তার ওপর একটা অতিরিক্ত দায়িত্বও তৈরি হয়, যেন তিনি বিকল্প যুক্তি ও সমাধান, টেবিলে আনেন। সালাহউদ্দিন সভেব সে কাজটি করেছেন বলেই তাঁর ওয়াক আউটকে বিচ্ছিন্ন কর্ম নয়, বরং চিন্তাশীল অবস্থান বলেই মেনে নেওয়া যেতে পারে। কিন্তু তার বক্তব্যে আরও একটি জিজ্ঞাসা সামনে আসে - বিএনপি নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব বজায় রাখার পক্ষে যুক্তি দিচ্ছে, তবে নিয়োগের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করার ভারসাম্যটা তারা কীভাবে রাখবে? এই প্রশ্নের একটা স্পষ্ট কৌশল বা কাঠামো আমরা এখনো পাইনি।
আমরা চাই না একনায়কতন্ত্র ফিরে আসুক, আবার এটাও চাই না যে, রাষ্ট্র এমন দুর্বল হয়ে পড়ুক যে নির্বাহী বিভাগ শুধু দায় নেয়, অথচ কার্যকরভাবে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে না পারে। কাজেই এখানে একটা ভারসাম্য তৈরি করাই সবচেয়ে জরুরি।
৩১ শে জুলাই, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:১৮
জুল ভার্ন বলেছেন: কেউ চায়না, আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পতনের পর আর কোনো ফ্যাসিবাদ জাতির ঘাড়ে চেপে বসুক।
©somewhere in net ltd.
১|
৩০ শে জুলাই, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৫
স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: সংস্কারের নামে দয়া করে দেশটাতে দুর্বল সরকার স্থাপন করার
বিদেশী শক্তির সাজেশন চাপায় দিয়েন না।
....................................................................................
সহমত
এটাই হবে।
কারন পিছনের শক্তি তাই চায়,
যেমন অকথিত ভাবে ইসরাঈল পরমানবিক বোমা বানায়ে বসে আছে
কিন্ত ইরান যেন শক্তিশালী না হয় সে জন্য প্রয়োজনে যুদ্ধ করতে তারা প্রস্তুত ।