নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বারবার ১/১১!

হুমায়ুন কবীর হুমা

হুমায়ুন কবীর হুমা › বিস্তারিত পোস্টঃ

খেলার নৈপুণ্য আমাদের দৃষ্টিকে নন্দিত করুক!

২৩ শে জুন, ২০১৫ ভোর ৫:৪৩

উপমহাদেশের ক্রিকেট সমর্থকদের আবেগ উদ্দীপনা বিশ্ব ক্রিকেটাঙ্গনের দৃষ্টি কেড়েছে সেই কবে। ক্রিকেট প্রেমী ও সমর্থকদের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেছে এ দেশগুলোর ক্রিকেটে উন্নয়নের ভেতর দিয়ে। এখানকার তিনটি দেশ বিশ্ব আসরের বিজয়ী। ১৯৪৭-এ ভারতবাসীর দীর্ঘদিনের স্বাধীনতার সংগ্রামের ফলাফল শেষাবধি সাম্প্রদায়িক বিষ-বৃক্ষের জন্ম দিয়েছিল ; ভারত-পাকিস্তান। এখানকার মানুষগুলো খাদ্য বস্ত্র বাসস্থান শিক্ষা চিকিৎসা এইসব মৌলিক চাহিদা পূরণের এক দীর্ঘ সংগ্রামে লিপ্ত। এই সব মৌলিক অধিকার অর্জনের ক্ষেত্রে নানা বৈরিতার সাথে সাম্প্রদায়িকতাও বড় বাঁধা হিসেবে ভূমিকা পালন করে আসছে। গোষ্ঠী স্বার্থে সাম্প্রদায়িকতা জিইয়ে রাখা হয়েছে নানা উপায়ে। ভারত- পাকিস্তানের ক্রিকেট সাম্প্রদায়িকতার এক বড় শিকার। দুটি দেশের মধ্যেকার ক্রিকেট খেলাটা কখনোই নেহাত খেলা থাকেনি, এক উগ্র জাতি দ্বন্দ্বে পরিণত হয়েছে এর উদাহরণ অনেক। একটি খেলার জয়-পরাজয় হয়ে উঠেছে একেকটি জাতির মান-অপমানের বিষয়। দেশপ্রেম সুশিক্ষা এখানকার মানুষদের যতটা না জাতীয়তাবাদী করে তুলেছে তার চেয়েও অধিক জাতীয়তাবাদ লক্ষ্যকরা যায় ধর্মীয় পরিচয় এবং একে অপরের বিরুদ্ধ চর্চার ক্ষেত্র সমূহে। এ দুটি দেশ পুঁজিপতি এবং অসুস্হ রাজনীতিকদের ভয়াল থাবায় আক্রান্ত। পুঁজিপতিদের একাংশ অর্থ কামানোর ধান্দা হিসেবে বেছে নিয়েছে ক্রিকেট খেলাটি। আজকাল ভারতীয় ক্রিকেট সেখানকার হেভিওয়েট পুঁজিপতিদের জলসাঘর। ভারতীয় ক্রিকেট এখন বিশাল লাভজনক ব্যবসা। অন্যান্য খেলায় ভারত পাকিস্তান একে অপরের কাছে ধরাশায়ী হলে তা বিষয় না, কেবল ক্রিকেটে পরাজিত হলে এদের জাতীয়তাবোধ আহত হয়। "টিম ইন্ডিয়া" ভারতের ঐতিহ্যবাহী সাধুতাকে বহন করে না, হয়ে উঠে আম্বানি-বিড়লা দের অর্থ বানানোর হাতিয়ার। মৌলিক অধিকার পূরণে ব্যর্থ একটি বৈষম্যপূর্ণ সাম্প্রদায়িক অমানবিক সমাজ কখনোই সুস্হ জাতীয়তাবোধে উদ্বেলিত হতে পারে না। তীব্র জাতীয়তাবাদ সব সময়ই মানবতাবাদ কে আঘাত করে। সুশিক্ষা,দেশপ্রেম এবং বৈষ্যম্যহীন সমাজ ভাবনার ভেতর দিয়ে যে জাতীয়তাবোধ গড়ে উঠে তা সবসময়ই সুন্দর, আর ধর্ম বর্ণ অঞ্চল ভাষা এসব কেন্দ্রিক যে জাতীয়তাবোধ তা কোন না কোন ভাবে মানবিকতাকে আহত করে।

ক্রিকেট খেলা নিয়ে উপমহাদেশে বিভিন্ন সময়ে অনেক অনেক উদাহরন দেখতে পাই যা কিনা সুস্হতার পরিচায়ক নয় । এক খেলায় দেখা গিয়েছিল টানটান মুহুর্তে এক ক্রিকেট প্রেমী স্টেডিয়ামে বসে খেলা দেখছেন না, তিনি দুহাত উচুঁতে জড়ো করে চোখ বন্ধ করে প্রার্থনার ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে ছিলেন খেলা শেষতক! বোতল ছুড়াছুড়ি মারামারি, ক্রিকেটারদের ঘরবাড়ি আক্রমণ, আত্মহনন এসবতো আছেই । পৃথিবীর আর দেশগুলোতে সুধীর,টাইগার মিলন, বা পাকিস্তানী সেই সাদা দাড়ির জোব্বা পড়া মানুষদের মতো এমন সমর্থক দেখা যায় না।
বাংলাদেশের ক্রিকেট উন্নত হচ্ছে জয় করছে মানুষের মন ,এখানেও সমর্থক রয়েছে নানা ধরনের। বাংলাদেশে গড়েপড়তায় অর্ধেক পাকিস্তানের সমর্থক আর অর্ধেক ভারতের, এর পেছনেও কাজ করে ৭১ ভাবনা এবং সাম্প্রদায়িকতা। বাংলাদেশ যখন পাকিস্হানের সাথে খেলে তখন অনেকের মনে ৭১-এর ভাবনা উঁকি দেয়, আবার যখন ভারতের বিরুদ্ধে খেলে তখন অনেকের মনে ধর্ম উঁকি দেয়। ভারতের সাথে চলমান ক্রিকেট খেলায় মিডিয়া জুড়ে নারী পুরুষ সম্মিলিতভাবে 'বাঁশ' ভাবনায় রোমাঞ্চিত যা কিনা ভারতীয়দের সেই মওকা-মওকা নামক অসুস্হতা থেকে এক বিন্দুও পিছিয়ে নেই। আজ আমরা ভারত কে বাঁশ দিচ্ছি, কাল পাকিস্তান কে বেয়োনেট দিচ্ছি এমন আচঁরণ উগ্র জাতীয়তাবোধকে ইঙ্গিত করে। এমন অসুস্হতায় ভারত-পাকিস্তান বছরের পর বছর ধরে আক্রান্ত ।
খেলার নৈপুণ্য আমাদের দৃষ্টিকে নন্দিত করুক, খেলার প্রতিযোগিতা আমাদের ভেতর সুস্হ প্রতিযোগিতার উন্মেষ ঘটাক। খেলা যেন কাউকে অপমান অপদস্তের হাতিয়ার না হয়ে উঠে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.