নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি বাংলাদেশী

তারেক উজ জামান

তারেক উজ জামান › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমরা হিন্দু মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, বাহাই, চাকমা, কুকি, খুমি, বম, সাওতাল সবাই এক বাংলাদেশী পরিচয়ে থাকতে পারব ।

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৩:৫৫

আমার বাড়ী একেবারে ইন্ডিয়া সিমান্তের কাছে । এতটাই কাছে যে আমাদের জমির শেষ প্রান্তে আন্তর্জাতিক সীমানা পিলার অবস্থিত । ৬১ নং মেইন পিলারের এপাশে আমাদের জমি বাংলাদেশ আর অন্য পাশে ব্রিন্দাবন কাকার ইন্ডিয়ান জমি । পাশের জমিতে গঙ্গারামের বিশাল আমবাগান । গঙ্গার আম বাগানের ঠিক পিছনেই BSF ক্যাম্প । ভোর বেলা স্কুল ফাকি দিয়ে কখনো ব্রিন্দা কাকার কাছে খেজুর গুড় অথবা খেজুরের রস খেতাম আর তার গল্প শুনে স্কুলের সময় পার করে বাড়িতে আসতাম । গঙ্গা আমার ছোটবেলার বন্ধু । আম, কদবেল, আর গাবের সময় কখনো স্কুল ফাকি দিয়ে, কখনো, কখনো স্কুল শেষে সোজা গঙ্গার আম বাগানে । কাটা তারের বেড়া ছিলনা তখন । ফলে গঙ্গার সাথে কতবার যে ছিনেমা দেখতে গিয়েছি তার সংখ্যা মনে নেই । আমাদের ঈদ অথবা ওদের জমাই ষষ্ঠী কিংবা দুর্গোৎসব সবসময়ই আমাদের আসা যাওয়া ছিল নিয়মিত ।

এই সময় টাতে দেখেছি কিভাবে বাংলাদেশী হিন্দুরা পুটলা পুটলি বেধে ইন্ডিয়া পাড়ি জমাচ্ছে । মাঝে মাঝে আমি নিজেও ওদেরকে সাহায্য করেছি BSF ক্যাম্প এড়িয়ে যাতে করে নির্বিঘ্নে ইন্ডিয়া চলে যেতে পারে । স্যারের উপদেশ ছিল সর্বদা বিপদ্গ্রস্থকে সাহায্য করিবে । ফরিদপুর, নড়াইল, মুনশিগঞ্জের, টাঙ্গাইলের হিন্দু লোকদেরকেই এ পথ দিয়ে বেশি ইন্ডিয়া যেতে দেখেছি আর স্যারের উপদেশ মেনে চলেছি । এদের অনেকেই নদিয়া জেলার ভাজন ঘাট, মাজদিয়া, কৃষ্ণনগর, দত্তপুলিয়া, শান্তিপুর, বর্ধমানের শ্রিরামপুরে স্থায়ি ভাবে বাড়িঘর করে বসবাস করতে দেখেছি । যাওয়ার সময় সাহায্য করেছি বলে অনেকেই তাদের বাড়িতে দাওয়াত দিয়ে নিয়ে গেছে পরে ।

একসময় এ দেশে সচ্ছল জীবনযাপন করা গৃহস্থ কে ইন্ডিয়া তে গিয়ে দ্বিতীয় শ্রেনির নাগরিকের মত বসবাস করতে দেখে খারাপ লেগেছে খুব। জমিজমা বিক্রির টাকা পয়শার পুটলা করে রাতের অন্ধকারে ভারতে পাড়ি জমিয়ে এখন আর বাংলাদেশে ফেরার অবস্থা নেই । শ্যাম ও গেল কুলও গেল ।

নরেন্দ্র মোদী ( নমো ) শ্রীরামপুরের জনসভায় এই হিন্দুদের কে পুটলা পুটলি নিয়ে ভারত ছাড়তে হুমকি দিয়েছে । শ্রীরামপুর গ্রামে প্রায়ে ২৫ হাজারের উপর তাঁতি আছে যাদের আদি নিবাস টাঙ্গাইল । আমি বেশ কয়েকবার শ্রীরামপুর গ্রামে বেড়াতে গিয়েছি এবং থেকেছি । পশ্চিমবঙ্গের বিখ্যাত ঢাকাই শাড়ি ও টাঙ্গাইল শাড়ি এই গ্রামেই সবচাইতে বেশি তৈরি হয় । এই গ্রামের কয়েকটি জেনারেশন আছে যারা শুধুমাত্র এই কথাটি জানে যে তাদের পূর্ব পুরুষ রা বাংলাদেশী ছিল কিন্তু বাংলাদেশে সম্পর্কে তাদের কোন ধারনা নেই ।

ঐসকল হিন্দুরা আজ বুঝে নিক বাংলাদেশ কতটা নিরাপদ ছিল তাদের বসবাসের জন্য । বিশাল গনতান্ত্রিক রাষ্ট্র ভারতে অসাম্প্রদায়িকতার কথা বললেও বাস্তবে তার চিত্র ভিন্ন । আমাদের দেশের দলকানা চেতনাধারি দালাল গুলি প্রতিবেশি দুই মহিলার ছাগলের ধান খাওয়া নিয়ে চুলচুলি কে ধর্মীয় সংখ্যালঘু নির্যাতনের কাহিনি বানালেও বাংলাদেশীরাই এখন পর্যন্ত বেশি অসাম্প্রদায়িক । এই আওয়ামি দুঃশাসনের আমলে অনেক বেশি পরিমান সংখ্যাগুরু মুসলমানের উপর নির্যাতন হয়েছে, মসজিদের জায়গা দখল করে স্থাপনা তৈরি করেছে, মাদ্রাসা বন্ধ করে ইসলাম ধর্মীয় শিক্ষা বন্ধ করে দেয়ার ষড়যন্ত্র হয়েছে । কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ সাম্প্রদায়িক সম্প্রিতির সাথে থাকতে চায় । এখানে সংখ্যালঘু বা সংখ্যাগুরু বলে কোন কথায় মানুষ বিশ্বাস করে না। এখানে ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সবাই বাংলাদেশী

। আর এ কারনে মোদী কে বলতে চাই । ১৬ মের পর ভারত থেকে কাউকে তাড়ানোর সাথে সাথে বাংলা ভাষাভাষি প্রদেশগুলো যেমন পশ্চিমবঙ্গ, উডিষ্যার পূর্বাঞ্চল, বিহারের পূর্বাঞ্চল, আসাম, মেঘালয়, মনিপুর, ত্রিপুরা ও মিজোরামকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তরের করতে হবে । আমরা হিন্দু মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, বাহাই, চাকমা, কুকি, খুমি, বম, সাওতাল সবাই এক বাংলাদেশী পরিচয়ে থাকতে পারব ।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ ভোর ৪:৩১

প্রবাসী ভাবুক বলেছেন: আমাদের প্রতিবেশী যে কোন দেশের চেয়ে বাংলাদেশই বেশি অসাম্প্রদায়িক এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি যেকোন দেশের তুলনায় বেশি৷

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.