নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন অ্যামেচারের কিছু কথা...

মু.ই.মা ইমন

বাংলাদেশী হওয়ার চেষ্টায় আছি

মু.ই.মা ইমন › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্পিরিচুয়াল ইন্টারপ্ল্যানেট ওয়্যার – ২০১৪

১৪ ই মার্চ, ২০১৪ সকাল ১০:৩২

[প্রখ্যাত হরর লেখক মিলন গাঙ্গুলীকে দেশের কে না চেনে ? পাগলা ফ্যান আমি উনার । :) উনাকে নিয়েই লেখে ফেললাম আমার এবারের ছোটগল্পটা । মিলনদাকে অনুমতিদানের জন্য ধন্যবাদ :) ]

______________________________

খ্যাক খ্যাক – জাতীয় শব্দে ভরে গেল ঘরটা ।



মিটি মিটি আলোতে একটা মাত্র চেয়ার রাখা আছে । তার ওপর বসে থাকা মানুষটার পা দুটো বাঁধা চেয়ারের পায়ার সাথে ।

মানুষটাকে দেখে মোটেও বিচলিত মনে হচ্ছে না অবশ্য । এর কারণ হতে পারে – তিনি তাঁর খোলা হাতদুটো দিয়ে সমানে মাথা চুলকে যাচ্ছেন ।

কোন গুরুতর সমস্যায় পড়ে গেলে মাথা চুলকানো হয়ত ইনার পুরোনো বাতিক !



খ্যাক খ্যাক জাতীয় শব্দটা থেমেছে । তবে তার পরিবর্তে এই মুহূর্তে ‘কুঁ কুঁ’ জাতীয় শব্দ শোনা যায় ।

হাসি চেপে রাখার প্রাণান্ত প্রচেষ্টা আর কি !

বিরক্তিতে মুখ কোঁচকালেন চেয়ারে বসে থাকা বন্দীটি ।



‘সাইলেন্সার বলে একটা জিনিস আছে হে ! গলাতে লাগিয়ে নিও ।’ তিতিবিরক্ত হয়ে বলেই ফেললেন বন্দী ।

জবাবে হাসতে থাকা ভোটকা ভূতটা বিশাল হা করে দেখিয়ে দেয় – সাইলেন্সার একটা ইন্সটল করাই আছে আগে থেকে ।



বাহ বাহ !! সাইলেন্সার সহই যে শব্দ বেরুচ্ছে – না থাকা অবস্থায় না জানি কি অবস্থা ছিল !



গাল চুলকাচ্ছেন এখন বন্দী মানুষটি । এত হাহা হোহো খ্যাক খ্যাক জাতীয় শব্দের মানে কি আছে ?

তিনি নগন্য এক মানুষ বই তো নন ! কিন্তু তাঁকে ধরতে পেরে যেন ফূর্তি লেগে গেছে ভূত-সম্প্রদায়ের !

এই সামান্য পাহারাদার পর্যন্ত হেসে চলেছে সেই কখন থেকে !



পাহারাদার ভূতের দিকে আরেকবার তাকান বন্দী ।

চমৎকার এর চেহারাটি । অনেকগুলো দাঁত মিসিং – অদৃশ্য দাঁতগুলোর স্থানে মাড়ি দেখা যাচ্ছে !

কবরে বেশ কিছুদিন পঁচেছে বোধহয় । তখনই ঝরে গেছে দাঁতগুলো । অর্থাৎ অলস ভূত !

তার ওপর কানে জমে আছে সাত কেজি খৈল । এই ভূত বোধহয় কটন বাড নামক বস্তুটির সাথে পরিচিত নয় – হতাশায় মাথা নাড়েন বন্দী ।

নখের দিকে চোখ পড়তে একবার মৃদু হাততালিও দেন অবশ্য ।



স্রেফ দশটা কোদাল হাতে লাগিয়ে ঘুরছে ভূতটি । মানে – নখের সাইজ ওরকমই ।

ইদানিংকার ভৌতিক ফ্যাশন ? হবে হয়ত ।

বন্দী এই পর্যন্ত গবেষণা করে কাঁধ ঝাঁকালেন অসহায়ের মত । এবং – খুলে গেল ঘরের একমাত্র দরজাটি ।



ভেতরে সৌম্যদর্শন এক ভূতকে ঢুকতে দেখা যাচ্ছে – খুলির অর্ধেকটা নেই ইনার ।

জানালা পেয়ে সেখানে মাথা গলিয়ে উল্লাস নৃত্য করছে ঘিলুগুলো ! ইনি ঘরে ঢুকতেই দড়াম করে বাইরের দিক থেকে লাগিয়ে দেওয়া হল দরজাটি ।

বন্দী বার দুই কাঁধ ঝাঁকালেন বটে আবার – কিন্তু দরজা খুলে যায় না এবার আর ।



কাজেই চমৎকার চেহারার অর্ধেক খুলিবিহীন ভূতের দিকে তাকিয়ে উনাকে একটা ‘থাম্বস আপ’ সাইন দেখিয়ে শুধু বললেন, ‘আপনাকে আজ দুর্দান্ত লাগছে, স্যার !’

ভূতেদের এই সাম্রাজ্যের বর্তমান প্রেসিডেন্ট বাংলা ভাই এই প্রশংসাতে মোটেও গলে গেলেন না ।



‘আপনার জন্য আজকের দিনটি একটি বিশেষ দিন ।’ বাংলা ভাইয়ের মুখ থেকে বাক্যটা বের হতেই তাঁর ভৌতিক মাথার ঘিলুগুলো দ্বিগুণ উৎসাহে নাচানাচি করতে থাকে !

খুক খুক করে একটু কাশেন বন্দী, তারপর একটা ভ্রু উঁচু করে জানতে চান, ‘ডান্স বাংলা ডান্স জুনিয়র – প্রোগ্রামটাকে কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ করে রাখা যায় না ? মানে – নাচানাচি আমার একদম পছন্দ নয় কি না !’

টকটকে লাল চোখে বন্দীর দিকে তাকালেন ভূত প্রেসিডেন্ট । গমগমে গলায় বলেন, ‘আমার স্পিরিচুয়াল ব্যাপারে কোন কথা শুনতে চাই না । আপনার আর কোন বিষয়ে অসুবিধে থাকলে জানাতে পারেন ।’

‘যথাজ্ঞা ! অসুবিধে আরও আছে বৈ কি !’ বিনয়ী ছেলের মতই বলেন বন্দী । ‘সেই রকম বেয়াদব একপাল সিকিউরিটি গার্ড পুষছেন যে ! এদের সরানো যায় কি ? মানে, আমি বলছিলাম আমাকে অবশ্যই নজরদারীতে রাখা হোক ! আমি এর পূর্ণ সমর্থন জানাই । তবে ইয়ে -’ কাজের কথা পাড়েন ভদ্রলোক, ‘একটু নম্র, ভদ্র, সভ্য দেখে কোন ভূতকে দাঁড় করিয়ে দেওয়া যায় না কি ? মানে সাইলেন্সার ছাড়া হাসলেও যার হাসিতে আমার কানের পোকারা মার্চ করে বেড়িয়ে পড়বে না – এমন কাওকে ?’



‘ও ! এই কথা !’ মুচকি হাসেন ভূতদের প্রেসিডেন্ট, ‘ওই হাসি আটকাতে পারবেন না কোন সভ্য ভূতেরও ।’ একটু থেমে আবার যোগ করেন তিন, ‘এমন না যে আমরা অকারণেই হাসি । তবে হাসার মত কান্ড থাকলে হাসি চাপতে পারি – তেমন ঋষি এখনও হই নি হে !’

‘হাসার মত কান্ড আমি কি ঘটালুম ?’ বেকুবের মত তাকিয়ে থাকেন এবার বন্দী ।

‘হেহ হে ! ঘটান নি আবার ? দেশবরেণ্য হরর রাইটার মিলন গাঙ্গুলীকে পাকড়ে ফেলেছে একপাল নগন্য ভূত । খুব তো লেখেছেন আমাদের নিয়ে উষ্ঠুম ধাষ্ঠুম ! এবার দেখা যাবে কত ধানে কত মুড়ি !’



কোঁৎ জাতীয় একটা শব্দ করলেন শুধু মিলন গাঙ্গুলী । আর কি-ই বা করার আছে তাঁর ?

অভিযোগ তো কম গুরুতর না ! এবং সত্যও বটে !

বানিয়ে বানিয়ে কম তো পচান নি রাজ্যের হরর সবসাবজেক্টদের । তাঁর লেখাতে ভূতেরা সরাসরি সম্পৃক্ত হোক বা না হোক – এরা তো হরর ওয়ার্ল্ডেরই বাসিন্দা ।

একেবারেই ফেঁসে গেছেন দেখা যাচ্ছে !



‘শুধু তাই নয় – আপনাকে বেশ করে পিট্টি দেওয়ার জন্য ওই এলিয়েনদেরও ডাউনলোড করে ফেলেছি । কোন এলিয়েন মনে পড়ছে না বুঝি ? ওই যে খাবারের হোটেলে নেমে এসে হোটেলের ম্যানেজারের তাড়া খেয়ে আবার পালিয়ে গিয়েছিল যারা ?’

‘ঘটনা তো সত্য ছিল । আমার অপরাধ কি এখানে ?’ চিঁ চিঁ করে জানতে চান মিলন গাঙ্গুলী নামের দেশবরেণ্য লেখকটি ।

‘অপরাধ হল – ফার্স্ট পারসন ভিউয়ে ঘটনার বর্ণনা দিলেও তো কাহিনী আপনার নয় । সেই অ্যাসিস্ট্যান্ট – যার অভিজ্ঞতা থেকে আপনি নিজের নামে চালিয়ে দিয়েছেন ঘটনা – সেও কিন্তু জলজ্যান্ত এক এলিয়েন ছিল । সেরোকিলা গ্রহের । ওরা আবার মানুষের মতই হয় দেখতে – যাক সেসব কথা । কিন্তু না বুঝে আপনি তাকে মানুষ ভেবেই মেরে দেওয়ার সাহস পেয়েছিলেন কাহিনীটা । ওরা আবার বাংলা পড়তে পারে না তো – তাই এতদিন জানে নি । কিন্তু এবার জানানো হয়েছে । আমরাই জানিয়েছি ।’

নির্মল একটা হাসি দেন বাংলা ভাই ।



মিলনের শরীরে চিকণ ঘাম দেখা দিয়েছে ।

এক ভূতের যন্ত্রণাতেই বাঁচা যাচ্ছে না – সেই কখন থেকে খ্যাক খ্যাক করেই চলেছে এরা । তায় আবার জুটেছে একদল এলিয়েন !

হাতি মারতে গিয়ে লাঠি ভেঙ্গে ফেলবেন – সেটা আগে বুঝলে ইনি কি আর ওদের নিয়ে লেখার দুঃসাহস করতেন ?



‘ওরা কোথায় ?’ চিঁ চিঁ করে জানতে চান মিলন বাবু ।

‘খ্যাক খ্যাক !’ বলেন ভূত প্রেসিডেন্ট । নাকি হাসলেন ?

‘মি. মিলন, ওরা এসেছিল । ওরা সত্যিই এসেছিল । এবং ওরা আসছে !’



শেষ বাক্যে প্রশ্নের জবাব পেয়ে গেছেন মিলন গাঙ্গুলী ।

এলিয়েনরা দেখা যাচ্ছে আসছেই ! আবারও !

অন দ্য ওয়ে এলিয়েন থাকলে মনুষ্যসন্তানের করণীয় কি থাকতে পারে মিলন বাবু জানেন না । কাজেই হাঁড়ির মত মুখ করে বসে রইলেন তিনি ।



নিষ্পাপ চেহারার মানুষটিকে এভাবে হতোদ্যম হয়ে বসে থাকতে দেখে বোধ হয় বাংলা ভাইয়ের ভূতের মায়া হয় ।

‘তবে আপনার জন্য একটি প্রস্তাব ছিল মি. মিলন । মেনে নিন সেটা – এলিয়েন খেদানোর দায়িত্ব আমাদের ।’



ডুবন্ত মানুষ তো স্রেফ খড়কুটো পেলেও আঁকড়ে ধরে । আর এত আস্ত ভূত ।

আবেগে ভূতকে জড়িয়ে ধরেন মিলন গাঙ্গুলী ।

‘হায় হায়’ করে দুই ফিট দূরে সরে যায় ভূত প্রেসিডেন্ট বাংলা ভাই । অস্পৃশ্য মানব জাতীর স্পর্শ পেয়ে যারপরনাই বিব্রত ইনি ।



‘আরেকবার স্পর্শ করবেন তো স্রেফ ঘাড় মটকে দেব – বেয়াদব মানুষ !’ হুংকার ছাড়েন ভূত-প্রেসিডেন্ট ।

মিলনদা একটু হেহে করলেন শুধু । করার আর কি-ই বা আছে ইনার ।



তারপরই চলে আসেন আসল কথায়, ‘আপনার প্রস্তাবটি শোনা যেতে পারে ।’ পরমুহূর্তেই যোগ করেন, ‘ভেবে দেখব মানা যায় কি না !’

কঠিন চিপাতে পড়েও লেখককে নিজের ইগো ধরে রাখতে দেখে মিটিমিটি হাসেন বাংলা ভাইয়ের ভূত ।

‘না মেনে আপনার উপায় নেই হে ! বেয়াদবী তো আর কম করেন নি উনাদের সাথে । আমাদের দিকটা আমরা ক্ষমা করে দিতেই পারি – কিন্তু তাই বলে তো আর উনাদের কথা বলতে পারব না । একেবারে ফেঁড়ে ফেলবে ওরা লেখক ব্যাটাকে ।’



চুক চুক শব্দ করে ‘লেখক-ব্যাটা’র প্রতি সমবেদনা দেখান মিলন গাঙ্গুলী ।

পরক্ষণেই ‘লেখক-ব্যাটা’ যে আর কেউ নয় – স্বয়ং তিনি-ই – সেটা বুঝতে পেরে একেবারে খামোশ হয়ে যান ।

ওদিকে ভূতেদের প্রেসিডেন্ট বাতাসেই বসে পড়েছেন । এই কাজে প্রতিটি ভূতই অতি দক্ষ !



রাতের বেলাতে বাসাতে ফিরেছেন – ঘরে আছে অবিবাহিত কন্যা ? দেখবেন আপনার ছয়তলার ঘরের জানালার সামনে বাতাসে বসে আড্ডা দিচ্ছে চার বখাটে ভূত ।

মানুষের আর কিছু বলার থাকে এর পরও ?

অবিবাহিত কন্যারা ভূতেদের দায়ে পড়েই পরপুরুষের হাত ধরে পালিয়ে যান – আর যত দোষ এসে পড়ে সেই ছেলের ওপর ।

যত্তোসব !



‘তা যা বলছিলাম ।’ মুচকি হাসিটা মুখে ফিরিয়ে এনে বলেন বাংলা ভাইয়ের ভূত ।

‘জ্বি জ্বি ।’ মাথা দোলান মিলন বাবু বেশ করে, ‘বলছিলেন, লেখক-ব্যাটাকে একেবারে ফেঁড়ে ফেলবে বদ এলিয়েনগুলো ।’

কটমট করে তাকান ভূত সর্দার, ‘সেটা নয় । সেটা থেকে আপনার রক্ষা পাওয়ার উপায়টি । আমার একটা প্রস্তাব ছিল ।’

‘শুনছি আমি ।’ সিরিয়াস একটা ভঙ্গীমা করে বলেন মিলন ।



‘ইয়ে – প্রতিটি পুরুষেরই একটি সফট স্পট থাকে । ভূতেদের জন্যও সেকথা প্রযোজ্য !’



বাংলা ভাইয়ের একথায় তাঁর চেহারা মোবারকের দিকে ভালোমত আরেকবার খেয়াল করলেন মিলন গাঙ্গুলী । ইনার সফট স্পট কোনটা ? উদ্দাম নৃত্য অব্যবহত রাখা ঘিলুগুলো ? এত ভাবার সুযোগ অবশ্য দেন না বাংলা ভাইয়ের ভূতটি - মুখ খোলেন আবার –



‘প্রতিটি বাবারই এই সফট স্পট তার কন্যা । আমিও এই নিয়মের বাইরে নই, মিলন বাবু । ইস্পাত কঠিন আমি । কিন্তু মেয়ের ব্যাপারে কোন চাওয়া-পাওয়া চলে আসলেই আমি হয়ে যাই অক্ষম ।’

একটু কেশে মুখ খোলেন মিলন গাঙ্গুলী, মানে, মুখ না খুলে পারেনই না তিনি !

‘ইয়ে – ততটা অক্ষম হয়ে যান বলেও তো মনে হয় না । হলে তো আর বাবা হতে পারতেন না ।’



বসা থেকে সোজা হয়ে পড়েন বাংলা ভাই একথায় ।

‘খামোশ ! নেহায়েত আত্মীয়তার একটা ব্যাপার আসছে বলেই কিছু বলছি নে ! নতুবা এই মুহূর্তে আপনার গর্দান উড়ে যেত !’

‘আত্মীয়তা ?’ ঢোক গেলেন লেখক সাহেব ।

‘হুঁ ! আপনার ভূতদের নিয়ে ভুল ব্যাখ্যা করা লেখাগুলো পড়ে মূর্ছা গেছে আমার মেয়ে । বারো দিন আগে ।’

আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন অসহায় বাবা । এই ফাঁকে চট করে ঘটনার নতুন দিকে মোড় নেওয়া অবস্থা দেখেন মিলনদা ।



ঘটনা প্যাঁচ খেয়ে গেছে দেখা যায় !

ভূতেদের অলক্ষ্যে আরেকবার পায়ের বাঁধন পরীক্ষা করলেন মিলন বাবু । নাহ – একেবারে কষে বেঁধেছে !

কিন্তু জরুরী ভিত্তিতে এখান থেকে ভাগা উচিত । ঘটনা জাতীয় সমস্যা থেকে পার্সোনাল সমস্যার দিকে এগুচ্ছে । ভূতের প্রেসিডেন্টের মেয়েকে অখাদ্য খাইয়ে একেবারে অজ্ঞান করে দিয়েছেন তিনি ! এরপরও গর্দানটির যথাস্থানে থাকার ক্ষীণতম সম্ভাবনাও কি আর থাকে ?



ভোঁস করে একটানে সর্দিটুকু ঘিলু পর্যন্ত পাঠিয়ে দেন ভূতেদের নেতা । মানে অনেকটাই সামলে নিয়েছেন আর কি !

‘তা – যা বলছিলাম – ভোঁস !’ আরেকদফা ঘিলুতে আলোড়ন তুলে বলেন ভূতনেতা, ‘মেয়ে আমার বারোদিন ধরে অজ্ঞান – এর মানে বোঝেন ?’ কড়া কন্ঠে বলেন তিনি ।

‘গর্দান উড়ে যাবে আমার ।’ চট করে উত্তর দেন মিলনদা – যেন ‘কৌন বনেগা ক্রোড়পতি’ খেলতেই এখানে এসেছেন তিনি !



‘টঃ’ করে একটা শব্দ হয় কোথায় জানি – যার অর্থ ‘রং অ্যানসার’ !

বাংলা ভাই মুখ কোঁচকান, ‘আরে নাহ ! এর অর্থ প্রেমে পড়েছে আমার নাবালিকা কন্যা ! আপনার ।’



বাঁধা অবস্থাতেই দাঁপাদাঁপি শুরু হয়ে যায় এতে মিলনদার । দেখেও না দেখার ভান করেন ভূতনেতা । বরং বলে দেন তাঁর প্রস্তাব ।

‘আমার মেয়েকে বিয়ে করে ভূতরাজ্যে সসম্ভ্রমে অবস্থান করতে পারেন, মি. মিলন । অথবা আসতে থাকা এলিয়েনদের কোলে করে সেরোকিলা গ্রহে ফিরে যেতে পারেন । আপনার ইচ্ছে এখন ।’



বাতাসের অভাবে হাঁসফাঁস করছেন ওদিকে মিলনদা । তার মাঝেই কোনমতে বলেন, ‘মাদী ভূতের সাথে আমার বিয়ে ঠিক করেছেন ? মাই ঘঃ !’

ভ্রু কুঁচকে যায় ভূতনেতার এবার, ‘কেন আপনার কি মরদ ভূত পছন্দ নাকি ?’

দুই হাত নাড়ান মিলনদা, ‘মোটেও নয় ! মোটেও নয় ! আমি বিবাহিত !’



কিন্তু কোন কথাতেই কোন কাজ হয় না – মিলন গাঙ্গুলীকে টেনে নিয়ে যাওয়া হয় বরের সাজে সাজাতে ।

খ্যাক খ্যাক শব্দ করে সাইলেন্সার লাগানো ভূতটি হাসছে পেছনে – সেটা শুনে দাঁত কিড়মিড় করেন মিলনদা !



*

এলিয়েন কমান্ডো শিপটা ধীরে ধীরে ল্যান্ড করেছে আধঘন্টা হল ।

পেছনের দরজা খুলে যায় – টুক টুক করে নেমে আসে সেরোকিলা গ্রহের চারজন এলিয়েন ।

বাইরে অপেক্ষমাণ পঞ্চম এলিয়েনটি এগিয়ে এসে মাথা নুইয়ে সম্মান জানায়, ‘ব্রীহু – কংড ফাদারমাকার !’



দাঁত মুখ খিঁচিয়ে ঝাড়ি মেরে বসেন কমান্ডার ফাদারমাকার ।

‘এই এলাকাতে অন্তত বাংলা ভাষাটা ব্যবহার করতে পারো ইউনিভার্সাল ট্রান্সলেটরটা অন করে ! বজ্জাত ছেলে কোথাকার । জনতা তোমার ভাষা শুনেই তো বুঝে ফেলবে আমরা এলিয়েন !’



আড়চোখে বিশাল স্পেসশিপটির দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে পঞ্চম এলিয়েন । জনতা বোধহয় চোখ বুজে আছে ? এরই মাঝে রাস্তায় হুড়োহুড়ি পড়ে গেছে বাটির মত স্পেসশিপটা দেখে ! এলিয়েনদের ভয় পায় প্রত্যেকেই ।



ব্যাপারটা লক্ষ্য করেন কমান্ডার ফাদারমাকারও ।

‘দেখেছ ? তোমার কথা শুনে বুঝে নিয়েছে ওরা – আমরা যে এলিয়েন । দিলে তো আমাদের কাভারটা উড়িয়ে ! যতসব অযোগ্য লোক নিয়ে কারবার আমার !’ পিচঢালা রাস্তায় থুতু ফেলেন তিনি ।



পঞ্চম এলিয়েনের নাম কিলি । এ-ই কাজ করত সেই বিখ্যাত হোটেলে । যেখানে মিলন গাঙ্গুলী রাতের বেলাতে একমাত্র কাস্টোমার ছিলেন একদিন । এবং অন্যগ্রহের ওই ওদের আসার ঘটনাটা প্রত্যক্ষ্য করে স্রেফ নিজেকে কিলি নামের এই এলিয়েনের জায়গাতে বসিয়ে চটপট লেখে ফেলেছিলেন ‘ওরা এসেছিল’ ।



কমান্ডারের পেতে দেওয়া দোষটা চুপচাপ নিজের কাঁধে তুলে নিয়ে মুখ গোমড়া করে ফেলে কিলি ।



‘হাতের ভয়ানক অস্ত্র দেখে তোমাদের ঘাবড়ানোর কিছু নেই ।’ রাস্তার আশেপাশে দাঁড়ানো জনতাদের উদ্দেশ্যে বলেন কমান্ডার ফাদারমাকার, ‘এই অস্ত্র শুধু তোমাদের জগতের ভূতেদের ক্ষতি করতে পারে । আমরা শান্তিতে এসেছি । শান্তিতে ফিরে যাব । তবে চুক্তি ভঙ্গ করেছে তোমাদের বেয়াদব ভূতগুলো ! এর পরিণাম ভালো হবে না তাদের জন্য ।’



কথাগুলো শুনে সোল্লাসে চেঁচিয়ে ওঠে জনতা । ভূতদের এরা এলিয়েনদের থেকেও বেশি ভয় পায় !



তাদের দিকে তাকিয়ে বঙ্গবন্ধুর মত চকচকে হাসি উপহার দেন কমান্ডার । তারপর যোগ করেন, ‘এই গ্রহ থেকে একজন মাত্র মানুষকে নিয়ে যাব আমরা সাথে করে ।’



জনতার হাসি এবার থেমে যায় । নিজেদের ভবিষ্যত ভেবে শংকিত এরা ।



‘লোকটার নাম মিলন গাঙ্গুলী । আমাদের নিয়ে যথেষ্ট কুৎসা ছড়িয়েছে ওই ব্যাটা । লাউ দেখেছে – কদু দেখে নি । এবার দেখবে ! তুলে নিয়ে যাব ওটাকে । কারও কোন আপত্তি আছে নাকি ?’



জনতা এবার দ্বিগুণ উল্লাসে ফেটে পড়ে । শুধু একজন সচেতন নাগরিককে দেখা যায় মোবাইল ফোন বের করতে ।

911 এ ডায়াল করছে নিশ্চয় ?



তবে জনতার আনন্দোল্লাস মিলিয়ে যেতে বেশ সময় লাগে ! মিলন গাঙ্গুলীর প্রতি এদের কোন ক্ষোভ আছে সেজন্য – নাকি একমাত্র পৃথিবীবাসী, যাকে এলিয়েনরা হন্যে হয়ে খুঁজছে – সেই লিস্টে নিজের নাম নেই বলে – তা ঠিক জানা গেল না ।



*

‘বিয়েতে আমি রাজি ।’ চট করে ডাহা মিথ্যে একটা কথা বলে দিলেন মিলন গাঙ্গুলী ।

সোল্লাসে লাফাতে থাকে ভূত সমাজের প্রতিটি ভূত ।



বিশাল একটা কবরস্থানের ঠিক মাঝখানে হচ্ছে অনুষ্ঠানটা ।

বাংলা ভাইয়ের ভূতের মেয়ে – ষোড়শী কন্যা হলেও এর চেহারা দেখেই প্রাণ জুড়িয়ে গেছে মিলনদার ।



কি নিদারুণ দুটো চোখ – একটির মণি গলে গেছে । আরেকটি চোখ ফেটে গেছে কোনকালেই ।

সেই সাথে পোকায় খেয়ে ফেলা নাকটার সৌন্দর্য্য দেখবার মত ! যেকোন তরুণ ভূত এই মেয়ের প্রেমে পড়ে যাবে ।



কিন্তু তরুণ মানুষ হিসেবে মিলনদা এই মেয়ের প্রেমে পড়তে পারলেন না ।

ঢোক গিলতে গিলতে তবুও বলতেই হল বিয়েতে তিনি রাজি ।



আকাশে খপ-খপ-খপ জাতীয় শব্দ হচ্ছে । তা শুনেই উঠে দাঁড়ালেন ভূতেদের সর্দার । গলার রগ ফুলিয়ে কমান্ড দেন তিনি, ‘এভরিবডি – গো ব্যাক টু ইয়োর গ্রেভস । এলিয়েন্স আর কামিং । টাইম উই রেসিস্ট !’



রণধ্বনি দেয় ভূতের দল । চট করে একটা করে অস্ত্র বের করে প্রত্যেকে । বোঝাই যাচ্ছে মিলন গাঙ্গুলীকে রক্ষা করতে চেয়েছে এরা তিনি বিয়েতে রাজি হওয়ার পর থেকেই । কাজেই যুদ্ধ তো করতেই হবে ।

বাতাসে বসে পড়ে পজিশন নিতে দেখা যায় অনেককেই ।



একপাশে মিলনদাকে ডেকে নেন ভূত সর্দার, ‘এই লড়াইয়ে তোমার কোন ক্ষতি হবে না । অস্ত্রগুলোর ডিজাইন করা হয়েছে স্রেফ সেরোকিলা গ্রহের প্রাণিদের কথা বিবেচনা করেই ।’

মাথা একটু ঝাঁকান মিলনদা, বুঝতে পেরেছেন । তবুও নিশ্চিত হওয়ার জন্য বলেন, ‘এই অস্ত্রগুলো থেকে যে বুলেট বের হবে তাতে আমার ক্ষতি হবে না বলছেন তো ? কি করে সম্ভব ?’

একটু হাসেন ভূতনেতা ।

শয়তানি হাসি ।

তারপর গলা নামিয়ে বলেন, ‘বিশেষ ধরণের রশ্মী বের হবে । বুলেট নয় । মানবজাতি এবং সেই সাথে আপনি থাকবেন অক্ষত ।’

তারপরই চট করে একটা হ্যান্ডগান গুঁজে দেন তিনি মিলন গাঙ্গুলীর হাতে, ‘বেয়াদব এলিয়েনদের কোন বিশ্বাস নেই । খপ করে এসে ঘাড় ধরে তুলে নিয়ে যেতে পারে আপনাকে । কাছে আসলেই গুলি করে খুলি উড়িয়ে দেবেন !’



লেখক মানুষ !

কাজেই শব্দচয়নের এই ভুলটা না ধরে মিলনদা পারলেন না, ‘উঁহু । উড়িয়ে নয় । কাছে এলেই গুলি করে খুলি পুড়িয়ে দেব ।’

আকাশের দিকে তাকিয়ে ঠা ঠা শব্দ করে পৈশাচিক হাসি হাসলেন মিলন গাঙ্গুলী ।

কাকেরা সিরিয়াল দিয়ে ফায়ার ওপেন করে এই হাসির ধাক্কা সহ্য করতে না পেরে । ভাগ্য ভালো – সেগুলো ছোঁয় না মিলনদাকে ।

নাহলে গোসল ফরজ হয়ে যেত ! কিসের যুদ্ধ !



খপ খপ শব্দ কাছে এসেছে ।

দেখা যায় মিনি-হোভারক্র্যাফটে করে পাঁচজন এলিয়েনকে উড়তে উড়তে এদিকেই এগিয়ে আসতে !



‘আড়ালে চলে যান । নেহায়েত দরকার না পড়লে অস্ত্র ব্যাবহার করবেন না । আর বাইরে আসবেন না । এলিয়েনদের কাছে কি রকম অস্ত্র আছে জানি না আমরা । গাধাগুলো হয়ত বুলেট ইউজ করবে । যেটা আমাদের ভেদ করে চলে যাওয়ার কথা । ভাববেন না । জিত আমাদের হবেই । তবে আপনি বেরুবেন না । বুলেট আপনাকে ভেদ করে বের হবে না – বুঝতেই পারছেন ? হবু মেয়েজামাইকে ভূতেদের কাতারে নিয়ে বিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি আমি আমার মেয়েকে দেই নি !’

মিলনদাকে একটা বড় কবরের গর্তে ঠেলে নামিয়ে দিয়ে এইমাত্র নেমে আসা এলিয়েন কমান্ডারের দিকে এগিয়ে যান বাংলা ভাই ।



বাকি ভূতেরাও বিভিন্ন কবরকে ট্রেঞ্চ হিসেবে ব্যবহার করে আক্রমণ চালাতে চাচ্ছে । অস্ত্র কানের পাশে ধরে চুপচাপ অপেক্ষা করছে ওরা কবরের অন্ধকারে ।



এগিয়ে আসছেন কমান্ডারও । কবরস্থানের ঠিক মাঝে মিলিত হলেন দু’জনে ।

‘হ্যালো ! বাংলা ভাই ভূত দ্যা গ্রেট ।’ হাত মেলানোর উদ্দেশ্যে হাত বাড়ান কমান্ডার । শান্তিপূর্ণভাবে একবার মিলন গাঙ্গুলী লোকটাকে ফেরত চেয়ে দেখার ইচ্ছে ইনার ।

হাত ধরেন বাংলা ভাইয়ের ভূতও, ‘হ্যালো ! কমান্ডার মাদারফাকা-’



কথা শেষ করতে না দিয়েই ভুল শুধরে দেন কমান্ডার দ্রুত, ‘কমান্ডার ফাদারমাকার ।’

‘ওই হল একই কথা !’ মুখ বাঁকান বাংলা ভাই । রাগে টকটকে লাল হয়ে যায় কমান্ডারের মুখ । থোড়াই পরোয়া করেন বাংলা ভাই । কত বোমা মেরেছেন জীবনে ! আর ভূত হওয়ার পর এই লোক এসে রাগ দেখালেই তো হবে না !



‘মিলন গাঙ্গুলী নামের একজন লেখক ছিল । আমাদের হাতে তুলে দেওয়ার কথা তাকে আপনার । কোথায় সে ?’ সোজাসাপ্টা জানতে চান কমান্ডার ফাদারমাকার ।

‘আমার মনে হয় কমান্ডার মাদারফাকা- ইয়ে মানে, ফাদারমাকার – একে অন্যের পিঠ চুলকাচুলকি যথেষ্ট হয়েছে । বুঝতেই পারছেন আপনাদের হাতে আমরা তুলে দিচ্ছি না মিলন গাঙ্গুলীকে । উনি ভূতেদের সম্পত্তি ।’

গোঁ গোঁ করে ওঠেন কমান্ডার ফাদারমাকার, ‘চুক্তি কিন্তু ওটা ছিল না, মি. বাংলা ।’

‘আপনার চুক্তিকে আমি কানি আঙ্গুল দেখাই ।’ দুম করে বলে দিলেন বাংলা ভাইও ।

মেজাজ টং হয়ে যায় এবার কমান্ডারেরও । তিনিও বলে দেন সোজাসাপ্টাই, ‘আপনাদের পৃথিবীকেও আমি কানি আঙুল দেখাই ।’



‘যুদ্ধ ঘোষণা করলাম । কি ছিঁড়ে নেবেন আপনি ? দেখা যাবে !’ ফট করে বলে দিলেন বাংলা ভাই ।

বহুদিন গ্রেনেড মারা হয় না । কাজেই উনার হাত নিশপিশ করার জন্য কাওকে দোষ দেওয়া যায় না ! মরেছেন সেই কবে !

আর গ্রেনেডও মেরেছেন সেই কবে !

‘হাত দিয়েও বাঁচাতে পারবেন না । কি ছিঁড়ে নেব তখনই দেখবেন !’ কর্কশ কন্ঠে বলে বসেন কমান্ডার ফাদারমাকার ।



চট করে ঘুরে দাঁড়ালেন দুই সেনানায়ক ।

ইনারা এরিনার শেষপ্রান্তে পৌঁছে গেলেই শুরু হয়ে যাবে যুদ্ধ – জানা আছে সবারই ।



তরুণ যোদ্ধা কিলি প্রথমবারের মত যুদ্ধে নেমে থর থর করে কাঁপে । তার পিঠ চাপড়ে উৎসাহ দেয় সেরোকিলা গ্রহের অন্য তিন যোদ্ধা ।

পিঠ এই নির্মমতা সহ্য করতে পারে না – কাজেই ভূতেদের ছোঁড়া প্রথম গুলির সাথে সাথেই অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে যায় অসমসাহসী যোদ্ধা কিলি ।



কবরে দাঁড়িয়ে হতভম্ভের মত বাইরের তান্ডবলীলা শুনে যাচ্ছেন মিলন গাঙ্গুলী ।

কোমড় থেকে চট করে পিস্তল বের করে ধাঁই ধাঁই করে গুলি ছুঁড়তে ছুঁড়তে এলিয়েনদের দিকে এগিয়ে যেতে দেখলেন পালোয়ানটাইপ মোটকু ভূতটাকে । এটাকেই রাখা হয়েছিল উনাকে পাহারা দেওয়ার জন্য ।

একমাত্র পাহারাদার কেটে পড়তেই পিস্তলটা বের করে হাতে নেন বিখ্যাত লেখক মিলন গাঙ্গুলী । একেবারে ইন্টারপ্ল্যানেট প্লাস ইন্টারস্পিরিচুয়াল একটা যুদ্ধ – একে তো বাইরের গ্রহের প্রাণিরা যুদ্ধে লিপ্ত, আরেকপক্ষে আছে ভৌতিক অবয়বেরা । এই যুদ্ধে কি মিলন গাঙ্গুলী যোগ না দিয়ে পারে ?



‘লেখক যখন অস্ত্র ধরে নেমে যান যুদ্ধে ... কলম রেখে হাতে তুলে নেন পিস্তল ...’ বিড় বিড় করে বলতে থাকেন তিনি । আজ তাঁর কবি হতে ইচ্ছে করছে খুব ।

গর্ত থেকে মাথা বের করতেই দেখতে পেলেন এই মাত্র খুলি উড়ে গেল একজন সাহসী ভূতের । বীরবিক্রমে গুলি চালাচ্ছে বটে এলিয়েন সম্প্রদায় !



মাথা নুইয়ে ক্রল করে এগিয়ে যাচ্ছেন মিলন – পাশেই একটা সাবমেশিনগান পড়ে থাকতে দেখে পিস্তলটা কোমড়ে গুঁজে ওটা হাতে তুলে নিলেন । M&K কোম্পানির সাবমেশিনগানটার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকান তিনি । পরক্ষণেই বুঝে ফেলেন রহস্যটা । মেছোভূত&কোঁচ কোম্পানির পসার বেশ বেড়েছে দেখা যাচ্ছে !



পাশ থেকে একজন রেসকিউ টীমের ভূত ছুটে এসে মিলনকে সরিয়ে নিতে চান একপাশে । কিন্তু মাথা নাড়েন তিনি ।

‘আপনাকে ভূতজাতি বহুদিন মনে রাখবে । লড়াইটা আপনার নয় – তবুও প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে লড়ে চলেছেন – কৃতজ্ঞ আমরা ।’

ভূতবাহিনীর একজন ব্রিগেডিয়ারকে চেঁচিয়ে এই কথা বলতে দেখে ড্যাম কেয়ার একটা ভাব নেন মিলনদা, ‘ন্যায়ের পথে – সত্যের পথে থাকবই । প্রাণ গেলে যাক সেটা ।’

চারপাশে মারহাবা মারহাবা – রব ভেসে ওঠে । আমলেই নেন না তিনি ।

এমনটা নয় তিনি ভুলে গেছেন এলিয়েনদের অস্ত্র দিয়ে ভূত আর ভূতেদের অস্ত্র দিয়ে এলিয়েন ছাড়া আর কারও ক্ষতি হবে না । তবুও প্রাণের মায়া ত্যাগ করেই ছুটতে ছুটতে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে থাকেন তিনি ।



কানের পাশ দিয়ে সাতরঙ্গা লেজারের বন্যা । দুচারটে রশ্মী ঝোপঝাড় আর পুরোনো কবর ভেঙ্গে ছুটতে থাকা লেখকযোদ্ধা মিলনের গায়েও এসে আঘাত হানে । তবে এগাছ ও গাছের কাভার নিয়ে বেশ নিরাপদেই এলিয়েনদের ঘাঁটির কাছে এসে হাঁটু গেড়ে বসেন তিনি ।



তাকিয়ে বেশ অবাক হন এবারে । তিনটাই ঠাঁয় দাঁড়িয়ে গুলি চালাচ্ছে ! একটাও মরে নি দেখা যাচ্ছে !

চারনম্বরটা কোথায় ?



একেবারে কানের কাছে একটা পিস্তলের নল অনুভব করতেই ঘুরে তাকান মিলন গাঙ্গুলী ।

অল্পবয়েসী একটি ছেলে তাঁর ঘাড়ে পিস্তল ঠেকিয়ে বুক ফুলাচ্ছে !

‘আরে ব্যাটা পিস্তল তো আমার হাতেও আছে – এতে এত বুক ফুলানীর কি আছে রে ?’ বলে একটা ধমকই দিয়ে দেন মিলনদা ।

পিস্তলধারীকে উনি চিনেছেন । এই লোকই সেরাতে হোটেলে ছিল । তৃতীয় একটি গ্রহের এলিয়েন দেখে প্যান্ট খারাপ করে ফেলার জোগাড় হয়েছিল তখন এর । এখন দাঁপাচ্ছে পিস্তল দেখিয়ে, অ্যাঁ?



লেখকের নির্ভীক চোখ দেখে কিলির প্যান্ট আবারও খারাপ হওয়ার জোগাড় হয়ে যায় । তবুও সাহস হারায় না ও, ‘আপনি না ভূতেদের ক্যাপটিভ ছিলেন ?’

‘আরে না !’ ইগো বজায় রেখে বলেন মিলনদা, ‘ওরা আমার নামটা ওদের টর্চার সেলের ক্যাপশনে রেখেছিল এই আর কি !’

‘কমান্ডারের সাথে দেখা করুন প্লিজ ।’ অনুনয় জানায় কিলি । বুঝে গেছে এই লোক মহাপাজি আছে । পিস্তল দেখলে ভয় পাবে না ।

‘এতই কান্নাকাটি করছ যখন – চলো যাওয়া যাক !’ দীর্ঘশ্বাস ফেলেন মিলন গাঙ্গুলী ।

‘আর দয়া করে এটা সাথে রাখুন ।’ একটা পিস্তল এগিয়ে দেয় কিলি মিলনদার দিকে । ‘ভূতেরা যদি আপনাকে আমার সাথে হাঁটতে দেখে নির্ঘাত গুলি করে আপনার খুলি পুড়িয়ে দেবে । কাওকে তাদের অস্ত্র তাক করতে দেখলেই চেপে দেবেন ট্রিগার, ওকে ?’

‘ওকে । করলাম দয়া ।’ বলে হাত বাড়িয়ে পিস্তলটা নেন মিলনদা ।

*

বাংকারে বসে সেরোকিলা-র কমান্ডার বেশ আয়েশ করে ক্যান থেকে সরাসরি বিয়ার টানছেন একটা স্ট্র দিয়ে ।

কিলিকে ঢুকতে দেখে মহানন্দে বললেন, ‘বুঝেছ – বাংলা মদটা একদিন চেখে দেখতে হবে । রোজ রোজ তো আর বিভিন্ন গ্রহ ঘোরা হয় না ।’

‘তা যা বলেছেন !’ বলতে বলতে আরেকটা বিয়ারের ক্যান পটাং করে খুলে ফেললেন মিলনদা ।



‘ওয়াও ! হোয়াট আ সারপ্রাইজ ! মি. মিলন গাঙ্গুলী !’ উঠে দাঁড়িয়ে হাত বাড়িয়ে দেন কমান্ডার ।

হাত মেলান মিলন গাঙ্গুলীও, ‘আর আপনি নিশ্চয় কমান্ডার মাদারফাকার ? আপনার কথা অনেক শুনেছি ।’



মুখ থেকে আনন্দের ঔজ্জ্বলতা ধীরে ধীরে কমে আসে কমান্ডারের । ষাঁড়ের গলাতে বলে ওঠেন, ‘ফাদারমাকার, মি. গাঙ্গুলী । ফাদারমাকার ।’

‘ওই একই কথা !’ আয়েস করে বসে বলেন মি. গাঙ্গুলী ।

তবুও মুখটা কালো করেই রাখেন কমান্ডার ফাদারমাকার ।

‘তারপর ? আপনারা নাকি আমাকে খুঁজছেন ?’ ধূর্ত ভঙ্গীতে বললেন মিলনদা । মাথা ঝাঁকান কমান্ডার সাথে সাথেই ।

‘আমাদের গ্রহের এমপেরর ফ্রিংফ্রিঙ্গি আপনাকে খুঁজছেন বিশেষ করে । উনিই আপনাকে সাথে করে নিয়ে যেতে বলেছেন ।’

‘আমার লেখার জন্য ?’ ভয়ে ভয়ে জানতে চান মিলনদা ।

‘অফকোর্স আপনার লেখার জন্য । আপনার রান্না নিশ্চয় মুখে রুচবে না সেরোকিলা গ্রহের কারও ? আর এই দুটো ছাড়া ঘোড়ার ডিমের কোন কাজটা ভালো পারেন ?’



আরও অনেক কাজই বেশ ভালো পারেন মিলন গাঙ্গুলী – তবে নিজের ঢাক নিজে না পিটিয়ে ক্ষান্ত দেওয়ার ভান করেন তিনি । মেনে নিয়েছেন কমান্ডার ফাদারমাকারের কথা এভাবেই গ্যাঁট মেড়ে বসে থাকেন উনি ।



‘এমপেরর ফ্রিংফ্রিঙ্গির জায়গাতে আমি হলে আপনাকে মেরে ফেলার আদেশ দিতুম । যা লেখেছেন আমাদের নিয়ে বানিয়ে বানিয়ে । মান-ইজ্জত কিছু রাখলা না মিয়া !’ রাগে খাস ভাষার বাংলা অনুবাদ বেড়িয়ে আসতে থাকে ট্রান্সলেটর থেকে ।

‘ইয়ে – তাহলে আমাকে মেরে ফেলার আদেশ না দিলে কি করার আদেশ দিয়েছেন আপনাদের সম্রাট ফ্রিংফ্রিঙ্গি ?’ ভয়ে ভয়ে জানতে চান মিলন গাঙ্গুলী ।



এই সময় বাইরে হাঁকডাক শুরু হয়ে যায় । কিলি একটু দেখেই ছুটে আসে ভেতরে ।

‘স্যার ! প্রতিটা ভূত ছুটে আসছে এদিকে । জেনে গেছে ওরা মিলন গাঙ্গুলী আমাদের ক্যাম্পে চলে এসেছেন !’

‘সীজ ফায়ার ! এখন মিটিং হবে । বাংলা ভাইকে জানিয়ে দাও সে কথা ।’ উঠে দাঁড়িয়ে বলেন কমান্ডার, মিলনদার দিকে ফিরে শুধু বলেন, ‘আসুন – বাইরে যাওয়া যাক । আপনি আমি আর বাংলা ভাই মিলে একটা মিটিং করতে পারি । কি বলেন ? সমঝোতায় আসা যাক ।’



‘কথা শেষ করলেন না তো ।’ মাথা নাড়েন মিলনদা, ‘কি আদেশ আছে সম্রাট ফ্রিংফ্রিঙ্গির ?’

‘আপনাকে জীবন্ত ধরে নিয়ে যাওয়া হবে । আপনার ওপর আমার অনেক ক্ষোভ থাকলেও আপনাকে এক টিপেই মেরে ফেলতে পারছি না – এটা একটা কারণ ।’

দুইজনে হাঁটতে হাঁটতে বাংকার থেকে বের হচ্ছেন এখন একসাথে ।



‘আমাকে দিয়ে উনার লাভটা কি হবে ?’ অবাক হয়ে জানতে চান মিলনদা ।

‘লাভ তো উনার নয় – উনার মেয়ের হয়ে গেছে !’ অর্থপূর্ণ হাসি দেন কমান্ডার ফাদারমাকার ।

‘মানেহ !’ থমকে দাঁড়ান মিলন গাঙ্গুলী বারান্দাটায় – নীচেই দেখা যাচ্ছে ভূতবাহিনীকে । সামনে অপ্রিয় লেখককে দেখতে পেয়ে রণ হুংকার দেয় প্রত্যেকে একযোগে !

‘মানে উনার মেয়ে আপনার প্রেমে পড়েছেন । আর জানেন তো – একটা জায়গাতেই বাবাদের হাত পা বাঁধা...’



আরও কি কি বলতে যাচ্ছিলেন জানি কমান্ডার – তবে তাঁকে হাত তুলে থামান মিলন গাঙ্গুলী ।

‘আগেও শুনেছি একবার ! আমারে কেউ মাইরা লাস না ক্যারে ? শেষ পর্যন্ত একটা এলিয়েন মেয়ের সাথে ...’

জিভ টিভ কেটে লেখকবাবুকে একাকার হয়ে যেতে দেখে অন্য অর্থ ধরেন কমান্ডার ফাদারমাকার, ‘ও ! মেয়ে নিয়ে সমস্যা ? ভাববেন না – সম্রাটের এক ছেলেও আছে । বললেই পারতেন আপনার ছেলে পছন্দ !’



দুই হাত নাড়ান মিলনদা, ‘মোটেও নয় ! মোটেও নয় ! আমি বিবাহিত !’



পরক্ষণেই দুই কোমড় থেকে একটা করে পিস্তল খুলে নেন কুখ্যাত লেখক মিলনদা । কিলি আগে বাড়ছিল বাধা দিতে – তার পশ্চাদ্দেশে যুতসই একটা লাথি হাঁকাতেই নীচের ভূতেদের সমুদ্রে পড়ে যায় ছেলেটা ।

‘তোমাদের বিরুদ্ধে লড়ার অস্ত্র তোমরাই হাতে তুলে দিয়েছ হে ! এখন দাঁপাদাঁপি কোর না বেশি । মারা পড়বে সবাই বেঘোরে !’ ভিলেনের মত হেসে বলেন বিখ্যাত লেখক মিলন গাঙ্গুলী ।



পাশার ছক উল্টে যেতে দেখে থমকে গেছে প্রতিটা ভূত এবং প্রতিটা এলিয়েন ।

হঠাৎই নড়ে ওঠে সবাই একযোগে । একসাথে গুলি চালাচ্ছে মিলন গাঙ্গুলীর ওপর । প্রাণের শত্রুকে এত কাছে পেয়ে ছেড়ে দিতে রাজি নয় ।

হাসি মুখে গুলিগুলো বুক পেতে নেন লেখক । তারপর ধাঁই ধাঁই করে গুলি ছুঁড়তে ছুঁড়তে কুপোকাত করে দিতে থাকেন একদঙ্গল হতচ্ছাড়া প্রাণিকে ।

ঠা ঠা করে হাসতে হাসতে ভীড় ঠেলে বেড়িয়ে যান হরর সম্রাট মিলন গাঙ্গুলী !



*

চোখ মেলতেই অপরূপ দুই চোখে চোখ আটকে যায় কিলির ।

ওহ – এত সুন্দর কেন ?

কি নিদারুণ দুটো চোখ – একটির মণি গলে গেছে । আরেকটি চোখ ফেটে গেছে কোনকালেই ।



প্রথমবার দেখাতেই প্রথমবারের মত প্রেমে পড়ে যায় অল্পবয়েসী সেরোকিলিয়ান যোদ্ধা ।



*

বইমেলা ২০১৫ ।

সেবা প্রকাশনীর স্টলে পাওয়া যাচ্ছে মিলন গাঙ্গুলীর নতুন বই ‘স্পিরিচুয়াল ইন্টারপ্ল্যানেট ওয়্যার – ২০১৪’ ।

এবারের বই মেলাতে এই বইটাই সবচেয়ে হিট !



প্রথম একঘন্টার মাঝেই তো প্রথম প্রকাশ শেষ – তারওপর দুই লাখ এগারহাজার কপি বের করার অর্ডার পেয়েছেন তাঁরা ।

মানি অর্ডার, ভিপিপি – যে যেভাবে পারছে নিতে চাইছে এই বইটা ।

স্বাভাবিক – দেশে লোক আছে আঠার কোটি । ভালো জিনিসের কদর হবে না ?



মিলন গাঙ্গুলীর নতুন বইটার এক কপি মাটিতে ছুঁড়ে ফেলে দিল কেউ । অবাক হয়ে সেদিকে তাকায় রাস্তার লোকেরা ।

তারপর একযোগে ঝাঁপিয়ে পড়ে বইটিকে নিজের আয়ত্ত্বে আনার জন্য । এই জিনিস মুফতে পেয়ে গেলে কেউ ছাড়ে ?



এই মাত্র ছুঁড়ে ফেলা বইটির দিকে তাকিয়ে নাক টানেন কমান্ডার ফাদারমাকার । মিশনে ব্যর্থতার জন্য এই গ্রহেই নির্বাসন দেওয়া হয়েছে তাঁকে !



*

পরিশিষ্টঃ



চলুন একটু অতীতে ফিরে যাওয়া যাক ।



‘হাতের ভয়ানক অস্ত্র দেখে তোমাদের ঘাবড়ানোর কিছু নেই ।’ রাস্তার আশেপাশে দাঁড়ানো জনতাদের উদ্দেশ্যে বলেন কমান্ডার ফাদারমাকার, ‘এই অস্ত্র শুধু তোমাদের জগতের ভূতেদের ক্ষতি করতে পারে । আমরা শান্তিতে এসেছি । শান্তিতে ফিরে যাব । তবে চুক্তি ভঙ্গ করেছে তোমাদের বেয়াদব ভূতগুলো ! এর পরিণাম ভালো হবে না তাদের জন্য ।’



কথাগুলো শুনে সোল্লাসে চেঁচিয়ে ওঠে জনতা । ভূতদের এরা এলিয়েনদের থেকেও বেশি ভয় পায় !



তাদের দিকে তাকিয়ে বঙ্গবন্ধুর মত চকচকে হাসি উপহার দেন কমান্ডার । তারপর যোগ করেন, ‘এই গ্রহ থেকে একজন মাত্র মানুষকে নিয়ে যাব আমরা সাথে করে ।’



জনতার হাসি এবার থেমে যায় । নিজেদের ভবিষ্যত ভেবে শংকিত এরা ।



‘লোকটার নাম মিলন গাঙ্গুলী । আমাদের নিয়ে যথেষ্ট কুৎসা ছড়িয়েছে ওই ব্যাটা । লাউ দেখেছে – কদু দেখে নি । এবার দেখবে ! তুলে নিয়ে যাব ওটাকে । কারও কোন আপত্তি আছে নাকি ?’



জনতা এবার দ্বিগুণ উল্লাসে ফেটে পড়ে । শুধু একজন সচেতন নাগরিককে দেখা যায় মোবাইল ফোন বের করতে ।

911 এ ডায়াল করছে নিশ্চয় ?





‘হ্যালো ?’ কিশোর পাশার নিষ্কম্প কন্ঠটা শোনা যায় ওপাশ থেকে । আগামী কাল রুয়েটে ইন্টিগ্রেশনের ওপর ক্লাসটেস্ট আছে – সেগুলো নিয়েই ব্যস্ত ছিল ছেলেটা ।

‘কেপি ভাই ! আমি আরিয়ান বলছি । মিলনদার পাগলা ফ্যান । Melon Gunguly Fan Club গ্রুপটাতে মাঝে মাঝে আমাদের কথা হয় ।’ পরিচয় দেয় আরিয়ান শুভ ।

‘ও হ্যাঁ । আরিয়ান ভাই । কেমন আছেন ?’ কিশোর জানতে চায় বেশ খুশি খুশি গলাতে ।

‘ভাই , আমি তো ভালোই । কিন্তু মিলনদার তো টান্ডি বাজবে দেখছি !’

‘তাই নাকি ?’ আৎকে ওঠে কিশোর এবার, ‘কি হয়েছে ঠিক বলুন দেখি ?’

‘এলিয়েনের দল এসেছে উনাকে আচ্ছামত প্যাদানী দিয়ে সহবত শেখাতে ! সাথে গাদা গাদা অস্ত্র !’

‘হায় অবুঝ !’ হতাশায় মাথা নাড়ায় কেপি । ‘আজও শেখে নি তারা ? অসির চেয়ে মসী বড় !’

‘ভাই – কথা সত্য । কিন্তু উনারা কিন্তু অসি নিয়ে আসেন নি ! ভারী ভারী অস্ত্র -’ আবার বলতে যাচ্ছিলেন আরিয়ান তবে তাকে থামায় কেপি ।

‘আরে সেজন্যই তো আমি কী-বোর্ড নিয়ে বসব ! গানবোট থেকে কী-বোর্ড বড় মিয়া । ফোন রাখেন । আর শোনেন, স্ক্রিপ্ট যতটুকু আছে ওটা আমাকে আপলোড করে দেন । বাকিটা আমি লেখছি । ঘন্টায় বারোশো শব্দ লেখতে পারব – এর বেশি সম্ভব না । এর মাঝে কাহিনী যথেষ্ট ঘুরাতে না পারলে কিন্তু মারা পড়বে মিলন দা । কাজেই – ফোন টোন দেবেন না কেউ । লেট মি সেইভ হিম !’



কচ করে লাইনটা কেটে দেয় কেপি ।

কানে তুলে নেয় হেডফোন – হাতে কীবোর্ড ।

সোজা হয়ে বসে ঝড় ওঠায় ও সেখানে – কান ফাটিয়ে বেজে চলেছে একটি নজরুল সঙ্গীতের বারোটা বাজানো মিলা ভার্সন !



‘শুকনো পাতার নূপুর পায়ে নাচিছে ঘূর্ণিবায়

জল তরঙ্গে ঝিলিমিলি ঝিলিমিলি ঢেউ তুলে সে যায় ... ’



কেপির ঠোঁটের কোণে একটা মুচকি হাসি !



[বিভ্রান্তি কাটানোর জন্য ফেসবুক লিংক দিয়ে দিলাম :) Click This Link ]

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.