নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ইসলামি চিন্তাবিদ

ইসলামি চিন্তাবিদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

নাস্তিক ও ইসলামবিরোধীদের প্রশ্নোত্তর

০৭ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:১৪


পর্ব-৬


নাস্তিকঃ- মুসলিমরা দ্বারি রাখে যা দেখতে অনেকটা ছাগলের মত লাগে তাই তাদেরকে আমরা ছাগু ডাকি। মুসলিমদের ছাগুমার্কা দ্বারির জন্য কোন ভাল মেয়ে তাদের বিয়ে করতে চায় না।

আস্তিকঃ- দাড়ি কি সৌন্দর্যের প্রতীক নাকি অসুন্দরের প্রতীক এটা নিয়ে বিশদ আলোচনা করতে হয় যা সময় থাকলে পরে করা যাবে কিন্তু নাস্তেকদের চোখে যদি দাড়িওলাকে ছাগলের মত লাগে তবে যে দাড়িওলার চোখে দাড়িবিহীন নাস্তেকদের বান্দরের মতন লাগে সেটা কিন্তু তারা জানে না কারন দাড়িওলারা ধার্মিক হওয়ায় তা বলে না। আর দাড়ি হল সেই এক ধরনের সৌন্দর্য্য যেরকম সৌন্দর্য্য চোখের ভ্রু এবং মাথার চুলের মাঝে রয়েছে । আর বর্তমান এ বেশীর ভাগ মেয়েরা স্বাভাবিক ভাবে ঠিকই দাড়িওয়ালা পুরুষদের স্ত্রী হতে চায় না এর কারন হল রুচি বিকৃত হয়েছে পরিবেশ এবং মিডিয়ার প্রভাবে- সংক্ষেপে বলি মেয়েরা সবচেয়ে বেশী পরিবেশের সাথে প্রভাবিত হয়ে পরে। তাই পশ্চিমা সভ্যতার প্রভাবে যখন সমাজের ধনী , শিক্ষিত জনেরা যখন দাড়িবিহীন হওয়া শুরু করল এবং পাশাপাশি নারীদের স্বপ্নের পুরুষ মডেলগুলোও যখন পর্দায় দাড়িহীন দেখতে শুরু করল এবং তা দেখে দেখে আমাদের মাঝে যারা সুদর্শন যুবক ছিল তারাও দাড়িহীন হল তখন কিন্তু সমাজে সুদর্শন যুবকে এমন ভরপুর হয়ে গেল যেন মনে হতে লাগল সুদর্শন যুবক মানেই দাড়িহীন যুবক বা নায়ক মার্কা যুবক অথবা আধুনিক যুবক আর ঠিক তখন থেকেই ধীরে ধীরে নারীদের মাঝেও দাড়িহিন পুরুষকে সুদর্শন মনে হতে লাগল অথচ এর পূর্বে দাড়িহিন পুরুষকেই কুৎসিত ভাবা হত । এমনকি যদি এখনও পরিবেশ সম্পুর্ন নিয়ন্ত্রন না করেই শুধুমাত্র সিনেমার সমস্ত নায়কদের মুখেই লম্বা লম্বা দ্বারি রাখা শুরু হয় তবে আগামী ১৫ বছর পর দেখা যাবে বেশীরভাগ নারীরাই দাড়ি ছারা বিয়ে করছে না এমনকি স্বামীদেরকেও জোর করে লম্বা দাড়ি রাখায় উতসাহিত করছে । আর বর্তমানে বেশীরভাগ নারীরা সব দাড়িই নয় শুধুমাত্র সুন্নতি দাড়ি বা লম্বা দাড়ি অপছন্দ করা শুরু করেছে। সেটার পিছনে অবশ্য লম্বা প্লানিং রয়েছে যা এই স্বল্প পরিসরে বলতে চাচ্ছি না।
কিন্তু কিছুদিন হল আমেরিকার এক জরীপে দেখা গেছে বেশীরভাগ নারীরাই ছেলেদের মুখে খোচা খোচা এর চাইতে আরেকটু বড় দাড়ি পছন্দ করে এবং এদের প্রতি কামও বেশী অনুভব করে দাড়িহীনদের চাইতে। আর মোটামুটি বড় দাড়ি হতে আরো লম্বা দাড়িওয়লাদের প্রতি কামভাবের চাইতে বাপ-দাদা, নানার মত দরদী ভাবে । কিন্তু পুরোপুরি ক্লীনসেভ দাড়িহীন যুবকদের খুব কম নারীই সেক্সি ভাবে বরং এদের চেহারা দেখে মেয়েলীভাবাপন্ন অনুভুতিই বেশী আসে । আর যে পুরূষের মুখে দাড়িও নেই এমনকি গোফও নেই তাকে স্বাভাবিক পরিবেশে নারীরা স্মার্ট ভাবলেও চরম মুহুর্তে মোটেও সেক্সি মনে হয় না । তবে এবার চিন্তা করুন এই একবিংশ্ব শতাব্দিতেই যদি আমেরিকার মত দেশে বেশীরভাগ নারীর পছন্দের এই হাল হয় তবে অতীতে কি ছিল ? যখন কিনা মুসলিম-অমুসলিম সকলেই দাড়ি রাখত!

জৈনক নাস্তিকের প্রশ্নঃ- আল কুরান-সেজদাহ 32 13: আমি ইচ্ছা করলে প্রত্যেককে সঠিক দিক নির্দেশ দিতাম; কিন্তু আমার এ উক্তি অবধারিত সত্য যে, আমি জিন ও মানব সকলকে দিয়ে অবশ্যই জাহান্নাম পূর্ণ করব।নৈতিক দৃষ্টিতে এই আয়াতগুলো হলো কোরানের নিকৃষ্টতম। কী আশ্চর্য্যের কথা – আল্লাহ বলছেন তিনি ইচ্ছা করলে সবাইকে সৎ পথ দেখাইতে পারতেন কিন্তু তা করেন না, কারণ তিনি ইচ্ছা করেছেন অধিকাংশ মানুষ দ্বারা জাহান্নাম পূর্ণ করবেন। আল্লাহ কী সাংঘাতিক সাইকোপ্যাথ!!! একটি দীর্ঘ হাদিস আছে. তার সার সংক্ষেপ হলো –আমি-আপনি কে বেহেশতে যাবে আর কে দোযখে যাবে, তার সবই পূর্ব নির্ধারিত! তাহলে আমাদের দোষ কোথায় ?

উত্তরঃ-আপনার এই প্রশ্নের মূল কথা হল- জান্নাতি আর জাহান্নামী ভাগ্যের মাধ্যমে পূর্বনির্ধারিত এমনকি দয়াবান আল্লাহর ইচ্ছাতেই মানুষ পাপ ও পূন্য করে থাকে তবে মানুষের দোষ কোথায় ? স্বল্প জ্ঞানে আপাত দৃষ্টিতে স্রষ্টাকে দয়াহীন নির্মম দোষী মনে হলেও পরিপুর্ন তথ্য জানার পর এই ভুল ভাংতে বাধ্য ইনশাহ আল্লাহ। এই ব্যপারগুলি বুঝতে মৌলিক কিছু জিনিস বিস্তারিত অবশ্যই জানতে হবে যেমন- সমস্তকিছুকেই প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা যায় ১/ স্রষ্টা এবং ২/ সৃষ্টি।
স্রষ্টা সবকিছুই সৃষ্টি করেছেন জোড়ায় জোড়ায়, এমনকি তিনি সমস্ত সৃষ্টি জগতের যে প্রোগ্রামিং করেছেন সেই প্রোগ্রামের মৌলিক তত্ত্বটাও জোড়ার মাধ্যমেই সম্পন্ন করেছেন এক্ষেত্রে অনেকটা কম্পিউটারের বাইনারী(জিরো ওয়ান) ভাষাকে উদাহরন হিসেবে দেখানো যায় অর্থাৎ তিনি সৃষ্টি করার সময় ডাকেন এভাবে যে " তোমরা প্রত্যেকে আস ইচ্ছায়(ওয়ান) অথবা অনিচ্ছায়(জিড়ো)...। তিনি যেহেতু সৃষ্টি জগত মৌলিকভাবে জোড়ায় জোড়ায় প্রোগ্রামিং করেছেন তাই তাঁর সমস্ত সৃষ্টিকুলেই এই জোড়া বিদ্যমান বা প্রত্যেকটিরই বিপরীতমূখী আরেকটি সৃষ্টি করেছেন যেমন- ভাল-খারাপ, নারী-পূরুষ, রাত-দিন, সুখ-দুঃখ, সুস্থ –বিকালংগ, ধনী-গরীব, সুন্দর-অসুন্দর, আসমান-জমীন, জীব-জড়, এমনকি পরমানুর মৌলিক কাঠামোতেও দেখা যায় মাঝখানে পজিটিভ(স্থায়ী কনা প্রোটন নিট্রনের কারনে) আর চারপাশে নেগেটিভ চার্জ(স্থায়ী কনা ইলেক্ট্রন কারনে)।শুধু তাই নয় পার্টিক্যাল ইলেমেন্ট- কোয়ার্ক, ল্যাপ্টন,ফোর্সের ক্ষেত্রেও একই সুত্র লক্ষ্য করা যায় অর্থাৎ আরো গভীরে গেলেও দেখা যাবে যে দুই ধরনের বিপরীতধর্মী এনার্জীর দ্বারা ভারসম্য বিরাজ করছে। ঠিক একইভাবে আল্লাহ সুবহানাতায়ালা ইহকাল-পরকাল,জন্ম-মৃত্যু, বিশ্বাসি-অবিশ্বাসি, জান্নাত-জাহান্নাম ইত্যাদি সৃষ্টি করেন। এখন আপাত দৃষ্টিতে মনে হতেই পারে যে তিনি কেন শুধুই জান্নাতি সৃষ্টি করলেন না যেহতু তিনি ইচ্ছা করলে সবই করতে পারেন।
এটা সত্য যে তিনি শুধুই জান্নাতসহ শুধুই ভাল মানুষই সৃষ্টি করতে করতে পারতেন আর যদি করতেনই তবে মোটেও ভালকিছু হত না তাই তিনি এমনটা করেননি যা আমাদের স্বল্পজ্ঞানেও বুঝতে পারি।আল্লাহ সুবঃ শুধুই ভাল মানুষসহ শুধুই জান্নাত সৃষ্টি করলে তাঁকে শুধুমাত্র ঐ দুটি কাজ করেই ক্ষান্ত হওয়া সম্ভব ছিল না বরং সৃষ্টি জগতের সমস্ত কাঠামোই পরিবর্তন করতে হত উদাহরনস্বরুপ- তখন শুধু ভাল জিনিস এবং ভাল কর্মেরই অস্তিত্ব থাকতে হত ফলে দুনিয়াতে কোনই খারাপ বিষয় না থাকায় ভালই যে ভাল তা কেউই অনুভব করতে পারত না ফলে কারও কোনকিছুই ভাল লাগত না , এক্ষেত্রে একটি উপমা দেই " আলো কয় অন্ধকাররে ভাই তুমি বেজায় কালো, কালো কয় আলোরে তাই তো তুমি আলো "। শুধু তাই নয় ক্ষুধা না থাকায় খাদ্য খেয়ে কেউই পরিতৃপ্তি পেত না, বিস্বাদ না থাকায় কোনকিছুতেই কেউ স্বাদ অনুভব করতে পারত না, খারাপ মানুষ না থাকায় কেউ কাউকে কষ্ট দিত না আর কষ্ট না থাকায় কেউই আনন্দ কি জিনিস তা বুঝতেই ব্যার্থ হত ঠিক একইভাবে জাহান্নামী বলতে কেউ না থাকায় দুঃখের কোন বিষয়ই ঘটত না আর তাই দূঃখের এক্সপেরিন্ট মানুষের না থাকায় সুখ যে ভালকিছু তা বুঝতে পারত না ফলে মানুষের অনুভূতি নিউট্রাল থাকত। এমন এক ধরনের নিউট্রাল পানসে জীবন তৈরী হত যা অনেকটা ঘুরেফিরে জাহান্নামে জ্বলার কাছাকাছিই।
আর উক্ত ব্যাপার গুলোই যে ঘটত তা আমরা বুঝি অনেক বাস্তবতা পর্যবেক্ষন করে যেমন- যে সারাদিন শুয়ে বসে দিন কাটায় সে বিশ্রামের কোন মজা অনুভব করতে পারে না প্রত্যহ পরিশ্রমকারী ব্যাক্তির মত, নিজেকে কোনসময়ই ক্ষুধায় থাকতে দেয় না এমন ব্যাক্তির চেয়ে যে ক্ষুধার্ত হয়ে খাবার খায় সে স্বাদ বেশী পায় অর্থাৎ রোজাদার ব্যাক্তির ইফতার খেয়ে যে মজা পায় তা কি তার পাশে বসা পেটভর্তি ব্যাক্তি পাবে? মোটকথা প্রত্যেক প্রানীর ক্ষেত্রে বিশেষ করে মানুষের ভাল লাগা খারাপ লাগা নির্ভর করে বিপরীতমুখী বিষয়ের সাথে তুলনা করে আর এই ব্যাপারটি শুধু ইহকালের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় পরকালের ক্ষেত্রেও একইরকম
যেমন- জান্নাতীদের সুখভোগ বেশী অনুভব হবে দুইভাবে-১মত দুনিয়ার অশান্তির কথা স্মরণ করে বর্তমান জান্নাতের সুখের সাথে তুলনা করে সে বেশী আনন্দ অনুভব করবে। ২য়ত তার পাশেই জাহান্নামীদের আযাব দেখে সে নিজের ভোগ-বিলাসের সাথে তুলনা করে সবচেয়ে বেশী সুখী ভাববে পক্ষান্তরে জাহান্নামীরা জান্নাতীদের সুখ-শান্তি দেখে নিজেদের সবচেয়ে বেশী দুঃখী ভাববে শুধু তাই নয় আগুনের গরমে তাদের শরীর সমতায় পৌছালে আবার তীব্র ঠান্ডা দ্বারা কষ্টের অনুভুতিকে নতুনত্ব দেওয়া হবে।সবচেয়ে বড় কথা হল আল্লাহ সুবঃ এর সৃষ্টি জগত তৈরীর মূল উদ্দেশ্যই হল তাঁর এক ধরনের খেলা বা তাঁর এক প্রকার বিনোদন যা তিনি একা নেননি বরং সমস্ত সৃষ্টিকেও সেই বিনোদনে অংশীদার করেছেন রিজিক, সুখ ইতাদির মাধ্যমে সুতারাং সৃষ্টি না হলে এগুলো কেউ পেত না।অতএব একথা বলাই যায় সবাইকে এক ধরনের না বানিয়ে কিছু জান্নাতী(ভাল) আবার কিছু জাহান্নামী(খারাপ) বানিয়ে সুন্দর একটি খেলার আয়োজন করেছেন আবার সেই খেলার চুরান্ত প্রতিফলও যোগ্যতানুযায়ি দুই ধরনের দিয়ে দিয়ে সুন্দর একটি ভারসম্যপূর্ন ইতি টেনেছেন।এখন খেলারা মাঠে যেমন শুধুই একপক্ষ থাকা সম্ভব না(তবে খেলাই হবে না) ঠিক একইভাবে শুধুই জান্নাতি করলেও সেই খেলা আর হচ্ছে না আর খেলা না হলে ঈশ্বরসহ সকল খেলোয়ারদেরও বিনোদন হচ্ছে না অর্থাৎ জাহান্নামীরাও অসুখী থাকছে উদাহরনস্বরুপ- আল্লাহ সুবঃ এমনভাবে এই খেলা নির্ধারন করেছেন যে যারা জাহান্নামী তারা দুনিয়াকেই বেশী মূল্য দিয়ে দুনিয়াতে সুখীই থাকবে দুঃখ তাদের জীবনে কম আবার জান্নাতীরা দুনিয়াকে মূল্যহীন জেনে দুনিয়াতে দুঃখীই থাকবে সুখ তাদের জীবনে কম কিন্তু পরকালের জীবনে হবে উল্টোটা।
তাহলে ফলাফল কি দাড়ালো ? যদি কেউ সৃষ্টিই না হত তবে জাহান্নামীরা দুনিয়ার সুখ-শান্তি কখনও অনুভব করতে পারত না আবার জাহান্নামীদেরও যদি জান্নাতী করে সৃষ্টি করা হত তবে উপরে বর্নিত থিউরী অনুযায়ি দুঃখ-কষ্ট না থাকায় পার্ট টাইমও শান্তি কি জিনিস বুঝতে সক্ষম না হওয়ায় সেটাও একধরনের আযাব হত সুতারং তারচেয়ে উত্তম এটাই যে দয়াবান আল্লাহ সুবঃ জাহান্নামীদের দুনিয়াতে তো ঠিকই বিনোদনে রেখেছেন। তারপরও কথা থেকে যায় যে জাহান্নামীরা হল দুনিয়াতে পার্ট টাইম সুখী কিন্তু তার বদলে পরকালে আনলিমিট টাইম দুঃখী অথচ মুমিনদের হবে উল্টো তাহলে কোথায় যেন দূর্নীতির গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। আসলে আপাত দৃষ্টিতে দেখলে এমন মনে হলেও এটাও আল্লাহর সুবিচার কারন যারা জাহান্নামী তাদের মন-মানষিকতা আল্লাহ সুবঃ এমনভাবে সৃষ্টি করেছেন যে তারা দুনিয়ার এই পার্ট টাইম সুখেই সেটিসফাইড এবং নেগেটিভ বিনোদনে বেশী মজা পায়, তাদের অন্তর প্রশান্তি পায় হারাম কাজে অন্যকে কষ্ট দিয়ে, প্রতিশোধ নিয়ে, অহংকার করে, ফিতনা-ফাসাদ করে, নির্জলতা অশ্লিলতা হল এদের প্রাণের স্পন্দন, মানুষের বুকে অদৃশ্য আগুন জ্বালানোতে এরা পায় পরিতৃপ্তি ।
আর এরা অবশ্যই হয় নগদে বিশ্বাসি অর্থাৎ ক্ষণস্থায়ী দুনিয়ার সুখ-শান্তিতে বিশ্বাসি কিন্তু মুমিনদের আত্মা বাকীতে(পরকালে) বিশ্বাসি আল্লাহ বানিয়েছেন আর মোটেও পার্ট টাইম সুখেই সেটিসফাইড নয় এবং হালাল আর পজিটিভ বিনোদনে বেশী মজা পায়, লজ্জাশীল আর শান্তিকামী, দরদী আর সৎ হয় । একজন জান্নাতী মানুষ এর মন মানষিকতা তিনি এমনি বানিয়েছেন যে দুনিয়ার ভোগ-বিলাস পেয়েও ত্যাগ করবে এক্ষেত্রে তার মনে হয় এগুলো তো একদিন শেষ করে মরতেই হবে অর্থাৎ সে চিন্তাশীল হয় কিন্তু জাহান্নামী ভাববে - পরের কথা পরে এখন নগদ যা পাই তা কখনও মিস করা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না অর্থাৎ তার চিন্তাধারা দূরদৃষ্টি সম্পন্ন হয় না।এমনকি একজন জাহান্নামীর মন-মানষিকতা আল্লাহ সুবঃ এমন ভাবে সৃষ্টি করেছেন তাকে যদি পরীক্ষামূলকভাবেও জান্নাতীদের সাথে জান্নাতে দেওয়া হত তবে সে তার মন-মানষিকতার চাহিদানুযায়ি একদিন না একদিন ঠিকই জান্নাতকে অশান্তিময় করে তুলত এবং এসব করেই সে বেশী মজা পেত অন্নান্য জান্নাতীদের মজা তার কাছে বেশী ভাল লাগত না।তাই আল্লাহ সুবঃ যার মন-মানষিকতা যেমন বানিয়েছেন তার জন্য যোগ্য বাসস্থানও তৈরী করেছেন যে যেখানে থাকার যোগ্য সে সেখানেই থাকবে এইকথা কুরানে এভাবে বলা হয়েছে- জাহান্নামীরা জান্নাতীদের খাবার-দাবার দেখে মিনতি করে বলবে আমাদের দিকে একটু খাবার ছুরে ফেল তখন তাদেরকে বলা হবে তোমরা এর যোগ্য না। সবচেয়ে বড় কথা হল আল্লাহর অসীম কুদরতের কারনে যে যার যার পজিশনে সেটিসফাইড ঠিকই থাকবে অন্য পজিশন তার ভাল লাগবে না এভাবেই আল্লাহ তৈরী করেছেন কেননা জাহান্নামী ব্যাক্তির নগদ দুনিয়ার ভোগ-বিলাস বাদ দিয়ে কষ্ট, ত্যাগ-তিতীক্ষা ইবাদত-বন্দেগী তার রুহবিরোধী কর্মকান্ড তাই পরিবেশ বা অন্য কোন কারনে ১ম দিকে সে এসব করতে থাকলেও শেষের দিকে এসে এমন কাজ সে করে যা তার দিল থেকে সম্মতি দেয় ফলে সে যে লাউ সেই কদু হয়েই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে।
সুতারাং মুমিনদের দুনিয়াতে যেভাবে ক্ষনস্থায়ি অশান্তি আর ধৈর্য্য ভাল না লাগলেও মেনে নিয়ে সেটিসফাইড থাকতে বাধ্য হয় ঠিক একইভাবে জাহান্নামীদেরও অসীম আযাব ভাল না লাগলেও সেটিসফাইড থাকতে বাধ্য হবে কেননা সে তখন বুঝতে পারবে যে আযাব তাকে দেয়া হচ্ছে তা দেয়া মোটেও অবিচার হচ্ছে না সুতারাং চরম প্রতিফল দেয়ার পুর্বে দুনিয়ায় কিছুদিন পরীক্ষা করার বড় কারন হল উক্ত ব্যাক্তি নিজেও যেন স্বীকার করে যেন সে তারই যোগ্য এবং মোটেও অবিচার হয়নি আর খারাপ লাগলেও সেটিসফাইডে সে বাধ্য। তাই যাদের এ প্রশ্ন মাথায় আসে যে ভাগ্য পুর্বেই ফিক্সড হওয়ায় যে জান্নাতী সে জান্নাতেই যায় আর জাহান্নামীরা জাহান্নামে তবে শুধু শুধু কেন দুনিয়ায় পরীক্ষা করে এত সময় নষ্ট করা হল সরাসরি জান্নাত- জাহান্নাম তৈরী করে তখনই দিয়ে দিলেই হত? যারা এমন ভাববে তাদের জানা উচিত মাঝখানে দুনিয়া তৈরীর মাধ্যমে পরীক্ষ্যার অসংখ্য কারন লুকিয়ে আছে তার মাঝে বড় কারনগুলির মাঝে একটি হল- উক্ত ব্যাক্তি নিজেই যেন বুঝতে পারে আল্লাহর বিচারের মাধ্যমে প্রতিফল দেয়া ঠিকই আছে এটারই সে যোগ্য। ২য়ত আরেকটি কারন আমরা দেখি যা কিছুটা উপরে আলোচনা করা হয়েছে যে দুনিয়ার অতীত অভিজ্ঞতার সাথে বর্তমান প্রতিফলের তুলনা করে যেন আরও বেশী ফিল করতে পারে যেমন- জান্নাতীরা ফল খেয়ে বলবে দুনিয়াতেও আমরা এই ফল খেয়েছি কিন্তু স্বাদে-গুনে তো হাজার গুন বেশী একই ভাবে জাহান্নামীরা দুনিয়ার তাপমাত্রার সাথে কম্পেয়ার করবে। কিন্তু ১মে দুনিয়ার জীবন যাপন না করলে তো আর তারা এসব তুলনা করে বেশী বেশী অনুভব করতে পারত না।
তারপরও অনেকে ভাবতে পারে জান্নাতীরা শুধু দুনিয়ার দুঃখ-কষ্টে ধৈর্য্য ধরে সেটিসফাইডে বাধ্য সেটা তো অল্পসময়ের জন্য কিন্তু বিচারের পর জাহান্নামীরা নিজেদের আযাবের যোগ্য মেনে নিয়ে সেটিসফাইডে বাধ্য হবে সেটা তো অসীম কালের জন্য তাহলে তাদের প্রতি বেশী অত্যাচার হল না? উত্তর অবশ্যই না। কারন অশান্তিতেও সেটিসফাইডে বাধ্য সেটা কারও অল্প সময়ব্যাপী কারও অসীম সময়ব্যাপী হলেও তারা তো ঠিকই সেটিসফাইডে বাধ্য থাকবে, এক্ষেত্রে আপনার আমার মাথা না ঘামালেও চলবে যেহেতু তাদের মন-মানষিকতা তিনি ঐভাবে সৃষ্টি করেছেন। এখানে সেটিসফাইড দিয়ে কথা একপক্ষ কম সময়ব্যাপী আরেক পক্ষ অসীম সময়ব্যাপী এতে কোনকিছু যায় আসে না বস্তুত তিনি জোড়ায় জোড়ায় সবকিছু সাজিয়েছেন বিধায় কাউকে সীমিত সময়ের দুঃখী বানিয়ে তার বিপরীতে অসীম সময়েরও দুঃখী বানিয়েছেন আর এভাবেই ভারসম্য রক্ষা করেছেন একারনে ঈশ্বরের সকল ভারসম্য রক্ষার পদ্ধতি সীমাবদ্ধ মানুষের পক্ষে বুঝা সম্ভব নয়।
তাই উপরের বিশদ আলোচনা হতে খুব ভালভাবেই বুঝা যায় আল্লাহ সুবঃ পূর্বেই ভাগ্য নির্ধারনের মাধ্যমে জান্নাতী জাহান্নামী ফিক্সড করে সুন্দর একটি ভারসম্য রক্ষা করেছেন এমনভাবে যে জান্নাতী জাহান্নামীরা প্রত্যেকেই নিজ নিজ পজিশনে সেটিসফাইড এক্ষেত্রে আমাদের মাথা ঘামিয়ে লাভ নেই উদাহরনস্বরু- একজন নাস্তিককে যদি বলা হয় দুনিয়ার আরাম আয়েশ ত্যাগ করে প্রত্যাহ ৫ বার নামাজ পড়, সকাল হতে সন্ধ্যা পর্যন্ত রোজা কর, নিজের স্ত্রী ছাড়া অন্যের কারও সাথে সম্পর্ক দূরের কথা দৃষ্টিই দিও না, সব নিজে না ভোগ করে অন্যদের দান কর, হারাম কাজ হতে দূরে থাক, ধৈর্য্য ধারন কর, শান্তির উদ্দেশ্য নিজের জীবন উৎসর্গ কর। দেখা যাবে এসবে তার মন কিছুতেই সেটিসফাইড হবে না যেখানে অনেকেই এসব ঠিকই করে যাচ্ছে। নাস্তিকের কাছে দুনিয়ার আরাম আয়েশ ত্যাগ করা কিছুতেই সম্ভব নয় শুধু কি তাই তারা যে এভাবে সৃষ্টি হয়ে স্রষ্টার ভুল ধরে ধর্মকে দমিয়ে রাখতে চায় তার মূল উদ্দেশ্য একটাই তারা যে আরো ভোগ-বিলাসে নিজেদের ভাসাতে চায় এখানে ধর্ম হল একটি কাঁটা, সুতারাং একজন নাস্তিক নিজের মনে প্রশ্ন করেই বুঝতে পারবে যে সে মৃত্যুর পুর্ব পর্যন্ত তার আশাগুলো পূরন হলেই সে সেটিসফাইড মৃত্যুর পরে তার কোন আশা নেই।
অনেকে এও ভাবতে পারে যে পূর্বেই ভাগ্য নির্ধারনের মাধ্যমে জান্নাতী জাহান্নামী ফিক্সড করা থাকলে তাহলে আমাদের আর কর্ম করে কি লাভ? সত্যিকারের কথা হল কেউ কর্ম করে না বরং তাকে করানো হয় অর্থাৎ সবকিছুই তিনিই করেন কিন্তু এতে তাঁর কোন দোষ নেই বরং প্রশংসার যোগ্য তাই যেভাবে ভাগ্যে লেখা আছে সেভাবেই সব হতে থাকবে, ভাগ্যের উপরে এই বিশ্বাস মুসলিমদের ঈমানের অংশ। এখন প্রশ্ন হওয়া উচিত আমাদের তাহলে কি কর্তব্য?
যেহেতু আল্লাহ সুবঃ আমাদের জানাননি যে কে জান্নাতি আর কে জাহান্নামী তাই দুনিয়া নামক খেলার মাঠে নামার পর কখনই মনে করা উচিৎ নয় যে এক পক্ষ যেহেতু ঠিকই হারবে তাই ভালভাবে না খেলে পূর্ব হতেই হারার দলে সামিল হওয়া বরং চেষ্টা করাই বুদ্ধিমানের কাজ। তাছারা এখানকার ২য় প্রশ্ন হল- কুরানে উল্লেখ আছে আল্লাহর ইচ্ছাতেই মানুষ পাপ কাজ করে। তাহলে আমাদের দোষ কোথায়? এখন দেখুন- কুরানের অন্য আয়াতে এটাও উল্লেখ আছে যে তাঁর ইচ্ছাতেই মানুষ পূন্য কাজ করে, তাহলে তার ইচ্ছাতে শুধু পাপই নয় পূন্যও কাজও হয় অর্থাৎ তাঁর ইচ্ছাতে ভাল-মন্দ সবই ঘটে এমনকি শয়তানও শয়তানি করে, যেকেউ আল্লাহর বিরুদ্ধেও যেতে পারে এটা হল আল্লাহর এমন ধরনের ইচ্ছা যে ইচ্ছা তিনি না করলে উপরের বিশদ আলোচনা অনুযায়ি কেউই সুখী হতে পারত না পার্ট টাইমও এবং ঈশ্বরও এই খেলা হতে পরিপূর্ন বিনোদন পেত না(সিনেমায় শুধুই নায়ক পক্ষ বা শুধুই ভীলেন পক্ষ থাকলে যেমন সেই সিনেমায় কোন মজা নেই)অর্থাৎ ঈশ্বরের পরিপুর্ন ভাল লাগা এবং সকল সৃষ্টিকেই সেটিসফাইড করতেই তিনি এরকম ইচ্ছা করেছেন। সুতারাং তাঁর ইচ্ছা কি এদিকে আমাদের দেখা উচিৎ নয় সৃষ্টি হিসেবে বরং দেখতে হবে তাঁর হুকুম কি ? নায়ক পক্ষ, অসীমের সুখী, ক্ষণিকের দুঃখী ইত্যাদি হতে তাঁর হুকুম কি তাই আমাদের দেখতে হবে এবং সমর্থনুযায়ি চেষ্টা করতে হবে। আর জাহান্নামী ভীলেনদের দলে শামিল হবার মূলেই রয়েছে এগুলোর বিপরীত করা অসততা ইত্যাদি
যেমন- নাস্তিকদের জ্ঞান অর্জন হয় বেশীরভাগ অধার্মিক বই পুস্তক হতে কিন্তু ধর্মীয় জ্ঞান অর্জন হয় তাদেরই ধর্মবিরোধী কিছু বই পড়ে তাই তারা হয় ব্রেইন ওয়াশড, কিন্তু তারা যদি সমপরিমানের ইসলামিক জ্ঞান অর্জন করত তবে তাদেরকে সৎ বলা যেত আর সেও উভয় দিক হতে সম পরিমান জ্ঞান থাকায় নিরপেক্ষভাবে সত্য মিথ্যার বিচার করতে পারত কিন্তু তারা এসব করে না বিধায় তাদের জ্ঞা্ন চরম একপক্ষপাত দূষ্ট আর সমর্থ থাকার পরও এমন না করে নাস্তিক হয়ে পটল তোলার জন্য পরকালের ক্ষমাও থাকে না।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:৩২

চাঁদগাজী বলেছেন:


করোনার কারণে বাংলাদেশকে কৃষিতে যেতে হবে, প্রোটিনের জন্য চাগলের ফার্ম খুলতে হবে।

০৭ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:৪৪

ইসলামি চিন্তাবিদ বলেছেন: ছাগলে তবু চাল খেয়ে দেশের কৃষি শিল্প বাচিয়ে দেশের উন্নতি ধরে রেখেছে কিন্তু ব্রয়লার খেকোরা তো দেশে আরও করোনা ডেকে আনছে

২| ০৭ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:৪৩

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
নাস্তিকঃ- মুসলিমরা দ্বারি রাখে যা দেখতে অনেকটা ছাগলের মত লাগে তাই তাদেরকে আমরা ছাগু ডাকি। মুসলিমদের ছাগুমার্কা দ্বারির জন্য কোন ভাল মেয়ে তাদের বিয়ে করতে চায় না।

এই দ্বারি জিনিসটা কী ?
দ্বিধায় ফেলে দিলো আজকের নাস্তিক ব্যাটা !!!

০৭ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:৪৪

ইসলামি চিন্তাবিদ বলেছেন: ঠিকই তো !

৩| ০৭ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ৯:২৪

রাজীব নুর বলেছেন: বহু নাস্তিক কিভাবে নাস্তিক হয়েছে জানেন??
তারা কোরআন পড়ে নাস্তিক হয়েছে।

০৭ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ৯:৫৩

ইসলামি চিন্তাবিদ বলেছেন: হ্যা ! তারা কোরআন পড়ার সময় যে উল্টো করে ধরে পড়েছিল তা কি আপনি জানেন?

৪| ০৭ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ৯:৫৫

নেওয়াজ আলি বলেছেন: আল্লাহ মানুষ সৃষ্টি করেছে আর মানুষ সৃষ্টি করছে বিজ্ঞান । তাহলে কে বড়

০৮ ই এপ্রিল, ২০২০ সকাল ৭:৫৩

ইসলামি চিন্তাবিদ বলেছেন: এই তো এতো সহজ কথাও নাস্তেকরা বুঝচে না

৫| ০৮ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ২:৪২

জগতারন বলেছেন:

ইসলামি চিন্তদিকে:

আপনি মিয়া কোন কিছু পোষ্ট করার আগে বানান -এর দিকে নজর দেন।
আপনার এই পোষ্ট পড়া আরম্ভ করিয়াও শেষ পর্যন্ত আমি পড়িলাম না।
কারন ইহা বিরক্তিকর।

০৮ ই এপ্রিল, ২০২০ সকাল ৮:১৫

ইসলামি চিন্তাবিদ বলেছেন: মিয়া "জগতারন " --- আমার তো মনে হয় না আপনার মেইন সমস্যা এটা ! দু- একটা বানান ভুলের কারনে পড়াই বাদ এরকম আজগবি কথা এই প্রথম শুনলাম, তাছারা এখানে নাস্তেকদের প্রশ্ন সরাসরি তুলে দেয়া হয়েছে- তাদের এমন বানান ভুলের রেকর্ড আছে তবে আমরা এসবে বেশি কিছু মনে করি না, মুল বিষয় বুঝতে পারলেই হল। নিজেদের পন্ডিত প্রমান করতে মুল বিষয়বস্তু বাদ দিয়ে ছোটোদের মত বানান ভুল ধরা মোটেও কাম্য নয়। তবে কলা বিভাগে পড়ুয়াদের বানানের ক্ষেত্রে গাঁ জ্বালা করলেও ভার্চুয়াল জগতে এসব নিয়ে কথা বলা বেশী গোঁরামীর পরিচয় তাছারা অনেকেই প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে অণুবীক্ষণ হাতে অপ্রাসঙ্গিক বানান ভুল ধরে মূল বিষয়বস্তুকে অন্যদিকে মোড় নেয়ার চেষ্টা করে যা এক ধরনের অসততা। কেননা এখানে কেউ বাংলা সাহিত্য নিয়ে প্রতিযোগিতা করছে না , মনের ভাব অন্যকে পরিপূর্ন প্রকাশ করতে পারলেই হল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.