![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ঢাকা থেকে এক বন্ধু এসে পূরবী হলে “চোরাবালি” দেখতে যাবার ইচ্ছা প্রকাশ করল । আমি বললাম, “সেটা তো ঢাকাতেই দেখতে পারতি, এখানে কেন দেখবি?” । সে একটা ২০০০ টাকা খরচ হওয়ার একটা জটীল ফিরিস্তি দিল(বসুন্ধরায় খাওয়া-দাওয়া হাবিজাবি মিলিয়ে) । কাজেই শখের তোলার দাম নির্ধারণ হল ৪০ টাকা । ভেন্যু যখন ময়মনসিং হের পূরবী হল, বোমা হামলার স্মৃতি ফিরে আসে বৈকি । এ হিসাবে সেখানে যাওয়ার সিদ্ধান্তটা একটু দুঃসাহসিকই বটে । যাই হোক, ৬ তারিখ সন্ধ্যা ৬টার দিকে গেলাম হলে । হলে ঢোকার আগে পাশের এক হোটেলে বিনা পয়সায় কমেডি দেখলাম, এক বন্ধু বল্ল, “চল, তাড়াতাড়ি হলে ঢুকি, নাইলে ফার্স্ট ক্লাসের টিকিট পামুনা......” প্রায় এই রকম একটা অদ্ভুত কথা শুনে আমিসহ বাকি তিনজনের পেট থেকে ভুসভুসিয়ে হাসি বেরিয়ে এল । এরপর হলে প্রবেশ করে তশরিফ রাখলাম ।
ছবিতে প্রথমে বর্তমানের প্রেক্ষাপটে শুরু হয় । কিলার সুমন(ইন্দ্রনীল) গাড়ীর পেছনে হাত-মুখ বাঁধা অবস্থায় একজনকে নিয়ে অজ্ঞাত স্থানে যাচ্ছে । এরপর কাহিনী যায় ফ্লাশব্যাকে- এই ফ্লাশব্যাকেই দর্শকের সামনে কাহিনী উপস্থাপন করা হয় । কাহিনী কিন্তু ২০ বছর আগের ফ্লাশব্যাক থেকে শুরু হয়নি । প্রথমে ৩ মাস আগের ফ্লাশব্যাক দেখিয়ে তারপর ধীরে ধিরে আরো অতীতে যাওয়া হয়েছে । সুমন পেশাদার খুনী হিসেবে আলী ওসমানের আদেশ্মত নির্বিচারে খুন করে যায়, কোন প্রশ্ন করে না । বিরতির আগ পর্যন্ত এভাবে প্রায় ৬-৭টি খুন দেখানো হয় । এর মাঝে সুমনের গুলো ছাড়াও আলী ওসমান যে স্টাইলে যেভাবে পুরা লুনাটিকদের মত হায়দার আলী(সোহেল রানা)র বিশ্বাসঘাতক ভাতিজা(ইরেশ যাকের) কে খুন করে, এটা দেশী চলচ্চিত্রে আনকমন না হলেও আগেরগুলো থেকে কিছুটা হলেও আলাদা । মডেল সুজানা আলী ওসমানের রক্ষিতা, একপর্যায়ে সে অন্তস্বত্তা হয়ে পড়ে । এটা বুঝতে পেরে সুজানার মাঝে মাতৃত্বসত্তা জেগে উঠে এবং সে আলী ওসমানঅকে তাকে বিয়ে করতে বলে । এরপর আলী ওসমান অকথ্য ভাষায় অপমান করলে সে তার সাংবাদিক বন্ধু নবনী আফরোজ(জয়া আহসাম) কে আলী ওসমানে কুকীর্তি সম্পর্কে সব কিছু জানিয়ে দেয় । সুমনকে দিয়ে খুন করানো হয় সুজানাকে, কিন্তু সুজানা অন্তঃস্বত্তা ছিল এটা বুঝতে পেরে নিজের মায়ের কথা মনে পড়ে সুমনের এবং সে মানসিকভাবে ভীষণ দুর্বল হয়ে পড়ে ।
এরপর বিরতির কিছু আগে ২০ বছর আগের ফ্লাশব্যাকে নায়কের এ পত্থে আসার প্রেক্ষাপট দেখানো হয় । এরপর প্রতিশোধ নিতে চেয়ারম্যানকে খুন করে সুমন, এরপর শহরে এসে রাগের মাথায় আরো একজনকে খুন করে বসে সে, এভাবেই সে চোখে পড়ে যায় আলী ওসমানের । সুমনের খুনী হিসেবে যাত্রা শুরু হয় ।
এরপরে কাহিনী পুনরায় বর্তমানে ফেরত আসে । নবনী আফরোজ(জয়া আহসান)কে নিয়ে পাহাড়ী এলাকায় নিয়ে যায় সুমন । কিন্তু ঢাকা থেকে এত দূরের পথ গাড়ির পেছনের সিটে বেঁধে নিয়ে যাবে অথচ মানুষজনের চোখে পড়বে না, এটা ভালই অস্বাভাবিক ঠেকল । আর অপহৃতের মুখ বাঁধা ছিল না, সাধারণত জিম্মি এ অবস্থায় চিৎকার দিবে, কিন্তু জয়া আহসান এখানে ডায়লগ দেয়া শুরু করলেন । যাই হোক, ততক্ষণে পরিচালক একটা কাহিনী প্রতিষ্ঠা করতে সমর্থ হয়েছেন, সমর্থ হয়েছেন দর্শকের আগ্রহ ধরে রাখতেও, কাজেই এইসব খুঁত দর্শকের মুভি দেখার পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়নাই ।
আর খুঁত টুতের মাঝে আরো ছিল ডাক্তারের চরিত্রটা, এত উদার মানুষ বিশ্বে খুঁজে পাওয়া বিরল, রেডিমেড বাচ্চার বাপ হতে চাওয়া এই ডাক্তারের এক্টিং দেখে মনে হয়েছে, শুধুমাত্র সুমনকে শৈশবের কথা মনে করিয়ে দিতেই এই দুরব্বল চরিত্রকে রাখতে বাধ্য হয়েছেন কাহিনীকার ।
তবে সব খুঁট দর্হসককে ভুলিয়ে দেবে শহীদুজ্জামান সেলিমের অভিনয়! ব্যক্তি শহীদুজ্জামান সেলিমকে মুভির কোথাও খুঁজেই পাওয়া যায়নি, সাধারণ হলের সাধারণ মানুষেরা দেখেছে একজন ভয়ং কর গডফাদার আলী ওসমানকে, এখানেই অভিনেতার স্বার্থকতা । “তুই ভয় পাইছিলি?? না?!! আরে আমি তো মজা করতাছিলাম!” , “বালিশের সাইজ ট্রিপল এক্স, নোটের সাইজ এক্সট্রা লার্জ”, “উঁচু কইরা স্টেজ সাজাইয়া দে ”, “ছেলেরা তো ভুল করেই, বাপেও তো মাফ কইরা দেয়, তোরে মাফ কইরা দিলাম, আয়!” , “পিস্তল কোম্পানীরে তো মেডেল দেয়া উচিত” ইত্যাদি ডায়লগগুলো শুনে মানুষ ভালোই বিনোদিত হয়েছে, আর অভিনয়ের কথা তো আগেই বলেছি । আর শেষের সামান্য টুইস্ট সিরিয়াস মুভিবোদ্ধাদের কাছে দুর্বল মনে হলেও হতে পারে, কিন্তু হলের মানুষজন অকৃপণভাবে আনন্দের সাথে হাততালি দিয়ে উঠল । হলের হিসাবে এই টুইস্ট যথেষ্ট বলেই প্রমাণিত হল ।
হলের অভিজ্ঞতা বেশ ভালো । মানুষজন(আমার বন্ধুরা সহ) সবচেয়ে বেশি ক্রিটীসাইজ করেছে সুজানা-ডাক্তারের অংশটুকু, আর সবচাইতে আমোদিত হয়েছে আলী ওসমানের দৃশ্যগুলোতে । ইন্দ্রনীল যেন কিভাবে বেশ ভালো মানিয়ে গেছে মুভিতে, কিছু কিছু জায়গায় বোঝা গেছে যে তার অংশগুলার শ্যুটিং অল্প সময়ে করা হয়েছে । আইটেম গান অপ্রয়োজনীয় বলে মনে হয়েছে, ভিলেন যে যথেষ্ট খারাপ এটা বোঝানোর জন্য অভিনয়ই যথেষ্ট ছিল । ভালো সময় কাটল, ব্যস এই তো!
১০ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:২১
আহমাদ জাদীদ বলেছেন: আপনি কি গফরগাঁওয়ের নাকি? যাই হোক, সাধারণ মানুষের হল, কি আর বলবেন?
২| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:২৬
লিন্কিন পার্ক বলেছেন:
হম !!!
১০ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৪১
আহমাদ জাদীদ বলেছেন: আমার গ্রামের বাড়িও সেখানে, তবে যাইনা তে্মন ।
৩| ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৩:২৫
বোকা ডাকু বলেছেন: জাদীদ বাই নেক্সট টাইম ময়মনসিংহ আইলে আফনেরে লইয়া মুভি দেখতে যামু। টিকেট কইলাম আফনের!
১১ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১৬
আহমাদ জাদীদ বলেছেন:
৪| ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৪
মুনতা বলেছেন: ডাক্তারের রোলটা যে করছে(স্বপন নাম মনে হয়) ও মে বি প্রযোজক ছিল। নিজের মুভি বলেই চান্স টা পাইছে।
১২ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:৪৯
আহমাদ জাদীদ বলেছেন: তাই? এখন বুঝলাম কাহিনী.........
৫| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:৪৪
মোঃ আমিন বলেছেন: পুরান দিনের কথা মনে পরলো, পুরবী হলে কলেজ ফাকি দিয়া কত সিনেমা দেখছি, যদিও আমাদের জন্য কাছে হতো আজন্তা ছারাবানী.. সেনানিবাস.............., সেনবাড়ির পুলা আছিমান তো.... ৯৭/৯৮ সালের কথা..।
১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:১৪
আহমাদ জাদীদ বলেছেন: অজন্তা-অলকা বন্ধ হয়ে গেছে...... বাকি তিনটা আছে, মুভি না থাকলে এরা পুরান বস্তাপঁচা মুভিগুলা দেখায় ।
©somewhere in net ltd.
১|
১০ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:১৭
লিন্কিন পার্ক বলেছেন:
ঢাকার বাহিরের হলের পরিবেশ খুব একটা ভাল মনে হয় না । আমি গফরগাঁওয়ের এক হলে গেছিলাম যাতা অবস্থা ......ভাল ছবি আর হলের পরিবেশ ভাল হলে মানুষ হলে যেতে বাধ্য !!
++++++