![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
-----------------দুই--------------------
আমি ও বাবা কিরণমালা দেখতেছি ইস্টার জলসায়। মা কিরণমালা দেখতে খুব পছন্দ করে। শুরু হয়েছে বুঝতেই পারেনি রান্না করতে ব্যস্ত থাকায়। বাবা মাকে ডেকে আনতে বলল। আমি বারেন্দায় গিয়ে একটু থেকে আসলাম মাকে না ডেকে। কেন যেন ডাকতে মন সাঁয় দিল না। ফিরে আসতেই বাবার জিজ্ঞাসা,
তোর মা আসবে না?
হ্যাঁ আসবে।
আচ্ছা মেঘ, বলত কিরণমালা কি সত্যিই একটি কাল্পনিক গল্প?
বাবা, এখন দেখত। বাবা কি বলত তা আমার জানা। বলবে আমাদের বাংলাদেশের পেক্ষাপটে হুবাহু মিল আছে। ইত্যাদি ইত্যাদি
মেঘ, রান্না ঘর থেকে মা ডাক দেয়।
মা, বল।
কিরণ শুরু হইছে।
তুমি দেখবে না? তারাতারি আস। বাবার বলা শেষ না হতেই মা আসল।
মেঘ, তুই আমাকে ডাকলি না কেন?
তুমি আসলে কে রান্না করবে?
এত বড় মেয়ে! সাথের মেয়েগুলোর দু এক টা বাচ্চাকাচ্চার মা হয়েছে। স্বামীর সংসার করছে। তুইতো কোনদিন রান্না করিস না। নবাবের মেয়ে। আবার আমাকে বলে রান্না করবে কে? আমি কি এবাড়ির চাকর হয়ে এসেছি? মিলি রোজ বাড়ির কাজ করত, রান্না করত। আর তুই?
মা, শুনতে দিবে। রেডিও চিলমারীর ভাওয়াইয়া সম্প্রচার অফ কর। মা সত্যিই আর কোন কথা বললেন না। কিরণমমালা দেখছি কেউ কোন কথা না বলে।
নয়টায় কিরণমালা শেষ হলে বাবা রিমোট দিয়ে চ্যানেল পরিবর্তন করে বাংলাদেশের খবর দেখা শুরু করতেই মা ছুঁই মেরে রিমোট নিয়ে স্টার জলসায় দিল "বুঝে না সে বুঝে না " দেখতে লাগল। বাবা কিছু না বলে বাইরে গিয়ে বারেন্দায় চেয়ারে বসল।
মা এটা কি ঠিক হল?
কোনটা আবার?
বাবার হাত থেকে কেড়ে নিলে যে।
মেঘ, দেখ নয়ত চলে যাও বাইরে। আমাকে দেখতে দাও। মা আমাকে রাগ হয়ে বলে। আমি আর কিছু না বলে বারেন্দায় বেরিয়ে আসি। বাবা কালের কণ্ঠ পড়ছে।
আচ্ছা বাবা, রোজরোজ সকালের খবর রাত্রে পড় কেন? কাগজ তো সকাল বেলা পড়তে পার। তে ছাড়া ইচ্ছে করলে যখনি ঘটনাটি ঘটল তখনি অনলাইন পত্রিকায় দেখতে পার।
হু। বাবা মুখ না তুলেই বলল।
বাবা, তুমি কি মাকে খুব ভয় পাও?
না, কেন?
এই যে মা সকালবেলা তোমার হাতে ব্যাগ তুলে দেয় বাজার নিয়ে আস। একটু এদিক ওদিক হলে মা ঝাড়ি দেওয়া শুরু করে। তুমি কিছু না বলে শুধু শুন। সকালে খেয়ে স্কুলে যাও সাড়ে চারটায় স্কুল থেকে ফিরে আসলেই তোমার উপর শুরু........।
মারে। পরিবারে একজন গরম হলে আর একজন কে নরম হতে হয়। নইলে পরিবারে অশান্তি লেগেই থাকে।
বাবা, সেই গরমটা তুমি হতে পার। মা তো নরম হতে পারে। আর এই নয়যে সংসার ভ
ভালো চলছে। বাবা কিছু বলে না। বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় মা চার্জার লাইট নিয়ে বারেন্দায় আসে।
বাবা-মেয়ে মিলে আমার নামে ভালোই গীবত হচ্ছে। মনে করছ আমি শুনিনি। পঁচিশ বছর হলো বিয়ে হবার। কি পেয়েছি? সংসারে না আছে সুখ, না আছে শান্তি। বিয়ের সময় বাবাকে বলে ছিলাম কোন শিক্ষকের সঙ্গে বিয়ে আমাকে দিও না। তোর বাবা আমাকে দেখে পাগল। বিয়ে না করলে বাঁচবে না মারা যাবে। তোর বাবাকে বাঁচাতে এসে নিজেই মারা গেলাম। আর....
বাবা, চুপ করতে বলবে?
তুই চুপ কর। তোর জন্মের সময় আমার বেশি কষ্ট হয়েছে। বাকি এক মেয়ে আর দুই ছেলের জন্মের সময় এত কষ্ট হইনি। তখন যদি জানতাম একটা নাগিনী জন্ম দিচ্ছি, তাহলে সেদিনই গলা চেপে হত্যা করতাম।
আজ কর। কেউ জানবে না। বাবা তোমার ভয়ে মুখ খুলবে না। ভাইয়ারা কেউ বাসায় নেই। কেউ জানবে না। অন্ধকারে লাশটাকে বাড়ির পিছনে পুঁতে রাখিও।
কারেন্ট আসছে। তুই ঘরে যা। পড়তে বস। বাবার কথায় শত বিরক্তি। মেজাজটা গরম হলো বাবার উপর। মা ঘরে গিয়ে আবারো টিভি দেখা শুরু করে। বাবা চেয়ার থেকে উঠে উঠানে গিয়ে পায়চারি শুরু করে। ঘরে আমার ফোনটা বেঝেই চলছে। গিয়ে দেখি রুমির ফোন করছে। রিচিভ না করে ভাইব্রেসন করে রাখলাম। এখন কল দিতেই থাক।
(চলবে)
©somewhere in net ltd.