![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমরা জানি পৃথিবী গোলাকার। কিন্তু বাস্তবে পৃথিবী পৃষ্ঠ চ্যাপ্টা। চ্যাপ্টা পৃথিবী লাটিমের মত ঘুরে। অর্থাৎ পৃথিবীকে সমবেগে ঘুরন্ত একটি লাটিম বিবেচনা করা যায়। লাটিম ঘুরার সময় তার উপরের পিঠ যেমন নিচে যায় না তেমনি পৃথিবীর যে অঞ্চলে আমরা বাস করি সেই অঞ্চল (অর্থাৎ পৃথিবীর উপরের পৃষ্ঠ) নিচ দিকে যায় না। সূর্য সব সময় চ্যাপ্টা পৃথিবীর পূর্ব পাশে অবস্থান করে। চ্যাপ্টা পৃথিবীতে কখনই সূর্য অস্ত যায় না এবং উদিত হয় না। অর্থাৎ ভূপৃষ্ঠের কোন স্থান থেকে সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত দেখা বাস্তব না। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে সূর্য এবং অন্যান্য নক্ষত্রের আলো প্রতিসরিত হয়ে ভূপৃষ্ঠে পৌঁছে। ফলে তাদেরকে আমরা প্রকৃত অবস্থানের পরিবর্তে ভিন্ন স্থানে দেখি। মনে করি সূর্য M বিন্দুতে 90 ডিগ্রি অপেক্ষা ছোট EMN কোণে (উপরের চিত্রে) অবস্থান করে। তাহলে সূর্যের আলো PR বিভেদ তলের (অর্থাৎ শূন্য মাধ্যম এবং বায়ু মাধ্যমের স্পর্শ তলের) Q বিন্দুতে প্রতিসরিত হয়ে A বিন্দুতে পৌঁছে। কারণ আলো হালকা থেকে ঘন মাধ্যমে প্রবেশের সময় অভিলম্বের দিকে সরে যায়। পরিণামে A বিন্দুতে থাকা একজন পর্যবেক্ষক সূর্যকে AQ রেখা বরাবর G বিন্দুতে দেখেন। একইভাবে A বিন্দুর দিকে আসা সূর্যের আপতিত রশ্মি A বিন্দুর সামনে বা অপেক্ষাকৃত বৃহত্তর কক্ষপথে নির্দিষ্ট একটি বিন্দুতে পতিত হয়। মনে করি ভূপৃষ্ঠের A বিন্দুর বৃত্তাকার কক্ষপথকে পূর্ব-পশ্চিমে সমান দুই ভাগে বিভক্তকারী রেখা হল মেরু রেখা এবং উত্তর-দক্ষিণে সমান দুই ভাগে বিভক্তকারী রেখা হল বিষুব রেখা। তাহলে বিষুব রেখার পূর্ব প্রান্ত হল কক্ষপথের পূর্ব বিন্দু এবং পশ্চিম প্রান্ত হল কক্ষপথের পশ্চিম বিন্দু। আবার মেরু রেখার উত্তর প্রান্ত হল কক্ষপথের উত্তর বিন্দু এবং দক্ষিণ প্রান্ত হল কক্ষপথের দক্ষিণ বিন্দু। এখন ধরা যাক A বিন্দু (উপরের চিত্রে) বিষুব রেখার পূর্ব বিন্দুতে অবস্থান করে। তাহলে A বিন্দু থেকে সূর্যকে সর্বোচ্চ বিন্দুতে দেখা যায়। অর্থাৎ A বিন্দুতে সূর্যালোকের প্রতিসরিত রশ্মি সবচেয়ে বড় কোণে পৌঁছে। কারণ তখন A বিন্দু আপতন বিন্দু থেকে সবচেয়ে কাছে থাকে। কিন্তু যখন A বিন্দু থেকে সূর্যাস্ত লক্ষিত হয় অর্থাৎ A বিন্দু যখন তার কক্ষপথের দক্ষিণ বিন্দু অতিক্রম তখন আপাতন বিন্দু দৃশ্যমান দিগন্ত রেখার নিচে অবস্থান করে। অর্থাৎ A বিন্দুর সাথে আপতন বিন্দু দ্বারা উৎপন্ন কোণ অপেক্ষাকৃত ছোট হয়। কারণ তখন A বিন্দু আপতন বিন্দু থেকে অপেক্ষাকৃত দূরে থাকে। ফলে A বিন্দুতে সূর্যালোকের প্রতিসরিত রশ্মি পৌঁছে না অর্থাৎ সন্ধ্যা হয়। কারণ পাহাড়-পর্বত, ঘরবাড়ি, সমুদ্রের ঢেউ, বরফের দেয়াল , গাছপালা ইত্যাদি সূর্যের প্রতিসরিত রশ্মি আটকে দেয়। মনে করি A বিন্দু থেকে O আপতন বিন্দু (নিচের চিত্রে) দৃশ্যমান দিগন্ত রেখার নিচে অবস্থান করে। সুতরাং OA প্রতিসরিত রশ্মির সামনে যদি অস্বচ্ছ মাধ্যম না থাকত তাহলে A বিন্দু থেকে একজন পর্যবেক্ষক সূর্যকে AO রেখা বরাবর L বিন্দুতে দেখতেন। আবার A বিন্দু যখন তার কক্ষপথের পশ্চিম বিন্দুতে থাকে তখন আপতন বিন্দু প্রকৃত দিগন্ত রেখায় অবস্থান করে। কারণ A বিন্দু তখন আপতন বিন্দু থেকে সর্বাধিক দূরত্বে থাকে। ফলে A বিন্দুতে আপতন বিন্দু দ্বারা উৎপন্ন কোণ সবচেয়ে ছোট হয়। পরিণামে A বিন্দুতে তখন গভীর রাত থাকে। A বিন্দু যখন তার কক্ষপথের উত্তর বিন্দু অতিক্রম করে তখন আপতন বিন্দু দৃশ্যমান দিগন্ত রেখার উপরে থাকে। কারণ তখন A বিন্দু আপতন বিন্দু থেকে অপেক্ষাকৃত কাছে অবস্থান করে। অর্থাৎ A বিন্দুতে আপতন বিন্দু দ্বারা উৎপন্ন কোণ অপেক্ষাকৃত বড় হয়। ফলে A বিন্দুতে সূর্যালোকের প্রতিসরিত রশ্মি পৌঁছে। নির্দিষ্ট সময় পরে A বিন্দু আবার তার কক্ষপথের পূর্ব বিন্দুতে ফিরে আসে। পরিণামে A বিন্দু থেকে আবার সূর্যকে সর্বোচ্চ বিন্দুতে দেখা যায়। এখানে উল্লেখ্য যে A বিন্দু থেকে যতই উপরে (নির্দিষ্ট উচ্চতা পর্যন্ত) যাওয়া যায় ততই আপাতন বিন্দু পরিবর্তন হয় এবং অপেক্ষাকৃত দূরে অবস্থান করে। অর্থাৎ A বিন্দুতে আপতন বিন্দু দ্বারা উৎপন্ন কোণ এবং এর উপরস্থ পৃথিবীর কাছাকাছি বিন্দুতে ভিন্ন আপতন বিন্দু দ্বারা উৎপন্ন কোণ অভিন্ন। ফলে A বিন্দুতে যখন দিন বা রাত হয় তখন এর উপরস্থ নিকটবর্তী বিন্দুতেও দিন বা রাত ঘটে।
©somewhere in net ltd.