নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পৃথিবীকে যেমন দেখার প্রত্যাশা করি, সে প্রত্যাশার আগে নিজেকে তেমন গড়তে চাই। বিশ্বাস ও কর্মে মিল স্থাপন করতে আজীবন যুদ্ধ করতে চাই নিজের সাথেই।

হিমন

ভিন্নমত সহ্য করতে পারা এক বিরাট গুণ। সকল ভিন্নমত উদার দৃষ্টিতে দেখার চেষ্টায় আছি।

হিমন › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভরসন্ধ্যায় নৌমন্ত্রী

০৩ রা আগস্ট, ২০১৮ ভোর ৫:৪৬


নৌমন্ত্রীর পিএস আব্দুল মফিজ গাধা ঢাকার একটি পাঁচতারকা হোটেলের ফ্রন্ট ডেস্কের সামনে গম্ভীরভাবে পায়চারি করছে। তার মন খারাপ। মন্ত্রী সাহেব পাসপোর্টে তার নাম পরিবর্তন করে আব্দুল মফিজ এর সাথে গাধা যোগ দিয়েছে। এখন থেকে অফিসিয়ালি তার নাম আব্দুল মফিজ গাধা। কিন্তু মফিজের ধারণা নৌমন্ত্রীর নামের সাথেও এমন একটা কিছু থাকা দরকার। কী নাম থাকতে পারে সেটা নিয়ে ভাবছে সে। সাজা খানখান রাখলে কেমন হয়? রিংটোন বেজে উঠলো, হোটেলের দশ তলা থেকে মন্ত্রীর ফোন।

মফিজঃ জ্বি স্যার!
মন্ত্রীঃ উপরে আয় হারামজাদা।
মফিজঃ ওকে স্যার!

মফিজ লিফটে হোটেলের দশতলায় উঠছে আর ভাবছে এত দ্রুত কাজ হয়ে গেল? এই ধরণের কাজে মন্ত্রী অন্তত ১ ঘণ্টা সময় নেয়। আজ কি হল? মফিজ যখন মন্ত্রীর ১১০ নম্বর রুমে ঢুকছে তখন টকটকে লাল লিপস্টিক দেয়া মেয়েটি হনহন করে বের হয়ে গেল। মন্ত্রী খালি গায়, চুল উস্কখুষ্ক। মন্ত্রী কাপড় পরছে।

মফিজঃ স্যার কি হল? এত দ্রুত?
মন্ত্রীঃ ইরেক্টাইল ডিজফাংশন। স্ট্রেসের সময় কোন কিছুই কাজ করে না। এরমধ্যে লুব্রিকেন্ট নাই, কনডম আনতে বলছিলাম স্ট্রবেরি ফ্লেভারের, আনছস কাঁঠাল পাতা ফ্লেভার। আমি কি ছাগল যে কাঁঠাল পাতা খামু?

মফিজঃ তাই বইলা কিছু না কইরাই ছাইড়া দিলেন স্যার? বিশ হাজার টাকা দিছিলাম এক ঘণ্টার জন্য। আমারে একটু ডাকতেন, টাকাটা উসুল করতাম…
মন্ত্রীঃ বান্দীর বাচ্চা কয় কি? যে জিনিস আমি খাই সেই জিনিস খাওয়ার যোগ্যতা আল্লাহ পাক তরে দেয় নাই। নিচে গাড়ি রেডি?
মফিজঃ জ্বি স্যার!
মন্ত্রীঃ চল।

গাড়ি চলছে। মফিজ ভাবছে মন্ত্রীর নাম সাজাখান ছাগল রাখলে কেমন হয়। আল্লাহ দিন দিলে মন্ত্রীর নাম চেঞ্জ করে সাজাখান ছাগল রাখার প্রতিজ্ঞা করে সে।

মন্ত্রীঃ নিউ মার্কেট বা আজিজ সুপার মার্কেট থেকে আজই একটা বই কিনে আনবি। স্টিভেন প্যারিসিয়েনের ‘দ্য কমপ্লিট হিস্টোরি অব দ্য মোটর কার’।
মফিজঃ জ্বি অবশ্যই স্যার। কিন্তু আপনাকে তো কোনদিন বইটই পড়তে দেখলাম না। হঠাৎ এই বই পড়বেন যে!
মন্ত্রীঃ মানে? আমি খেয়াল করে দেখেছি তুই আমার উপর প্রভাব খাটাতে চেষ্টা করিস। আমি কাঁঠাল পাতা খাইয়া মন্ত্রী হই নাই। আমার মেয়ে বলেছে এই বই পড়া আমার জন্য অত্যন্ত জরুরী। এই দুনিয়ার গাড়ি আবিষ্কার করার পেছনে কে কে আছে তাঁদের নাড়ী নক্ষত্র আমাকে জানতে হবে। তাঁরাই আমার আসল শত্রু। তাঁদের শায়েস্তা করাই আমার আসল কাজ। চিন্তা করে দেখ, দুনিয়ায় যদি গাড়ীই না থাকত তাহলে কি আজ আমার এই অবস্থা হয়! ছিঃ ছিঃ ছিঃ মাগী বেটির সামনে ইরেক্টাইল ডিজফাংশন।

মফিজঃ কিন্তু স্যার উনারা তো গাড়ী বানাইছে সেই দেড় দুইশ বছর আগে, এখন তো মইরা ভূত। ওদের পাইবেন কেমনে!
মন্ত্রীঃ তাই তো! এই সামান্য ব্যাপারটা তোর মত গাধার মাথায় আসল, আর আমার মাথায় আসলো না! সবই স্ট্রেসের কারণে রে সবই স্ট্রেসের কারণে।

মফিজের বড় ইচ্ছে হল বলতে, আপনার মাথা ছাগলের মত, এই জন্যে এই ব্যাপারটি মাথায় আসেনি। কিন্তু এখনো উনি মন্ত্রী, তাই বলা যাচ্ছে না।

মন্ত্রীঃ আচ্ছা এই গাড়ির লাইসেন্স ঠিক আছে তো? বিচ্ছুবাহিনী নাকি গাড়ির লাইসেন্স চেক করছে রাস্তায়। মন্ত্রী পুলিশ আমলা সবাইকে ন্যাংটা করে ছেড়ে দিচ্ছে।
মফিজঃ জ্বি স্যার আছে, কিন্তু জাল। পুচকে বাহিনী এটা ধরতে পারবে না স্যার। নো টেনশন।

মন্ত্রীঃ আচ্ছা আমার মালয়েশিয়ার ভিসা রেডি তো? সময় বড় খারাপ। কখন কি হয় বলা যায় না। আর সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকাটা কি আমার মালয়েশিয়ার একাউন্টে পাঠানো হয়েছে?
মফিজঃ জ্বি স্যার সব রেডি করে রেখেছি। আল্লাহর রহমতে আপনার পদত্যাগটা হয়ে গেলেই চলে যেতে পারবেন।

মন্ত্রীঃ কি? কার রহমতে?
মফিজঃ সরি স্যার ভুল করে বের হয়ে গেছে মুখ দিয়ে। সব সময় আল্লা বিল্লার উপর থাকি তো তাই উনার নাম ছাড়া মুখে কিছু আসে না।

মন্ত্রীঃ বাসায় গিয়ে আমাকে ওজুর পানি দিবি। গিজার নষ্ট, গরম পানি বের হয় না। দেশের মানুষের জন্য আজ দুই রাকাত নামাজ বেশি পড়তে হবে।
মফিজঃ ওকে স্যার।

মিন্টু রোডের ভেতরে দিয়ে মন্ত্রীর গাড়ি ধীরে চলছে। বাসার গেটের সামনে বড় একটা জটলা। পুলিশ র‍্যাবের ছড়াছড়ি।

মন্ত্রীঃ আমার বাসার সামনে এত পুলিশ কেনরে আব্দুল মফিজ গাধা?
মফিজঃ আমি তো স্যার কিছু জানি না। মনে হয় জঙ্গি-সন্ত্রাসী বিচ্ছুবাহিনীর হাত থেকে আপনাকে রক্ষার জন্য অতিরিক্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

মন্ত্রীঃ তাই হবে মনে হচ্ছে। জননেত্রী বলে কথা। আপা আমাকে আপন ভাইয়ের মত দেখে। সূর্য পশ্চিম দিকে উঠবে, কিন্তু আপা আমাকে মন্ত্রীসভা থেকে বাদ দিবে না, বুঝলি!
মফিজঃ কেমনে দিবে স্যার, আপনি ছাড়া কাজের লোক তো দেখি না সরকারে। বাকি সবাই তো খালি ঝিমায়।

গেটের কাছে গাড়ি আসতেই এক অফিসার এগিয়ে এসে দরজা খুলতে বলল।

অফিসারঃ স্যার উই আর ভেরি সরি। বাট গাড়ি ভেতরে ঢুকবে না। প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে আপনাকে বরখাস্তের নোটিশ এসেছে। আপনি আর মন্ত্রী নাই। আপনাকে এখান থেকেই ফেরত যেতে হবে। উই আর ভেরি সরি স্যার!
স্তব্ধ মন্ত্রী ধীরে ধীরে বলল, ওকে, কিন্তু আপনি কি জানেন নতুন কাকে মন্ত্রী করা হল আমার স্থলে?

অফিসারঃ ইন্টারে পড়ে সতেরো বছর বয়েসী এক ছাত্রকে। প্রধানমন্ত্রীর ধারণা আপনার থেকে এই কিশোরই ভাল কাজ করবে।

মন্ত্রীঃ ড্রাইভার গাড়ি ঘোরাও। মফিজ, গাড়িতে পানি আছে রে? ওযু করে নামাজ পড়বো। মাগরিবের ওয়াক্ত এখনো আছে কিনা কে জানে! সময় মত ওয়াক্তের নামাজ পড়তে না পারলে বুকটা ধুকধুক করে।

মফিজঃ হ আছে। কুসুম গরম পানি।

মন্ত্রী অবাক, এই প্রথম মফিজ বাক্য শেষ করলো ‘স্যার' বলা ছাড়া।

*** সমাপ্ত***

জাহিদ কবীর হিমন
আখেন, জার্মানি
২ আগস্ট ২০১৮

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা আগস্ট, ২০১৮ ভোর ৬:৩৮

স্বামী বিশুদ্ধানন্দ বলেছেন: আপনি দেশে আসলে খবর আছে ভাইজান | মফিজ গাধা আর তার ছাগল বস জাবালের নূরের চাকা দিয়ে আপনার .... ছেঁচে দিবে | ;)

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৮ ভোর ৪:১৮

হিমন বলেছেন: ওইটা বিদেশে রেখে এরপর দেশে যাবো, কি বলেন! তেলে আর কিছু ছেঁচতে পারবে না :p

২| ০৩ রা আগস্ট, ২০১৮ সকাল ৭:৩৬

জুনায়েদ বি রাহমান বলেছেন: ফাটাফাটি! এমন কিছু একটা পড়তে চেয়েছিলাম।

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৮ ভোর ৪:১৯

হিমন বলেছেন: ফাটাফাটি ধন্যবাদ। :)

৩| ০৩ রা আগস্ট, ২০১৮ সকাল ১১:০৮

আবু তালেব শেখ বলেছেন: যদি এমন হত ভালোই হত

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৮ ভোর ৪:১৯

হিমন বলেছেন: এমন কি হবে না!!!!!!!

৪| ০৩ রা আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১:১৭

রাজীব নুর বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন বস।

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৮ ভোর ৪:২০

হিমন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ বস! :D

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.