![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি মানুষটার পরিচয় নিয়ে বলার খুব বেশী কিছু নেই। পরিবারের জন্যে উৎসর্গীত বড়ো ছেলে। একজন প্রবাসী।
আমার সামনে বসে থাকা লোকটাকে চিনতে পেরে খানিকটা অবাক হলাম।অনেকদিন পর দেখলাম মানুষটিকে।
হানিফ সিকদার নামের আমার সামনে বসে থাকা মানুষটিকে একসময় আমাদের এলাকার অধিকাংশ মানুষ এক নামে চিনত।কারণ তিনি ছিলেন আমাদের গ্রামের অধিকাংশ জমির মালিক এবং তিনিই ছিলেন গ্রামের সরদার।
শক্ত হাতে তিনি নিয়ন্ত্রন করতেন এই গ্রামের আইন।কিন্তু তিনি নিজেই ছিলেন অন্যায়কারী।
বিয়ে করেছেন দুইটি।
প্রথম স্ত্রীর ঘরে যখন তার চারটি সন্তান তখন তিনি প্রতিবেশী সলিম শেখের সুন্দরী বউ মাজেদার রূপের মোহে আটকে যান।
এরপর তিনি নানারকম কান্ডকীর্তি এবং ষড়যন্ত্র করে সলিম শেখের বিরুদ্ধে থানায় মিথ্যা মামলা করেন এবং গ্রাম্যসালিশের নামে প্রহসনের বিচার করে সলিম শেখ এবং মাজেদার বিচ্ছেদ ঘটান।
এরপর তিনি স্বপ্রণোদিত হয়ে অসহায় এবং নিরাশ্রয়(!) মাজেদা বেগমকে বিয়ে করে ঘরে তোলেন।
প্রথম বউ তাকে বাঁধা দিলে তিনি প্রথম বউকে ঘর থেকে বের করে দেন।
প্রথম বউ রোকেয়া শক্ত ধাঁচের মানুষ ছিলেন।তিনি স্বামী হানিফ সিকদারের নামে থানায় মামলা করেন।মামলা রোকেয়ার পক্ষে যায়।
হানিফ সিকদার বাধ্য হয়ে রোকেয়া বেগমের নামে একটি বসতভিটা এবং কিছু সম্পত্তি লিখে দিতে বাধ্য হন এবং যতোদিন পর্যন্ত তার চার সন্তান সাবালক না হবে ততোদিন পর্যন্ত তাদের ভরণ-পোষনের খরচ দিতে সম্মত হন।
সময় গড়াতে লাগলো।হানিফ সিকদার ছিলেন স্থানীয় পোষ্ট অফিসের পোষ্টমাষ্টার।অসুস্থতাজনিত কারণে দ্বিতীয় বিয়ের কয়েক বছর পর তিনি অবসর নিতে বাধ্য হন।
ততোদিনে তার দ্বিতীয় স্ত্রী মাজেদার ঘরে তিনটি সন্তান।দুইটি পরিবারের ভরণ পোষণ চালাতে গিয়ে তিনি নিজের ভাগের জমি বিক্রি করতে শুরু করলেন।
প্রথম স্ত্রীর সন্তানরা ধীরে ধীরে সাবালক হল এবং সবাই মা রোকেয়া বেগমের শক্ত শাসনের ফলে সফলভাবে শিক্ষাজীবন শেষ করলো।বড় এবং মেজো মেয়েকে বিয়ে দিলেন রোকেয়া বেগম।দুই ছেলেও চাকরী করতে শুরু করলো।
হানিফ সিকদারের খারাপ দিন তখন আসন্ন।তার দ্বিতীয় স্ত্রীর ঘরের বড় ছেলেটা বখে গেল।নেশার টাকার জন্যে ঘরে ভাঙ্গচুর করতে লাগলো।তবু স্নেহের বশে হানিফ সিকদার কিছুই করতে পারলেন না।
একসময় একমাত্র বসতভিটা ছাড়া আর কিছুই রইলোনা হানিফ সিকদারের।
নেশার টাকার জন্য উন্মত্ত তার ছেলে একদিন বৃদ্ধ হানিফ সিকদারের গায়ে হাত তুললো।
দ্বিতীয় স্ত্রী মাজেদা বেগম বসতভিটা খানি নিজের নামে লিখে নিয়ে হানিফ সিকদারকে ঘর থেকে বের করে দিলো।
খবর পেয়ে অসহায় বৃদ্ধ হানিফ সিকদারকে ঘরে নিয়ে এলো যাদের একদিন তিনি ঘরছাড়া করেছিলেন সেই রোকেয়ার বড় সন্তান মাসুম।
যাদের তিনি পিতৃস্নেহ থেকে বঞ্চিত করেছিলেন তারাই আজকে তার সবচেয়ে বড় সহায়।পিতাকে কাছে পেয়ে তাদের কি সমাদর।তারা যে অনেক খুশী সেটা তাদের আচরণ দেখেই বুঝা যায়।
কিন্তু রোকেয়া বেগম স্বামীকে ক্ষমা করেননি।যে অন্যায় তার প্রতি হয়েছে তার কোন ক্ষমা নেই।
আমার খুব জানতে ইচ্ছা করে, হানিফ সিকদারের মনে কি এখন কোন পাপবোধ কাজ করে?
তিনি কি পারেন তার এই সন্তানদের চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলতে যাদের সাথে তিনি অজস্র অন্যায় করেছেন?
যাদের প্রতি পিতার দায়িত্ব কখনো পালন করেননি সেই তাদেরকে আজকে আদর্শ সন্তানের মতো বৃদ্ধ পিতার প্রতি দায়িত্ব পালন করতে দেখে কি নিজের ভুলের জন্য অনুতপ্ত এবং অনুশোচনা বোধ করেন না?
হয়তো করেন!তবে বড্ড দেরীতে!
মানুষ নিজের দুর্ভাগ্যের জন্য সবসময় নিয়তিকে দায়ী করে।নিয়তির কাছে নিজেকে বন্দী মনে করে।
কিন্তু হানিফ সিকদারের মতো কিছু মানুষ নিজের দুর্ভাগ্যের জন্যে নিজেই দায়ী।
যারা ভুলে যায় আজকের কর্মফল ভবিষ্যতের নিয়ন্ত্রক।
ভবিষ্যত সব কর্মফলের হিসাব নিয়ে আপনার জন্যে প্রস্তুত হয়ে আছে!
আপনি প্রস্তুত তো???
২| ০৩ রা মার্চ, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:০৪
সুমন কর বলেছেন: পরিচিত পটভূমি।
৩| ০৩ রা মার্চ, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৩৮
আংশিক ভগ্নাংশ জামান বলেছেন: ঠিক বলেছেন।ধন্যবাদ আপনাকে।
৪| ০৩ রা মার্চ, ২০১৫ রাত ১০:৪৮
এম এম করিম বলেছেন: হানিফের আরেকটু কষ্ট পাওয়া উচিত ছিলো।
৫| ০৩ রা মার্চ, ২০১৫ রাত ১১:৩৫
আংশিক ভগ্নাংশ জামান বলেছেন: বয়স সাপেক্ষে যথেষ্ট কষ্ট পেয়েছেন তিনি।আর লজ্জাটাই সবচেয়ে বড় শাস্তি।
মূল্যবান মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ আপনাকে।
৬| ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৫ রাত ৯:৩৪
আমি সাজিদ বলেছেন: প্যাথেটিক
৭| ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৫ রাত ১০:০৪
আংশিক ভগ্নাংশ জামান বলেছেন: মূল্যবান মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ আপনাকে।
©somewhere in net ltd.
১|
০৩ রা মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৫:০৬
কুষ্টিয়ারশুভ বলেছেন: Click This Link