নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী জসিম উদ্দিন জয় তিনি ঢাকা জেলায় খুব সাধারণ মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন । পিতা আব্দুল ছাত্তার খান ও মাতা আমেনা বেগম, পৈত্তিকভিটা কুমিল্লা জেলায়। প্রযুক্তিবিদ, সাংবাদিক, সাহিত্যিক এবং একজন দক্ষ সংগঠক হিসাবে বেশ পরিচিত তিনি | 19

জসিম উদ্দিন জয়

সাহিত্যিক, সংগঠক, প্রযুক্তিবিদ

জসিম উদ্দিন জয় › বিস্তারিত পোস্টঃ

সোহাগী

০৩ রা মে, ২০১৬ দুপুর ১:০০



- জসিম উদ্দিন জয়

সন্ধ্যের সূর্য্যটার লাল আলোর লালিমা যখন সমস্ত পুকুরের পানি রং লালচে হয়ে উঠেছে। সে আলোয় সোহাগীর গায়ের রং জ্বল জ্বল করে ঝলসে উঠেছে টসটসা রুপের যৌবন । ইট সিমেন্ট্ দিয়ে পাঁকা করা পুকুরের ঘাটটিও ছিলো লাল রংয়ের। উত্তরের হালকা বাতাসে পুকুরের পানিও খানিকটা খুদ্র খুদ্র টেউয়ের এপাশ ওপাশ দোল খাচ্ছে। সজঁনে গাছের গুরি গুরি পাতাগুলো উড়ে উড়ে পড়ছে পুকুরের পারে। সোহাগী তখনও পুকুরের ঘাটের উপরে খানিকটা জায়গায় একটি ১৬গুটির ঘর একেঁ খেলাধুলা করছিলো । রবি তার খেলার সাথী। ছোটকাল থেকেই ছোট ভাই রবিই তার খেলার সাথী। জমজমাট খেলার ফাকেঁ রবি চোখ পড়লো পুকুরের ঘাটটি কেমন অন্ধকার হয়ে আসছে । তাছাড়া পুরাতন ঝিনশির্ন একটি বাড়ি। এই বাড়িটি একসময় নামকরা হিন্দুদের বাড়ি ছিলো। এখন এই বাড়িতে কেহ থাকে না। সন্ধ্যের পরপরই এই বাড়িটি ভুতুরে পরিবেশের সৃষ্টি হয়ে উঠে। সেই ভুতুরে পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ার আগেই ছোট ভাই রবি বলে উঠে,‘‘বুবু তারাতারি বাড়ি চল, সুর্য্য ডুবে যাচ্ছে। দেখতে পাচ্ছিস না, সব কিছু কেমন অন্ধকার হয়ে আসছে।” সেহাগী চারিদিক তাকিয়ে দেখে বলে উঠে ‘‘চলচল তাড়াতাড়ি বাড়ি চল, বলতে না বলতেই মাগরিবের আযান পরে যায়। সেহাগী তার পরিহত শাড়ীর আচলটি যা তার ফুলে উঠা স্তন ছুয়ে জড়িয়ে ছিলো, সেই শাড়ীর আচলখানি সেখান থেকে সরিয়ে মাথার চুলগুলোকে ডাকবার সময় চোখ পরে ঘাটের বামপাশে দাঁড়িয়ে মানিক ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছে তার দিকে। তার তাকানোর দৃষ্টি, শুকুনের দৃষ্টির চেয়ে কম না । চোখ দিয়েই সোহাগীর শরীরটাকে সে মুখস্ত করে নিচ্ছে। সোহাগী তরিঘরি করে মাথার কাপঁড় নামিয়ে তার শরীরটাকে ঢেকে স্তনকে আড়াল করবার চেষ্টাকরে। মানিক দৃষ্টিসরিয়ে তার ছোটভাই রবির দিকে তাকিয়ে বলে ,‘‘ রবি এখন এই আন্ধকারে বাসায় যাবি কি ভাবে । তোর বুবুরে বল আমি খুব ভালো মানুষ, গাঁও-গ্রামের মানুষ আমারে খুব শ্রদ্ধা করে। চল আমার সাথে তোদের বাসায় দিয়ে আসি ”
রবি খানিকটা বিরক্ত হয় এবং ভেঞ্চি কেটে বলে,‘‘ ভালা মাই্যনশের দরকার নাই আমগো, আপনার রাস্তায় আপনি যান । আমার বুবু আমাকে ছাড়া কারো সাথে কোথাও যায় না। বলেই বুবুর হাতখানা শক্ত করে ধরে বাসার দিকে রওনা হয়।
ররি ও সোহাগী চলে যাওয়ার দৃশ্য দূর থেকে দাড়িঁয়ে শুকুনের মতো তীখœ দৃষ্টি দিয়ে তাঁকিয়ে দেখে মানিক।
কিছুক্ষণ এর জন্য আকাশে অন্ধকার নেমে আসে। দিনটি ছিলো বৈশাখের মাঝামাঝি । কখনো রোদ কখনো বৃষ্টি । কখনো দমকা হওয়ায় উড়িয়ে নিয়ে যায় গাছের ডালপালাগুলো। সেদিনটি ভিন্নকিছু না । গগনের ডাকে হঠাৎ বৃষ্টির আলামত । রবি ও সোহাগী দ্রুত কদমে পথ হাটছিলো। বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছতে ২০মিনিটের পথ পাড়ি দিতে হবে। পথেই রয়ে যায় একটি ছোট ডোবা । ডোবাটির মাঝ বরাবর ৩টি বাঁশের একটি সাঁকু পারি দিতে হবে। সে সাকুটি মাঝ খানে দাঁড়িয়ে আছে বিকি নামের ২৭ বছরের যুবক । চৌধুরী বাড়ির বড় ছেলে বিকি চৌধুরী। কিছুতেই সে পথ ছারছে না। কিছুক্ষন বাদেই ঝরঝর করে বৃষ্টি পড়তে আরম্ভ করলে।
সোহাগী শাড়ীর কাপড়টি গায়ের সাথে লেপটিয়ে যায়। যৌবনে সর্বাঙ্গগুলো ফুটন্ত ফুলের মতো ফুটে উঠে। বিকির চোখ কিছতেই নামছে না সেহাগী শরীর থেকে । চোখ দিয়ে বার বার সে সোহাগীর শরীর স্ক্যান করতে থাকে। চোখ দিয়ে গিলে নিচ্ছে তার শরীর ।
চৌধুরী সাহেব খুব ভালো মানুষ ছিলেন। সুখে দু:খে গ্রামের গরিব দুঃখি মানুষের পাশে সব সময় দাড়াঁতেন। সেই চৌধুরী সাহেবের নাম ছিলো রুবেল চৌধুরী। গ্রামের মানুষ এখনও তাকে শ্রদ্ধার সাথে স্বরণ করে। কথিত আছে এই চৌধুরী সাহেব পিতার কাছ থেকে পাওয়া জমিদারি প্রায় অর্ধেকের বেশী বিলিয়ে দিয়েছেন গ্রামের গরিব দুঃখি মানুষের জন্য। অথচ অমন ফেরশতার মতো মানুষের ছেলে হয়েছে শয়তান। বিকি বাহিরে ব্রিটিশ দেশে পড়াশুনা করে দেশে ফিরেছে। দেশে ফেরার পর থেকে গ্রামের যুবতী কন্যাদের উত্যক্ত করে চলছে। গ্রামের মানুষ তার এই অসভ্য আচরণে ক্ষিপ্ত । বাবার পরিচয়ে সবাই তাকে ক্ষমা করে দেয় । কেউ কেউ তাকে অনেক বোঝানো চেষ্টা করে। সবকিছুই বুঝো আবার কোন কিছুই বুঝে না। ব্রিটিশদের দেশে পড়াশুনা শিখে বড় হয়েছে । ব্রিটিশদের সভ্যতা মানবোতা না শিখে , শিখেছে অসভ্যতা ।
বিকির হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য রবি মনে মনে একটি বুদ্ধি বের করলো । পকেটে ছিলো লাঠিম, তড়িঘরি করে লাঠিমটি বের করে ছুরে মারে বিকির পেট বরাবর। কথায় আছে, “রাখে আল্লা মারে কে” লাঠিম পেট বরাবর আঘাত না করে সরাসরি বিকির যৌনঙ্গের সাথে অন্ডকোষে আঘাত আনো । বিকি তাৎক্ষনিক, ও মাই গড ওগড, হেল্প মি, হেল্প মি, বলতে বলতে সোজা পানিতে ধপ্পাস করে পরে চুবনি খেতে থাকে। এই সুযোগে সোহাগীর হাতটি শক্ত করে ধরে রবি ও সোহাগী দৌড় শুরু করে বাসার দিকে। সোহাগী পরনের শাড়ীটা বৃষ্টিতে ভিজে বেশ ঝড়সড় হয়ে আছে। দৌড়াতে খুবই কষ্ট হচ্ছে, মাঝে মাঝে দৌড়াতে যেয়ে খানিক বাধাঁ হয়ে দাড়াঁচ্ছে শাড়ীটি। তবুও দৌঁড়াতে হবে। কেননা বিকি খুবই খারাপ লোক। তার হাত থেকে বাচঁতে হবে।
( দুই ২)
রাত যতই গভীর হতে থাকে সেহাগী মনের আকাশে অন্ধকার ততই ঝটিলতা দেখা দেয়। আকাশে থেমে থেমে বিদুৎত চমৎকাচ্ছে। তার বিজলি বাতি আলো সেহাগীর ঘরে প্রবেশ করার মাত্রই তখনই খানিকটা চমকে উঠছে। কিসের ভয় সে নিজেও জানে না। ঘরের দক্ষিনে ছোট একটি বারান্দার ফাঁকে আকাশের দিকে তাকায় । তখন গুরিগুরি বৃষ্টি ঝাপটা এসে সেহাগীর রঙ্গীন গালে মিলিয়ে যাচ্ছে। তবুও শান্ত না সোহাগী । কিসের ভয় তাকে তাড়া করে ফিরে। মেয়ে হয়ে জন্মাটাকি ভয়। মেয়ে হয়ে জন্মনেয়াটা কি পাপ। মেয়ে হয়ে জন্মেছে বলেই তার এই ভয়। দুরন্ত স্বাধীনতা, দুরন্ত কিশোরী , সোহাগী ভাবনার আকাশে সত্য আলো কিছুতেই জ্বলে উঠতে পারছে না। গ্রামের নামীদামী মানুষগুলো, বাবার বয়সী মানুষগুলো শুকুনের মতো ভয়ংকর দৃষ্টির চাহনীর কথা মনে করতেই গাঁ শিউরে উঠে। তাদের আচরনের কথা মনে করতেই খানিক কেপেঁ উঠছে সোহাগী। সোহাগীর দাদাঁ মুক্তিযুদ্ধের সময় খানসেনাদের হাতে নিহত হয়েছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের শহীদ পরিবার হিসাবে সোহাগীর বাবা একটি সরকারি চাকুরি পান। ভালো কাটছিলো তাদের সংসার । গত বন্যায় নদী ভাঙ্গনের সময় আচমকা পানিতে ডুবে যায় তাদের গ্রাম। তখন সোহাগীর আম্মু পানিতে ডুবে, দিবারাত্র কষ্ট করে তাদের পরিবারটিকে বাঁচিয়ে ছিলো। কিন্তু বাচঁলো না সে । ডায়েরিয়া, আর ভয়ানক কালো জরে মৃত্যুর কোলো ঢলে পরে। চিরতরে মাকেঁ হারায় সোহাগী ও রবি । সেই থেকে সোহাগীর বাবা প্রায় আধপাগলের মতো হাটে বাজারে ঘুরে বেড়ায়। বাউল গান গায়। সংসারের প্রতি তার কোন মায়াটান নেই। স্থির হয়ে বসতে পারে না। কিছু বললেই পানিতে যেয়ে ডুব দেয় । কোন কোন দিন দিনে আট থেকে দশবার পানিতে ডুব দিয়ে বসে থাকে। সোহাগীর দাদীমা বৃদ্ধ হলোও সংসারের হাল ধরে রেখেছে । এখন বয়সের ভারে ভালো চোখে দেখেন না । তবুও নাতি নাতনিরা খাওয়ানো পড়ানোর তিল পরিমান কষ্ট পায় না। সংসারটাকে যতœ করে ধরে রেখেছেন।

( তিন ৩ )
গত সপ্তাহখানেক সোহাগী বিদ্যালয়ে যাই নাই। শেষে যেদিন বিদ্যালয়ে থেকে ফিরছিলেন পথেই পরিমল মাষ্টার এর সাথে দেখা। মাষ্টার মশাই তার পড়াশুনার খুবই প্রসংশা করলো। পরিমল মাষ্টারের শেষের কথাটা যখন বুঝলে তখন বিদ্যুৎগতিতে আঘাত হানলো সোহাগীর মনি কৌঠায়। তার পরদিন থেকে সে আর বিদ্যালয়ে যায় নাই। যে মাষ্টার মশাই তার বাবার সমান বয়োসি সে হঠাৎ সেহাগীর হাত ধরে বসে, এবং বলে উঠে ,‘‘ সোহাগী একটি কথা তুমি কাউকে বলতে পারবে না, আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি, ‘‘ তুমি যা চাও আমি তাই কিনে দিবে, যত টাকা লাগে আমি দিবো । শুধু একটিবার আমারে সময় দিবে, প্রতি শনিবার আমার বাসা খালি থাকে কেউ থাকে না । সেদিন তুমি আমারে সময় দিবে।
সেদিন থেকে সেহাগী লজ্জায় আর ভয়ে বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ করেছে। কিন্তু তার দুরন্ত কিশোরী মন । ঘরে বন্ধি থাকতে চায় । খোলা আকাশ, বাতাস, প্রকৃতি, হিন্দু বাড়ির পুকুর ঘাট, ১৬ঘুটি খেলা, সবকিছুই তাকে তাড়া করে ফিরে । দুরন্ত কিশোরী সোহাগী মাঝে মাঝে সবকিছু ভুলে ছুটে যায় প্রকৃতির কাছে । কিন্তু প্রকৃতি নিচে বসবাস করা হিং¯্র শুকুনের চোখের ভয়ংকর চাহনীর কথা মনে করতেই । আবার ঘরে ছুটে যায়।

(চার ৪)
মনের আজান্তে সোহাগী ও রবি ছুটে আসে সেই চিরচেনা হিন্দু বাড়ির পুকুর ঘাটে । উচ্ছাস্ আর আনন্দে দিনভর খেলায় মেতে উঠে দুই ভাই বোন। প্রকৃতির নিষ্পাপ মায়া আর ভারোবাসা মাঝে জমজমাট খেলায় দারুন সময় কাটাচ্ছিলো দুই ভাই বোন। রবি কখনো জাম গাছে জাম পারছে। সেই জাম দুইজনে ভাগযোগ করে খাচ্ছে। কখনো সোগাগী পেয়ারা গাছে উঠে কাচাঁ-পাকা পেয়ারা পেরে লাফিয়ে পরছে গাছ থেকে। তারপর দুই ভাইবোন মিলে এগুলো পুকুরের পানিতে ভালো করে ধুইয়ে নেয় । হাসতে হাসতে মুখে ভরে নেয়। কটকট করে খেতে থাকে পেয়ারা। আর এভাবেই দূপুর গড়িয়ে বিকেল । সেই ১৬ঘুটির খেলার শুরুটা ছিলো খুবই চমৎকার । জমজমাট একটা খেলার ফাকেঁ হঠাৎ বৃষ্টি আলামত । কোন কিছুই বুঝবার আগেই অঝরে বৃষ্টি পরতে থাকে। বৃষ্টি থেকে বুবুকে রক্ষা করার জন্য বড় একটি কলাপাতা আনার জন্য রবি ছুটে যায় বাড়ির দক্ষিন দিকে যে খাল আছে। সেই খানিকটা নিচে। সেখানে বড় বড় কলা পাতা রয়েছে। রবি তড়িঘরি করে বলে উঠে,‘‘ বুৃবু বৃষ্টিতে ভিজলে তোর ঠান্ডা লেগে যাবে, আমি বড় একটি কলাপাতা নিয়ে আসি। বলেই রবি চলে যায়। রবি তার বুবুকে বৃষ্টির হাত থেকে রক্ষা করবে । কিন্তু সুন্দর গল্পটির শেষ পরিনামটি লিখতে আমার কষ্ট হচ্ছিলো আর লিখতে মন চাইছিলেনা । হাত থেকে কলম তখনমাটিতে পরে যায়। পুনরায় কলমটি হাতে তুলে এই গল্পের শেষটা লিখতে বসি ।
রবি ঝরঝরে বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে আর একপা দু‘পা লাফাতে লাফাতে যখন তার বুবুর জন্য বড় একটি কলাপাতা আনতে যায়। তার বুবুকে বৃষ্টির হাত থেকে রক্ষা করার জন্য । কিন্তু এই তো শুধু প্রকৃতির বৃষ্টি । কিছুক্ষন পর হয়ত বৃষ্টি চলে যাবে । ¯œান হবে এই পৃথিবীর প্রকৃতির । কিন্তু মানুষরুপি ভয়ংকর জানোয়ারের হাত থেকে রবি কি পারবে তার বুবুকে রক্ষা করতে। সেই পুরোনো হিন্দু বাড়িতেই লুকিয়ে ছিলো চৌধুরীর ছেলে বিকি ও তথাকথিক নামীদামী মুখোশধারী মানিক । রবি কলাপাতা ছিরবার সময় বিকি তার মুখ চেপে ধরে । একটি লালকালো রংয়ের গামছা দিয়ে মুখ বেধেঁ গাছের সাথে বেধেঁ রাখে। তখন সোহাগী সেই পুকুরঘাটে রবির জন্য অপেক্ষ করছিলো । অঝরে বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে একাকার হয়ে রবিকে ডেকে বলছে‘‘‘ রবি ও রবি তুই কেথায় গেলি । তোর কলাপাতা আনতে হবে না। আমি বৃষ্টিতে পুরো ভিজে গেছি। তুই চলে আই । বুবুর কথাগুলো রবির কান পর্যন্ত পৌঁছায় কিন্তু কোন সারা শব্দ সে করতে পারছে না । তার মুখ কাপড় দিয়ে বাধাঁ শরীর বাঁধা কলাগাছের সাথে। সোহাগী চিৎকার করে পুনরায় ডাক দিতেই । দুই দুইজন পেছন থেকে জানোয়ারের মতো ঝাপিয়ে পরে সোহাগীর গায়ের উপর । কোন কিছু বুঝাবার আগেই । বিকি সেহাগীর দুই হাত ঝাপসে ধরে । দুই উরু ও অস্থির সন্ধিস্থলে গরম শক্ত কি যেনো ঢুকিয়ে দেয়। এক চিৎকারে সোহাগী জ্ঞান হারায়। সন্ধ্যিস্থল থেকে সতিচ্ছেদের রক্ত ঝরতে থাকে। চেতনহীন সোহাগীর সমস্ত শরীরের কুকুরের মাতো কামড়াতে লাগলো জানোয়ার দু‘টি । আকাশ খানিকটা গোমরি গোমরিয়ে উঠছিলো। গগনের ডাক আর বিদ্যুৎ এর চমকে হঠাৎ দমকা হাওয়া শুরু হয় । জোড়ালো বৃষ্টি খানিকটা শিথীল হয়ে আসে। বৃষ্টি চলে যায়। পৃথিবীর প্রকৃতি ধুয়ে মুছে মাটিকে পবিত্র করে বৃষ্টি চলে যায়। শুধু মাটিতে চেতনাহীন সোহাগী পরে রয়। জানোয়ার দু‘টি সোহাগীকে অপবিত্র করে চলে যায় । যাওয়ার সময় বিকি কলা গাছের সাথে আটকে রাখা রবির বাধঁন খুলে দিয়ে হা হা করে হাসি দিয়ে বলে, ‘‘ যা তোর দিদিকে কলাপাতা দিয়ে রক্ষা কর। তোর দিদি বৃষ্টিতে ভিজছে। । রবি কলা পাতা নিয়ে ছুটে যায় বুবুকে বৃষ্টির হাত থেকে রক্ষা করার জন্য । রবি জানে না প্রকৃতির হাত থেকে প্রকৃতিই মানুষকে রক্ষা করে। নদীর মানুষের একুল ভাঙ্গলেও আপরদিকে নতুন কুল করে গড়ে দেয়। কিন্তু মানুষরুপি পুরুষ জানোয়ার হাত থেকে মানুষকে রক্ষা করা যায় না। রবী ছুটে যেয়ে দেখে বুবুটি তাহার মাটিতে পরে আছে । বুবুর পরনে বাসন্তি কালারের শাড়ীটি রক্তে লাল হয়ে আছে। বৃষ্টিও পারেনি এই লাল রক্ত ধুয়ে দিতে। রবি , চিৎকার করে বলে ,, বুবুগো তোমার কি হয়েছে। তুমি কথা বলো ,। বুবু কথা বলে না । ‘‘ততক্ষনে তার বুবু চলে গেছে না ফেরার দেশে।



মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.