![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ঢাকা এয়ারপোর্টের সংলগ্ন কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা আবারও বাংলাদেশের রপ্তানি খাতের নিরাপত্তা ব্যবস্থার নাজুক চিত্র প্রকাশ করেছে। অগ্নিকাণ্ডের এই ঘটনায় শত কোটি টাকার পণ্য পুড়ে যাওয়ার পাশাপাশি দেশের অন্যতম বৃহৎ রপ্তানি খাত—তৈরি পোশাক শিল্পসহ অন্যান্য খাতের উদ্যোক্তাদের মধ্যে গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে।
বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ)-এর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেছেন, কার্গো ভিলেজের মতো অত্যন্ত স্পর্শকাতর ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা দেশের রপ্তানি নিরাপত্তার ভয়াবহ দুর্বলতা উন্মোচন করেছে। তিনি উল্লেখ করেন, “বিগত কয়েক বছর ধরে আমরা বারবার অভিযোগ করে আসছি—রপ্তানির পণ্যগুলো খোলা জায়গায় রাখা হয়, যা নিরাপত্তার দিক থেকে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। আজকের এই দুর্ঘটনা সেই বাস্তবতাকেই প্রমাণ করেছে।”
হাতেম আরও বলেন, এই ঘটনাটি নিছক দুর্ঘটনা নাকি এর পেছনে কোনো নাশকতা রয়েছে, তা সরকারকে দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে উদঘাটন করতে হবে। সাম্প্রতিক সময়ে চট্টগ্রাম ইপিজেডসহ একাধিক পোশাক কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, যা এক ধরনের উদ্বেগজনক প্রবণতা নির্দেশ করছে। এই প্রেক্ষাপটে তিনি সরকারের কাছে দ্রুত তদন্ত ও কার্যকর প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান।
কার্গো ভিলেজ মূলত দেশের রপ্তানিমুখী ও আমদানিনির্ভর বিভিন্ন শিল্পের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। এখানে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকরা তাদের পণ্য ও নমুনা পাঠান, পাশাপাশি ওষুধ শিল্পের উদ্যোক্তারা কাঁচামাল আমদানি করেন, কৃষিপণ্য রপ্তানিকারকরা পচনশীল পণ্য পাঠান এবং আন্তর্জাতিক কুরিয়ার সার্ভিসগুলো এখান থেকেই নথি ও পার্সেল পাঠায়। ফলে এই স্থানের যেকোনো দুর্ঘটনা শুধু আর্থিক ক্ষতিই নয়, বরং পুরো রপ্তানি চেইনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
বিকেএমইএ সভাপতি জানিয়েছেন, এখনই ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা সম্ভব নয়। তদন্ত শেষ হলে সামগ্রিক ক্ষতির চিত্র পাওয়া যাবে। তিনি ক্ষতিগ্রস্ত উদ্যোক্তাদের ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের জন্য সরকারের প্রতি দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। পাশাপাশি সদস্যদের কাছে ক্ষয়ক্ষতির তথ্য জানাতে চিঠি পাঠানো হবে বলেও জানান তিনি।
অগ্নিকাণ্ডের এই ঘটনাটি শুধু একটি দুর্ঘটনা নয়—এটি বাংলাদেশের রপ্তানি খাতের নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতা, অব্যবস্থাপনা ও সচেতনতার অভাবের প্রতিফলন। এখন প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদি ও টেকসই নিরাপত্তা কাঠামো গড়ে তোলা, যাতে দেশের বৈদেশিক বাণিজ্যের সুনাম ও স্থিতিশীলতা আর কোনো অগ্নিকাণ্ডে ভস্মীভূত না হয়।
©somewhere in net ltd.