নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রূপার কৌটা

জহিরুল হক শাওন

জহিরুল হক শাওন › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশের মূলনীতি

১৮ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ১০:২৩

বাংলাদেশ রাষ্ট্র
বাংলাদেশ রাষ্ট্রের পরিচয়ঃ
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একটি রাষ্ট্র। দেশটির উত্তর, পূর্ব ও পশ্চিম সীমানায় ভারত ও দক্ষিণ-পূর্ব সীমানায় মায়ানমার; দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর । এর ঐতিহাসিক নাম “বঙ্গ” বা “বাংলা”। ১৯৪৭ সালের ভারত বিভাগের সময় পাকিস্তানের পূর্ব অংশ (পূর্ব পাকিস্তান) হিসেবে বাংলাদেশের সীমানা নির্ধারিত হয়। । ১৯৭১ সালে ভারতের সমর্থন নিয়ে এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে । বাংলাদেশের স্বাধীনতা-পরবর্তী বছরগুলো রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলায় পরিপূর্ণ; এ সময় দেশটিতে তেরোবার রাষ্ট্রপরিচালনার রদবদল হয়, আর সামরিক অভ্যুত্থান ঘটে কমপক্ষে চারবার ।
বাংলাদেশের জনসমষ্টিঃ
রাষ্ট্রের প্রথম উপাদান হলো জনসমষ্টি । জনসমষ্টি ছাড়া রাষ্ট্র কল্পনা করা যায়না । কিন্তু বাংলাদেশের জনসমষ্টি তুলনামূলক অনেক বেশি । ২০১১ সালে অনুষ্ঠিত আদমশুমারীর প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশের জনসংখ্যা ১৪ কোটি ২৩ লাখ ১৯ হাজার। এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধির বার্ষিক হার ১ দশমিক ৩৪ শতাংশ। এই আদমশুমারীর প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী বার্ষিক জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ২.২ শতাংশ। এই হিসাবে বাংলদেশে পৃথিবীর ৮ম জনবহুল দেশ। জনঘনত্ব প্রতি বর্গমাইল এলাকায় ২৪৯৭ জনের বেশী । এদেশে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে মানুষের গড় আয়ু ৬৩ বছর । জাতিগতভাবে বাংলাদেশের ৯৮% মানুষ বাঙ্গালী। বাকি ২% মানুষ বিহারী বংশদ্ভুত, অথবা বিভিন্ন উপজাতীর সদস্য। পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকা সহ ৪৫টি উপজাতি রয়েছে। এদের মধ্যে চাকমা উপজাতি প্রধান। পার্বত্য চট্টগ্রামের বাইরের উপজাতি গুলোর মধ্যে গারো ও সাঁওতাল উল্লেখযোগ্য। বাংলাদেশের জনগোষ্ঠির প্রধান ধর্মবিশ্বাস ইসলাম (৮৮%)। এর পরেই রয়েছে হিন্দু ধর্ম(১১%) । বাকি ১% মানুষ বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, অথবা অগ্নিপূজক ধর্মে বিশ্বাসী । মোট জনগোষ্ঠীর ২১.৪% শহরে বাস করে, বাকি ৭৮.৬% গ্রামাঞ্চলের অধিবাসী।


বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ভূখন্ডঃ

বাংলাদেশের জনসমষ্টি এ দেশের ভূখণ্ডে স্থায়ীভাবে বাস করে । কেননা স্থায়ী আবাস-ভূমিহীন ভবঘুরে যাযাবরেরা রাষ্ট্র গঠন করতে পারেনা । আবার ভূখণ্ড বলতে শুধু মাটির উপরিভাগকে বুঝায় না । মাটির নিচের সম্পদ,আকাশসীমা,পাহাড়-পর্বত,নদ-নদী,সমুদ্র সবই বাংলাদেশ ভূখণ্ডের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত । শোষণ, বৈষম্য ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। এ রাষ্ট্রের আয়তন ১,৪৭,৫৭০ বর্গ কিলোমিটার। বাংলাদেশ ৮টি প্রশাসনিক বিভাগে বিভক্ত- এগুলো হল: ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, ময়মনসিংহ, বরিশাল, সিলেট এবং রংপুর। প্রতিটি বিভাগে রয়েছে অনেকগুলো জেলা। বাংলাদেশের জেলার সংখ্যা মোট ৬৪টি। সারাদেশে উপজেলা রয়েছে ৪৮৯টি। এছাড়া শহরাঞ্চলে ১১টি সিটি কর্পোরেশন (ঢাকা-উত্তর, ঢাকা-দক্ষিণ, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, রংপুর, সিলেট, বরিশাল, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও কুমিল্লা) এবং ২২৩টি পৌরসভা রয়েছে।
বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সরকার ব্যবস্থাঃ
সরকার রাষ্ট্রের সমবেত ইচ্ছার প্রতীকস্বরূপ । সরকারেরে মাধ্যমেই রাষ্ট্রের ইচ্ছা প্রকাশিত ও কার্যকর হয় । বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সরকার বাংলাদেশকে পরিচালনা করে । সরকার ছাড়া রাষ্ট্র অচল হয়ে পড়ে । সরকারের অনুপস্থিতিতে সবল দুর্বলকে আক্রমণ করে । সরকারহীন রাষ্ট্র মাঝিহীন নৌকার মতো । বাংলাদেশে সংসদীয় গণতন্ত্র ব্যবস্থার সরকার পদ্ধতি প্রচলিত। রাষ্ট্রপতি এদেশের রাষ্ট্রপ্রধান, তবে তাঁর ক্ষমতা সীমিত। মূল ক্ষমতার অধিকারী হলেন প্রধানমন্ত্রী, যিনি সরকার প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। জাতীয় সংসদের সদস্যদের ভোটে রাষ্ট্রিপতি নির্বাচিত হন পাঁচ বছর পর পর। তবে সংসদ নির্বাচনের সময় কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে রাষ্ট্রপতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন । সুপ্রিম কোর্ট বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত । এর প্রধান বিচারপতি ও অন্যান্য বিচারকদেরকে রাষ্ট্রপতি নিয়োগ দিয়ে থাকেন। দেশের আইনকানুন অনেকটা প্রচলিত ইংরেজ আইনের আদলের, তবে বিবাহ এবং উত্তরাধিকার সংক্রান্ত আইনগুলো ধর্মভিত্তিক। বাংলাদেশের সংবিধান ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দে প্রণীত হয়। পরবর্তীতে ২০১৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সর্বমোট ১৬টি সংশোধনী আনা হয়েছে। বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী বাংলাদেশে সংসদীয় গণতন্ত্র ব্যবস্থার সরকার পদ্ধতি প্রচলিত। রাষ্ট্রযন্ত্রের তিনটি শাখা: সংসদ, প্রশাসন এবং বিচার ব্যবস্থা। বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ এক কক্ষবিশিষ্ট। এতে জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত ৩০০ জন সদস্য ছাড়াও মহিলাদের জন্য ৫০টি সংরক্ষিত আসন আছে। প্রতিটি সংসদের নির্ধারিত মেয়াদকাল ৫ বছর। বাংলাদেশের প্রধান দুইটি রাজনৈতিক দল হল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল। এছাড়াও, জাতীয় পার্টি রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। ১৮ বছর বা তারচেয়ে বয়সে বড় সব নাগরিকের ভোটাধিকার রয়েছে।
বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বঃ
রাষ্ট্র গঠনের সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য উপাদান হলো সার্বভৌমত্ব । বাংলাদেশের শাসন ব্যবস্থা সার্বভৌম ক্ষমতার মাধ্যমে রাষ্ট্রকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করছে । সার্বভৌমত্ব নির্দেশ দেবার এবং তা পালন করবার সর্বোচ্চ পার্থিব ক্ষমতা । বাংলাদেশের ভেতরে প্রত্যেক ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানকে রাষ্ট্র সার্বভৌম ক্ষমতা দ্বারা রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য করতে বাধ্য করে । সার্বভৌমত্বের ফলেই রাষ্ট্র যুগ যুগ ধরে টিকে থাকে । বাংলাদেশও সার্বভৌমত্বের শক্তিতেই টিকে আছে । সার্বভৌমত্বের বলেই বাংলাদেশ রাষ্ট্র আইন প্রণয়ন করে এবং আইনকে রাষ্ট্রের সর্বক্ষেত্রে প্রয়োগ করে । সুতরাং রাষ্ট্র গঠন করতে হলে শুধু জনসমষ্টি ,ভুখন্দ,সরকার হলেই চলবে না , রাষ্ট্রের প্রাণস্বরূপ সার্বভৌম ক্ষমতাও থাকতে হবে ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.