নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার দেশ

রুবেল১৯৮৭

আমি বিশ্বস করি ধর্ম নিরপেক্ষ বাংলাদেশ কিন্তু ধর্মহীনতায় নয়।

রুবেল১৯৮৭ › বিস্তারিত পোস্টঃ

অতীত না বর্তমান বাস্তবতার নিরিখে ইসলাম !

২১ শে জুন, ২০১৩ সকাল ১০:০৯



১. ‘তিনি সবকিছুই যুগল সৃষ্টি করেন, আর তিনি তোমাদের জন্য সৃষ্টি করেছেন জলযান ও পশু, যার উপর চড়তে পারো।’ - সূরা জুখরুফ : ১২



আল্লাহ্‌ মানুষের জন্য জলযান সৃষ্টি করেছেন, স্থলপথে চড়ার জন্য সৃষ্টি করেছেন পশু। স্থলপথে বিচরণের জন্য আজকের বিশ্বে ব্যবহৃত বাস, ট্রাস, রেল তাহলে আল্লাহ্‌র সৃষ্টি নয়! বিমান তো প্রশ্নই ওঠে না! তাই বুঝি এসব আধুনিক যানবাহনের উল্লেখ নেই কুরআনে! ছবি তোলা, টিভি দেখার মতো (যেমনটি কাঠমোল্লারা ফতোয়া দিয়ে থাকে!) এসব আধুনিক যানবাহন ব্যবহার করা তাহলে হারাম!



২. ‘আর মানুষের কাছে হজ্ব ঘোষণা করে দাও। ওরা তোমার কাছে আসবে পায়ে হেঁটে ও ধাবমান উটের পিঠে চড়ে, আসবে দূর-দূরান্তের পথ অতিক্রম করে।’ - সূরা হজ্ব : ২৭



কুরআনের এই সুস্পষ্ট ঘোষণার পর জাহাজ কিংবা উড়োজাহাজ আর মোটরযান যোগে হজ্ব পালন করতে যাওয়া তাহলে কুরআন লঙ্ঘন! হজ্ব করতে যেতে হবে কেবলই পায়ে হেঁটে কিংবা ধাবমান উটের পিঠে চড়ে!



উল্লিখিত আয়াত ৩টি সম্পর্কে দেশের (বিদেশেরও) আলেম-ওলামা-মুফতি সাহেবদের জিজ্ঞাসা করলে তারা বলবেন, কুরআনের এসব আয়াতকে বিবেচনায় নিতে হবে তৎকালীন আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটের নিরিখে এবং আজকের সময়ে এসব আয়াতের প্রায়োগিক ব্যাখ্যাও হবে সমসাময়িক বাস্তবতার আলোকে!



৩. ‘হে বিশ্বাসীগণ! তোমাদেরকে অনুমতি না দেয়া হলে খাবার তৈরির জন্য অপেক্ষা না করে, খাওয়ার জন্য তোমরা নবীর বাড়ির ভিতর ঢুকবে না। তবে তোমাদের ডাকা হলে তোমরা যাবে ও খাওয়ার পর চলে আসবে। কথাবার্তায় তোমরা মেতে যেও না; এমন (ব্যবহার) নবীর বিরক্তি সৃষ্টি করে। তিনি তোমাদেরকে উঠে যাওয়ার জন্য বলতে সংকোচ বোধ করেন। কিন্তু আল্লাহ্‌ সত্য কথা বলতে সংকোচবোধ করেন না। তোমরা তাঁর স্ত্রীদের কাছে কিছু চাইলে পরদার আড়াল থেকে চাইবে। এ বিধান তোমাদের ও তোমাদের হৃদয়ের জন্য পবিত্রকর। তোমাদের কারো পক্ষে আল্লাহ্‌র রাসুলকে কষ্ট দেয়া বা তাঁর মৃত্যুর পর তাদের স্ত্রীদেরকে বিবাহ করা সঙ্গত হবে না। আল্লাহ্‌র কাছে এ গুরুতর অপরাধ।’- সূরা আহজাব : ৫৩



উল্লিখিত আয়াতটি যে নবীর যুগের সমসাময়িক বাস্তবতার নিরিখে নাজিল হয়েছিলো তা কি অস্বীকার করা যাবে? না কি ধর্মবেত্তারা বলবেন, ১৪শ’ বছর পর আজকের উম্মতদের জন্য এ নির্দেশাবলী সরাসরি প্রযোজ্য?



৪. ‘হে বিশ্বাসীগণ! ইহুদি ও খ্রীষ্টানদেরকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ কোরো না। তারা পরস্পরের বন্ধু। তোমাদের মধ্যে কেউ তাদেরকে বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করলে সে তাদের একজন হবে। আল্লাহ্‌ তো সীমা লঙ্ঘনকারী সমপ্রদায়কে সৎপথে পরিচালিত করেন না।’ - সূরা মায়েদা : ৫১



কুরআনের উল্লিখিত সুস্পষ্ট নির্দেশের আলোকে আজকের পৃথিবীতে তথাকথিত মুসলিম বিশ্বের দিকে তাকালে কি দেখা যায়? খ্রীষ্টান আমেরিকা (!) আর খ্রীষ্টান ব্রিটেনের (!) সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সম্পর্ক কিরূপ? পবিত্র ভূমি মক্কা ও মদিনা শাসনকারী সৌদি বাদশাদের জানী দোস্ত কে? সবাই জানে, মার্কিনীরা-ব্রিটিশরা! কেবল দোস্তই নয়! রক্ষাকর্তাও বটে!



তথাকথিত রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ঘোষণাকারী বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম প্রধান (!) দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে খ্রীষ্টান নেতৃত্বাধীন, খ্রীষ্টান প্রধান দেশগুলোর সম্পর্ক কেমন? উত্তর সকলের জানা। মার্কিনীরা তো আমাদের শাসকদের রীতিমত প্রভু! অথচ, ইহুদি ও খ্রীষ্টানরা আজও পরস্পরের বন্ধুই! মুসলিম বিশ্ব নামধারী এই মুশরিক বিশ্ব (!) কেবল প্রকাশ্যেই ইহুদিদের সঙ্গ পরিহার করে চলে!



৫. ‘তাদের প্রতিপালকের শাস্তি থেকে নিশ্চয়ই তাদের পরিত্রাণ নেই। আর যারা নিজেদের যৌন অঙ্গকে সংযত রাখে, কিন্তু তাদের স্ত্রী বা তাদের অধিকারভুক্ত দাসীদের ক্ষেত্রে তারা নিন্দনীয় হবে না, তবে কেউ এদেরকে ছাড়া অন্যকে কামনা করলে তারা সীমালঙ্ঘন করবে।’ - সূরা মা’আরিফ : ২৮-৩১



স্ত্রীর মতোই অধিকারভুক্ত দাসীদের বৈধ করা হয়েছিলো এই আয়াতে। নিশ্চয়ই তৎকালীন প্রেক্ষাপটের আলোকেই বিবেচনায় নিতে হবে এই আয়াতকে। নাকি বর্তমান সৌদি-আরব্য শেখদের মতো বাড়িতে রাখা গন্ডা গন্ডা কাজের মেয়েদেরও (যাদের অধিকাংশই মিশরীয়, ফিলিপিনো, শ্রীলঙ্কান) স্ত্রীদের মতো ব্যবহার করতে হবে এই আয়াত মানার নাম করে!







সরল মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে - তবে কি পবিত্র কুরআনে অস্পষ্টতা রয়েছে? প্রশ্নই আসে না। এ যে কুরআনের বলা আছে, ‘আলিফ-লাম-রা’ - এগুলো সুস্পষ্ট কিতাবের আয়াত (১২:১); ‘তা-সিন-মিম’ - এগুলো সুস্পষ্ট কিতাবের আয়াত (২৬:১-২) এবং এ সেই কিতাব, এতে কোনো সন্দেহ নেই। সাবধানীদের জন্য পথপ্রদর্শক (২:২)। অর্থাৎ কুরআন সুস্পষ্ট, পথপ্রদর্শক এবং সাবধানীদের জন্য। মতলবীদের জন্য নয়! কুরআন পড়তে হবে, বুঝতে হবে, ব্যাখ্যা করতে হবে সাবধানতার সঙ্গে। প্রয়োগের ক্ষেত্রেও অবলম্বন করতে হবে সাবধানতা। সাবধানতার সঙ্গেই বিবেচনায় নিতে হবে এর আয়াতসমূহের অবতীর্ণকালের প্রেক্ষাপট এবং বাস্তবায়নকালের নিজস্ব বাস্তবতা। কিন্তু যুগে যুগে শত শত বছর ধরে কুরআন ব্যাখ্যা করে এসেছে মতলবীরা নিজেদের স্বার্থে, নিজস্ব গোষ্ঠীর স্বার্থে,পদ-পদবী আর আর্থিক লোভে রাজা-বাদশা তথা ক্ষমতাসীনদের স্বার্থে।



এরাই তারা যাদের সম্পর্কে কুরআনে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ্‌ যে কিতাব অবতীর্ণ করেছেন, যারা তা গোপন করে ও তার বিনিময়ে স্বল্পমূল্য গ্রহণ করে, তারা কেবল আগুন দিয়ে নিজেদের উদর পূর্তি করে’ (২:১৭৪)। ‘তোমরা সত্যকে মিথ্যার সঙ্গে মিশিয়ো না, আর জেনেশুনে সত্য গোপন করো না’ (২:৪২)। ‘তোমরা কি এখনো আশা করো যে, তারা তোমাদেরকে বিশ্বাস করবে, যখন একদল আল্লাহ্‌র বাণী শুনে ও বুঝবার পরও জেনেশুনে তা বিকৃত করে?’ (২:৭৫)



এই গোপনকারী ও বিকৃতকারীরা মানুষের সামনে কুরআনের সেইসব আয়াত তুলে ধরে না যেখানে বলা হয়েছে, ‘পূর্ব ও পশ্চিম দিকে তোমাদের মুখ ফেরানোতে কোনো পূণ্য নেই; কিন্তু পূণ্য আছে আল্লাহ্‌, পরকাল, ফেরেশ্‌তা, সব কিতাব ও নবীদের উপর বিশ্বাস করলে, আর আল্লাহ্‌র ভালোবাসায় আত্মীয়-স্বজন, পিতৃহীন, অভাবগ্রস্ত, মুসাফির, সাহায্যপ্রার্থীদেরকে ও দাসমুক্তির জন্য অর্থদান করলে, আর নামাজ কায়েম করলে ও জাকাত দিলে আর প্রতিশ্রুতি পালন করলে, আর দুঃখ, কষ্ট ও যুদ্ধের সময় ধৈর্য ধারণ করলে। এরাই তারা যারা সত্যবাদী ও সাবধানী’ (২:১৭৭)।



সুবিদিত মাসে (শাওয়াল, জিলকদ ও জিলহজ্ব) হজ্ব হয়। যে কেউ এ মাসগুলোতে হজ্ব করা পবিত্র মনে করে সে যেন হজ্বের সময় স্ত্রী সম্ভোগ, অনাচার ও ঝগড়া না করে। আর তোমরা যে সৎকাজ করো আল্লাহ্‌ তা জানেন, আর তোমরা (পরকালের) পাথেয় সংগ্রহ করো, আর আত্মসংযমই তো শ্রেষ্ঠ পাথেয়’ (২:১৯৭)।



হজ্বের তাগিদ সম্বলিত সূরা বাকারার পূর্বাপর আয়াতসমূহের মাঝে পরকালের শ্রেষ্ঠ পাথেয়র কথা সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা আছে ‘আত্মসংযম’ এর কথা। অথচ, মতলবী তাফসিরকারক আর স্বার্থের কাছে নিজেদের বিকিয়ে দেয়া আলেম-উলামারা স্থান-কাল প্রেক্ষাপট ভিন্ন হওয়া সত্ত্বেও কুরবানীর নামে পশু জবাইয়ের মহোৎসবে পৌরহিত্য করে চলেছে। হাজার কোটি টাকা শ্রাদ্ধ করে বিমানপথে (!) সৌদি ডাকাতদের শাসিত কাবা জিয়ারত সিদ্ধ বলে কুরআনের অসময়োপযোগী ব্যাখ্যা ও নানাবিধ ফতোয়া বহাল রেখে চলেছে। অথচ আরবী কুরআন যার সাধনায় বাংলা ভাষায় বাঙময় হয়ে উঠেছিলো সেই মহান সাধক কাজী নজরুল ইসলাম প্রায় একশ’ বছর আগেই কুরআনের সময়োপযোগী ব্যাখ্যা দিয়ে এ সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘আমরা গরু-ছাগল কুরবানী করে খোদাকে ফাঁকি দেবার চেষ্টা করছি। তাতে করে আমরা নিজেদেরকেই ফাঁকি দিচ্ছি। আমাদের মনের ভেতরে যেসব পাপ, অন্যায়, স্বার্থপরতা ও কুসংস্কারের গরু-ছাগল যা আমাদের সৎপ্রবৃত্তির ঘাস খেয়ে আমাদের মনকে মরু করে ফেলেছে আসলে কুরবানী করতে হবে ওইসব গরু-ছাগলদের।’ তিনি দ্ব্যর্থহীন কন্ঠে বলেছেন, ‘দিও নাকো পশু কুরবানী / বিফল হবে রে সবখানি / মনের পশুরে করো জবাই / পশুরাও বাঁচে, বাঁচে সবাই।’ আর এক জায়গায় সাধক বলেছেন, ‘খেয়ে খেয়ে গোস্তরুটি তো খুব / হয়েছো খোদার খাসি ওরে বেকুব / নিজেদের দাও কুরবানী, বেঁচে যাবে তুমি, বাঁচিবে দ্বীন / দাস ইসলাম হবে স্বাধীন।’



কয়েক বছর আগে একটি বেসরকারী সংস্থার গবেষণায় দেখা গেছে দেশে প্রতিবছর কুরবানীতে মোট ৩০ লাখ পশু জবেহ করা হয় যার বাজার মূল্য প্রায় দুই হাজার সাতশ’ কোটি টাকা। এই টাকায় কুরবানীর চরম অপব্যয়ী মচ্ছব না করে দেশের দারিদ্র্য বিমোচনে কাজে লাগালে ৩০ লাখ পরিবারকে স্বচ্ছলতায় আনা যায় বলে গবেষণায় মত প্রকাশ করা হয়।



অপরদিকে, প্রতিবছর হজ্ব পালনের উদ্দেশ্যে এদেশ থেকে সৌদি আরব যায় গড়ে ৪০ থেকে ৫০ হাজার লোক। এদের মাথাপিছু গড়ে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা ব্যয় ধরা হলে মোট ব্যয় হয় প্রায় সাড়ে ৭শ’ থেকে সাড়ে ৮শ’ কোটি টাকা। দেশের নেতা-নেত্রী-মন্ত্রী-পাতিমন্ত্রী-সাংসদ আর ধর্মব্যবসায়ীদের ফি বছর করা ওমরা হজ্বের ব্যয় এর বাইরে রয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে, যে দেশের দারিদ্র্য সীমার নিচে অবস্থান করছে অর্ধেকেরও বেশি মানুষ, ক্ষুধা-মঙ্গা আর শীতে জর্জরিত কোটি কোটি মানুষ, সে দেশে কুরবানী আর হজ্ব পালন যে কোনোক্রমেই কুরআন সম্মত হতে পারে না এটা বুঝার জন্য মতলববাজ ধর্ম ব্যবসায়ীদের দ্বারস্থ হওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। এর জন্য রাসুলের (সাঃ) জীবনাচরণ আর কুরআনের মর্মবাণী অনুধাবন করাই যথেষ্ট।



তাই আজ সময় এসেছে আওয়াজ তোলার আল্লাহ্‌র নামে লোক দেখানো পশু কুরবানী অধর্ম, হজ্বের নামে হাজার কোটি টাকার কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রার অপচয় ইসলাম বিরুদ্ধ। নেতানেত্রী আর বিত্তবান ধর্মবেত্তাদের মতলবী ওমরাহ্‌ হ্‌জ্ব পালন কুরআন বিরোধী!!

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে জুন, ২০১৩ সকাল ১০:৩০

পথহারা সৈকত বলেছেন: হাম্বা.............হাম্বা..........হাম্বা.............

২| ২১ শে জুন, ২০১৩ বিকাল ৩:০৩

দি সুফি বলেছেন: হেহেহেহেহে . . . ছুডবেলায় আয়োডিনযুক্ত লবণ না খাওয়ার ফল এই পোষ্ট . . . =p~ =p~ =p~ =p~ হনুগো স্পেশাল এজেন্টও হইতারে :-P :-P

৩| ২১ শে জুন, ২০১৩ রাত ৮:৫৬

কৃষ্ণনগর বলেছেন: খুব ভালো বিশ্লেষন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.