![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গণতন্ত্রের পূর্বশর্ত হচ্ছে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলো এখনও গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল হিসেবে বিকশিত হতে পারেনি। প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোতে দলীয় সিদ্ধান্ত ছাড়াই, কয়েকজনের সিদ্ধান্ত ও ইচ্ছা অন্ধভাবে সমর্থিত হয়। অন্ধ সমর্থন এবং সমর্থন বিষয়ক অন্ধতা দেশে গণতন্ত্রের বিকাশের পথকে রুদ্ধ করছে। রাজনৈতিক দলগুলোর ভেতরে গণতন্ত্রের অনুশীলন নেই। দলের মধ্যে যারা আছেন তাদের ভিন্নমতই যেখানে গ্রহণযোগ্য নয় সেখানে দলের বাহির থেকে যেসব উপদেশ ও সমালোচনা করা হয় তা গ্রহণযোগ্য হবে কি করে? কিভাবে রাষ্ট্র পরিচালনায় জনগণের অংশগ্রহণ ও জনমতের প্রতিফলন ঘটবে?
দেশে সাংবিধানিক গণতন্ত্র আছে বটে কিন্তু কার্যত দেশ চলছে কয়েকজন মানুষের ইচ্ছা-অনিচ্ছায়। গণতান্ত্রিক আলোচনা, পর্যালোচনা ও পর্যবেক্ষণ ছাড়া যে রাজনীতি চলছে তাতে ব্যক্তিস্বার্থ সিদ্ধি হতে পারে কিন্তু দেশের স্বার্থসিদ্ধি হবার কোন সুযোগ নেই। রাজনীতি আটকে আছে অদ্ভুত একনায়কতন্ত্রের জালে। এ জাল যারা ছিড়তে যায় তারাও আটকে যায় জালে। এটাই প্রতিক্রিয়াশীলতা। বাংলাদেশেও যথেষ্ট সমর্থ, মেধাবী, কল্যাণশীল ও দক্ষ লোক আছেন। কিন্তু এদের কোন মূল্যায়ন নেই। কে দেবে মূল্য? যাদের চিন্তাজগত ক্ষমতাকেন্দ্রীক, ক্ষমতার বাইরে যারা আর কিছু ভাবতেই পারে না তারা কিভাবে অন্যকে মূল্যায়ন করবে? ভেতর-বাহির থেকে ক্ষমতা তাড়া করলে কোন মূল্যবোধইতো বেঁচে থাকে না! তাই ধীরে ধীরে সব কিছু স্বার্থান্বেষীদের দখলে ও নিয়ন্ত্রণে চলে যাচ্ছে।
জনগণ রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে কী প্রত্যাশা করে? জনগণ প্রত্যাশা করে প্রগতি, জনগণ চায়, মোটা ভাত ও জীবনের নিরাপত্তা। কিন্তু তারা কি দিয়েছে জনগণকে? দিয়েছে - অস্বস্তি ও উৎকণ্ঠা। পথে পথে মরছে মানুষ। আন্দোলন করতে গিয়ে মরছে, না করতে গিয়েও মরছে। মৃত্যু যেন অবধারিত হয়ে উঠেছে সর্বত্র। ঘরে-বাইরে কোথাও স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চিয়তা নেই। বাংলাদেশ এখন দু’মুখো মরণ ফাঁদের মাঝখানে দাঁড়ানো। পা বাড়ালেও মরণ, পেছালেও মরণ।
তাই দেশের সচেতন নাগরিক মাত্র রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন। দেশ যেন একটি অমীমাংসিত রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের দিকে যাচ্ছে। এমন কোন সমস্যা নেই যার সমাধান অসম্ভব। কিন্তু সমস্যা সমাধানের দিকে অগ্রসর না হয়ে ক্রমাগত সাংঘর্ষিক অবস্থার দিকে যাচ্ছে। এই সংকট উত্তরণের কোনো সদিচ্ছাও যেন নেই রাজনৈতিক দলগুলোর। রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকবেই, মতপার্থক্য না থাকলে প্রগতি থেমে যেতো, উত্তরণ থেমে যেতো। এসব মতপার্থক্য থেকে একমতে পৌঁছার পথ অবশ্যই হতে হবে গণতান্ত্রিক।
বর্তমান সরকারের মেয়াদ প্রায় শেষের দিকে। এর পর নির্বাচন করতেই হবে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় নির্বাচন ছাড়া সরকার পরিবর্তনের আর কোন পথ নেই। প্রশ্ন হচ্ছে, কোন ব্যবস্থায় পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে? বিরোধীদল বলছে তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে যাবে না, নির্বাচন হতেও দেবে না। বিরোধীদল চায়, দলনিরপেক্ষ কোনো সরকারের অধীনে নির্বাচন। তাদের এ দাবির পক্ষে যুক্তি আছে অবশ্যই। প্রকৃত সত্য হচ্ছে বর্তমান সরকারী দল বিরোধী দলে থাকলে তারাও এটাই চাইতো।
যে কোন রাজনৈতিক সংকট সমাধানের সদিচ্ছা থাকলে খুব সহজেই তা সম্ভব। কিন্তু এজন্য চাই বর্তমান রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন। দেশের প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল তাদের দৃষ্টিভঙ্গি না বদলালে সমাধান আসবে না। এজন্য সবার আগে নিজ নিজ দলে ব্যক্তির স্বেচ্ছাচারিতা বন্ধ হওয়া চাই। দলের মধ্যে গণতন্ত্রের চর্চা চাই।
রাজনীতিকরা যদি মনে করে থাকেন যে দেশের মানুষ তাদের বোলচালে আত্মহারা হয়ে তাদের প্রতি আজীবন আনুগত্য দেখিয়ে যাবে তা হলে ভুল করবেন। দেশের মানুষ অনিচ্ছা সত্ত্বেও অনেক কিছু মেনে নিতে চাইছে, মন না চাইলেও অনেক কিছুর সঙ্গেই মানিয়ে চলতে চাচ্ছে। কিন্তু এই মেনে নেয়া ও মানিয়ে চলার একটা সীমা আছে। এ সীমা যখন অতিক্রম করবে তখন জনগণ ঠিকই রুখে দাঁড়াবে। দেশকে সেই সুনামির দিকে ধাবিত না করাই শ্রেয়।
©somewhere in net ltd.
১|
২৩ শে জুন, ২০১৩ সকাল ১০:৫৪
সেতু আশরাফুল হক বলেছেন: একটা প্রবাদ আছে এমন, ''একজন বৃটিশ একটি বোট, দুজন বৃটিশ একটি ফ্রিগেট, তিনজন বৃটিশ একটি নৌবাহিনী। আবার একজন জার্মান একজন সৈনিক, দুজন জার্মান একটি কোম্পানি, তিনজন জার্মান একটি সেনাবাহিনী। কিন্তু একজন বাঙ্গালী একটি চাষা, দুজন বাঙা্লী দুজন চাষা, তিনজন বাঙালী তিনজন চাষা। এরা একটি খামার গড়তে পারে না কখনো। যদিও একদিন একাত্তুর এনেছিল। তবু হুজুগে বাঙ্গালীর সচেতনতা কবে আসবে? আদৌ আসবে কি না?