![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ইসলামী দাতব্য প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকর্তারা আল কায়েদাকে কোটি কোটি ডলারের অর্থ সহায়তা দিয়েছেন। মার্কিন কর্মকর্তারা এ কথা জানান। খবর ওয়াশিংটন পোস্ট অনলাইনের। যখন কাতারের রাজ পরিবার দাতব্য প্রতিষ্ঠানে দান করার বিষয়ে পরামর্শ চালাচ্ছিলেন, তখন তারা আবদাল আল-রহমান আল নুয়ামি নামের এক স্বনামধন্য প্রফেসরকেই বেছে নেন। ৫৯ বছর বয়স্ক ওই শিক্ষাবিদের জীবনবৃত্তান্ত ছিল চমৎকার। তহবিল সংগ্রহ ও বছরের পর বছর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর সঙ্গে কাজ করার ব্যাপক অভিজ্ঞতা তার ছিল। কিন্তু তার জীবনবৃত্তান্ত থেকে সাফল্যের কথা দৃশ্যত বাদ দেয়া হয়। মার্কিন কর্মকর্তাদের মতে, নুয়ামি আল কায়েদার অন্যতম অর্থ যোগানদাতা হিসেবেও গোপনে কাজ করছিলেন। তিনি ইউরোপে মুসলমানদের জন্য আরও স্বাধীনতার দাবিতে প্রচার অভিযান চালানোর পাশাপাশি ওই সন্ত্রাসী দলের সিরিয়া ও ইরাক শাখাগুলোকে কোটি কোটি ডলার যোগাচ্ছিলেন।
গত সপ্তাহে মার্কিন অর্থ দফতর মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে আল কায়েদা ও এর আঞ্চলিক শাখাগুলোর বড় বড় আর্থিক মদতদাতা হিসেবে দুব্যক্তিকে শনাক্ত করে। তাদের একজন ছিলেন নুয়ামি। মার্কিন কর্মকর্তারা সন্ত্রাসবাদীদের অর্থ যোগানদাতা নেটওয়ার্কগুলোকে ভেঙ্গে দেয়ার পদক্ষেপগুলোর কথা নিয়মিত ঘোষণা করছে, কিন্তু সর্বশেষ ক্ষেত্রে উল্লিখিত ব্যক্তিরা সাধারণ নন। উভয় ব্যক্তিই কাতারের সরকার সমর্থিত ফাউন্ডেশনগুলোর উপদেষ্টা হিসেবে এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোতে উচ্চপদে কাজ করেছেন। দ্বিতীয় ব্যক্তি একজন ইয়েমেনি এবং তিনি তার দেশের মার্কিন সমর্থিত রাজনৈতিক পরিবর্তন আনয়নে খুবই সক্রিয় ছিলেন। তারা মানবিক সাহায্য দান এবং নাগরিক অধিকার রক্ষায় আন্দোলন করার পাশাপাশি চরমপন্থী দলগুলোকে মদত যোগানোর মতো দ্বৈত ভূমিকা পালন করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ থেকে সিরিয়ার কট্টরপন্থী দলগুলোর কাছে নগদ অর্থের চালান পর্যবেক্ষণ করতে সচেষ্টা মার্কিন সন্ত্রাস দমন কর্মকর্তার জন্য ক্রমবর্ধমান চ্যালেঞ্জ থাকার বিষয়ই স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
পারস্য উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলো জিহাদীদের আর্থিক নেটওয়ার্কিংগুলোকে ভেঙ্গে দেয়ার চেষ্টা করেছে। কিন্তু মার্কিন কর্মকর্তারা বলেন, সিরিয়ার ইসলামী চরমপন্থীদের প্রতি বিশেষত কাতার ও কুয়েতের ধনী বেসরকারী দাতাদের সহায়তার পরিমাণ বিরাটভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
ওবামা প্রশাসন জিহাদীদের কাছে বেসরকারী ব্যক্তিদের অর্থ সহায়তা দান রোধ করতে উভয় দেশের প্রতি বার বার আহ্বান জানিয়েছে। তবে প্রশাসন স্বীকার করেছে যে, টুইটার ও অন্য সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যাপক ব্যবহারসহ নতুন নতুন কৌশল তহবিল যোগানোর ঘটনা খুঁজে বের করা কঠিন করে তুলেছে। অর্থ দফতরের সন্ত্রাসবাদ ও আর্থিক গোয়েন্দা বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি ডেভিড এস কোহেন নুয়ামি ও ইয়মেনি নাগরিক আবদাল আল ওয়াহাব আল হুমায়কানির ওপর আর্থিক বাধানিষেধ আরোপের কথা ঘোষণা করেন। কোহেন বলেন, দাতব্য প্রতিষ্ঠানকে দেয়া দানের অর্থ যাতে সহিংসতাকে সমর্থন করার কাজে ব্যবহৃত না হয়, তা নিশ্চিত করতে ওবামা প্রশাসন উপসাগরীয় অঞ্চলের সরকারগুলোর সঙ্গে কাজ করে যাবে।
গত সপ্তাহে প্রশাসন উভয় ব্যক্তিকে বিশেষভাবে চিহ্নিত আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী বলে ঘোষণা করে। এ ঘোষণার ফলে মার্কিন কর্মকর্তারা উভয়ের আর্থিক সম্পদ আটক করতে এবং তাদের সঙ্গে লেনদেন করা আমেরিকান নাগরিকদের ও কোম্পানিগুলোর জন্য নিষিদ্ধ করতে পারবেন। অর্থ দফতরের দলিলপত্রে অভিযোগ করা হয় যে, উভয়েই সিরিয়া থেকে আফ্রিকান শৃঙ্গ পর্যন্ত আল কায়েদা ও অন্যান্য সন্ত্রাসী দলের জন্য কোটি কোটি ডলার সংগ্রহ করার চেষ্টা আড়াল করতে তাদের দাতব্য প্রতিষ্ঠানের কাজ-কর্মকে কাজে লাগিয়েছিলেন।
নুয়ামি কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ও বিশিষ্ট দাতব্য প্রতিষ্ঠান শেখ ঈদ বিন মোহাম্মদ আল থানি চ্যারিটেবল ফাউন্ডেশনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। সমপ্রতি তিনি জেনেভাভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন আল কারামার প্রেসিডেন্ট হিসেবে কাজ করেন। সংগঠনটি মুসলমানদের অধিকারের প্রবক্তা। হুমায়কানি আল কারামার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং কাতারের মানবিক দান সংক্রান্ত সাবেক উপদেষ্টা। তার জীবনবৃত্তান্তে এ কথা বলা হয়।
©somewhere in net ltd.