নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার দেশ

রুবেল১৯৮৭

আমি বিশ্বস করি ধর্ম নিরপেক্ষ বাংলাদেশ কিন্তু ধর্মহীনতায় নয়।

রুবেল১৯৮৭ › বিস্তারিত পোস্টঃ

১৯৭১ সালের কিছু পত্রিকার খবর সমূহ পর্ব ৮

২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ৮:২৫

বঙ্গবন্ধুকে মুক্ত করুন : কে, জি, মুস্তাফা প্রদত্ত



অবশেসে স্বাধীন গণ প্রজাতান্ত্রিক বাংলাদেশের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি জনাব সৈয়দ নজরুল ইসলাম অনেক জল্পনা কল্পনার অবসান করে তাঁর ঐতিহাসিক বেতার ভাষণে বাঙালী মুক্তি আন্দোলনের অগ্রদূত বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবর রহমান সাহেবের গ্রেপ্তারের সত্যতা স্বীকার করেছেন। তাই তাঁর এই গ্রেপ্তারের কথা স্মরণ করলেই প্রতিটি বাঙালী মাত্রই আতঙ্কে শিউরে উঠেন। আমরাও আজ সাড়ে সাত কোটি বাঙালীর কণ্ঠে কণ্ঠ মিলিয়ে আওয়াজ তুলতে চাই এশিয়া মহাদেশের অন্যতম রাজনৈতিক নেতা, গণতন্ত্রের ইতিহাসের প্রথম রেকর্ড স্থাপনকারী একমাত্র নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান এখন নীরবে কারাগারের অন্তরালে বসে ভাগ্যাহত বাঙালী জাতির দুর্দশার কথা স্মরণ করে অস্থিরভাবে সময় যাপন করছেন।

বঙ্গবন্ধুর গ্রেপ্তারের তিন মাস অতীত হয়ে গেলপাকিস্তান সামরিক চক্র ফলাও করে শুধুমাত্র তাঁর গ্রেপ্তারের কথাই প্রচার করেছেন অথচ তাঁর মত একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন রাজনৈতিক নেতার পরবর্তী অবস্থান সম্পর্কে কোন প্রকার বিবৃতি অদ্যাবধিও প্রদান করেন নাই। ফলে, স্ববাবতই প্রতিটি বিবেক সম্পন্ন ব্যক্তিই বঙ্গবন্ধুর এই পরিস্থিতির জন্য অস্থিরতা প্রকাশ করছেন। গেপ্তারের দীর্ঘদিন অতিবাহিত হওয়া স্বত্ত্বেও পাকিস্তানের সামরিক চক্র নরপিশাচ ইয়াহিয়া খাঁর সেনাবাহিনী সরকার কোন আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক নেতা, সাংবাদিক অথবা, বুদ্ধিজীবির সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর কোন প্রকার সাক্ষাতের সুযোগ দেন নাই। তাই, বিশ্বের দরবারে বঙ্গবন্ধুর নিরাপত্তার ব্যাপারে একটি চাপা ক্ষোভ ধুমায়িত হয়ে উঠেছে সত্য, কিন্তু মুখ মূলে কেউ তাঁর নিরাপত্তার কথা বলছেন না দেখে আমরা বেদনাহত।

বাংলাদেশের মুক্তি আনদোলন এখন এক চূড়ান্ত পর্য্যায়ে সমূপস্থিত। অতি অল্প সময়ের মধ্যেই হয়তো মুক্তিফৌজ জয়ের মালা পড়ে বাংলাদেশকে পশ্চিমা বেনিয়া গোষ্ঠীর নাগপাশ থেকে মুক্ত করে একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাজ্যের সৃষ্টি করতে সক্ষম হবে। কিন্তু আমাদের শঙ্কা হয় যিনি নানা ত্যাগ, তিতিক্ষা সহ্য করে পৃথিবীর ইতিহাসের পাতায় একটি নতুন রাজ্যের সংযোজন করার স্বপ্ন দেখেছিলেন তাঁকে দেশ স্বাধীন হবার পর আমাদের পাশে বঙ্গবন্ধুর প্রকৃত বেশ নিয়ে পাব কি-না?

পশ্চিমা বেনিয়া গোষ্ঠির ধারক বাহক ইয়াহিয়া খাঁ তার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার জন্য বিদেশী আক্রমণ প্রতিহত করার অজুহাত দেখিয়ে যে সমস্ত বিদেশী অস্ত্র শস্ত্র বাংলা দেশের অর্থে ক্রয় করেছিলেন সেই সমস্ত আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র যখন নির্ব্বীবাদে বাংলার নিরীহ নিরস্ত্র জনসাধারণের উপর ব্যবহার করে কয়েক লক্ষ অজ্ঞ কৃষক শ্রমিককে হত্যা করেছে তখন বঙ্গবন্ধুর প্রতি নাখোশ হয়ে হয়তো শেষ মুহূর্তে বাংলাদেশ ত্যাগ করার পূর্ব্বে তাদের শেষ উদ্দেশ্য হাসিল করে বঙ্গবন্ধুর উপর একটি চরম ব্যবস্থাও গ্রহণ করতে পারে। তাই সময় থাকতেই এ ব্যাপারে প্রকৃত পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রতিটি বিবেক সম্পন্ন ব্যক্তির একান্ত প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি।

বাংলা দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের সংগে সংগে বঙ্গবন্ধুর নিরাপত্তা ও তাঁকে মুক্ত করার জন্য জনমত গঠন এখন একান্ত প্রয়োজন। তাই বিশ্বের প্রতিটি রাজ্য ও বাংলাদেশের প্রতিটি রাজনৈতিক ছাত্র ও শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে ঐক্যবদ্ধভাবে বঙ্গবন্ধুকে মুক্ত করার জন্য আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানাই।

সোনার বাংলা (১) ১ ঃ ৩ ২ জুলাই ১৯৭১

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.