![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আধুনিক নগরসভ্যতার বিকাশ যত দ্রুত ঘটছে, ততই যেন পাল্লা দিয়ে ভাঙছে পারিবারিক বন্ধন। যৌথ পরিবারে ভাঙন ধরেছে সেই কবে। বাবা-চাচা ভাইবোনসহ একান্নবর্তী বড় পরিবার এখন দুর্লভ। স্বার্থান্ধতার বৃত্তবন্দি জীবন কেড়ে নিয়েছে সন্তান আর বাবা-মার আমৃত্যু বন্ধনটুকুও। তাই রাজধানী ঢাকাসহ দেশের প্রধান নগরী আর জনপদে বৃদ্ধাশ্রম গড়ে উঠতে শুরু করেছে দু'দশক আগে থেকেই। রাজধানী ঢাকা ছাড়িয়ে এখন উপজেলা পর্যায়েও বৃদ্ধাশ্রমের কমতি নেই। জীবনের সুবর্ণ সময়গুলো বিলিয়ে দিয়ে আজ সেই আপনজনের হাতেই নানাভাবে বঞ্চনা ও লাঞ্ছনার শিকার হয়ে অসহায় বৃদ্ধরা ঠাঁই নিচ্ছেন বৃদ্ধাশ্রমে।
পশ্চিমা বিশ্বের পুঁজিবাদী ব্যবস্থা অনুৎপাদনশীল মানুষকে রাখতে চায় মূল কাঠামোর বাইরে। তাই জীবনের শুরুতে স্কুলে যাওয়ার মতোই শেষ জীবনে বৃদ্ধাশ্রমে থাকা তাঁদের কাছে অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু আমাদের দেশের বাস্তবতা ভিন্ন। বাঙালির কাছে পরস্পরের সান্নিধ্যের শান্তিটুকুর মূল্য অনেক বেশি। এখানে সন্তান সাবালক হলেই পিতা-মাতার দায়িত্ব যেমন শেষ হয় না তেমনি বৃদ্ধ পিতা-মাতার দেখাশোনা করার দায়ভারও সন্তানের ওপর বর্তায়। তাই পশ্চিমের বৃদ্ধাশ্রম আমাদের জীবনধারায় অনুপস্থিত থাকাটাই কাম্য ছিল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে এর বিপরীতটাই প্রকট হয়ে ওঠছে।
বাংলাদেশে যারা বৃদ্ধাশ্রমে থাকেন, তাদের বেশির ভাগই সন্তানের অবহেলা বা অযত্নের কারণে। আজ যারা বৃদ্ধ, তারা নিজেদের জীবনের সব ধন-সম্পদ বিনিয়োগ করেছিলেন সন্তানের জন্য। কিন্তু বৃদ্ধ বয়সে সন্তানের কাছ থেকে এর একটি ক্ষুদ্র অংশও তারা পাচ্ছেন না। কখনো দেখা যায়, সন্তান তার নিজের পরিবারের খরচ জোগাতে হিমশিম খাচ্ছে, তাই পিতা-মাতাকে মনে করছে বোঝা। নিজে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে একটু ভালো থাকার জন্য বাবা-মায়ের ঠাঁই করে দিয়েছেন বৃদ্ধাশ্রমে। একবার বৃদ্ধনিবাসে পাঠাতে পারলেই যেন সব দায়মুক্তি। এভাবে নানা অজুহাতে পিতা-মাতাকে দূরে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে। অনেক নামীদামি বুদ্ধিজীবী, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, শিক্ষক, চাকরিজীবী যারা এক সময় খুব বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী ছিলেন, বৃদ্ধ বয়সে এসে নিজের সন্তানের দ্বারাই অবহেলা ও বঞ্চনার শিকার হন। তাই অনেকের জন্য বৃদ্ধনিবাস প্রয়োজনীয় বিকল্প। বৃদ্ধাশ্রমে যারা থাকেন, তারা সবাই মিলে একটা নতুন পরিবার তৈরি করে নেন। সমবয়সীদের সঙ্গে হেসে-খেলে, স্মৃতিচারণ করে তাদের সময়টা ভালোই কেটে যায়। কিন্তু বৃদ্ধাশ্রমে যা পাওয়া যায় না তা হলো পরিবারের সান্নিধ্য। বৃদ্ধ বয়সে মানুষ তার সন্তান, নাতি-নাতনিদের সঙ্গে একত্রে থাকতে চান। তাদের সঙ্গে জীবনের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে চান। বৃদ্ধাশ্রমে আশ্রয় পাওয়া যায়, সঙ্গী-সাথী পাওয়া যায়, কিন্তু শেষ জীবনের এই আনন্দটুকু পাওয়া যায় না, যার জন্য তারা এ সময়টায় মানসিক যন্ত্রণা আর ভারাক্রান্ত হৃদয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে ওঠেন।
সমুদ্রের তীরে দাঁড়িয়ে একটা ছোট ছেলে তার বাবাকে বলেছিলো, 'বাবা আমি যদি ঐ সমুদ্রে ডুবে যাই?' বাবা তখন মুচকি হাসি দিয়ে ছেলের হাত শক্ত করে ধরে বলেছিলো 'ধুর বোকা, তুমি ডুববে না। আমি আছি না !' এরপর কেটে যায় পঁচিশটি বছর। এ দীর্ঘ সময়টাতে বাবা তার ছেলেকে আগলে রেখেছিলো কঠিন সব ঢেউয়ের হাত থেকে। একটু আঘাতও ছেলেটির গায়ে লাগতে দেয়নি বাবা! সময়ের পরিক্রমায় বাবা হয়ে যায় বুড়ো আর ছেলে হয়ে ওঠে টগবগে যুবক। যুবক হয়ে ওঠা ছেলেটিই একটা সময় তার বৃদ্ধ বাবাকে গভীর এক সমুদ্রে ছেড়ে দেয়। যেখানে থাকে না কোন প্রিয় মানুষ। ছেলে বাবাকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে যাওয়ার সময় বলে, 'বাবা আমি ক্যারিয়ার নিয়ে খুব ব্যস্ত! তোমাকে একদমই সময় দিতে পারি না। তুমি মন খারাপ করো না! এখানে তুমি বরং ভালোই থাকবে।' বাবা এবারো মুচকি হাসি দিয়ে বলে - 'ধুর বোকা ! তুই তোর পথে এগিয়া যা । আমি বেশ আছি তো .....' এই টগবগে যুবকটি কি একটুও ভাবে না কোন একদিন তার জীবনেও একই রকম পরিণতি আসতে পারে!
২| ০৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১২:৫৩
মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: 'ধুর বোকা ! তুই তোর পথে এগিয়া যা । আমি বেশ আছি তো .....' এই টগবগে যুবকটি কি একটুও ভাবে না কোন একদিন তার জীবনেও একই রকম পরিণতি আসতে পারে!
কি আর বলব।
অামার বাবা নেই। আমি বলতে পারব বাবা কি জিনিষ। আর চাচারা আছেন কিন্তু আজ পর্যন্ত তাদের অবাধ্য হইনি। এক চাচাকেত বাবা বলেই জানি।ওনিও আমাকে সন্তান বলেই সমিহ করেন। আমি আমার চাচাকে ও পারবনা দূরে ঠেলে দিতে । মানুষ তার বাবাকে কেমনে পারে।
©somewhere in net ltd.
১|
০৫ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১১:৩৭
রাকিবুল হাসান ২০১০ বলেছেন: সংসারটাকে ধরে রাখার জন্য ১৯৯৯ সনে আমি কানাডা বা আমেরিকাতে মাইগ্রেট করলাম না- সুযোগ থাকা সত্বেও । মা - বাবা তখন জীবিত ছিলেন । বাবা-মায়ের কষ্বাট হবে এ্বই ভয়ে মাইগ্রেট করিনি । বাবা -১১তে আর মা -১৩ তে ইন্তেকাল করেছেন । তারপর ৪ ভাই নিয়ে এখন যৌথ সংসার নিয়ে ঢাকা শহরে আছি । আমার অনেক ইচ্ছা আমাদের পরিবার যেন সারাজীবনই যৌথ থাকে । তবে আমার ইন্তেকাল হবার আগ পর্যন্ত যৌথ পরিবারের নেতৃত্ব দিয়ে যাব । যৌথ সংসার করতে গিয়ে অনেক ত্যাগী হতে হলো । সবার জন্য সব কিছু করি আর আমার জন্য কিছুই করতে পারিনা । আর আমার বৌকে ও ওভাবেই তৈরী করেছি । আমার বউ ও ত্যাগী মহিলা । সব বউ েএক সমান নয় । তারপর ও ধরে রেখেছি যৌথ সংসারটাকে । যৌথ সংসারে অনেক কষ্ট । সবাই দোয়া করবেন যেন আমার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত যেন যৌথ সংসারটাকে ধরে রাখতে পারি ।