![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ভারতের কেরালাবাসী এক মুসলমান কোনো কারণে সিদ্ধান্ত নিলেন যে তিনি আহমদিয়া বা কাদিয়ানি মতাদর্শ অনুসারে জীবন যাপন করবেন। কথাটা শোনামাত্র প্রতিবেশীরা তাকে জানিয়ে গেলেন যে তিনি আর মুসলমান পদবাচ্য নন এবং নিজের স্ত্রীর সঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই তার তালাক হয়ে গেছে, কারণ মুসলমান ও অমুসলমানের মধ্যে বিবাহ অসম্ভব। বিষয়টি আদালতে গড়ালে নিম্ন আদালত ফরিয়াদীকে অমুসলিম বলে রায় দেন। সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি পরবর্তীতে উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হলে কেরালা হাইকোর্ট রায় প্রদান করেন যে আহমদিয়া বা কাদিয়ানি সম্প্রদায় অবশ্যই মুসলমান হিসেবে গণ্য হবেন।
দক্ষিণ আফ্রিকার কেপ-টাউনের একটি আদালতও একটি মামলায় কাদিয়ানিদের মুসলমান হিসেবে ঘোষণা দিয়ে তাদের বিরোধী পক্ষকে সকল মসজিদ, কবরস্থান ইত্যাদি স্থানে কাদিয়ানিদের প্রবেশ ও সেসব স্থান ব্যবহারে তাদেরকে বাধা প্রদান করা থেকে বিরত থাকতে আদেশ দিয়েছে। সুতরাং আইনের দৃষ্টিকোণ থেকে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার আহমদিয়া সম্প্রদায় মুসলমান।
পাকিস্তানের প্রায় জন্মলগ্ন থেকেই সে দেশের বিশেষত সুন্নী মুসলমানরা আহমদিয়া সম্প্রদায়কে অমুসলিম ঘোষণা করার জন্য আন্দোলন করতে থাকেন। এ নিয়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাও সংঘঠিত হয়েছে বেশ কয়েকবার। শেষ পর্যন্ত ১৯৭৪ সালে সাংবিধানিকভাবে আহমদিয়া সম্প্রদায়কে অমুসলিম ঘোষণা করা হয়। পাকিস্তানের সংবিধানের ২৬০(৩) অনুচ্ছেদে পরিষ্কারভাবে বলা হয়েছে - ‘যারা আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাস স্থাপন করার সঙ্গে সঙ্গে মুহাম্মদ (সা.) কে চূড়ান্ত এবং সর্বশেষ নবী হিসেবে বিশ্বাস করেন এবং অন্য কাউকে নবী বা ধর্ম-সংস্কারক হিসেবে বিশ্বাস করেন না শুধু তারাই মুসলমান। অন্যদিকে যারা খ্রিষ্টান, হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, পারসিক সম্প্রদায় এবং কাদিয়ানি বা লাহোরি বা আহমদিয়া সম্প্রদায়, বাহাই সম্প্রদায় ও শিডিউল কাস্ট হিসেবে পরিচিত বা তারা নিজেরা সে রকম দাবি করেন তারা সবাই অমুসলিম।’ সুতরাং দেখা যাচ্ছে, ভারতের ভৌগোলিক সীমানার মধ্যে অবস্থান করলে একজন কাদিয়ানি মুসলমান হিসেবে গণ্য হবেন, কিন্তু মানবসৃষ্ট রাষ্ট্র-সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানের ভূমিতে পা রাখা মাত্রই তার মুসলমানিত্ব খারিজ হয়ে যাবে। আরেকটু পশ্চিমে এগিয়ে গিয়ে দক্ষিণ-আফ্রিকায় প্রবেশ করা মাত্র আবার তিনি মুসলমান বলে গণ্য হবেন। এর মানে হচ্ছে, কাদিয়ানি বা আহমদিয়া সম্প্রদায় একই সঙ্গে মুসলিম ও অমুসলিম, কারণ জাতীয়তা বা আবাসস্থল পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে তাদের ধর্মীয় পরিচয়েরও পরিবর্তন ঘটে। কোনো লোক কি একই সাথে মুসলিম ও অমুসলিম হতে পারে? মুসলিম হওয়ার শর্ত কি একেক দেশে একেক রকম হতে পারে? যে কোন কাণ্ডজ্ঞানসম্পন্ন মানুষ এ বিষয়ে একমত হবেন যে, মুসলিম হওয়ার মাপকাঠি দেশে দেশে ভিন্ন ভিন্ন হওয়ার কথা নয় এবং হওয়া উচিতও নয়। তবুও এহেন অনুচিত এবং অদ্ভুত ঘটনা বাস্তবে কেন ঘটে? এ ধরণের ঘটনা তখনই ঘটে যখন ধর্মীয় বিধি বিধানের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য ব্যক্তি বা গোষ্ঠীবিশেষ রাষ্ট্রের শরণাপন্ন হয়।
রাষ্ট্রের উদ্ভব মানুষের যুথবদ্ধতার সঙ্গে সম্পর্কিত। মানুষ যুথবদ্ধ হয়ে বসবাস করে কোন ধর্মীয় কারণে নয়, জৈবিক অস্তিত্ত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য। আধ্যাত্মিক প্রয়োজন মেটানো রাষ্ট্রের লক্ষ্য নয়। এ বিশেষ প্রয়োজনটি মেটাতে পারে ধর্ম। ধর্মবিশ্বাস ও পরকাল সম্পর্কিত বিষয়গুলোর যে কোন ধরনের বিহিত করার ব্যাপারে রাষ্ট্র একেবারেই অসমর্থ। ধর্মবিশ্বাস যখন তার স্বীকৃতি ও প্রতিষ্ঠার জন্য রাষ্ট্রের শরণাপন্ন হয়, তখন রাষ্ট্র-পরিচালকেরা তাঁদের বিবেচনা ও স্বার্থ মোতাবেক কোন একটি মতের পক্ষে বা বিপক্ষে রায় দিতে বাধ্য হন এবং সঙ্গত কারণেই সে রায় একেক রাষ্ট্রে একেক রকম হয়। ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকদের যুক্তিবোধ অনুযায়ী আহমদিয়া সমপ্রদায় হলো মুসলমানদের মধ্যে একটি উপদল। অন্যদিকে পাকিস্তান রাষ্ট্রের নীতির্নিধারকদের যুক্তিবোধ আর স্বার্থবোধের যুগপৎ বিচারে তারা মুসলমান বলেই গণ্য নন।
বর্তমানে প্রচলিত প্রধান ধর্মগুলোর উদ্ভবের অনেক পরে রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছে। যখন রাষ্ট্র ছিল না তখন ধর্মীয় বিধি-বিধানের ক্ষেত্রে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত মানুষ কীভাবে পেত? ধর্মের বিধানের ব্যাপারে শেষ কথাটি বলার অধিকার কার? ইসলামের বিধান যদি রাষ্ট্রীয় ও সরকারি স্বীকৃতির উপর নির্ভরশীল হয়, তাহলে কি আল্লাহর কর্তৃত্ত্ব প্রশ্নবিদ্ধ হয় না? কুরআনের বক্তব্য সুস্পষ্ট - ‘যারা দীন (ধর্ম) সম্বন্ধে নানা মতের সৃষ্টি করেছে এবং বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়েছে তাদের কোন দায়িত্ব তোমার নয়; তাদের বিষয় আল্লাহর ইখতিয়ারভুক্ত। আল্লাহ তাদেরকে তাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে অবহিত করবেন’ (কুরআন ৬:১৫৯)। অর্থাৎ, যারাই ইসলামের ব্যাখ্যার ব্যাপারে মতভেদ তৈরি করে তাঁদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া একমাত্র আল্লাহর এখতিয়ারভুক্ত। ধর্ম বিষয়ে সিদ্ধান্ত প্রদানের জন্য আদালতের শরণাপন্ন হওয়া আল্লাহদ্রোহীতা নয় কি?
২| ২৬ শে মে, ২০১৪ সকাল ১০:৪৩
বাংলার ঈগল বলেছেন: লেখার মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টির (কাদিয়ানিদের পক্ষে) পায়তারা করা হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।
পবিত্র কুরআনের এত আয়াত থাকতে এই আয়াত দিলেন, ধর্মনিরপেক্ষরা হাদিসে আমপারা শোনায় এমন "লাকুম দি নুকুম অলিয়া দ্বিন" যার যার ধর্ম তার তার! বিষয় টা এমন হয়ে গেল।
مَا يُجَادِلُ فِي آيَاتِ اللَّهِ إِلَّا الَّذِينَ آَفَرُوا فَلَا يَغْرُرْكَ تَقَلُّبُهُمْ فِي الْبِلَادِ
4· কাফেররাই কেবল আল্লাহর বানী সম্পর্কে বিতর্ক করে, কাজেই নগরীসমূহে তাদের বিচরন যেন আপনাকে (মুহাম্মদ স বিভ্রান্তিতে না ফেলে।
4 . None argue concerning the revelations of Allah save those who disbelieve , so let not their turn of fortune in the
land deceive thee ( O Muhammad ) . (সুরা আল মুমিন; আয়াত ৪)
যাই হোক, মুসলমানের মাপকাঠি কি তা পবিত্র কুরআনে সুন্দরভাবেই বর্ননা করা আছে, এই মাপকাঠি (পবিত্র কুরআন) বিচার করবে কে মুসলমান আর কে অমুসলিম। কোন ব্যক্তি বা রাষ্ট্র / আদালতের নয়।
৩| ১৭ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ৯:১০
ইহসান আকসার মাহমুদ বলেছেন: https://www.alislam.org/
http://www.ahmadiyyabangla.org/
©somewhere in net ltd.
১|
২৬ শে মে, ২০১৪ সকাল ৯:৪৩
রাহাত লতিফ তৌসিফ বলেছেন: নিঃসন্দেহে কাদিয়ানিরা অমুসলিম। এ বিষয়ে কোন সন্দেহে নেই।