নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি একজন পাঠক। পড়তে ভালোবাসি। মাঝেমধ্যে একটু আধটু লিখার চেষ্টা করি। পড়ালেখা করছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে, ফাইন্যান্স বিভাগে।

জাবির আহমেদ জুবেল

আমি জাবির আহমেদ জুবেল, একটু আধটুকু গল্প লিখি। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স ডিপার্টমেন্টে বিবিএ পড়ছি ( ব্যাচ ২৪)

জাবির আহমেদ জুবেল › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্প নিয়ে আলোচনাঃঃ সৈয়দ শামসুল হকের \'রক্তগোলাপ\'

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১২:৫৭

সৈয়দ শামসুল হকের একটা গল্প পড়লাম, "রক্তগোলাপ"৷ কী অসাধারণ একটা জাদুবাস্তব গল্প এটি। গল্পের শেষে রচনাকাল লিখা আছে ১৯৬৩! ঢাকার একটা রেস্তোরাঁয় বসে গল্পটা লিখেছেন সৈয়দ হক। ১৯৬৩ সাল লেখা দেখে অবাকই হলাম!
আমি যদি ভুল না করি তাহলে মার্কেজ তার One Hundred Years of Solitude উপন্যাসটা প্রকাশ করেন ১৯৬৭ সালে, তার বছর দুয়েক আগে হয়তো উপন্যাসটা লিখেন৷ যেই উপন্যাস প্রকাশের পরপর বিশ্বব্যাপী ম্যাজিক রিয়ালিজমের কথা বার্তা শুরু হয় তারো আগে আমাদের হক সাহেব এতো সুন্দর ম্যাজিক রিয়ালিস্টিক একটা গল্প লিখে ফেলেছেন! তার এই গল্পের আল্লারাখা নামের এক যুবক চম্পা নামের মেয়ের প্রেমে পড়ে যায়৷ আর এই প্রেমে পড়াকে তিনি কত নতুনভাবে আমাদের সামনে নিয়ে আসেন, দেখা যায় ''চম্পার কপালের উপর লুটিয়ে পড়া আধখানা চাঁদের মতো চুলের গুচ্ছ স্পর্শ করলো-- আরেকটা গোলাপ বেরিয়ে আসলো সেখান থেকে'' সবাই ভাবে আল্লারাখা হয়তো যাদুর মাধ্যমে এই কাজ করে কিন্তু একমাত্র সেই জানে এটা জাদু না, সে যখন থেকে চম্পাকে দেখে, যখন থেকে তার কপালে লুটিয়ে পড়া কয়েক গুচ্ছ চুল দেখে, যখন থেকে চম্পার প্রেমে পড়ে যায় তখন থেকেই সে একদম শূন্য থেকে শতশত রক্তগোলাপ বের করে নিয়ে আসতে পারে! এভাবেই সৈয়দ হক আল্লারাখা নামক যুবকের প্রেমে পড়াকে তুলে ধরেছেন এক জাদুবাস্তবতার ভেতর দিয়ে। মার্কেজও প্রেমের বর্ণনা বেশ কয়েকবার সৈয়দ হকের মতোই দিয়েছেন যেমন তার নিঃসঙ্গতার একশো বছরে দেখা যায় আমারান্তা উরুসুলা (বা অন্যকেউ, আমার চরিত্রের নাম মনে পড়ছে না) একজনের সাথে প্রেম করে, সেই প্রেমিক লুকিয়ে তার সাথে মিলিত হতে আসলে কিংবা অন্য কোথাও গেলে হাজার হাজার প্রজাপতিও তার সাথে চলে আসে! এই যে প্রজাতি এটার সাথে রক্তগোলাপের স্পষ্ট মিল অথচ মার্কেজ এটা লিখেছেন সৈয়দ হক এর এই গল্প লিখার কয়েক বছর পর। মার্কেজ তার আরেকটা গল্পে প্রেমের এই বিষয়টা জাদুবাস্তবতা দিয়ে ফুটিয়ে তুলেন, মার্কেজ তার "সরলা এরিন্দিয়া আর তার নিদয়া ঠাকুমার অবিশ্বাস্য করুণ কাহিনি" গল্পে দেখা যায় উইলিসিস কাচের ওষুধের শিশি স্পর্শ করলেই সেগুলো নীল রঙের হয়ে যায়, তার মা তাকে প্রশ্ন করলে সে বলে কাচের জিনিস স্পর্শ করলেই কাচ এমন নানা রঙের হয়ে যায়, তখন তার মা তাকে বলে এমন শুধু প্রেমে পড়লেই হয়। এই যে প্রেমে পড়ার প্রকাশকে মার্কেজ বিভিন্ন রঙের ভেতর দিয়ে প্রকাশ করেছেন তেমনি কিন্তু সৈয়দ হকও করেছেন৷ মার্কেজের এই গল্পটা নিঃসঙ্গতার একশো বছর এরও অনেক পরে প্রকাশিত হয়৷
সৈয়দ শামসুল হক যখন গল্পটা লিখেন তখন তার বয়স মাত্র ২৮ বছর। ভাবা যায় এতো কম বয়সে বিশ্ব সাহিত্যের একটা উল্লেখযোগ্য একটা গল্প তার লিখা হয়ে গেছে! এর একবছর পরেই তো তিনি মাত্র ২৯ বছর বয়সে বাংলা একাডেমি পুরষ্কার পান। এখন পর্যন্ত তারচেয়ে কম বয়সে কেউ বাংলা একাডেমি পুরষ্কার পাননি।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:২৪

রাজীব নুর বলেছেন: উনি একজন গ্রেট সাহ্যিতিক।
উয়ার কবিতা, উপন্যাস বা গল্প দূর্দান্ত।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.