নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অবসরে আছি। কিছু কিছু লেখালেখির মাধ্যমে অবসর জীবনটাকে উপভোগ করার চেষ্টা করছি। কিছু সমাজকল্যানমূলক কর্মকান্ডেও জড়িত আছি। মাঝে মাঝে এদিক সেদিকে ভ্রমণেও বের হই। জীবনে কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করিনি, এখন তো করার প্রশ্নই আসে না। জীবন যা দিয়েছে, তার জন্য স্রষ্টার কাছে ভক্তিভরে কৃতজ্ঞতা জানাই। যা কিছু চেয়েও পাইনি, এখন বুঝি, তা পাবার কথা ছিলনা। তাই না পাওয়ার কোন বেদনা নেই।
"আমার কথা -২৮" পড়তে হলে এখানে ক্লিক করুনঃ আমার কথা -২৮
সাধারণতঃ তিন শ্রেণীর ক্যাডেটদের জন্য ক্যাডেট লাইফটা চরম আনন্দের ও আত্মতৃপ্তির হয়ে থাকে। প্রথম শ্রেণীতে পড়ে যারা স্পোর্টস এবং এ্যথেলেটিক্সে ভালো হয়ে থাকে। এরা বাকী ক্যাডেটদের জন্য, বিশেষ করে জুনিয়রদের জন্য রোল মডেল হয়ে থাকে। তারা খুবই জনপ্রিয় হয়ে থাকে। হাউসের জন্য তারা পয়েন্ট অর্জন করে থাকে বলে তারা হাউস মাস্টার, হাউস টিউটর এবং হাউস এনসিওদের প্রিয়ভাজন হয়ে থাকে। এজন্য এদের ছোটখাট দোষ ত্রুটিও হাল্কাভাবে দেখা হয়। দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ে যারা লেখাপড়ায় খুব ভালো হয়। এরা শিক্ষকদের নেক নজরে থাকে, এসএসসিতে ভালো ফলাফল করার পর প্রিন্সিপাল ও এডজুট্যান্টেরও নেক নজরে চলে যায়। এরাও জুনিয়রদের চোখে রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত হয়। আর তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ে যারা সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে ভালো হয়ে থাকে। এদেরকে জুনিয়র ক্যাডেটরা সম্মানের চোখে দেখে, এমনকি মেস ওয়েটাররাও সমীহ করে চুপে চুপে এদেরকে এটা ওটা এক্সট্রা খেতে দেয়। আমি নিজে দেখেছি জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী আলমগীর ভাইকে (আন্তর্জাতিক সঙ্গীত শিল্পী আলমগীর হক) মেস ওয়েটাররা ভালোবেসে একটু এক্সট্রা খাতির করতো। কোন কোন চৌকষ ক্যাডেট আবার এই তিন শ্রেণীর সব ক’টাতেই বা অন্ততঃ দুটোতে নিজেদেরকে অন্তর্ভুক্ত করতে পারে। এদের জন্য লীডারশীপ এপয়েন্টমেন্ট লাভ করাটা প্রায় নিশ্চিতই থাকে বলা চলে।
দুর্ভাগ্যক্রমে আমার ক্যাডেট লাইফে আমি এই তিন শ্রেণীর কোনটাতেই নিজেকে অন্তর্ভুক্ত করতে পারিনি। কেবল ৮ম থেকে ৯ম শ্রেণীতে উঠার সময় আমার সেকশনে প্রথম স্থান অর্জন করেছিলাম। ওটাই প্রথম, ওটাই শেষ। এ সাফল্যটাকে পরে আর ধরে রাখতে পারিনি। তবে যেবার প্রথম হয়েছিলাম, সেবার ছুটিতে বাড়ী এসে স্পেশাল খাতির যত্ন পেয়েছিলাম। আমার এক নন ক্যাডেট বন্ধুর বাসায় বেড়াতে গিয়েছিলাম। তখনকার দিনে বন্ধুদের বাসায় গেলে তাদের পিতামাতার কাছে অবধারিতভাবে পরীক্ষায় সাফল্য ব্যর্থতার একটা খতিয়ান পেশ করতে হতো। আমার চমৎকার সাফল্যের কথা শুনে চাচা (আমরা বন্ধুর বাবা মাকে চাচা চাচী বা খালাম্মা খালুই ডাকতাম, আঙ্কেল আন্টি নয়) বন্ধুটিকে তার খারাপ ফলাফলের জন্য খুব কথা শুনিয়েছিলেন, যা আমার ভাল লাগেনি। তিনি চাচীকে বলে আমার জন্য স্পেশাল রান্নার আয়োজন করেছিলেন। এ ধরনের আদর তখন খুব স্বাভাবিক ছিলো। এর আগে একবার ঈদে আম্মার কাছে কেরোলীনের শার্ট (তখন ওটাই বেশ চালু স্টাইল ছিলো) আবদার করে পাইনি। মধ্যবিত্তের সংসারে মানুষ হয়েছি। সংসারের টানাপোড়েনের কথা জানতাম, তাই এজন্য দাবী দাওয়ার ব্যাপারে বেশ সংযত ছিলাম। তথাপি এ ক্ষুদ্র দাবীটুকু (আমার ভাবনায়) পূরণ না হওয়ায় বেশ মনোক্ষুন্ন হয়েছিলাম। কিন্তু প্রথম হবার পর সে চাওয়াটাতো পূরণ হয়েছিলোই, এক্সট্রা একটা দামী প্যান্ট পিসও পেয়েছিলাম।
আগেই বলেছি, ঐ তিন শ্রেণীর ক্যাডেটদের জন্য ক্যাডেট লাইফটা চরম আনন্দের ও আত্মতৃপ্তির হয়ে থাকে। কিন্তু আমি তো তাদের একজন ছিলাম না, তাহলে আমার ক্যাডেট লাইফটা কি দুঃখের ও ব্যর্থতার ছিলো? মোটেই না। আমি বন্ধুদের সাহচর্য খুব পছন্দ করতাম। আমার খুব ভালো কিছু বন্ধু ছিলো, যাদের সাথে থাকাটাই একটা আনন্দের ব্যাপার ছিলো। ক্যাডেট জীবনে অল্প হলেও কিছু নিজস্ব সময় পাওয়া যায়। আমি সেই সময়গুলো খুব উপভোগ করতাম। কিছু না করলেও এটা ওটা নিয়ে ভাবতেও ভালো লাগতো। আমাদের খুব ভালো একটা লাইব্রেরী ছিলো। আমি মোটেই খুব পড়ুয়া ছেলে ছিলাম না। তবে যেদিন নিজস্ব সময়ে লাইব্রেরীতে যেতাম, সেদিন কেউ না উঠানো পর্যন্ত উঠতে মন চাইতো না। আমি গল্প শুনতে খুবই ভালোবাসতাম। যেখানেই কেউ কোন গল্প শুরু করতো, সেখানেই আমি উপস্থিত থাকতাম। তাই ক্যাডেট কলেজে আমার সময়টা মন্দ কাটেনি। তবে দশম শ্রেণীতে উঠার পর যেন হঠাৎ করেই একদিন আমি আবিষ্কার করে ফেললাম, আমি একজন মিঃ নোবডি। আমি কেউ নই, কলেজে আমার কোন সাফল্য নেই। জীবনের লক্ষ্য খোঁজা শুরু করলাম। দেখলাম, আমি লক্ষ্যহীন। আমি জানিনা, আমি কী হতে চাই। ভেতরে ভেতরে খুব ফাঁকা বোধ করতে শুরু করলাম। নিজেকে সূতোকাটা ঘুড়ির মত মনে হলো। লক্ষ্যহীন, বাতাসবাহিত। আস্তে আস্তে পাঠ্য পুস্তক পড়াশোনা ছেড়ে দিলাম। তারাশঙ্করের কিছু বাংলা উপন্যাস পড়া শুরু করলাম। তার মধ্যে সপ্তপদী’র কথা মনে আছে। শিশির কুমার ভাদুরীর ক’টা ছোট উপন্যাস পড়ে ভালো লাগলো। লক্ষ্য করলাম, আমি এমন বই পড়তে চাইতাম, যেটা পড়ে কাঁদতে পারি। হঠাৎ করেই মনের মধ্যে একটা নতুন উপলব্ধি দেখা দিলো, আমার কাঁদা প্রয়োজন।
জীবনানন্দ দাশের নাম তখনো শুনিনি। একদিন লাইব্রেরীতে টেবিলে পড়ে থাকা আব্দুল মান্নান সৈয়দের লেখা ‘শুদ্ধতম কবি জীবনানন্দ দাশ’ বইটা পেয়ে পৃষ্ঠা উল্টাতে শুরু করলাম। এক নিঃশ্বাসে অনেকদূর পড়ে গেলাম। মনে হতে থাকলো, জীবনানন্দ দাশ বুঝি আমার কবি। আমার মনের কোমল অনুভূতিগুলোকে তিনি কাব্যিক প্রকাশ দিয়েছেন। তখন থেকে জীবনানন্দ দাশ পড়া শুরু করি। বন্ধু ফাহিয়ান একদিন জানালো যে সে ছুটিতে বিমল মিত্রের মোটা বই ‘কড়ি দিয়ে কিনলাম’ পড়া শুরু করেছে এবং সেটা তার খুব ভালো লেগেছে। আমি একথা শুনে সত্যিই খুব অবাক হয়েছিলাম, কারণ ও ছিলো খুবই চঞ্চল প্রকৃ্তির, মূলতঃ একজন ভালো এ্য্যথেলেট ও ভালো ফুটবলার। কোথাও দু’দন্ড স্থির থাকতে পারতোনা। ও কোনদিন বাংলা উপন্যাস পড়বে, তাও ‘কড়ি দিয়ে কিনলাম’ এর মত মোটা বই, সেটা আমার কাছে অবিশ্বাস্য ছিলো। পরে জেনেছিলাম, ও ঐ সময়ে ওর এক পাড়াতো বড় বোনের প্রেমের ব্যাপারে “গো বিটউইন” (দূতিয়ালী) এর কাজ করতো। ওদের প্রেম দেখতে দেখতে প্রেমের কনকপ্রভা ওর হৃদয়কেও আলোকিত করতে শুরু করেছিলো। তা থেকেই বাংলা উপন্যাসের প্রতি ওর আগ্রহ জন্মে। ওর মুখে তখন বইটির গল্প শুনতে শুনতে দীপু চরিত্রটি খুব ভালো লেগেছিলো। বই পড়ার পাশাপাশি খুব করে গান শোনা শুরু করে দিলাম। সতীনাথের গান খুব ভালো লাগতো। দশম শ্রেণীতে পড়ার সময় আমার রুমটা ছিলো বাথরুম সংলগ্ন কোণার একটা তিন বেডের রুম। টার্ম ফাইনাল পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে একদিন গলা ছেড়ে খালি গলায় গান গাচ্ছিলাম, ‘জানি একদিন আমার জীবনী লেখা হবে’। আবরার ভাই (ডঃ চৌধুরী রফিকুল আবরার, বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘আন্তর্জাতিক সম্পর্ক’ বিষয়ের প্রফেসর এবং সম্ভবতঃ বিভাগীয় প্রধান) একদিন গোসল করে বের হবার সময় আমার এই গান শুনে রুমে উঁকি দিলেন। এখানে বলে রাখি যে সি আর আবরার ভাই একটু ভাবুক প্রকৃতির ছিলেন। শীতের রাতে চাদর জড়িয়ে একা একা হাঁটতেন। বাংলার ব্যাপারে খুব তেজস্বী ভাবাপন্ন (স্পিরিটেড) ছিলেন। খুব সুন্দর বাংলা কবিতা আবৃত্তি করতেন, তাঁর বাংলা উচ্চারণও উচ্চমানের ছিলো। তাঁর চলাফেরা, কথাবার্তা সব কিছুতেই একটা রাবীন্দ্রিক প্রভাব লক্ষ্য করা যেতো। সেই আমলেও একুশে ফেব্রুয়ারীতে প্রভাত ফেরী করার ব্যাপারে তিনি খুব তৎপর থাকতেন। সাহসীও ছিলেন বটে। বাংলা ভাষা নিয়ে কিংবা একুশে ফেব্রুয়ারী পালন নিয়ে তিনি স্বয়ং প্রিন্সিপালকে একবার কি একটা ব্যাপারে যেন খুব সাহসী একটা প্রশ্ন করেছিলেন বলে মনে পড়ছে। এজন্য আমি আবরার ভাইকে মনে মনে খুব শ্রদ্ধা করতাম। সেই আবরার ভাই বোধহয় পড়াশুনার প্রতি আমার অমনযোগিতার বিষয়টা খেয়াল করেছিলেন। একটু হেসে তিনি বললেন, “জীবনী লিখতে হলে তো ভালো করে পড়াশোনা করতে হবে। এখন বরং গান ছেড়ে পড়া শুরু করো”।
চলবে…
ঢাকা
২২ নভেবর ২০১৫
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:৩৮
খায়রুল আহসান বলেছেন: আমি একজন মিঃ নোবডি পড়তে গিয়ে খারাপ লাগলো। -- সাথে থাকুন, পরে অবশ্য নোবডি থেকে সামবডি হতে পেরেছিলাম, সেসব সাকসেস স্টোরী শোনার সময় হয়তো আবার ভালো লাগতেও পারে।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ, ব্যাক ট্রেইল।
২| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:২৪
প্রামানিক বলেছেন: এ পর্বও পড়ে ভাল লাগল। ধন্যবাদ
২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:৩৯
খায়রুল আহসান বলেছেন: ধন্যবাদ প্রামানিক, নিয়মিত ভাবে "আমার কথা" শুনে যাবার জন্য, এবং সেই সাথে ভালো লাগার কথা জানিয়ে যাবার জন্য।
৩| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ২:০৪
অন্ধবিন্দু বলেছেন:
পাঠকের উপস্থিতি জানাচ্ছি, জনাব। আপনার কথার অর্ধেক পর্বেই মিস করেছি। এই মধ্য মধ্য থেকে পড়ি। কিন্ত কানেক্টেড থাকা যাচ্ছে। অচেনা - অজানা মানুষের জীবন কথা পড়ার মজাই অন্যরকম।
তা কেমন লাগছে এই ব্লগটিকে ? কোনও পরামর্শ/অভিযোগ আছে কি ? উত্তর পেলে ভাল লাগবে।
২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৩৫
খায়রুল আহসান বলেছেন: উপস্থিতি জানিয়ে যাবার জন্য ধন্যবাদ, অন্ধবিন্দু। আশাকরি উপস্থিতি অব্যাহত থাকবে। আমার এ লেখার পর্বগুলো এমনই যে আগের বা পরেরটা পড়া মিস করলে খুব একটা কিছু মিস হয়না, প্রতিটা পর্ব স্বয়ংসম্পূর্ণ।
আপনি কি সামহোয়ার ইন ব্লগের কথা বলছেন? ব্লগটিকে আমার ভাইব্র্যান্ট মনে হয়েছে, যদিও আমি এখানে আছি মাত্র চার মাসের কিছু বেশী। তাই খুব বেশী কিছু বলার সময় হয়তো এখনো হয়নি। আপনি কি এই ব্লগের একজন এডমিন?
৪| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:০০
মানবী বলেছেন: পুরো লেখাটা হাসি মুখে পড়তে হলো। লেখার মাঝে শুধু একটি শব্দ অণুরিত হতে দেখলাম "মডেস্টি, মডেস্টি" :-)
লাইব্রেরীতে আপনার বইপড়ার বর্ণনা পড়ার সময় নিজের সেবয়সের লাইব্রেরির প্রতি ভালো লাগা মনে পড়লো। লাইব্রেরীর নামেই মুখে হাসি ফুটতো :-) বইয়ের গন্ধ কেমন ঘোর লাগানো সৌরভ মনে হতো!
সুন্দর পোস্টের জন্য অণেক ধন্যবাদ খায়রুল আহসান।
২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৪২
খায়রুল আহসান বলেছেন: পুরো লেখাটা হাসি মুখে পড়তে হলো -- কথাটা আমার মুখেও হাসি এনে দিলো।
কিন্তু কেন লেখাটা হাসি মুখে পড়তে হলো?
লেখাটাতে মডেস্টির অনুরণন শুনতে পেয়েছেন? আপনার চোখ ও কানের কাছে আমি কৃতজ্ঞ।
লেখাটার প্রশংসা, লাইক, আমাকে বরাবরের মত ওনেক অনুপ্রাণিত করে গেলো।
আন্তরিক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা, মানবী।
৫| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:৩৯
অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: এ পর্বে আপনার সম্পর্কে কিছুটা জানা গেলো। আপনার কাঁদা প্রয়োজন বা জীবনের উদ্দেশ্য খোঁজা - এই দুইটা পয়েন্ট নোট করা গেলো। আপনার মনের মধ্যে এই নতুন উপলব্ধি দেখা দিলো কেন যে আপনার কাঁদা প্রয়োজন ?
০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:১২
খায়রুল আহসান বলেছেন: একদিন নির্জন ঘুঘু ডাকা অলস দুপুরে "প্রেপ আওয়ারে" (দুপুরে লাঞ্চের পর এক ঘন্টা বাধ্যতামূলক বিছানায় শুয়ে থাকার পর উঠে হাতমুখ ধুয়ে "প্রেপ আওয়ারে" বসতে হতো। রুমের মধ্যেই টেবিলে বইপত্র নিয়ে পড়াশুনা করা, হোমওয়ার্ক করা, বা তার অভিনয় করতে হতো। এসময়ে কাউকে ঘুমে পাওয়া গেলে তার শাস্তি হতো) ভীষণ খারাপ লাগছিলো। কেন কি কারণে তা বুঝতে পারছিলাম না। বুকটা ফাপড় লাগছিলো। রুমে থাকতে পারছিলাম না। চুপে চুপে বাথরুমে গিয়ে বসেছিলাম। জানালা দিয়ে বাইরে দৃষ্টি মেলে দিলাম, যতদূর দেখা যায়। বাসার কথা মনে হলো, মায়ের মুখটা ভেসে উঠলো। যদিও প্রতি সপ্তাহে চিঠি পাচ্ছিলাম, তবু মনে হলো আমি পরিবার থেকে যেন বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছি। হু হু করে কেঁদে ফেললাম। কিছুক্ষণ পর কান্না থেমে গেলো, বুকটাও যেন খালি হয়ে গেল। নিজেকে নিজে প্রবোধ দিলাম। আমি অনেকের চেয়ে ভালো আছি। আমার খারাপ লাগার কোন কারণ নাই। কিন্তু সেদিনের সেই কান্নার পর এক নতুন বোধ মনে গেঁথে গেল। খারাপ লাগলে কাঁদতে পারলে ভালো লাগে।
সে জন্যেই মনে হয়েছিলো, আমার কাঁদা প্রয়োজন।
৬| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৪১
শামছুল ইসলাম বলেছেন: তিন শ্রেণীর কোন একটাতেও না পড়ার মর্মবেদনায়, পাঠক হিসাবে আমাকেও ছুঁয়ে গেছেঃ
//সাধারণতঃ তিন শ্রেণীর ক্যাডেটদের জন্য ক্যাডেট লাইফটা চরম আনন্দের ও আত্মতৃপ্তির হয়ে থাকে।//
বরাবরই আপনাকে আমার খুব সংবেদনশীল মনে হয়েছে, আপনার সাফল্যে বন্ধুকে তার পরিবারের ভর্ৎসনায় মজা না পেয়ে আপনি কাতর হয়েছেনঃ
//আমার চমৎকার সাফল্যের কথা শুনে চাচা (আমরা বন্ধুর বাবা মাকে চাচা চাচী বা খালাম্মা খালুই ডাকতাম, আঙ্কেল আন্টি নয়) বন্ধুটিকে তার খারাপ ফলাফলের জন্য খুব কথা শুনিয়েছিলেন, যা আমার ভাল লাগেনি।//
উড়ু উড়ু উদাসীন এক কিশোরের গল্প, উপন্যাসের পোকা হয়ে ওঠা, উদাসী গলায় গান গাওয়াঃ
//‘জানি একদিন আমার জীবনী লেখা হবে’।//
সব কিছুর মধ্য দিয়ে আজকের লেখক খায়রুল আহসান বেড়ে ওঠছিল ক্যাডেট কলেজের চার দেওয়ালের সবুজ চত্বরে।
ক্লান্তিহীন, আনন্দময় লেখায় ভরে ওঠুক আপনার সময়টুকু।
ভাল থাকুন। সবসময়।
০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:২৫
খায়রুল আহসান বলেছেন: আমার লেখায় সংবেদনশীলতা যদি বা যেটুকু থাকে, তা ঠিকই আপনার সংবেদনশীল মনের আতশ কাঁচে ধরা পড়ে থাকে। এদিক থেকে আপনার এন্টেনা বড়ই শক্তিশালী।
চমৎকার ও নিখুঁত বিশ্লেষণের জন্য ধন্যবাদ আর কৃ্তজ্ঞতা জানাচ্ছি, শামছুল ইসলাম।
৭| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:৩১
মনিরা সুলতানা বলেছেন: “জীবনী লিখতে হলে তো ভালো করে পড়াশোনা করতে হবে। এখন বরং গান ছেড়ে পড়া শুরু করো”
নিঃসন্দেহে সময়ের প্রয়োজনীয় উপদেশ !
আমি ৩০ এ মন্তব্য করার সময় এই কান্নার কথা বলতে চেয়েছিলাম ,দেখলাম আগেই লিখেছিলেন । উল্টা ধাঁচে পড়ছি কিনা ,তবে মজা লাগছে এভাবেই ।
শুভ কামনা
১২ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ৯:৫৩
খায়রুল আহসান বলেছেন: নিঃসন্দেহে সময়ের প্রয়োজনীয় উপদেশ -- জ্বী, কিন্তু উপদেশটা সময়মত শুনিনি। ফলে জীবনের চাকা ঘুরে যায়।
পুরনো লেখা খুঁজে বের করে পড়েছেন, এজন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। আর আপনার দেয়া সর্বশেষ প্লাসটাও + প্রেরণার প্রতীক হয়ে রইলো।
৮| ২৩ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ২:৫০
সোহানী বলেছেন: আবার আসবো………...আপাতত: একটু বিরতি।
২৭ শে নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৩৫
খায়রুল আহসান বলেছেন: আচ্ছা। বাকী কথাগুলো পরেই না হয় বলা যাবে।
©somewhere in net ltd.
১| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:২২
ব্যাক ট্রেইল বলেছেন: সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে যারা জড়িত থাকে তাদেরকে সবাই পছন্দ করে। আপনার ওই অংশ পড়তে গিয়ে হাসলাম।
আমি একজন মিঃ নোবডি পড়তে গিয়ে খারাপ লাগলো।